রবিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৮

কলংকপূরে বৈশাখ




কলংকপূরে বৈশাখ 

লেখা : Md Asadur Rahman - Shipon

পহেলা বৈশাখ। পহেলা বৈশাখ মানেই ভূত ভুতুদের চোখে, মুখে, মনে এক বিশাল আনন্দ। আচ্ছা কেনো এতো আনন্দ?
আরে ভাই এটাই বুঝলেন না? পহেলা বৈশাখ মানে পান্তা ইলিশ। আর ইলিশ ভাজা হচ্ছে আমাদের ভূত ভূতুদের সবচেয়ে পছন্দের খাবার। আর এই পহেলা বৈশাখ মানেই বাঙালির পান্তা ইলিশ ভোজন আর সেই সুজোগে ভূতভূতরা দুই একটা মানুষের ঘাড় মটকে ইলিশ চুরি করে পেট পূজা করে এই আরকি। কিন্তু
কিন্তু আবার কি? 
কিন্তুটা হচ্ছে ভূত মহারাজের একমাত্র পূত্র শ্রিলংকা।
বুঝলাম শ্রিলংকা, কিন্তু শ্রিলংকা টা করছে কি?
শ্রিলংকা যে মাছ চূরি করে খেতে পারে না। তার এতে লজ্জা লাগে। সে শত চেষ্টা করেও এই লজ্জাকে পিছে ফেলে মানুষের ঘাড় মটকে ইলিশ চুড়ি করতে পারে না।
আজিব, একি ভূতের বাচ্চা নাকি মানুষের বাচ্চা? ভূতের বাচ্চার আবার লজ্জা। ছি ছি ছি।
হুম। এই তো আর কয়েকটা দিন পরেই পহেলা বৈশাখ। তাই আজ ভূতসভায় শ্রিলংকা কে নিয়া সভা বসবে।
আচ্ছা তাই বুঝি। আচ্ছা আমিও যাবো।।

ঐদিকে রিফাত সাহেবের  একমাত্র মেয়ে আখি। কলেজে পরে। আর একনাম্বারে একটা বদের হাড্ডি। ঐ যে বলে না ছেলে হোক বা মেয়ে হোক, বদের হাড্ডি একটা হলেই যথেচ্ছা। আখি অনেকটা সেই টাইপের। বন্ধুরা তাকে বদনা বলে ডাকে। আখি ইলিশ খেতে পছন্দ করে খুব। প্রতিদিনই সে বায়না ধরে ইলিশ ভাজা আর সাজানো ডাল দিয়ে ভাত খাবে। আখির বাবা রিফাত সাহেব তার মেয়েকে অনেক ভালোবাসে। মেয়ে যতই বদ হোক বাবা মা তো আর ফেলে দিতে পারে না।
আখির বাবা আখির জন্য প্রায় প্রতিদিনই ইলিশ মাছ নিয়ে আসে। মা রান্না করে ঘরে রেখে বাইরে গেলেই আখি ছিচকে চোরের মত কয়েক পিছ মাছ চুড়ি করে খায়। এটাও প্রতিদিনের ঘটনা আর তাই আখির মা প্রতিদিনই কয়েকপিছ মাছ বেশি ভাজে।
আখির মা : আখি আখি, এই আখি। বদের হাড্ডি মেয়ে। সব মাছ আজ একাই খেয়েছে। রাক্ষসী হইছিস নাকি?
আখি : মা আমি মাছ খাইনি।
আখির মা : আবার মিথ্যা কথা বলিস। থাপ্পর দিয়ে দাত ফেলে দিবো।
আখি : মা আমি খাইনি মাছ।
πππππ ঠাস ππππππ (আখির মা আখিকে খুব জোরে থাপ্পর দেয় আর সেই সময়ে একটা করুন সুর বেজে উঠে, আখির গালে পাচ আংগুল এর দাগ পরে যায়)
আখির মা : আর কোনদিন মিথ্যে কথা বলবি?
আখি : আমি ৪ পিছ খাইছি, সব খাইনি আমি।
আখির মা : তাহলে বাকি গুলো কি ভূতে খাইছে?  যাহ তুই আমার সামনে থেকে দূরে যা।
আখি সেখান থেকে ন্যাকা কান্দন কানতে কানতে নিজের রুমে ফিরে আসে।

কলংকপুরের বিশাল এক বটগাছের প্রতিটি ডালে ভূত ভুতুরা নিরবে বসে ভাবছেন। বটগাছের মোটা একটা ডালে একটা আসন পেতে বসে আছে ভুত মহারাজ ফইসা। গভির চিন্তায় মগ্ন। একজন বলে বসলো
♦ : মহারাজ এখন কি করা যেতে পারে? তার জন্য আমরা চুড়ি করে এনে দেই সে খাক?
ভূত মহারাজ : ভূত রাজপুত্র অন্যের চুড়ি করা মাছ খাবে কিন্তু নিজে চুড়ি করতে পারবে না? ছি ছি ছি।
♦ : তাহলে আর কি করার আছে মহারাজ?
ভূত মহারাজ : কিছু একটা উপায় তো বের করতে হবে।
♦ : শ্রিলংকা কে জিজ্ঞেস করা হোক সে কেনো এমন করে? বা সে চূরি করার কোন দিকটাতে কাচা সেটা জানালেও আমরা তাকে প্রশিক্ষন দিয়ে পাকা পোক্ত চোর বানাই।
ভূত মহারাজ : ভালো বলেছো তুমি। শ্রিলংকা বলতো বাবা কি সমস্যা তোমার। খুলে বলো সব।
শ্রিলংকা : একটা মানুষের মুখের খাবার কিভাবে চুরি করবো। সে কত আশা নিয়ে আছে যে একটা ভাজা ইলিশ মাছ খাবে। আর আমি শ্রিলংকা সেই ইলিশ কিনা তার কাছ থেকে চুরি করে এনে খাবো?
মহারাজ : শিকারিকে শিকার করতেই হবে। এতে লজ্জা, মায়া থাকলে চলবে?
♦ : মহারাজ, শ্রিলংকা রাজপুত্রের খুব বড় ট্রেনিং প্রয়োজন। আমাদের মত ভূত ভূতু দিয়ে ট্রেনিং করালে চলবে না।
মহারাজ : কি করা যায় এখন?  মানুষের ঘার মটকে মাছ চূরি করার ট্রেনিং এর জন্য এখন আমি ভালো মানুষ চোর কোথায় পাই?
♦ : মহারাজ গতকাল কি হয়েছে জানেন?
মহারাজ : না বললে জানবো কিভাবে?
♦ : জি মহারাজ বলছি। জয়পাড়া বাজারের বটগাছে আমি ঝিমুচ্ছিলাম। হটাত ইলিশ মাছে ঘ্রান পাই। চেয়ে দেখি এক টাকলা মানুষ ব্যাগে করে ইলিশ  নিয়ে যাচ্ছে। পিছু পিছু আমি খুশিতে লাফাতে লাফাতে যাই। তার গিন্নি মাছ কেটে গাড়ো তেলে ভেজে ঘরের আলমিরাতে রাখে। লোহার আলমিরা। তাই কাছে যেতে পারছিলুম নে। অপেক্ষা করছিলাম। কিছুক্ষন পর একটা মেয়ে মানুষ আছে।  ঘরের গিন্নির চোখ ফাকি দিয়ে আলমিরা থেকে বিনা শব্দে মাছের থাকা বের করে এনে ছাদে নিয়ে আসে। তারপর চোখবন্ধ করে খাচ্ছিলো। আর আমিও পাশে বসে কয়েকটি খেয়ে ফেলেছি। কি অসাধারন তার চুরির হাত। আমার বিশ্বাস ঐ মেয়ে মানুষের কাছ থেকে প্রশিক্ষন পেলে আমাদের শ্রিলংকা আদর্ষ মাছ চূরির দিক্ষায় দিক্ষিত হবে।
মহারাজ : কিন্তু তাকে পাবো কোথায়?
♦ : তাকে উঠিয়ে নিয়ে আসি?
মহারাজ : সেটা তো ঠিক হবে না।
♦ : এছাড়া তো উপায় ও নেই ভূত মহারাজ। বৈশাখ সামনে।
ভূত মহারাজ : কথা সঠিক। আচ্ছা যাও তাকে এক্ষনি নিয়ে আসো।

সূর্যি মামা ডুব দিয়ে সন্ধ্যাকে আমন্ত্রন জানিয়েছেন। এদিকে আখির (বদনা) রাগ কমেনি। ছাদের এক কোনে বসে ডুকরে ডুকরে কাদছে আর নিচু কণ্ঠে বলছে: কি এমন করছি যে আমাকে এইভাবে মারবে। একটু না হয় মাছই খেয়েছি। মাছ তো আমি ভালোবাসি তাই একটু বেশি খাই। তাই বলে আমাকে মারবে। আসলে ওরা আমার আসল বাবা মা ই না। হলে কি এইভাবে মারতো। আখি হটাত খেয়াল করে পিছনের নাড়িকেল গাছে কেমন জেনো একটা শব্দ হচ্ছে। পেছনে তাকায়, কেউ নেই।  কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। মৃদ একটা বাতাস তার শরীরের উপর দিয়ে বয়ে যায় আর কিছুখন পরে জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে সে।
আখির জ্ঞান ফিরলে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে সবুজ পাতা তারউপরে। নিচের দিকে ধিরে ধিরে তাকিয়ে চিৎকার দেয় আর সাথে সাথে বট গাছের ডাল থেকে চটাং করে পরে যায়।
আখির পরে যাওয়া দেখে দুইজন এগিয়ে আসতে থাকে, আখি তাদের দেখে আবারও চিৎকার করে বলে ভূত ভুত ভূত। আসলে যে দুজন আসছিলো তার কাছে তারা দুজনের একজনের পা নেই, আর একজনের মাথা নেই। কিন্তু তারা মাটি থেকে একটু উপরে শুন্যের মধ্যে হেটে আসছে।
আখি : কে কে কে আপনার?
♦ : আমরা ভূত। তোমাকে পৃথিবী থেকে আমাদের ভূত ভূতূদের রাজ্য কলংকপূরে নিয়ে আসা হয়েছে।
আখি ভূতদের কথা জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে। তারপরপ ভূত দুটো অনেক চেষ্টা করে আখির জ্ঞ্যান ফিরিয়ে আনে।
♦ : তুমি আমাদের ভয় পেও না। আমরা তোমার কোন ক্ষতি করবো না। তুমি সুধু আমাদের একটু সাহায্য করবে।
আখি : কি সাহায্য?
♦ : এখন না পরে বলবো। বিকেলে আমাদের মহারাজ সভা দেকেছে সেখানে সব বলা হবে।
আখি : আচ্ছা। ঠিক আছে।
ভুত সভায় হাজির করা হয় আখিকে। আখিকে বটগাছের দুটো চিকন ডালের মধ্যে বসানো হয়।

ভুত মহারাজ : সম্মানিত মানুষ চোর
আখি : মানুষ চোর মানে? আমি কি চোর নাকি যে আমাকে চোর বলছেন?
♦ : জি আপনি চোর। আমি দেখেছি আপনি কিভাবে ভাজা মাছ চুরি করে খান।
আখি : আজিব কথা বার্তা। আমাদের মাছ আমি খেয়েছি। এতে চুরির কি আছে?
♦ : আপনি আলমিরা থেকে তো চুড়ি করেছেন। সেটাই মূখ্য কথা।
আখি : এটা চুরি না। মাছের প্রতি ভালোবাসা।
ভূত মহারাজ : সে যাই হোক। আপনি মানুষ খুব ভালো করেই জানেন যে ভূতেরা মাছ খুব পছন্দ করে। আর যদি সেটা হয় ইলিশ মাছ ভাজা তাহলে তো কথাই নেই।
আখি : হুম জানি। ভূতেরা মানুষের মাছ চুরি করে খায়।
♦ : আমিও খাই। গতকাল আপনার সাথে আমিও খেয়েছি।
আখি : হতচ্ছাড়া ভূত। তুমি আমার মাছ খেয়েছো, আর আমি আম্মুর হাতে মার খেয়েছি।
(এই বলে আখি ভূতটাকে মারতে গিয়ে ডাল থেকে ফসকে নিচে পরে যেতে থাকে আর ঐ মুহুর্তে শ্রিলংকা এসে সুপারম্যান এর মত তাকে ধরে ফেলে।)
শ্রিলংকা : কে তুমি ললনা পেত্নী?
(আখি শ্রিলংকাকে চিমটি কে টে শ্রিলংকার কোল থেকে নিচে নেমে আসে)
আখি : ঐ মিয়া আমি পেত্নী হমু কেন?  দেখতে একটু কালো বলেই কি আমাকে পেত্নী বলতে হবে?
শ্রিলংকা : না মানে........
ঐ সময় ভূত সবার সবাই নিচে নেমে আসে।
ভূত মহারাজ : মানুষ, এই আমার ছেলে শ্রিলংকা। ভূত রাজ্যের রাজপুত্র। একেই আপনার মাছ চুরির প্রশিক্ষন দিতে হবে।
আখি মনে ভাবছে : ভূতের বাচ্চা এতো হ্যান্ডসাম হয়?  এর তো মানুষের বাচ্চা হওয়া উচিত ছিলো। আচ্ছা ভূতেরা যেমন মানুষের ঘারে চাপে তেমনি কি আমিও মানুষ ঐ এই শ্রিলংকা ভূতের ঘারে চাপতে পারবো?  যদি তাই করা যেতে তাহলে.....
ভূত মহারাজ : দুদিন পরই পহেলা বৈশাখ। মানুষ বাঙালিরা এদিন সব্বাই ইলিশ পান্তা খাবে। হৈ হুল্লোর করবে। আমরা ভূতেরাও তো বাঙালি, আমাদের ও তো ইচ্ছে করে ইলিশ খেতে। আর ইলিশভাজা আমাদের সবচেয়ে প্রিয় খাবার। তাই আমরা কলংকপুরের সকল ভূত ভূতুরা ঐদিন মানুষদের মাঝ থেকে ইলিশ চুরি করে খাই। কিন্তু আমার ছেলে শ্রিলংলা সে চুরি করতে পারে না। আর তাই আপনাকে এখানে আনা। আপনি শ্রিলংকাকে মানুষের মাঝে থেকে মাছ চুরির প্রশিক্ষন দিবেন।
আখি : এখানে চুরি করার কি আচ্ছে? আপনারা নিজেরাই তো ইলিশ এনে ভেজে খেতে পারেন। চুরি করতে আপনাদের লজ্জা লাগে না?
শ্রিলংকা : ঠিক সেটাই। এদের কোন লজ্জা সরম নাই। আমি লজ্জায় মানুষের সামনে যেতে পারি না।
♦ : লজ্জা পেয়ে কি লাভ বলেন?  এছাড়া উপায় কি? ভূত হয়ে তো আর আগুনের সামনে যেতে পারি না।
ভূত মহারাজ : আমাদের ও ইচ্ছে করে বৈশাখ পালন করতে। হৈ হূল্লোর করতে। আমরাও তো বাঙলী ভূত।
আখি : হাহাহা, তো করবেন। না করছে কে?
ভূত মহারাজ : কিভাবে করবো?  মাছ পাবো কোথায়? পান্তা পাবো কোথায়?  আর ঐ মানুষগুলো মজ্ঞল শোভাযাত্রা করে আবার আমাদের বিভিন্ন ছবি লাঠির মধ্যে বেধে নিয়ে উল্লাস করে। আমরাও মানুষদের ছবি নিয়ে ঐগুলা করবো।
আখি : হাহাহহাহাহা সব হবে। আমি সব কিছুর ব্যাবস্থা করে দিবো। কিন্তু শর্ত একটাই আমার বাসা থেকে কেউ আর ইলিশ চুরি করবে না। প্রমিজ....
ভূত মহারাজ : সত্যি তুমি করবে?  সত্যি বলছো? হ্যা আর কোন দিন কেউ তোমার মাছ চুরি করবে না। উল্টো তোমাকে প্রতিদিন আমাদের কলংকপুর রাজ্য থেকে ইলিশ মাছ দেওয়া হবে।
আখি: আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে শুনো সবাই। মানুষরা এখন অনেক আধুনিক। সেখানে এখন আর রান্না করতে আগুন লাগে না। ইলেক্ট্রিক চুলায় সব রান্না করে। তোমরা আমাকে ইলেক্ট্রিক চুলা আর জেনারেটর এনে দিবে। জেনারেটর দিয়ে ইলেক্ট্রিক চুলা চলবে আর তাতে পান্তাভাত রান্না হবে, ইলিশ মাছ ভাজা হবে। আর ইলিশ কিন্তু চুরি করলে হবে না। মেছো ভূতেরা তোমরা পদ্মা থেকে ইলিশ মাছ ধরে নিয়ে আসবে।
ভূত মহারাজ : দারুন আইডিয়া। কিন্তু বাকি সব?
আখি : কিছু ভূতেরা যাও কাটাবন। সেখান থেকে ককশিট আর বেলুন নিয়ে আসবে। আমি নিজহাতে কেটে ওগুলো দিয়ে তোমাদের কলংকপুর সাজাবো।
এরপর দুইদিন আখি ওদের জেনারেটর চালানো, ইলেক্ট্রিক চুলায় রান্না করা শিখায়। অন্যান্য ভূত ভূতুদের নিয়ে সম্পূর্ন কলংকপুর মানুষদের প্রতিকৃতি, বেলুন, ফুল, ফিতা দিয়ে সাজায়। সেই সাথে মরিচাবাতি দিয়েও সাজায়। অন্ধকার কলংকপুর আজ লাল নীল সবুজ আলোয় আলোকিত।
১৩ তারিখ রাত পেরিয়ে ১৪ তারিখ ভোরে কলংকপুরের প্রধান বটগাছতলা থেকে বের হয় বিশাল মজ্ঞল শোভাযাত্রা। ভূতরা লালা, নীল, সাদা সহ হরেক রকমের পাঞ্জাবী আর ভূতুরা লাল, নীল আর সাদা শাড়ী পরে এসেছে। মজ্ঞল শোভা যাত্রা শেষে সবাই একসাথে বটতলায় ইলিশ পান্তা আর হরেক রকম মিষ্টি দিয়ে ভূরি ভোজ শেষ করে। তারপর সবাই বৈশাখী মেলায় গিয়ে উল্লাসে মেতে উঠে। আর সন্ধ্যায় শুরু হয়ে কনসার্ট আর সেই কনসার্ট মাতাতে আসেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলার পপ সম্রাট আজম খান ভূত, মঞ্চের উঠার সাথে সাথেই সমস্ত ভূত ভূতুদের করতালি তে এক অদ্ভুদ আনন্দঘন পরিবেশ স্মৃষ্টি হয়। শুরু হয় গান

১ : ওরে সালেকা ওরে মালেকা।
ও রে ফুলবানু পারলি না বাঁচাতে।।

পাশের গায়ে ছিল সে যে
রোজই যেতো এ পথ দিয়ে।
কেন? সাধনা তার! ভেঙ্গে গেল
ও ও ও………. ।।

২: এ শহরে কোনো মানুষ নেই
এ শহরে মানুষ থাকে না কখনো
এ শহরে কোনো মানুষ এলেই
রক্তের গন্ধে নেচে ওঠে সবাই
সবাই মিলে কামড়াতে থাকে
মানুষকে
দাঁত থেকে বিষ মানুষের রক্তে
গেলেই
ওই মানুষটাও আর মানুষ থাকে না
হয়ে উঠে মানুষ খেকো মানুষ

৩: আমি শুনেছি
ইতিহাসের প্রেতাত্মারা আমাদের ঘরে
বিড়াল হয়ে ঢোকে
আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে…
মাছ মাংসের ঘ্রাণে
ইতিহাসের প্রেতাত্মারা আমাদের
ঘরে ঢোকে…
কনসার্ট শেষ করে আখিকে নিয়ে আসা হয় ভূত মহারাজের কাছে। ভূত মহারাজ আখিকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানায় এবিং একমন ইলিশ মাছ দেয় এবং তাকে সুন্দর ও সাবধানে বাড়িতে পৌছে দিতে বলে।
ভুতেরা আখির রুমের আখিকে রেখে যায়। পরেরদিন ভোরে আখির মা রুমে আসে। হাতে একটা লাঠি।
আখির মা : কোথায় ছিলি সারাদিন?
আখি : না মা বৈশাখ
আখির মা লাঠি দিয়ে আখিকে মারতে মারতে বলে বৈশাখ, না বৈশাখ দুই দিন বাড়ি থেকে পালিয়ে বৈশাখ।  যা আজ থেকে তোর খাবার বন্ধ, সব ইলিশ মাছ আমি ফেলে দিবো। এই বলে আখির মা চলে যায়। আখি ব্যাথায় আর ইলিশের দুক্ষে কাদতে থাকে মাথা নিচু করে।
হাটাত পিছনে ফেরে দেখে এক প্লেট ইলিশ ভাজা। মিষ্টি।
আখি : তার মানে ভূতেরা আমাকে সত্যি খাবার দিয়ে গেছে। আসলেই এবারের পহেলা বৈশাখটা ভূতেদের সাথে কলংকপূরের ভালোই কেটেছে। সারাজীবন মনে থাকবে এই দুটি দিনের কথা।

( পুরো গল্পটাই আমার কল্পনা । এর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই )
আমার লেখা আরো গল্প পরতে চাইলে আমার পেইজ টি লাইক দিতে পারেন ।
https://www.facebook.com/arshipon15/ ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .