মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

ভুত-ভুতুদের ভালোবাসা দিবস



ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ভুত প্রিয় বন্ধুদের জন্য লেখা আমার এই গল্পটি । গল্পটি আমার যাষ্ট কল্পনা । কোনভাবে এর কোন অংশ বাস্তব কোন কিছুর সাথে মেলানোর চেষ্টা করবেন না প্লিজ । গল্পকে গল্পের মত করেই দেখবেন ।


অন্ধকার রাত, একলা ছাদ, একলা আকাশ, একরাশ জোসনা, এক গুচ্ছ তারা আর একলা রাফি । বসে আছে রাফি, আকাশের ঐ একগুচ্ছ তারার একটা তারার সাথে কথা বলছে সে ।
সরি রাফি সরি । ঐটা তারা নয় । ওইটা তো তোমার রাজকন্যা ।
মাস খানেক হয় মারা গিয়েছে রাজকন্যা । সড়ক দুর্ঘটনায় প্রান হারিয়েছে রাজকন্যা । রাফির বিশ্বাস রাজকন্যা তারা হয়ে আকাশে আছে। এরপর থেকে প্রতি রাতেই রাফি ছাদে এসে রাজ্যকন্যা(তারা)র সাথে কথা বলে । হাসে, কাদে আর গান শোনায় । রাফি মাঝে মাঝে রাজকন্যাটিকে বলে নিচে নেমে আসতে , হাতধরে আবার ঢাকার রাজপথে হাটতে । রাজকন্যার খোপায় গোলাপ দিবে রাফি । কিন্তু রাজকন্যাটি আসে না ।
রাত ১১.৫৫ বাজে । আর কিছুখন পরই ১২টা বাজবে । ১২টার পরই ১৪ তারিখ , মানে ভালোবাসা দিবস । আজ রাফি বিশেষ করে অনুরোধ করবে রাজকন্যাকে নিচে আসার জন্য । গতবছর এই দিনে সারাটা দিন দুজনে একসাথে ছিল । রাফি সাদা পাঞ্জাবী আর রাজকন্যা লাল শাড়ি পরে ঘুরেছিল পুরো ঢাকা । আজ সেই দিন আর এটা তো প্রেমিক প্রেমিকাদের কাছে এমনিতেই স্পেশাল ১টা দিন । তাই অনেক আশা নিয়ে বসে আছে । আজ বলবে । আচ্ছা রাফি বলুক । ওর এখানে একাই থাকা উচিত, আমরা এখান থেকে আপাতত যাই ।
সকাল হয়ে গেছে রাজধানী ঢাকার রাজপথ রঙ্গিন হয়ে গেছে বিভিন্ন বয়সী যুগলে । খোপায় ফুল, লাল শাড়ী, হাতে গোলাপের ছরা, ছেলেটি নীল অথবা সাদা পাঞ্জাবী । পুরো শহরে এক অন্য রকম আনন্দময় পরিবেশ । এতো এতো যুগল যে কোথায় থেকে আসলো কে জানে ।
এইসব ভাবতে ভাবতে হাটছিল দুপুর । হটাৎ ১টা মেয়ের সাথে ধাক্কা লাগলো , দুজনেই পরে গেলো । মেয়েটি উঠে আবার হাটা দিল কোন কথা না বলে । দুপুর মেয়েটির দিকে অবাক দৃষ্টিতে । নিজেকে প্রশ্ন করছে , কিভাবে সম্ভব এটা । আমার সাথে ধাক্কা লাগলো কিভাবে , আবার আমাকেই ধরেই তো উঠে গেলো কিভাবে সম্ভব এটা ? আমাকে দেখতে পারার কথা কিন্তু আমি তো অস্পর্শিয় । তাহলে কি !!!!
দুপুর মেয়েটার পিছনে ছুটে । কাছে গিয়ে হাত ধরে । মেয়েটি রেগে চিৎকার করে উঠে
মেয়েঃ এই এই , কি অসভ্যতামি
দুপুর ঃ না , মানে আপনি কি আমার স্পর্শ অনুভব করতে পারছেন ?
দুপুরের কথা শুনে মেয়েটি একটু শান্ত হয়।
মেয়ে ঃ হ্যা । আপনিও কি পারছেন ?
দুপুর ঃ তারমানে কি আপনিও আমার মত ?
মেয়ে ঃ আপনার মত মানে ?
দুপুর ঃ আমি ভুতের শহর কলংকপুর থেকে এসেছি । আমি ভুত । আমার নাম দুপুর ।
মেয়ে ঃ হাহাহাহা । পালিয়ে এসেছেন তাই না ?
দুপুর ঃ হ্যা ।
মেয়ে ঃ আমি তৃষ্ণা । তৃষ্ণা ভুতু । কেনো এসেছেন এখানে ? কলংকপুরে তো ভালোই উৎসব হচ্ছে। সব ভুতুরা আজ সাদা শাড়ী ছেরে নীল শাড়ী আর কাজল পরেছে, ভুতরা হুমায়ন আহমেদ স্যারের হিমুর মত হলুদ পাঞ্জাবী আর কালো গোলাপ নিয়ে অপেক্ষ্যা করছে ।
দুপুর ঃ হাহাহাহা । সেটা সত্যি । কিন্তু যে সকল ভুতদের ভুতু নাই তারা কি করবে ? তাই একটু কষ্ট করে পৃথিবীতে আসলাম । অতিতের সাথে দেখা করতে । যদিও অতিতেও আমার তেমন কোনো গার্লফ্রেন্ড ছিল না । আচ্ছা তুমি এসেছো কেনো ?
তৃষ্ণা ঃ আমার ভালোবাসার কাছে । জানো, সে আমার প্রতি রাতে ডাকে তার কাছে আসার জন্য, তার পাশে বসে বকবক শোনানোর জন্য । খুব ভালোবাসে ছেলেটা আমায় ।
দুপুর ঃ ওহ। তোমার কি পৃথিবীতে প্রেমিক ছিলো ?
তৃষ্ণা ঃ হুম ছিল । মাস খানেক আগে ১টা রোড এক্সিডেন্টে আমি মারা যাই তার পর থেকেই আমি কলংকপুরে । আর ও এখানে, আজ আমি তার সাথে দেখা করবো । আমি খুব কাছ থেকে দেখবো । সেখানেই যাচ্ছি ।
দুপুর ঃ আমি কি তোমার সাথে যেতে পারি ?
তৃষ্ণা ঃ হ্যা চলো । যাই হোক ১টা বন্ধু পেলাম । কলংকপুরে আমার কোন বন্ধু নেই ।
এরপর তৃষ্ণা আর দুপুর হাটতে থাকে রাফির উদ্দ্যেশে ।
অন্যদিকে রোদেলা হাটছে ধানমন্ডি লেকে একা একা । সেও কলংকপুর থেকে এসেছে , মানে সেও ১জন ভুতু । পৃথিবীতে থাকতে অল্প বয়সেই অনেক প্রেম করেছে । তবে কোনটাই ভালোবাসা ছিলনা বলে দাবি করে সে । ভালোবাসা নাকি তার মনে স্পর্শই করতে পারিনি । ছেলেদের নাকে দড়ী দিয়ে পিছু পিছু ঘোড়ানো তার কাছে ১টা খেলার মত ছিল । খুব দুষ্ট আর মিষ্টি ১টা মেয়ে রোদেলা । হটাৎ একদিন ক্যান্সার ধরা পরে মেয়েটার, তার কিছুদিন পরে মরে যায়।
রোদেলা এখন কি করছে জানো তোমরা বন্ধুরা ? লেকের জুগল দের মাঝে গিয়ে দুষ্টমি করছে । এই ধরো মেয়েটার খোপার ফুল খুলে দিচ্ছে , ছেলেটার মাথায় পোকা দিয়ে দিচ্ছে । আর বিভিন্ন ভাবে সবাই কে ডিষ্টার্ব করছে আর খুব মজা নিচ্ছে । কারনটা হলো তার এখন কোনো ভুত নাই , সে একাকী ভুতু ।
হটাৎ কিছু ১টা পানিতে পরার শব্দ । সাথে সাথে কিছু মানুশের চিৎকার । কাছে গিয়ে দেখে লেকে ১টা ছেলে পানিতে হাবু ডুবু খাচ্ছে। আসে পাসের সবাই বাচাও বাচাও বলে চেচামিচি করলেও কেউ তার সুন্দর জামা-কাপর আর সাজুগুজু বিসর্জন দিয়ে ছেলেটাকে বাচানোর জন্য নেমে এলো না । রোদেলা পানিতে ঝাপ দিল , সে সাতার জানে । ছেলেটার কাছে গিয়ে তাকে ধরআর চেষ্টা করলো । কিন্তু পারলো না , কারন রোদেলা ভুতু আর ছেলেটা মানুষ । কেদে দিল সে , আসে পাসের মানুষ গুলোর কাছে গেলো কিন্তু কেউ তাকে দেখতে পেলো না, তার কথাও শুনতে পেলো না। ছেলেটা ধিরে ধিরে পানিতে তলিয়ে গেলো । রোদেলা কাদতে কাদতে তাকিয়ে ছিল । একটুপর হটাৎ ছেলেটা ভেষে উঠলো, উঠে হাত উচিয়ে বাচার চেষ্টা করছে । রোদেলা আবার চেষ্টা করলো ছেলেটাকে ধরার । এবার পারলো ধরতে । রোদেলা বুঝতে পারলো যে ছেলেটা মারা গিয়েছে , ভুত হয়ে গেছে । পারে নিয়ে আসে ।
রোদেলা ঃ এই ছেলে , পানিতে ডুবলে কিভাবে ?
ছেলেটি ঃ ইচ্ছে করে ঝাপ দিয়েছি । মানে সুইসাইড ।
রোদেলা ঃ হায় হায় কি বলে ছেলে । কেনো এটা করলে ?
ছেলেটি ঃ আমার রাজকন্যার সাথে অভিমান করে ।
রোদেলা ঃ বুঝছি। কোন মেয়ে ছ্যাকা দিছে ।
ছেলেটি ঃ ছ্যাকা দেয়নি , তবে ধোকা দিয়েছে । আমাকে ছেরে চলে গিয়েছিল ।
রোদেলা ঃ বিয়ে হয়ে গেছে ?
ছেলেটি ঃ নাহ । মারা গেছে ।
রোদেলা ঃ ওহ , এই ব্যাপার । টেনশন নিও না । আমার সাথে চলো , আমি তোমাকে কলংকপুরে নিয়ে যাচ্ছি সেখানে পাবে ওকে । আচ্ছা তোমার নাম কি ?
ছেলেটি ঃ আমি রাফি । আচ্ছা তুমি কে ? আর আমি কি মরে যাই নাই ?
রোদেলা ঃ আমি রোদেলা, কলংকপুরের ভুতু । আর হ্যা তুমি মারা গিয়েছো , মারা না গেলে আমায় দেখতে পেতে না । তুমি এখন ভুত হয়ে গেছো ।
রাফি ঃ হাহাহাহাহহাহা , তাই । সারাজিবন ভুতের গল্প শুনেছি , আর আমিই এখন ভুত । ভালো তো । আচ্ছা চল তোমার কলংকপুরে । খুজে দেখি পাই নাকি আমার রাজকন্যা তৃষ্ণাকে ।
রোদেলা ঃ তৃষ্ণা । অনেক সুন্দর তো নামটা ।
এর পর রোদেলা আর রাফি হাটতে থাকে কলংকপুরের দিকে । আর গল্প করতে থাকে । রোদেলা রাফিকে কলংকপুরের ভালোবাসা দিবসের কথা জানায় , সেখানে কিভাবে ভুত-ভুতুরা ভালোবাসা দিবস পালন করে ।
তৃষ্ণা আর দুপুর রাফির বাসায় এসেছে। কিন্তু বাসায় নেই রাফি । আসেপাসে খুজছিল তৃষ্ণা রাফিকে । রাস্তায় রাফির একবন্ধুকে দেখতে পায় তৃষ্ণা । কাছে যায় তার , জিজ্ঞেস করে রাফির কথা । কিন্তু ছেলেটি তৃষ্ণাকে দেখতে বা তার কথা শুনতে পায় না ।
এমন সময় আরেকটি ছেলে এসে রাফির বন্ধুকে জানায় যে রাফি ধানমন্ডি লেকে ঝাপ দিয়ে আত্তহত্তা করেছে । কথাটি শুনতে পায় তৃষ্ণা । কান্নাকাটি শুরু করে তৃষ্ণা । দুপুর কোনভাবেই কান্না থামাতে পারে না । দুপুর তৃষ্ণাকে নিয়ে লেকে যায় । গিয়ে দেখে রাফির লাশ পানিতে ভেষে উঠেছে । দুজন মিলে ভুত রাফিকে খুজে চারপাশে । আসেপাসেই তো থাকার কথা , কিন্তু কোথাও খুজে পায় না ভুত রাফিকে । তারপর সিদ্ধান্ত নেয় কলংকপুরে ফিরে যাওয়ার । কারন সেখানেই গেলে একমাত্র পাওয়া যাবে ভুত রাফিকে ।
কলংকপুর আজ ঝলমল করছে । সারাবছর মূলত এখানে অনেকটা অন্ধকারের মত থাকে । রাত হয় ঘোড় অন্ধকার আর দিন হয় কালো মেঘে ঢাকা । শুধু এই দিনটায় কলংকপুর ঝলমল করে জোসনা রাতের মত । চারদিক নীল, কালো, হলুদ, বেগুনী, গোলাপী রঙের কাপর আর বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে । বিভিন্ন জায়গায় বসেছে হরেক রকম তেলেভাজা পিঠার দোকান। ভুত-ভুতুরা নীল আর হলুদ জামা কাপর পরে বেরিয়েছে । হাতে প্রায় সবার কালো গোলাপ । সবাই একত্রিত হয়েছে কলংকপুরের বিশাল ময়দানে । আজ সারা রাত সবাই এখানে আনন্দ ফুর্তি করবে , গান গাইবে , পিঠা খাবে, নাচবে । কোন নোংরামী নেই এই ভুত-ভুতুদের মদ্যে তবে এক সাগর ভালোবাসা আছে একজন আরেক জনের জন্য ।
দুপুর, তৃষ্ণা, রোদেলা, রাফি চারজনই এখন কলংকপুরের ভালোবাসা দিবসের আনন্দমেলায়। দুজন দুজন করে খুজছে । রাফি আর রোদেলা খুজছে তৃষ্ণাকে , আর তৃষ্ণা আর দুপুর মিলে খুজছে রাফিকে ।
দুপুরের চোখে এটা মেয়ে পরে , মেয়েটাকে চেনা চেনা লাগছে । কাছে যায়, পিছনে আসে তৃষ্ণা ।
দুপুর ঃ এক্সকিউজমি । আপনাকে আমার চেনা চেনা লাগছে ।
রোদেলা ঃ লাগতেই পারে । একশহরে থাকি ।
দুপুর ঃ আপনার নাম কি প্যাক প্যাক ?
রোদেলা ঃ আপনি আমার ফেসবুক আইডির নাম জানলেন কিভাবে ?
দুপুর ঃ আমি আপনার ফ্রেণ্ডলিষ্টে ছিলাম । আমার আইডি নাম ফেরারী।
রোদেলা ঃ ওহ হ্যা । তুমি তো অনেক কিউট ১টা ছেলে ছিলে এফবিতে , কিন্তু এখানে এতো ক্ষ্যাতের মত লাগছে কেনো ? আর তুমি আমাকে প্রোপজ করেছিলে কেনো ? আর কেনোই বা তারপর আইডি ব্লক করে দিলে ?
দুপুর ঃ আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম, সাহশ করে প্রোপজ করেও ফেললাম কিন্তু খুব ভয় হচ্ছিল । তাই আইডি ডিএক্টিভ করে দিয়েছিলাম , ব্লক করেনি তোমাকে ।
রোদেলা ঃ হাহাহাহা । তুমি জানতেও চাইলে না যে আমি কি তোমাকে ভালোবাসতে চাই কিনা ? আচ্ছা শুনো । আমার এক বন্ধু আমার সাথে ছিল । খুজে পাচ্ছি না , এতো ভিরে কই যে গেলো ।
দুপুর ঃ আচ্ছা চলো খুজি । আর এর নাম তৃষ্ণা , আমার বন্ধু ।
তিনজন মিলে হাটছে। তৃষ্ণা মনে মনে আসেপাসে রাফিকে খুজছে, রোদেলাও।
পিছন থেকে একজন এসে তৃষ্ণাকে জরিয়ে ধরে । তৃষ্ণা পিছনে ফিরে দেখে , সেও জরিয়ে ধরে । রাফি তার তৃষ্ণাকে পেয়ে গেছে । দুজন দুজনে মিশে গেছে ভালোবাসার একবন্ধনে । সেখান থেকে সরে যায় দুপুর আর রোদেলা । রোদেলা দুপুরের ভালোবাসা গ্রহন করে । রোদেলা কিন্তু এবার আর মিথ্যে মিথ্যে ভালোবাসার অভিনয় করেনি । ফেসবুকে থাকতে সেও দুপুরের মন কারানো হাসির পাগল ছিল । সেই হাসি খুজে পেলো এই কলংকপুরে ।
সারারাত চলে কলংকপুরে ভুত-ভুতুদের ভালোবাসা দিবসের আনন্দমেলা । নাচ-গান, খাই-দাই, হই-হুল্লোর, আতশবাজিতে অন্য সব ভুতুদের সাথে দুপুর-রোদেলা আর রাফি-তৃষ্ণাও তাদের ভালোবাসা দিবস পালন করে ।

( পুরো গল্পটাই আমার কল্পনা । এর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই । )
আমার লেখা ভালো লাগলে আর আমার আরো গল্প পরতে চাইলে আমার পেইজ টি লাইক দিতে পারেন ।
https://www.facebook.com/arshipon15/ ।

সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

পিশাচ দম্পতি


#পিশাচ দম্পতি

ধুর বেটা ভাললাগে না , তুই কি তোর বাসা থেকে নামবি কিনা বলতো ?
দোস্ত এতো রাতে বের হলে বাবা আর বাসায় ঢুকতে দিবে না ।
- ¬তারমানে তুই বের হবি না । আচ্ছা আমি আজ একাই চাদ দেখবো ।
ঐ সালা আমি কি তোর গার্লফ্রেন্ড যে তুই আমাকে নিয়ে বের হবি , আমার বাসার নিচে আয় ।
এই হলো সোহার্থ আর অনিকের কথোপকথন ।সোহার্থ প্রায় রাতেই বের হয় রতের ঢাকা দেখতে । আর সংগী হয় অনিক , যদিও বেশিরভাগ সময়ই অনিচ্ছাকৃত । আজও বের হয়েছে । অনিকের বাসার সামনে ।
অনিক ঃ আসতে এতো সময় লাগে ?
সোহার্থ ঃ তুই তোর বাসা থেকে নামছিস আর আমি ১৭টা বাড়ি পার করে এসেছি ।চল সামনে যাই ।
অনিক ঃ আচ্ছা আজ হটাৎ আবার বের হলি কেন ? মন খারাপ নিশ্চয় ?
সোহার্থ ঃ হুম । বিড়ি আনছিস ?
অনিক ঃ হ্যা । আব্বুর একবন্ধু আব্বুওকে ১ কার্টুন সিগারেট গিফট করছে । ঐখান থেকে ১প্যাকেট নিয়ে আসছি ।
সোহার্থ ঃ এইতো আমার গুড গার্ল ।
অনিক ঃ ঐ হারামী আমি গুড গার্ল ? ……… আচ্ছা মন খারাপ কেন আগে সেটা বল ?
সোহার্থ ঃ সাবরিনের সাথে ঝগরা হয়েছে । ব্রেকাপ ।
অনিক ঃ আবার । এবার দিয়ে ৬৪বার হলো । এইবার আর আমি মিটমাট করতে পারবো না ।
সোহার্থ ঃ তোর মিটমাট করতে হবে না । চল আজ সাবরিন দের বাসায় ঢেল মেরে জানলার কাচ ভাংগবো ।
অনিক ঃ সত্ত্যি দোস্ত । এইধরনের বিটলামি করতে আমার সেই লাগে । তাইলে চল ।
এরপর ২ বিটল সাবরিন দের বাসার সামনে গিয়ে হাজির হয় । ইটের ঢিল মেরে ভেঙ্গে ফেলে ২তালার সাবরিনের বাবার রুমের জানালা । টের পেয়ে দারোয়ান বেশ খানিক দৌ্রের উপর রাখে সোহার্থ আর অনিককে । সাবরিনের বাবা আজ সাবরিনকে বলে দিয়েছে যে সে জেনো আর সোহার্থের সাথে কোন সম্পর্ক না রাখে । সোহার্থ বলতে গেলে এতিম , বাবা মা অনেক আগেই মারা গিয়েছে আর চাচা সব সম্পত্তি নিজের নামে করে নিয়ে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে সোহার্থকে । তাই সাবরিনের বাবা কোন এতিম ছেলের হাতে তার মেয়েকে দিবে না । আর সাবরিনও বাধ্য সন্তানের মত ব্রেকয়াপ করে । তবে মনে হয় না সে সোহার্থের সাথে কথা না বলে থাকতে পারবে । ২জনই তো ২জনকে অনেক ভালোবাশে ।
অনিক ঃ দোস্ত আর দৌড়াতে পারবো না রে । একটু থাম প্লিজ ।
সোহার্থ ঃ আমিও ।
অনিক ঃ তোর ফোন বাজে ।
সোহার্থ ঃ দারা সাবরিন ফোন দিছে ।
হ্যালো ব্রেকাপ গার্ল
সাবরিন ঃ তুমি এইকাজ টা কেন করলা ?
সোহার্থ ঃ আমি আবার কি করলাম ?
সাবরিন ঃ কি করলাম মানে ? আমি বারান্দায় বসে সব দেখেছি । এইটা ঠিক করো নাই ।
সোহার্থ ঃ যা করছি ভালো করছি ।
সাবরিন ঃ আন্ডা ভালো করছেন আপনি ? অনেক রাত হয়েছে , বাসায় যাও । কাল লেকে যাবো , দেখা হবে ।
সোহার্থ ঃ জি মহারানী ।
ফোন টা কেটে পকেটে রাখে সোহার্থ ।
অনিক ঃ কি মহারাজ , অভিমান পর্ব শেষ ?
সোহার্থ ঃ হুম । চল বাসায় গিয়ে ঘুমাবো ।
অনিক ঃ হুম । আজ তোর মেসে থাকবো । বাসায় গেলে বাপে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবে ।
হেটে যাচ্ছে ২জন । এমন সময় পিছনে চিৎকারের শব্দ শুনতে পায় ওরা । চিৎকারের উৎস খুজতে পিছনে দৌড় দেয় ওরা ২জন । বুঝতে পারে পাশের গলি থেকে আসছে আর্তনাদ । ঢুকে পরে গলিতে । গলির শেষ মাথায় দেখতে পায় , যা দেখে সেটা দেখে নিজের চোখকে বিশ্বআস করতে পারছে না । হাত পা কাপছে । ওদের দেখে সামনে ২জন পালিয়ে যায় । এগিয়ে যায় সোহার্থ আর অনিক । দুজনেরই হাত পা কাপছে । চিৎকার বন্ধ হয়ে গেছে । সামনে পরে আছে ক্ষত বিক্ষত একটি নথর দেহ । একটু আগে ২জন লোক এই লাশ থেকে মাংশ ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছিল ।
অনিক ঃ দোশ্ত এখানে আর একমুহুর্ত ও থাকা ঠিক হবে না । চল ।
সোহার্থ ঃ কি বলিশ তুই এইসব > একটা লাশ এভাবে রেখে চলে যাবো ?
অনিক ঃ হ্যা । কারন সে মৃত । বেচে থাকলে কিছু চেষ্টা করতাম । চল এখন । এখানে থেকে নতুন করে কোন বিপদে পরতে চাই না ।
এর পর চলে আসে তারা । বাসায় এসে বমি করতে থাকে অনিক । পরের দিন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । ।
বিকেলে সাবরিন আর সোহার্থ দেখা করে লেকে ।
সাবরিন ঃ তোমার মন খুব খারাপ তাই না ? আমি তোমাকে ছেরে যাবো না বাবু , আমি তোমাকে ছেরে বাচতে পারবো না ।
সোহার্থ ঃ সাবরিন আমার মনে হয় তোমার বাবাই ঠিক । আমি তোমার যোগ্য না । আমার উচিত তোমার থেকে দূরে সরে যাওয়া ।
সাবরিন ঃ জান প্লিজ এভাবে বলে না । আমার খুব কষ্ট হয় ।
সোহার্থ ঃ কষ্ট হলেও এটাই সত্ত্যি । প্রথম প্রথম এমন লাগবে । পরে ঠীক হয়ে যাবে ।
কথাগুলো বলেই সোহার্থ উঠে চলে যায় । সাবরিন কিছু খন একা একা কেদে ফিরে যায় বাসায় ।
রাতে সুস্থ হয়ে উঠে অনিক ।বাসায় নিয়ে আসে ।
পরেরদিন
দুপুর ২টা বাজে । অনিক ফোন দেয় সোহার্থকে ।
অনিক ঃ দোস্ত পত্রিকা পরেছিস ?
সোহার্থ ঃ না। কেনো ?
অনিক ঃ পত্রিকায় দেখ , শিরোনামে এসেছে * নগরীতে আরো ৪টি সহ মোট ৯টি বিভৎস লাশ *
সোহার্থ ঃ তাই কি বলিশ এই সব ?
অনিক ঃ ময়না তদন্ত করে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না যে কিভাবে মানুষ গুলির এই হাল হলো । কিন্তু আমরা তো জানি ।
সোহার্থ ঃ তুই আমার বাসায় আয় ।
অনিক ঃ আচ্ছা আসতেছি ।
রাস্তায় আসার সময় একটা মেয়ের সাথে পরিচয় হয় অনিকের । অনিক সচরাচর মেহেদের সাথে কথা বলে না । কিন্তু কেনো জানি আজ হটাৎ করে এই মেয়েটার সাথে যেচে অনেক কথা বললো । বন্ধুত্ব হয়ে গেলো ২জনের ।
সোহার্থের মেসে চলে এসেছে অনিক
অনিক ঃ দোস্ত জানিশ আজ তো আকাশের পরি মাটিতে নেমে এসেছে ।
সোহার্থ ঃ কেন তোম পরিমনি কি ছিনেমা করা ফেলে রেখে কোমর দুলিয়ে তোর সাথে নাচতে এসেছে ?
অনিক ঃ আরে না । মেয়েটির নাম আরাত্রিকা ।
সোহার্থ ঃ আরাত্রিকা ? এটা কোন মানুষের নাম ?
অনিক ঃ নাহ , এটা তো পরির নাম ।
সোহার্থ ঃ তুই কি মেয়েটার প্রেমে ট্রেমে পরিছিস ?
অনিক ঃ হ্যা দোস্ত ।
সোহার্থ ঃ শালা তুই ও শেষ । আচ্ছা যেটা বলতে চাই ছিলি ।
অনিক ঃ ওহ হা আ। মানুষ গুলোকে কোন জানোয়ার মেরে খাচ্ছে । দোস্ত আমি খুব রোমান্টিক মুডে আছি সো আজ আর এইসব বলে মন খারাপ করতে চাচ্ছি না । আমি চলে যাই কাল কথা হবে ।
সাবরিন বেশ কয়েকবার ফোন দেই সোহার্থের ফোনে কিন্তু ফোন পিক করে না । রাতে ১টা এসএমএস পাঠায় সাবরিন * তুমি এমন করতে থাকলে হয়তো আমি মারায় যাবো , প্লিজ আমাকে বাচাও শোনা *
এসএমএস পরে বেশ কিছুখন কাদে সোহার্থ , আর ভাবে নিজের অযোগ্যতার কথা । একসময় ঘুমিয়ে পরে । খুব ভোড়ে অনিক সোহার্থের মেসে আসে । ঘুম থেকে উঠায় সোহার্থকে ।
সোহার্থ ঃ কি রে এতো সকালে তুই ?কি হয়েছে ?
অনিক ঃ দোস্ত , সাবরিন ।
সোহার্থ ঃ কি হয়েছে সাবরিনের ? (বলেই ফোন হাতে নেয় সাবরিনকে ফোন দেওয়ার জন্য)
অনিক ঃ সাবরিন মারা গেছে ,
সোহার্থ ঃ হোয়াট ? ও সুইসাইড করেছে ।
অনিক ঃ না । বাসার ছাদে ওর ক্ষত বিক্ষত লাশ পরে ছিল । আমাকে কথা ফোন দিয়ে রাতে জানায় , তারপর আমি ওদের বাসায় গিয়ে শিওর হই ।
সোহার্থ দৌড় দেয় , অনিক ও পিছু পিছু ।
অনিক ঃ না । বাসার ছাদে ওর ক্ষত বিক্ষত লাশ পরে ছিল । আমাকে কথা ফোন দিয়ে রাতে জানায় , তারপর আমি ওদের বাসায় গিয়ে শিওর হই ।
সোহার্থ দৌড় দেয় , অনিক ও পিছু পিছু ।
সাবরিন দের বাসায় এসে ওর লাশ দেখে কান্না ভেংগে পরে সোহার্থ । টেনে হিচরে রক্ত মাংশ খেয়েছে জানোয়ারটা । জানাজা দাফন শেষ করে সোহার্থ রুমে ফিরে । বার বার কান্না করছে সে , সারাদিন না খেয়ে আছে । সন্ধ্যার পর কথা আসে । অনেক রিকোয়েষ্ট করে কিছু খাবার খাওয়ায় সোহার্থকে । কথা সোহার্থকে মনে মনে ভালোবাসে , যদিও সোহার্থ সেটা জানে না । রাত হলে চলে যায় কথা । তারপর বারান্দায় বসে সারারাত সিগারেট খায় সোহার্থ ।
সকাল সকাল চলে আসে অনিক সোহার্থের কাছে সাথে আসে আরাত্রিকা ।
অনিক ঃ দোস্ত নাস্তা করেছিস ?
সোহার্থ ঃ না । ফ্রিজে ব্রেড এর পুডিং রাখা আছে খেয়ে নে ।
অনিক ঃ দোস্ত ও আরাত্রিকা ।
সোহার্থ ঃ নাইস টু মিট ইউ আরাত্রিকা।
আরাত্রিকা ঃ আমি সব জানি , গতকাল আপনার .........।।
সোহার্থ ঃ জি । আচ্ছা বসুন । অনিক উনাকে নাস্তা দে ।
বলে সোহার্থ বারান্দায় চলে যায় , সিগারেট ধরিয়ে টানোট থাকে ।অনিক আর আরাত্রিকা চলে যায় । তার কিছুখন পরেই কথা আসে । গত রাতের মতই অনেক চেষ্টার পর সোহার্থকে নাস্তা করায় । তারপর কথা চলে যায় । দুপুর ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পরে । সেই ঘুম ভাংগে বিকেলে । ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে রবিন্দ্র সরবরে আসে সোহার্থ ।
জায়গাটা তার অনেক পছন্দের । সাবরিনের ও তাই ছিল । এক কোনায় বসে সিগারেট খাচ্ছে সোহার্থ । হটাৎ পিছন থেকে
আরাত্রিকা ঃ কেমন আছেন আপনি ?
সোহার্থ পিছনে তাকিয়ে
সোহার্থ ঃ জি ভাল । আপনি এখানে ?
আরাত্রিকা ঃ এইতো এক বন্ধুর সাথে আসছিলাম । তারপর ও ওর বিএফের সাথে সামনে গেলো আর আমি একা একা হাটছিলাম ।
সোহার্থ ঃ ওহ । আপনার বিএফকে নিয়ে আসতেন ।
আরাত্রিকা ঃ আমার বিএফ নাই । আচ্ছা আমি কি আপনার পাশে বসতে পারি ?
সোহার্থ ঃ বসেন ।
আরাত্রিকা ঃ আপনার মন খুব খারাপ তাই না ?
সোহার্থ ঃ হুম ঃ
আরাত্রিকা ঃ আচ্ছা এমন যদি হয় যে ওই পিশাচ আপনাকে আর আমাকেউ সাবরিনের মত মেরে ফেলে , দুনিয়ার সব মানুষকেই মেরে ফেলে । এমনটা কি হতে পারে ?
সোহার্থ ঃ কখনই না । তার আগেই আমি ওদের খুন করে ফেলবো ।
আরাত্রিকা ঃ হাহাহাহা তাই । আপনি পারবেন ওদের সাথে ।
এভাবেই কিছুখন কথা বলে ওরা তারপর চলে যায় একসময় । রাতে রুমে ফিরে দেখে কথা এসে বসে আছে ।
কথা ঃ দুপুরে খেয়েছিলে ?
সোহার্থ ঃ নাহ ।
কথা ঃ কেনো খাওনি ?
সোহার্থ ঃ ভালো লাগছিল না ।
কথা ঃ আচ্ছা আমি খাবার নিয়ে এসেছি । খেয়ে নাও ।
সোহার্থ ঃ এখন খাবো না , খেতে ইচ্ছে করছে না ।
কথা ঃ আমি খাইয়ে দেই ?
সোহার্থ ঃ না থাক ।
কথা ঃ না তোমাকে আমি এখন খায়িয়ে দিব আর তোমাকে খেতে হবে ।
কথা সোহার্থকে খায়িয়ে দেয় । তারপর চলে যায় । যাওয়ার আগে ১টা চকলেট বক্স দিয় যায় আর বলে চকলেট গুলো খেয়ে নিতে ।
রাত অনেক হয়েছে । বারান্দায় বসে আছে সোহার্থ । নির্জন চারিপাশ । মাঝে মাঝে দু একটি গাড়ি আর হটাৎ হটাৎ মানুষ যাচ্ছে । কিছুখন পর সোহার্থের মনে হয় কেউ একজন চিৎকার করছে । কে করছে চিৎকার দারিয়ে সেটা খোজার চেষ্টা । বাসা থেকে নিচে নামে সোহার্থ । রাস্তায় গিয়ে দেখে ৩জন পুলিশ কি জেন কথা বলছে আর খুব চিন্তিত ।
সোহার্থ ঃ ভাই একটু আগে এখানে চিৎকারের শব্দ পেলাম । কি হয়েছে ?
একজন পুলিশ ঃ ভাই পত্রিকায় তো নিশ্চয় পরেছে যে কয়েকদিন যাবত নগরী তে লাশ পাওয়া যাচ্ছে ।
সোহার্থ ঃ হ্যা ।
পুলিশ ঃ আসলে এক আজব দানব এসেছে শহরে । ওরা মানুষ খাচ্ছে । আমারা নিজের চোখে দেখছি । ঐ দেখেন
সোহার্থ তাকিয়ে দেখে ২জন মানুশ আকৃতির জানোয়ার যাদের চোখ আর মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে , হাতের নখ বড় , এলো মেলো চুল একজন মানুশের গলায় কামর দিয়ে রক্ত খাচ্ছে ।
সোহার্থ ঃ আরে লোকটা দাপাচ্ছে , বেচে আছে এখনো । চলেন লোকটাকে বাচাই ।
পুলিশ ঃ আরে না । আমাদের পরে আক্রমন করবে ।
সোহার্থ ঃ কিচ্ছু হবে না । আপনারা আমার সাথে আসুন তো ।
তারপর সোহার্থ হাতের সিগারেট জালিয়ে চিৎকরে ওইদিকে ছুটে যায় । পিশাচ ২টো সোহার্থের দিকে তাকিয়ে থাকে , পুলিশ ৩টাও শিপনের পিছনে ছুটে আসে । পিশাচ ২টো আস্তে আস্তে হেটে গিয়ে অন্ধকারে মিশে যায় ।
সোহার্থ লোকটিকে নিয়ে হসপিটালে ভর্তি করে । অবস্থা আসংকা জনক ।
পিশাচ ২টো কোথায় আছে জানতে ইচ্ছে করে না আপনাদের ? কি বা করে তারা ? আচ্ছা আমিই বলছি ।
ট্যানারীপট্টির একটা ডোবার পাশে থাকে রাতে । দিনে মিশে যায় মানুষের সাথে সাধারন মানুষের সাথে । তবে রাত হলে সেই ছদ্দরুপ আর ধরে রাখতে পারে না । ফুটে উঠে পিশাচের রুপ । নাতাশা আর নেহাল পিশাচ দম্পতি । পৃথিবীতে তাদেরকে পাঠানো হয়েছে তাদের রাজ্য থেকে । রাজ্যের নাম কলংকপুর । সেখানকার রাজার পুত্র নেহাল , আর নাতাশা নেহালে স্ত্রী ।
নেহাল ঃ আজ আর পেট পুরে খেতে পেলাম না ।
নাতাশা ঃ হ্যা । লোকটা এসে সব নষ্ট করে দিল ।
নেহাল ঃ একটু পরেই ভোড় হবে । ধুর আজ সারাদিন খিদে পেটে থাকতে হবে । ব্যাটার খোজ খবর নিতে হবে আজ । ঘাড় মটকে খাবো বদের হাড্ডীটার ।
নাতাশা ঃ পরের টা পরে দেখা যাবে । এখন বলো কিভাবে আমরা এই দেশটাকে আমাদের আস্তানা বানাতে পারবো ?
নেহাল ঃ বাবার সাথে দেখা করতে হবে । আচ্ছা শুনো , আমি কাল কলংকপুরে যাই । রাত হওয়ার আগেই চলে আসবো ।
নাতাশা ঃ আচ্ছা ঠিক আছে ।
রাতে আর ঘুম হয়নি সোহার্থের । সারারাত ভেবেছে পিশাচ রা কত কষ্ট দিয়েই না মেরেছে সাবরিন কে । এই ব্যাটাদের একটা ব্যাবস্থা তাকেই করতে হবে , এই সপথ নেই সে । অনিক কে ফোন দিয়ে আসতে বলে । অনিক আসে , সাথে আসে আরাত্রিকা ।
অনিক ঃ দোস্ত কি রে এতো জরুরী তলব ?
সোহার্থ ঃ তুই আজ পত্রিকা পরিস নি ?
অনিক ঃ না আজ এখনো পরা হয় নাই ।
সোহার্থ ঃ এই প্রযন্ত ১০৭ জনের জীবন গেছে এই পিচাশের থাবায় । আমাদের কিছু ১টা করতে হবে ।
অনিক ঃ কি করবো আমরা ?
আরাত্রিকা ঃ কি বলো এই সব । প্লিজ তোমরা এই সবে যাবে না । তোমরা তো পারবে না ওদের সাথে ।
সোহার্থ ঃ অবশ্যই পারবো , চেষ্টা করলে বৃথা যাবে না ।
অনিক ঃ আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোর সাথে আছি । ঐ এটা কি ?
সোহার্থ ঃ চকলেট বক্স । কাল রাতে কথা দিয়ে গেছিল ।
অনিক চকলেট বক্সটা খুলে চকলেট বের করে । চকলেটের সাথে ১টা চিঠিও বের হয় , যেটায় কথা তার ভালোবাসার কথা লিখে রাখে । চিঠিটা পরে অনিক সোহার্থ কে জানায় । চিঠি পরার পর থেকেই আরাত্রিকার মন খারাপ ।
চলে যায় অনিক আর আরাত্রিকা । সোহার্থ ভাবতে থাকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায় এই পিশাচদের কাছে থেকে ।
পরেরদিন রাতের কথা । সোহার্থ ১টা বই নিয়ে এসেছে নিলক্ষেত থেকে । পিশাচ সম্পর্ক্কে কালোজাদুর ১টা বই । বারান্দায় লাইট জালিয়ে বইটা পরছিল । এমন সময় আবার সেই চিৎকার । তবে এবার বেশ কয়েকজনের আর চিৎকার টা এই বিল্ডিং থেকেই আসছে । দৌড় দিয় নিচে নামে সোহার্থ । একদম নিচতালার বারান্দায় ছটফট করতে করতে মারা গেলো ১টা ছেলে । পাশে বসে কাদছে তার অন্য রুমমেট রা একটু পরে পাসের বাসা থেকে আবার সেই চিৎকার । এর পর সোহার্থ অন্যদের সংগে নিয়ে ছুটে যায় পাসের বাড়িতে । ওদের দেখে পিচাশ রা পালিয়ে যেতে থাকে , সোহার্থও পিছনে দৌড় দেয় । কিছুদুর যাওয়ার পর হারিয়ে যায় পিচাশরা । সোহার্থ খুজতে থাকে কিন্তু আসে পাশে সুধুই অন্ধকার । হটাৎ পিছন থেকে ১টা পিচাশ এসে কিছু ১টা দিয়ে আঘাত করে সোহার্থের মাথা । অজ্ঞ্যান হয়ে যায় সে । কুৎসিত হাসিতে হেসে উঠে ১টা পিচাশ । এখনি সে সোহার্থের রক্ত দিয়ে রক্ত স্নানে মেতে উঠবে , শরীরের কাচা মাংশ ছিরে খাবে । কাচা গিলবে সোহার্থের কলিজা ।
নেহাল ধির পায়ে এগিয়ে যায় সোহার্থের দিকে । এখনি রাক্ষসী থাবা দিবে নেহাল , আর সেই মুহূর্তে নাতাশা এসে নাহালকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ।
নাতাশা ঃ তুমি ওর কোন ক্ষতি করতে পারবে না ।
নেহাল ঃ কেনো পারবো না ।
নাতাশা ঃ পারবে না বলছি তাই পারবে না ।
নেহাল ঃ এর জন্ন্য আমি আজ দিয়ে ২দিন শিকার মিস করছি । আজ ওকে খাবোই আমি । (বলে নেহাল ওকে খেতে যায় )
নাতাশা ঃ (নেহালকে আবার ধাক্কা দিয়ে ফেলে) তুমি ওর কিচ্ছু করতে পারবে না ।
নেহাল ঃ শাকচুন্নির কি মাইনষের জন্য প্রেম জাগছেনি ?
নাতাশা ঃ প্রেম কিনা জানিনা । ওর কোন ক্ষতি হতে দিবনা আমি ।
নেহাল ঃ নাতাশা সাবধান । ওল্টা পালটা কিছু কুরলে তোকে মেরেই ফেলবো আমি ।
নেহাল আর নাতাশার কথা কাটাকাটির সময় পুলিশ চলে আসে । দেখে পালিয়ে অন্ধকারে মিশে যায় পিশাচ দম্পত্তি । পুলিশ সোহার্থকে তুলে নিয়ে হসপিটালে নিয়ে যায় । সকালে সবাই দেখতে আসে । কথাও আসে । কিছুক্ষন আগেই জ্ঞ্যান ফিরেছে ।
কথা ঃ তুমি কেনো এভাবে একা বিপদে পরতে যাও বলতো ?
সোহার্থ কোন উত্তর দেয় না । শুধু মনে মনে বলে * আমার সাবরিনের খুনি কে আমি নিজ হাতে মারবো , যদি মরতে হয় তবুও *
অনিক হাসপাতালের সব বিল মিটিয়ে এসেছে । এখন সোহার্থকে নিয়ে যাবে বাসায় । গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় আরাত্রিকার সাথে দেখা হয় । সেও সোহার্থকে দেখতে এসেছে । আরাত্রিকাকে কথা সহ্য করতে পারে না। মেয়েটা সোহার্থের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে ।
আরাত্রিকা ঃ এখন কি অবস্থা তোমার ?
সোহার্থ ঃ জি ভাল ।
আরাত্রিকা ঃ আপনি শুধু শুধু ওদের সাথে লাগতে যচ্ছেন , আমাদের পক্ষে কি ওদের সাথে পেরে উঠা সম্ভব ?
কথা ঃ মিস আরাত্রিকা , আমার মনে হয় এখন এইসব কথা বলার সময় না । ওর রেষ্ট দরকার ।
আরাত্রিকা ঃ ওহ হ্যা ঠিক । সরি । চলুন ।
এরপর সোহার্থকে বাসায় নিয়ে যায় । বাসায় গিয়ে ঘুম দিয়ে বিকেলের দিকে উঠে । উঠে দুপুরের খাবার খেয়ে সেই বই টা নিয়ে বসে । #পিশাচ । বিকেল থেকে রাত প্রযন্ত বই টা পরে । মনে হয় সারারাতই পরবে ।
ওই দিকে নেহাল আর নাতাশার মধ্যে শুরু হয় ঝামেলা
নেহাল ঃ তোমার সমস্যা টা কি ?
নাতাশা ঃ আমার কোন সমস্যা নেই ।
নেহাল ঃ তাহলে ঐ মানুষটাকে খেতে দিলে না কেন ?
নাতাশা ঃ এমনি । মায়া হচ্ছিল ।
নেহাল ঃ কি !!!!! মানুষের জন্য মায়া ? তোমার লক্ষন আমার ভালো লাগছে না । কালই বাবাকে জানাতে হবে ।
নাতাশা ঃ যা ইচ্ছে জানাও । তবে এখন চলো খাবারের সন্ধ্যানে । আজ তোমাকে আমি এক জায়গায় নিয়ে যাবো । চলো ।
এরপর নাতাশা নেহালকে নিয়ে যায় কথা দের বাসায় । কথা নিজের রুমে টেবিলে বসে পরছিল ।
নাতাশা ঃ নেহাল , আজ ঐ মেয়ে মানুষটা কে খাবো । তুমি থাকো এখানে , আমি ব্যাবস্থা করে তোমাকে ডাকছি

নাতাশা এর পর কথার বাসার দরজা নক করে । কথা নিজেই দরজা খুলে ।
কথা ঃ তুমি এতো রাতে ? আমার বাসা চিনলে কিভাবে ?
আরাত্রিকা ঃ কথা খুব বড় ১টা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে । সোহার্থ ............।।
কথা ঃ কি হয়ছে সোহার্থের ? বলো
আরাত্রিকা ঃ ওকে পিশাচ রা ............ তুমি আমার সাথে চলো ।
কথা ঃ কি । এক্ষনি চলো ।
এরপর কথা আরাত্রিকার পিছনে পিছনে ছুটে চলে । আরাত্রিকা কথাকে ১টা পার্কের ভিতর নিয়ে যায় ।
কথা ঃ এখানে নিয়ে এলে কেনো ? সোহার্থ কোথায় ?
আরাত্রিকা ঃ দারাও , এখানেই ছিল । তুমি এইপাশটা খুজো , আমি এই পাশে খুজি ।
এই বলে ২জন ২দিকে চলে যায় সোহার্থকে খুজতে । একটু পরেই একজন আরেক জনকে দেখতে পায় না ।
কে জেনো কথা পিছনে আসছে । একজন না , ২জন আসছে পায়ের শব্দ তাই বলছে । ধিরে ধিরে তারা সামনে আসে । খুব কুৎসিত চেহারার ২জন । ২জনের চোখ দিয়ে রক্ত ঝরছে । গায়ের পশম গুলো কালো আর বড় বড় ।
কথা ঃ আপনারা কে ? সোহার্থথথথথথথ............ আরাত্রিকাাাাাাাাাাাা বলে চিৎকার করে ডাকে ।
নেহাল ঃ এই মেয়ে চুপ । একদম চিৎকার করবি না । নাতাশা ওর মুখটা বন্ধ করার ব্যাবস্থা করো তো ।
নাতাশা ঃ হ্যা শোনা ।
নাতাশা কথার কাছে আসতে থাকে । কথা দৌড় দেয় । বেশি খন সে দৌড়ে পারে না । নেহাল তার চুল টেনে ধরে । নাতাশা কাছে এসে কথা কে ইচ্ছে মত গালে চর মারে ।
নেহাল ঃ কি করছো তুমি নাতাশা । মানুশদের মত ধিরে ধিরে মারছো কেন ?
নাতাশা ঃ আমার সাধ মিটাতে দাও । ডিস্টার্ব করবে না ।
নাতাশা কথা চল ধরে টেনে ফেলে দেয় । মাথা ইট দিয়ে আঘাত করে । আবার চুল টানলে মাথার চামরা সহ চুল উঠে আসে । চিৎকার করে উঠে কথা ।
নেহাল ঃ তুমি পাগল হয়ে গেছো নাতাশা । চিৎকার শুনে আরো মানুষ জন আসবে । তারপর কাল ও না খেয়ে থাকতে হবে ।
নাতাশা ঃ আচ্ছা আমি ওর কথা বন্ধ করে দিচ্ছি ।
নাতাশা কথা কে মাটিতে শিয়ে ফেলে ওর উপর বসে আবার গালে জোরে জোরে চর মারে , তারপর ওর গলার কাছে মুখ নিউএ প্রথমে ছোট ১টা কাপর দেয় । কথা তখন বুঝতে পারে তার জীবন শেষের দিকে । সে সুধু ১টা কথাই বলে খুব নিচু স্বরে
কথা ঃ আমার সোহার্থের প্লিজ কোন ক্ষতি করো না ।
কথার কথা শুনে নাতাশা যেন আরো ক্ষ্রিপ্ত হয়ে যায় । জোরে করে আরেকটা চর মেরে কথা গলায় কামর দিয়ে তার গলার রগ ছিরে ফেলে । তারপর শুরু করে রক্ত খাওয়া । নাতাশার পর নেহাল খায় কথার রক্ত । রক্ত পর্ব শেষে টেনে ছিরে ছিরে খায় কথার মাংশ এই পিশাচ দম্পত্তি । খাওয়া শেষ হয় আর ভোরের পাখিও ডাকা শুরু করে ।
সকাল সকাল অনিক সোহার্থের মেসে এসে হাজির
সোহার্থ ঃ কি রে আজ আবার কার মৃত্যুর খবর নিয়ে আসলি ?
অনিক ঃ মানে কি ঃ
সোহার্থ ঃ প্রতিদিন ই তো কেউ না কেউ মরছে ।
অনিক ঃ মরছে না, মারছে ।আজ কথা কে শেষ করে দিল ।
সোহার্থ ঃ কিহ ! কি বলিস তুই এইসব ।
অনিক ঃ হ্যা সত্ত্যি । পার্কে ওর ক্ষত বিক্ষত লাশ পরে ছিল । পুলিশ এখন লাশ ওদের বাড়িতে নিয়ে গেছে । চল ।
সোহার্থের চোখে পানি চলে আসে । টিশার্ট টা পরে চলে কথার বাসায় । এইতো গতকাল রাতেই কথার দেওয়া চকলেট বক্সটা খুলে জানতে পারে কথার ভালোবাসার কথা , আর আজ কথা নেই ।
বিকেলে জানাজা শেষ করে রুমে আসে সোহার্থ আর অনিক । ফ্রেশ হয়ে টিভি ওপেন করে অনিক । টিভিতে ব্রেকিং নিউজ ।
** ঢাকায় পিচাশের আক্রমনে একদিনে ৩০জন নিহিত **
সোহার্থ সোহার্থ দেখ টিভিতে ব্রেকিং নিউজ । পিচাশ তো ঢাকা দখল করে ফেলতেছে ।দেখ কি হচ্ছে । পিচাশ গুলো গলায় কামর দিয়ে রক্ত খেয়ে মেরে ফেলছে মানুষ গুলো । আর যারা বেছে যাচ্ছে কোন মতে তারাও নাকি কিছুখন পর পিচাশ হয়ে যাচ্ছে । পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে ।এখন কি হবে ।
সোহার্থ ঃ আচ্ছা আমার বইটা কোথায় ?
অনিক ঃ কোন বই ? আর এখন বই দিয়ে কি করবি ?
সোহার্থ ঃ আরে পিচাশ কাহিনি বই টা । ঐখানে এর থেকে উদ্ধারের সমাধান দেওয়া আছে ।
এর পর অনিক আর সোহার্থ খোজাখুজি করে । টেবিলের উপরেই ছিল বইটা ।
অনিক ঃ এই বইটা ?
সোহার্থ ঃ হ্যা ।
বই টা সোহার্থ হাতে নেয় । পাতা উল্টাতে থাকে । শেষের দিকে ১টা পৃষ্টা তে মনোযোগ দেয় ।
সোহার্থ ঃ এই দেখ অনিক । এখানে সমাধান দেওয়া আছে ।কোন পুরোনো শ্বষান থেকে হাড় যোগার করতে হবে । আর সিদূর লাগবে । আর কাচা লোহার গরা কোন দা দিয়ে পিচাশের মাথার মাঝখানে আঘাত করে মারতে হবে । ও মরে গেলে বাকি গুলা একাই মরে যাবে । হাড় আমাদের পিচাশেড় আক্রমন থেকে বাচাবে , সিদুর দিয়ে চক্র করে পিচাশকে আটকাতে হবে । সিদুরের চক্র থেকে বের হতে পারবে না ।
অনিক ঃ এতে কাজ হবে বন্ধু ?
সোহার্থ ঃ আশা রাখি । আর আসল পিচাশ টার এক কান থাকবে না । আমি ঐ পিচাশ টা দেখেছি । আমাকে ঐ পিচাশটাই মারতে চেয়েছিল ।
অনিক ঃ তাহলে প্রথমে আমাদের এগুলা যোগার করতে হবে । চল এখনি বের হয়ে পরি । যত আগে কাজ টা করতে পারবো তত বেশি মানুষকে বাচাতে পারবো ।
সোহার্থ ঃ পুরান ঢাকায় শ্বষান আছে । আর ঐখানে পুজার শিদুর ও পাওয়া যাবে ।
অনিক ঃ চল তো ।
এরপর বের হয় । তখন সন্ধ্যা পেরিয়ে প্রায় রাত । রাস্তা ঘাট একদম ফাকা ।
অনিক ঃ আমি জিবনে ঢাকার রাস্তা এমন ফাকা দেখি নাই ।
সোহার্থ ঃ এর আগে কখনো পিচাশ দেখেছিস ?
অনিক ঃ না ।
সোহার্থ ঃ এখন তো দেখতেছিস । দেখ সামনে ১টা লোক । চল দেখি তো কি করে ।
অনিক ঃ আগে চল তো পুরান ঢাকায় ।
সোহার্থ ঃ হয়তো কোন বিপদে পরেছে ।
দুজনে এগিয়ে যায় । কাছে যেতে হতবাক হয়ে যায় । লোকটার গলার দিকে কাটা , রক্ত বের হচ্ছে । এদিক ওদিক তাকিয়ে কিছু খুজছে । ১টা কুকুর দেখে তারা করে , কিছু দূর গিয়ে ধিরে ফেলে কুকুরটা কে । তারপর আর কি । কুকুরের রক্ত খায় , মাংশ খায় । অনিক দেখে বমি করে দেয় । কি ভয়াবহ অবস্থা । ওরা ওইখান থেকে সরে যায় । রওনা হয় পুরান ঢাকার দিকে । রাস্তা দিয়ে হেটে হেটে যাচ্ছে । মাঝে মাঝে আরো ২টা পিচাশ দেখতে পায় যারা কিনা মানুষ ছিল । কয়েকবার তারা করে সোহার্থ আর অনিককে ।
শ্বষান এ পোছে যায় । খুব ভুতুরে পরিবেশ ।
সোহার্থ ঃ শোন । হাড় উঠানোর সময় আমাদের আসে পাশে অনেক কিছু আসতে পারে । আক্রমন ও করবে কিন্তু কিচ্ছু হবে না । ভয় পাবি না । ভয় পেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে ।
অনিক ঃ ঠিক আছে ।
সোহার্থ শ্বষান এর যেখানে সৎকার করা হয় সেখানে গিয়ে খুজতে থাকে । অনিক ও এসে খুজে । সোহার্থ ১টা অর্ধ পোড়া হাড় পেয়ে যায় । তুলে নেয় হাতে ।
অনিক ঃ দোশ্ত দেখ চারপাশ থেকে কত কুকুর আমাদের দিকে তেরে আসছে ?
সোহার্থ ঃ ওইগুলা কুকুর না । অতৃপ্ত আত্তা । এই শ্বষানে থাকে ।
অনিক ঃ কি বলিশ তুই এইসব ? এখন কি আমাদের মেরে ফেলবে নাকি ?
সোহার্থ ঃ না , তবে ভয় পাওয়া যাবে না ।
অনিক ঃ আমার তো ভয় করছে
সোহার্থ ঃ আমি তোর সাথেই আছি ভয় পাস না ।
সোহার্থ অনিকের হাত ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে । অতৃপ্ত আত্তা গুলো একটু পর পর বিভিন্ন রুপ ধারন করছে , একবার কুকুর , একবার বাঘ , সাপ , ঘোড়া । হটাৎ বেশ জোরে ঝোরো হাওয়া শুরু হয় । যেন উরিয়ে নিয়ে যাবে ওদের ।
সোহার্থ ঃ দোস্ত আমার হাত শক্ত করে ধরে আগা । ভয় পাইস না , আমাদের কিছুই হবে না ।
অনিক ঃ দোস্ত আমি আর ভয় পাচ্ছি না । চল আগাই , সবাই কে তো বাচাতে হবে ।
দুজনে দুজনের হাত শক্ত করে ধরে । আগাতে থাকে । অনেক বাতাসে এগুতে হয় । বার বার পরে যায় কিন্তু হাত ছারে না । এক সময় শ্বষান থেকে বের হয়ে যায় । বাতাশ কমে যায় । আত্তা গুলো বিরাল হয়ে ওদের পিছু পিছু কিছুদুর আসে ।
অনিক ঃ এবার শিদুর ।
সোহার্থ ঃ আমি ওইটা শ্বষান এর মন্দির থেকে নিয়ে এসেছি । রাখ এটা তোর কাছে ।
অনিক ঃ দ্যাটস মাই গুড বয় । আচ্ছা চল শাখারী পট্টিতে ১টা কামারের দোকান আছে । ওইখান থেকে দা নিয়ে আসি ?
সোহার্থ ঃ চল ।
আবার হাটা শুরু করে । পৌছেও যায় দোকানে । কিন্তু এখন তো রাত দোকান বন্ধ । পাশেই কামারের বাসা সেখানে গিয়ে অনেক কিছু বলে তার বাসা থেকেই ১টা কাচা লোহার কাচি নিয়ে রওনা দেয় ।
বাইরে বের হয়ে দেখে ২টা মানুশী পিচাশ ১টা মানুষকে মেরে তার মাংশ খাচ্ছে । সোহার্থ দের দেখে তাদের দিকে তেরে আসে ।
অনিক ঃ দোস্ত পালা
সোহার্থ ঃ নাহ । দেখি হাড় টা কাজ করে কি না ।
পিচাশ টা প্রায় কাছে চলে আসলে সোহার্থ পকেট থেকে হাড় বের করে । হাড় বের করার সাথে সাথে পিচাশ ২টো পরে যায় । তখনি আবার উঠে পিছন দিকে চলে যায় ।
অনিক ঃ কাজ হয়ছে ।
সোহার্থ ঃ এখন আমরা প্রস্তুত । এখন ওই ২জন আমাদের সামনে আসলে হয় ।
অনিক ঃ হাটতে থাকি । চলে আসবে ।
হাটতে হাটতে চলে আসে সাবরিন দের বাসার পাশে । সেখান থেকে
সোহার্থ ঃ চল দোস্ত সাবরিনের কবরের ঐখানে যাই । ওকে খুব মিস করছি রে ।
অনিক ঃ চল পাগলা ।
সাবরিনের কবরের সামনে আসে । দারিয়ে কিছুখন কাদে তারপর কবর যেয়ারত করে গোরস্থান থেকে বের হয়ে আসে ।
হাটতে থাকে এমন সময় পিছন থেকে একজন সোহার্থের কাধে হাত রাখে
সোহার্থ ঃ কে ? (পিছনে তাকিয়ে দেখে সেই পিচাশ টা যে কিনা এর আগে সোহার্থ কে আগাত করেছিল , ওর মাথায় ১টা লাল দাগ । তার মানে এটাই মেইন পাপি )
নেহাল ঃ আমি নেহাল । পিচাশ রাজ্য কলংকপুরের রাজপুত্র ।
সোহার্থ ঃ ও তুমিই সে , যে কিনা আমাদের শেষ করে দিচ্ছ ?
নেহাল ঃ হ্যা , বলতে পারো । এইতো এখন তোমাদের খাবো ।আরো আগেই তোমাকে খেতাম , কিন্তু আমার বউটা কেনো জানি সেদিন তোমাকে বাচিয়ে দিল ।
সোহার্থ ঃ দেখো আমাদের দিকে আসবে না , তাহলে তোমার খবর আছে ।
নেহাল ধিরে ধিরে এগিয়ে যায় সোহার্থের দিকে , কাছে গিয়ে ফেলে দেয় সোহার্থকে । জাপটা জাপটি শুরু হয় । কামর দিতে যায় সোহার্থের গলায় আর এই সময় নাতাশা এসে নেহালকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ।
নেহাল ঃ আজও তুমি এসেছো ?
নাতাশা ঃ আমি তোমাকে বলেছিলাম যে তুমি ওর কিছু করবে না ।
নাহাল ঃ আমি ওকে খাবো । দেখি তুমি কি করো । ( নেহাল আবার সোহার্থের দিকে এগিয়ে যায়)
নাতাশা এবার নাহালকে পিছন থেকে আঘাত করে । তারপর ২জনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয় । নাতাশা নেহাল কে কাবু করে ফেলে , মাটিতে শুয়িয়ে ফেলে । হটাৎ নেহাল মাটি থেকে ছোট ১টা কাঠের টূকরা নাতাশার পেটে ধুকিয়ে দেয় , ধিরে ধিরে নিস্তেজ হয়ে পরে নাতাশা ।
সোহার্থ পকেট থেকে হাড় টা বের করে নেহালের সামন ধরলে নেহাল ভয়ে পিছনে চলে যায়। সোহার্থ নাতাশার কাছে আসে আর অনিক বুদ্ধু করে শিদুর দিয়ে নেহালের চারপাশে সার্কেল একে বন্দি করে ফেলে ।
সোহার্থ ঃ তুমি পিচাশ হয়েও আমার জীবন বাচানোর জন্ন্য জীবন দিলে । কেনো ?
নাতাশা ঃ ভালোবাসার জন্ন্য অনেক কিছুই করা যায় ।
সোহার্থ ঃ কে তুমি ?
নাতাশা তার রুপ বদল করে । আরাত্রিকার রুপে ফিরে আসে ।
সোহার্থ ঃ আরাত্রিকা তুমি ?
আরাত্রিকা ঃ হ্যা আমি আরিত্রিকা আমিই নাতাশা । আমি সাবরিন আর কথাকে মেরে ফেলছি । আমি তোমাকে ভালোবেশে ফেলেছি । যেদিন তোমাকে প্রথম দেখি সেদিনি তোমার প্রেমে পরে যাই । কিন্তু আমি তো পিচাশ আর তুমি মানুষ । সাবরিন আর কথা তোমাকে চাইতো তাই আমি ওদের মেরে ফেলি । আমাকে ক্ষমা করে দিও ।
কথা গুলো বলেই আরাত্রিকা সোহার্থের হাত ধরে , পুরো নিস্তেজ হয়ে যায় ।
অনিক ঃ সোহার্থ সময় বেশি নেই । পিচাশ টা কে আমি বন্দি করেছি ।
সোহার্থ কাচি টা এক হাতে আর এক হাতে হাড় টা নিয়ে সার্কেলে ঢুকে । কিছুখন নেহাল এর সাথে জাপরাজাপরি করে । নেহাল হাড়টার কাছে অসহায় হয়ে পরে , সুজোগ বুঝে সোহার্থ নেহালের মাথা কাচি দিয়ে ২খন্ড করে ফেলে । মরে যায় নেহাল , ধংশ হয় পিচাশ ষরযন্ত্র , মুক্তি পায় মানুষ জাতী পিচাশ দম্পতির মরন থাবা থেকে ।
সমাপ্ত
পুরো গল্পটাই আমার কল্পনা । এর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই । আমার লেখা গল্প যদি ভালো লাগে তাহলে প্লিজ গল্পটি অবশ্যই শের করবেন । আমার পেজটিও লাইক দিবেন আশা করি ।
আমার লেখা আরো গল্প পরতে চাইলে আমার পেইজ টি লাইক দিতে পারেন ।
https://www.facebook.com/arshipon15/

#পিশাচ দম্পতি
পর্ব - ১ (এক)
লেখা ঃ Sh Ip On

ধুর বেটা ভাললাগে না , তুই কি তোর বাসা থেকে নামবি কিনা বলতো ?
দোস্ত এতো রাতে বের হলে বাবা আর বাসায় ঢুকতে দিবে না ।
- ¬তারমানে তুই বের হবি না । আচ্ছা আমি আজ একাই চাদ দেখবো ।
ঐ সালা আমি কি তোর গার্লফ্রেন্ড যে তুই আমাকে নিয়ে বের হবি , আমার বাসার নিচে আয় ।
এই হলো সোহার্থ আর অনিকের কথোপকথন ।সোহার্থ প্রায় রাতেই বের হয় রতের ঢাকা দেখতে । আর সংগী হয় অনিক , যদিও বেশিরভাগ সময়ই অনিচ্ছাকৃত । আজও বের হয়েছে । অনিকের বাসার সামনে ।
অনিক ঃ আসতে এতো সময় লাগে ?
সোহার্থ ঃ তুই তোর বাসা থেকে নামছিস আর আমি ১৭টা বাড়ি পার করে এসেছি ।চল সামনে যাই ।
অনিক ঃ আচ্ছা আজ হটাৎ আবার বের হলি কেন ? মন খারাপ নিশ্চয় ?
সোহার্থ ঃ হুম । বিড়ি আনছিস ?
অনিক ঃ হ্যা । আব্বুর একবন্ধু আব্বুওকে ১ কার্টুন সিগারেট গিফট করছে । ঐখান থেকে ১প্যাকেট নিয়ে আসছি ।
সোহার্থ ঃ এইতো আমার গুড গার্ল ।
অনিক ঃ ঐ হারামী আমি গুড গার্ল ? ……… আচ্ছা মন খারাপ কেন আগে সেটা বল ?
সোহার্থ ঃ সাবরিনের সাথে ঝগরা হয়েছে । ব্রেকাপ ।
অনিক ঃ আবার । এবার দিয়ে ৬৪বার হলো । এইবার আর আমি মিটমাট করতে পারবো না ।
সোহার্থ ঃ তোর মিটমাট করতে হবে না । চল আজ সাবরিন দের বাসায় ঢেল মেরে জানলার কাচ ভাংগবো ।
অনিক ঃ সত্ত্যি দোস্ত । এইধরনের বিটলামি করতে আমার সেই লাগে । তাইলে চল ।
এরপর ২ বিটল সাবরিন দের বাসার সামনে গিয়ে হাজির হয় । ইটের ঢিল মেরে ভেঙ্গে ফেলে ২তালার সাবরিনের বাবার রুমের জানালা । টের পেয়ে দারোয়ান বেশ খানিক দৌ্রের উপর রাখে সোহার্থ আর অনিককে । সাবরিনের বাবা আজ সাবরিনকে বলে দিয়েছে যে সে জেনো আর সোহার্থের সাথে কোন সম্পর্ক না রাখে । সোহার্থ বলতে গেলে এতিম , বাবা মা অনেক আগেই মারা গিয়েছে আর চাচা সব সম্পত্তি নিজের নামে করে নিয়ে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে সোহার্থকে । তাই সাবরিনের বাবা কোন এতিম ছেলের হাতে তার মেয়েকে দিবে না । আর সাবরিনও বাধ্য সন্তানের মত ব্রেকয়াপ করে । তবে মনে হয় না সে সোহার্থের সাথে কথা না বলে থাকতে পারবে । ২জনই তো ২জনকে অনেক ভালোবাশে ।
অনিক ঃ দোস্ত আর দৌড়াতে পারবো না রে । একটু থাম প্লিজ ।
সোহার্থ ঃ আমিও ।
অনিক ঃ তোর ফোন বাজে ।
সোহার্থ ঃ দারা সাবরিন ফোন দিছে ।
হ্যালো ব্রেকাপ গার্ল
সাবরিন ঃ তুমি এইকাজ টা কেন করলা ?
সোহার্থ ঃ আমি আবার কি করলাম ?
সাবরিন ঃ কি করলাম মানে ? আমি বারান্দায় বসে সব দেখেছি । এইটা ঠিক করো নাই ।
সোহার্থ ঃ যা করছি ভালো করছি ।
সাবরিন ঃ আন্ডা ভালো করছেন আপনি ? অনেক রাত হয়েছে , বাসায় যাও । কাল লেকে যাবো , দেখা হবে ।
সোহার্থ ঃ জি মহারানী ।
ফোন টা কেটে পকেটে রাখে সোহার্থ ।
অনিক ঃ কি মহারাজ , অভিমান পর্ব শেষ ?
সোহার্থ ঃ হুম । চল বাসায় গিয়ে ঘুমাবো ।
অনিক ঃ হুম । আজ তোর মেসে থাকবো । বাসায় গেলে বাপে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবে ।
হেটে যাচ্ছে ২জন । এমন সময় পিছনে চিৎকারের শব্দ শুনতে পায় ওরা । চিৎকারের উৎস খুজতে পিছনে দৌড় দেয় ওরা ২জন । বুঝতে পারে পাশের গলি থেকে আসছে আর্তনাদ । ঢুকে পরে গলিতে । গলির শেষ মাথায় দেখতে পায় , যা দেখে সেটা দেখে নিজের চোখকে বিশ্বআস করতে পারছে না । হাত পা কাপছে । ওদের দেখে সামনে ২জন পালিয়ে যায় । এগিয়ে যায় সোহার্থ আর অনিক । দুজনেরই হাত পা কাপছে । চিৎকার বন্ধ হয়ে গেছে । সামনে পরে আছে ক্ষত বিক্ষত একটি নথর দেহ । একটু আগে ২জন লোক এই লাশ থেকে মাংশ ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছিল ।
অনিক ঃ দোশ্ত এখানে আর একমুহুর্ত ও থাকা ঠিক হবে না । চল ।
সোহার্থ ঃ কি বলিশ তুই এইসব > একটা লাশ এভাবে রেখে চলে যাবো ?
অনিক ঃ হ্যা । কারন সে মৃত । বেচে থাকলে কিছু চেষ্টা করতাম । চল এখন । এখানে থেকে নতুন করে কোন বিপদে পরতে চাই না ।
এর পর চলে আসে তারা । বাসায় এসে বমি করতে থাকে অনিক । পরের দিন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । ।
বিকেলে সাবরিন আর সোহার্থ দেখা করে লেকে ।
সাবরিন ঃ তোমার মন খুব খারাপ তাই না ? আমি তোমাকে ছেরে যাবো না বাবু , আমি তোমাকে ছেরে বাচতে পারবো না ।
সোহার্থ ঃ সাবরিন আমার মনে হয় তোমার বাবাই ঠিক । আমি তোমার যোগ্য না । আমার উচিত তোমার থেকে দূরে সরে যাওয়া ।
সাবরিন ঃ জান প্লিজ এভাবে বলে না । আমার খুব কষ্ট হয় ।
সোহার্থ ঃ কষ্ট হলেও এটাই সত্ত্যি । প্রথম প্রথম এমন লাগবে । পরে ঠীক হয়ে যাবে ।
কথাগুলো বলেই সোহার্থ উঠে চলে যায় । সাবরিন কিছু খন একা একা কেদে ফিরে যায় বাসায় ।
রাতে সুস্থ হয়ে উঠে অনিক ।বাসায় নিয়ে আসে ।
পরেরদিন
দুপুর ২টা বাজে । অনিক ফোন দেয় সোহার্থকে ।
অনিক ঃ দোস্ত পত্রিকা পরেছিস ?
সোহার্থ ঃ না। কেনো ?
অনিক ঃ পত্রিকায় দেখ , শিরোনামে এসেছে * নগরীতে আরো ৪টি সহ মোট ৯টি বিভৎস লাশ *
সোহার্থ ঃ তাই কি বলিশ এই সব ?
অনিক ঃ ময়না তদন্ত করে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না যে কিভাবে মানুষ গুলির এই হাল হলো । কিন্তু আমরা তো জানি ।
সোহার্থ ঃ তুই আমার বাসায় আয় ।
অনিক ঃ আচ্ছা আসতেছি ।
রাস্তায় আসার সময় একটা মেয়ের সাথে পরিচয় হয় অনিকের । অনিক সচরাচর মেহেদের সাথে কথা বলে না । কিন্তু কেনো জানি আজ হটাৎ করে এই মেয়েটার সাথে যেচে অনেক কথা বললো । বন্ধুত্ব হয়ে গেলো ২জনের ।
সোহার্থের মেসে চলে এসেছে অনিক
অনিক ঃ দোস্ত জানিশ আজ তো আকাশের পরি মাটিতে নেমে এসেছে ।
সোহার্থ ঃ কেন তোম পরিমনি কি ছিনেমা করা ফেলে রেখে কোমর দুলিয়ে তোর সাথে নাচতে এসেছে ?
অনিক ঃ আরে না । মেয়েটির নাম আরাত্রিকা ।
সোহার্থ ঃ আরাত্রিকা ? এটা কোন মানুষের নাম ?
অনিক ঃ নাহ , এটা তো পরির নাম ।
সোহার্থ ঃ তুই কি মেয়েটার প্রেমে ট্রেমে পরিছিস ?
অনিক ঃ হ্যা দোস্ত ।
সোহার্থ ঃ শালা তুই ও শেষ । আচ্ছা যেটা বলতে চাই ছিলি ।
অনিক ঃ ওহ হা আ। মানুষ গুলোকে কোন জানোয়ার মেরে খাচ্ছে । দোস্ত আমি খুব রোমান্টিক মুডে আছি সো আজ আর এইসব বলে মন খারাপ করতে চাচ্ছি না । আমি চলে যাই কাল কথা হবে ।
সাবরিন বেশ কয়েকবার ফোন দেই সোহার্থের ফোনে কিন্তু ফোন পিক করে না । রাতে ১টা এসএমএস পাঠায় সাবরিন * তুমি এমন করতে থাকলে হয়তো আমি মারায় যাবো , প্লিজ আমাকে বাচাও শোনা *
এসএমএস পরে বেশ কিছুখন কাদে সোহার্থ , আর ভাবে নিজের অযোগ্যতার কথা । একসময় ঘুমিয়ে পরে । খুব ভোড়ে অনিক সোহার্থের মেসে আসে । ঘুম থেকে উঠায় সোহার্থকে ।
সোহার্থ ঃ কি রে এতো সকালে তুই ?কি হয়েছে ?
অনিক ঃ দোস্ত , সাবরিন ।
সোহার্থ ঃ কি হয়েছে সাবরিনের ? (বলেই ফোন হাতে নেয় সাবরিনকে ফোন দেওয়ার জন্য)
অনিক ঃ সাবরিন মারা গেছে ,
সোহার্থ ঃ হোয়াট ? ও সুইসাইড করেছে ।
অনিক ঃ না । বাসার ছাদে ওর ক্ষত বিক্ষত লাশ পরে ছিল । আমাকে কথা ফোন দিয়ে রাতে জানায় , তারপর আমি ওদের বাসায় গিয়ে শিওর হই ।
সোহার্থ দৌড় দেয় , অনিক ও পিছু পিছু ।
অনিক ঃ না । বাসার ছাদে ওর ক্ষত বিক্ষত লাশ পরে ছিল । আমাকে কথা ফোন দিয়ে রাতে জানায় , তারপর আমি ওদের বাসায় গিয়ে শিওর হই ।
সোহার্থ দৌড় দেয় , অনিক ও পিছু পিছু ।
সাবরিন দের বাসায় এসে ওর লাশ দেখে কান্না ভেংগে পরে সোহার্থ । টেনে হিচরে রক্ত মাংশ খেয়েছে জানোয়ারটা । জানাজা দাফন শেষ করে সোহার্থ রুমে ফিরে । বার বার কান্না করছে সে , সারাদিন না খেয়ে আছে । সন্ধ্যার পর কথা আসে । অনেক রিকোয়েষ্ট করে কিছু খাবার খাওয়ায় সোহার্থকে । কথা সোহার্থকে মনে মনে ভালোবাসে , যদিও সোহার্থ সেটা জানে না । রাত হলে চলে যায় কথা । তারপর বারান্দায় বসে সারারাত সিগারেট খায় সোহার্থ ।
সকাল সকাল চলে আসে অনিক সোহার্থের কাছে সাথে আসে আরাত্রিকা ।
অনিক ঃ দোস্ত নাস্তা করেছিস ?
সোহার্থ ঃ না । ফ্রিজে ব্রেড এর পুডিং রাখা আছে খেয়ে নে ।
অনিক ঃ দোস্ত ও আরাত্রিকা ।
সোহার্থ ঃ নাইস টু মিট ইউ আরাত্রিকা।
আরাত্রিকা ঃ আমি সব জানি , গতকাল আপনার .........।।
সোহার্থ ঃ জি । আচ্ছা বসুন । অনিক উনাকে নাস্তা দে ।
বলে সোহার্থ বারান্দায় চলে যায় , সিগারেট ধরিয়ে টানোট থাকে ।অনিক আর আরাত্রিকা চলে যায় । তার কিছুখন পরেই কথা আসে । গত রাতের মতই অনেক চেষ্টার পর সোহার্থকে নাস্তা করায় । তারপর কথা চলে যায় । দুপুর ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পরে । সেই ঘুম ভাংগে বিকেলে । ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে রবিন্দ্র সরবরে আসে সোহার্থ ।
জায়গাটা তার অনেক পছন্দের । সাবরিনের ও তাই ছিল । এক কোনায় বসে সিগারেট খাচ্ছে সোহার্থ । হটাৎ পিছন থেকে
আরাত্রিকা ঃ কেমন আছেন আপনি ?
সোহার্থ পিছনে তাকিয়ে
সোহার্থ ঃ জি ভাল । আপনি এখানে ?
আরাত্রিকা ঃ এইতো এক বন্ধুর সাথে আসছিলাম । তারপর ও ওর বিএফের সাথে সামনে গেলো আর আমি একা একা হাটছিলাম ।
সোহার্থ ঃ ওহ । আপনার বিএফকে নিয়ে আসতেন ।
আরাত্রিকা ঃ আমার বিএফ নাই । আচ্ছা আমি কি আপনার পাশে বসতে পারি ?
সোহার্থ ঃ বসেন ।
আরাত্রিকা ঃ আপনার মন খুব খারাপ তাই না ?
সোহার্থ ঃ হুম ঃ
আরাত্রিকা ঃ আচ্ছা এমন যদি হয় যে ওই পিশাচ আপনাকে আর আমাকেউ সাবরিনের মত মেরে ফেলে , দুনিয়ার সব মানুষকেই মেরে ফেলে । এমনটা কি হতে পারে ?
সোহার্থ ঃ কখনই না । তার আগেই আমি ওদের খুন করে ফেলবো ।
আরাত্রিকা ঃ হাহাহাহা তাই । আপনি পারবেন ওদের সাথে ।
এভাবেই কিছুখন কথা বলে ওরা তারপর চলে যায় একসময় । রাতে রুমে ফিরে দেখে কথা এসে বসে আছে ।
কথা ঃ দুপুরে খেয়েছিলে ?
সোহার্থ ঃ নাহ ।
কথা ঃ কেনো খাওনি ?
সোহার্থ ঃ ভালো লাগছিল না ।
কথা ঃ আচ্ছা আমি খাবার নিয়ে এসেছি । খেয়ে নাও ।
সোহার্থ ঃ এখন খাবো না , খেতে ইচ্ছে করছে না ।
কথা ঃ আমি খাইয়ে দেই ?
সোহার্থ ঃ না থাক ।
কথা ঃ না তোমাকে আমি এখন খায়িয়ে দিব আর তোমাকে খেতে হবে ।
কথা সোহার্থকে খায়িয়ে দেয় । তারপর চলে যায় । যাওয়ার আগে ১টা চকলেট বক্স দিয় যায় আর বলে চকলেট গুলো খেয়ে নিতে ।
রাত অনেক হয়েছে । বারান্দায় বসে আছে সোহার্থ । নির্জন চারিপাশ । মাঝে মাঝে দু একটি গাড়ি আর হটাৎ হটাৎ মানুষ যাচ্ছে । কিছুখন পর সোহার্থের মনে হয় কেউ একজন চিৎকার করছে । কে করছে চিৎকার দারিয়ে সেটা খোজার চেষ্টা । বাসা থেকে নিচে নামে সোহার্থ । রাস্তায় গিয়ে দেখে ৩জন পুলিশ কি জেন কথা বলছে আর খুব চিন্তিত ।
সোহার্থ ঃ ভাই একটু আগে এখানে চিৎকারের শব্দ পেলাম । কি হয়েছে ?
একজন পুলিশ ঃ ভাই পত্রিকায় তো নিশ্চয় পরেছে যে কয়েকদিন যাবত নগরী তে লাশ পাওয়া যাচ্ছে ।
সোহার্থ ঃ হ্যা ।
পুলিশ ঃ আসলে এক আজব দানব এসেছে শহরে । ওরা মানুষ খাচ্ছে । আমারা নিজের চোখে দেখছি । ঐ দেখেন
সোহার্থ তাকিয়ে দেখে ২জন মানুশ আকৃতির জানোয়ার যাদের চোখ আর মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে , হাতের নখ বড় , এলো মেলো চুল একজন মানুশের গলায় কামর দিয়ে রক্ত খাচ্ছে ।
সোহার্থ ঃ আরে লোকটা দাপাচ্ছে , বেচে আছে এখনো । চলেন লোকটাকে বাচাই ।
পুলিশ ঃ আরে না । আমাদের পরে আক্রমন করবে ।
সোহার্থ ঃ কিচ্ছু হবে না । আপনারা আমার সাথে আসুন তো ।
তারপর সোহার্থ হাতের সিগারেট জালিয়ে চিৎকরে ওইদিকে ছুটে যায় । পিশাচ ২টো সোহার্থের দিকে তাকিয়ে থাকে , পুলিশ ৩টাও শিপনের পিছনে ছুটে আসে । পিশাচ ২টো আস্তে আস্তে হেটে গিয়ে অন্ধকারে মিশে যায় ।
সোহার্থ লোকটিকে নিয়ে হসপিটালে ভর্তি করে । অবস্থা আসংকা জনক ।
পিশাচ ২টো কোথায় আছে জানতে ইচ্ছে করে না আপনাদের ? কি বা করে তারা ? আচ্ছা আমিই বলছি ।
ট্যানারীপট্টির একটা ডোবার পাশে থাকে রাতে । দিনে মিশে যায় মানুষের সাথে সাধারন মানুষের সাথে । তবে রাত হলে সেই ছদ্দরুপ আর ধরে রাখতে পারে না । ফুটে উঠে পিশাচের রুপ । নাতাশা আর নেহাল পিশাচ দম্পতি । পৃথিবীতে তাদেরকে পাঠানো হয়েছে তাদের রাজ্য থেকে । রাজ্যের নাম কলংকপুর । সেখানকার রাজার পুত্র নেহাল , আর নাতাশা নেহালে স্ত্রী ।
নেহাল ঃ আজ আর পেট পুরে খেতে পেলাম না ।
নাতাশা ঃ হ্যা । লোকটা এসে সব নষ্ট করে দিল ।
নেহাল ঃ একটু পরেই ভোড় হবে । ধুর আজ সারাদিন খিদে পেটে থাকতে হবে । ব্যাটার খোজ খবর নিতে হবে আজ । ঘাড় মটকে খাবো বদের হাড্ডীটার ।
নাতাশা ঃ পরের টা পরে দেখা যাবে । এখন বলো কিভাবে আমরা এই দেশটাকে আমাদের আস্তানা বানাতে পারবো ?
নেহাল ঃ বাবার সাথে দেখা করতে হবে । আচ্ছা শুনো , আমি কাল কলংকপুরে যাই । রাত হওয়ার আগেই চলে আসবো ।
নাতাশা ঃ আচ্ছা ঠিক আছে ।
রাতে আর ঘুম হয়নি সোহার্থের । সারারাত ভেবেছে পিশাচ রা কত কষ্ট দিয়েই না মেরেছে সাবরিন কে । এই ব্যাটাদের একটা ব্যাবস্থা তাকেই করতে হবে , এই সপথ নেই সে । অনিক কে ফোন দিয়ে আসতে বলে । অনিক আসে , সাথে আসে আরাত্রিকা ।
অনিক ঃ দোস্ত কি রে এতো জরুরী তলব ?
সোহার্থ ঃ তুই আজ পত্রিকা পরিস নি ?
অনিক ঃ না আজ এখনো পরা হয় নাই ।
সোহার্থ ঃ এই প্রযন্ত ১০৭ জনের জীবন গেছে এই পিচাশের থাবায় । আমাদের কিছু ১টা করতে হবে ।
অনিক ঃ কি করবো আমরা ?
আরাত্রিকা ঃ কি বলো এই সব । প্লিজ তোমরা এই সবে যাবে না । তোমরা তো পারবে না ওদের সাথে ।
সোহার্থ ঃ অবশ্যই পারবো , চেষ্টা করলে বৃথা যাবে না ।
অনিক ঃ আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোর সাথে আছি । ঐ এটা কি ?
সোহার্থ ঃ চকলেট বক্স । কাল রাতে কথা দিয়ে গেছিল ।
অনিক চকলেট বক্সটা খুলে চকলেট বের করে । চকলেটের সাথে ১টা চিঠিও বের হয় , যেটায় কথা তার ভালোবাসার কথা লিখে রাখে । চিঠিটা পরে অনিক সোহার্থ কে জানায় । চিঠি পরার পর থেকেই আরাত্রিকার মন খারাপ ।
চলে যায় অনিক আর আরাত্রিকা । সোহার্থ ভাবতে থাকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায় এই পিশাচদের কাছে থেকে ।
পরেরদিন রাতের কথা । সোহার্থ ১টা বই নিয়ে এসেছে নিলক্ষেত থেকে । পিশাচ সম্পর্ক্কে কালোজাদুর ১টা বই । বারান্দায় লাইট জালিয়ে বইটা পরছিল । এমন সময় আবার সেই চিৎকার । তবে এবার বেশ কয়েকজনের আর চিৎকার টা এই বিল্ডিং থেকেই আসছে । দৌড় দিয় নিচে নামে সোহার্থ । একদম নিচতালার বারান্দায় ছটফট করতে করতে মারা গেলো ১টা ছেলে । পাশে বসে কাদছে তার অন্য রুমমেট রা একটু পরে পাসের বাসা থেকে আবার সেই চিৎকার । এর পর সোহার্থ অন্যদের সংগে নিয়ে ছুটে যায় পাসের বাড়িতে । ওদের দেখে পিচাশ রা পালিয়ে যেতে থাকে , সোহার্থও পিছনে দৌড় দেয় । কিছুদুর যাওয়ার পর হারিয়ে যায় পিচাশরা । সোহার্থ খুজতে থাকে কিন্তু আসে পাশে সুধুই অন্ধকার । হটাৎ পিছন থেকে ১টা পিচাশ এসে কিছু ১টা দিয়ে আঘাত করে সোহার্থের মাথা । অজ্ঞ্যান হয়ে যায় সে । কুৎসিত হাসিতে হেসে উঠে ১টা পিচাশ । এখনি সে সোহার্থের রক্ত দিয়ে রক্ত স্নানে মেতে উঠবে , শরীরের কাচা মাংশ ছিরে খাবে । কাচা গিলবে সোহার্থের কলিজা ।

নেহাল ধির পায়ে এগিয়ে যায় সোহার্থের দিকে । এখনি রাক্ষসী থাবা দিবে নেহাল , আর সেই মুহূর্তে নাতাশা এসে নাহালকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ।
নাতাশা ঃ তুমি ওর কোন ক্ষতি করতে পারবে না ।
নেহাল ঃ কেনো পারবো না ।
নাতাশা ঃ পারবে না বলছি তাই পারবে না ।
নেহাল ঃ এর জন্ন্য আমি আজ দিয়ে ২দিন শিকার মিস করছি । আজ ওকে খাবোই আমি । (বলে নেহাল ওকে খেতে যায় )
নাতাশা ঃ (নেহালকে আবার ধাক্কা দিয়ে ফেলে) তুমি ওর কিচ্ছু করতে পারবে না ।
নেহাল ঃ শাকচুন্নির কি মাইনষের জন্য প্রেম জাগছেনি ?
নাতাশা ঃ প্রেম কিনা জানিনা । ওর কোন ক্ষতি হতে দিবনা আমি ।
নেহাল ঃ নাতাশা সাবধান । ওল্টা পালটা কিছু কুরলে তোকে মেরেই ফেলবো আমি ।
নেহাল আর নাতাশার কথা কাটাকাটির সময় পুলিশ চলে আসে । দেখে পালিয়ে অন্ধকারে মিশে যায় পিশাচ দম্পত্তি । পুলিশ সোহার্থকে তুলে নিয়ে হসপিটালে নিয়ে যায় । সকালে সবাই দেখতে আসে । কথাও আসে । কিছুক্ষন আগেই জ্ঞ্যান ফিরেছে ।
কথা ঃ তুমি কেনো এভাবে একা বিপদে পরতে যাও বলতো ?
সোহার্থ কোন উত্তর দেয় না । শুধু মনে মনে বলে * আমার সাবরিনের খুনি কে আমি নিজ হাতে মারবো , যদি মরতে হয় তবুও *
অনিক হাসপাতালের সব বিল মিটিয়ে এসেছে । এখন সোহার্থকে নিয়ে যাবে বাসায় । গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় আরাত্রিকার সাথে দেখা হয় । সেও সোহার্থকে দেখতে এসেছে । আরাত্রিকাকে কথা সহ্য করতে পারে না। মেয়েটা সোহার্থের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে ।
আরাত্রিকা ঃ এখন কি অবস্থা তোমার ?
সোহার্থ ঃ জি ভাল ।
আরাত্রিকা ঃ আপনি শুধু শুধু ওদের সাথে লাগতে যচ্ছেন , আমাদের পক্ষে কি ওদের সাথে পেরে উঠা সম্ভব ?
কথা ঃ মিস আরাত্রিকা , আমার মনে হয় এখন এইসব কথা বলার সময় না । ওর রেষ্ট দরকার ।
আরাত্রিকা ঃ ওহ হ্যা ঠিক । সরি । চলুন ।
এরপর সোহার্থকে বাসায় নিয়ে যায় । বাসায় গিয়ে ঘুম দিয়ে বিকেলের দিকে উঠে । উঠে দুপুরের খাবার খেয়ে সেই বই টা নিয়ে বসে । #পিশাচ । বিকেল থেকে রাত প্রযন্ত বই টা পরে । মনে হয় সারারাতই পরবে ।
ওই দিকে নেহাল আর নাতাশার মধ্যে শুরু হয় ঝামেলা
নেহাল ঃ তোমার সমস্যা টা কি ?
নাতাশা ঃ আমার কোন সমস্যা নেই ।
নেহাল ঃ তাহলে ঐ মানুষটাকে খেতে দিলে না কেন ?
নাতাশা ঃ এমনি । মায়া হচ্ছিল ।
নেহাল ঃ কি !!!!! মানুষের জন্য মায়া ? তোমার লক্ষন আমার ভালো লাগছে না । কালই বাবাকে জানাতে হবে ।
নাতাশা ঃ যা ইচ্ছে জানাও । তবে এখন চলো খাবারের সন্ধ্যানে । আজ তোমাকে আমি এক জায়গায় নিয়ে যাবো । চলো ।
এরপর নাতাশা নেহালকে নিয়ে যায় কথা দের বাসায় । কথা নিজের রুমে টেবিলে বসে পরছিল ।
নাতাশা ঃ নেহাল , আজ ঐ মেয়ে মানুষটা কে খাবো । তুমি থাকো এখানে , আমি ব্যাবস্থা করে তোমাকে ডাকছি

নাতাশা এর পর কথার বাসার দরজা নক করে । কথা নিজেই দরজা খুলে ।
কথা ঃ তুমি এতো রাতে ? আমার বাসা চিনলে কিভাবে ?
আরাত্রিকা ঃ কথা খুব বড় ১টা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে । সোহার্থ ............।।
কথা ঃ কি হয়ছে সোহার্থের ? বলো
আরাত্রিকা ঃ ওকে পিশাচ রা ............ তুমি আমার সাথে চলো ।
কথা ঃ কি । এক্ষনি চলো ।
এরপর কথা আরাত্রিকার পিছনে পিছনে ছুটে চলে । আরাত্রিকা কথাকে ১টা পার্কের ভিতর নিয়ে যায় ।
কথা ঃ এখানে নিয়ে এলে কেনো ? সোহার্থ কোথায় ?
আরাত্রিকা ঃ দারাও , এখানেই ছিল । তুমি এইপাশটা খুজো , আমি এই পাশে খুজি ।
এই বলে ২জন ২দিকে চলে যায় সোহার্থকে খুজতে । একটু পরেই একজন আরেক জনকে দেখতে পায় না ।
কে জেনো কথা পিছনে আসছে । একজন না , ২জন আসছে পায়ের শব্দ তাই বলছে । ধিরে ধিরে তারা সামনে আসে । খুব কুৎসিত চেহারার ২জন । ২জনের চোখ দিয়ে রক্ত ঝরছে । গায়ের পশম গুলো কালো আর বড় বড় ।
কথা ঃ আপনারা কে ? সোহার্থথথথথথথ............ আরাত্রিকাাাাাাাাাাাা বলে চিৎকার করে ডাকে ।
নেহাল ঃ এই মেয়ে চুপ । একদম চিৎকার করবি না । নাতাশা ওর মুখটা বন্ধ করার ব্যাবস্থা করো তো ।
নাতাশা ঃ হ্যা শোনা ।
নাতাশা কথার কাছে আসতে থাকে । কথা দৌড় দেয় । বেশি খন সে দৌড়ে পারে না । নেহাল তার চুল টেনে ধরে । নাতাশা কাছে এসে কথা কে ইচ্ছে মত গালে চর মারে ।
নেহাল ঃ কি করছো তুমি নাতাশা । মানুশদের মত ধিরে ধিরে মারছো কেন ?
নাতাশা ঃ আমার সাধ মিটাতে দাও । ডিস্টার্ব করবে না ।
নাতাশা কথা চল ধরে টেনে ফেলে দেয় । মাথা ইট দিয়ে আঘাত করে । আবার চুল টানলে মাথার চামরা সহ চুল উঠে আসে । চিৎকার করে উঠে কথা ।
নেহাল ঃ তুমি পাগল হয়ে গেছো নাতাশা । চিৎকার শুনে আরো মানুষ জন আসবে । তারপর কাল ও না খেয়ে থাকতে হবে ।
নাতাশা ঃ আচ্ছা আমি ওর কথা বন্ধ করে দিচ্ছি ।
নাতাশা কথা কে মাটিতে শিয়ে ফেলে ওর উপর বসে আবার গালে জোরে জোরে চর মারে , তারপর ওর গলার কাছে মুখ নিউএ প্রথমে ছোট ১টা কাপর দেয় । কথা তখন বুঝতে পারে তার জীবন শেষের দিকে । সে সুধু ১টা কথাই বলে খুব নিচু স্বরে
কথা ঃ আমার সোহার্থের প্লিজ কোন ক্ষতি করো না ।
কথার কথা শুনে নাতাশা যেন আরো ক্ষ্রিপ্ত হয়ে যায় । জোরে করে আরেকটা চর মেরে কথা গলায় কামর দিয়ে তার গলার রগ ছিরে ফেলে । তারপর শুরু করে রক্ত খাওয়া । নাতাশার পর নেহাল খায় কথার রক্ত । রক্ত পর্ব শেষে টেনে ছিরে ছিরে খায় কথার মাংশ এই পিশাচ দম্পত্তি । খাওয়া শেষ হয় আর ভোরের পাখিও ডাকা শুরু করে ।

সকাল সকাল অনিক সোহার্থের মেসে এসে হাজির
সোহার্থ ঃ কি রে আজ আবার কার মৃত্যুর খবর নিয়ে আসলি ?
অনিক ঃ মানে কি ঃ
সোহার্থ ঃ প্রতিদিন ই তো কেউ না কেউ মরছে ।
অনিক ঃ মরছে না, মারছে ।আজ কথা কে শেষ করে দিল ।
সোহার্থ ঃ কিহ ! কি বলিস তুই এইসব ।
অনিক ঃ হ্যা সত্ত্যি । পার্কে ওর ক্ষত বিক্ষত লাশ পরে ছিল । পুলিশ এখন লাশ ওদের বাড়িতে নিয়ে গেছে । চল ।
সোহার্থের চোখে পানি চলে আসে । টিশার্ট টা পরে চলে কথার বাসায় । এইতো গতকাল রাতেই কথার দেওয়া চকলেট বক্সটা খুলে জানতে পারে কথার ভালোবাসার কথা , আর আজ কথা নেই ।
বিকেলে জানাজা শেষ করে রুমে আসে সোহার্থ আর অনিক । ফ্রেশ হয়ে টিভি ওপেন করে অনিক । টিভিতে ব্রেকিং নিউজ ।
** ঢাকায় পিচাশের আক্রমনে একদিনে ৩০জন নিহিত **
সোহার্থ সোহার্থ দেখ টিভিতে ব্রেকিং নিউজ । পিচাশ তো ঢাকা দখল করে ফেলতেছে ।দেখ কি হচ্ছে । পিচাশ গুলো গলায় কামর দিয়ে রক্ত খেয়ে মেরে ফেলছে মানুষ গুলো । আর যারা বেছে যাচ্ছে কোন মতে তারাও নাকি কিছুখন পর পিচাশ হয়ে যাচ্ছে । পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে ।এখন কি হবে ।
সোহার্থ ঃ আচ্ছা আমার বইটা কোথায় ?
অনিক ঃ কোন বই ? আর এখন বই দিয়ে কি করবি ?
সোহার্থ ঃ আরে পিচাশ কাহিনি বই টা । ঐখানে এর থেকে উদ্ধারের সমাধান দেওয়া আছে ।
এর পর অনিক আর সোহার্থ খোজাখুজি করে । টেবিলের উপরেই ছিল বইটা ।
অনিক ঃ এই বইটা ?
সোহার্থ ঃ হ্যা ।
বই টা সোহার্থ হাতে নেয় । পাতা উল্টাতে থাকে । শেষের দিকে ১টা পৃষ্টা তে মনোযোগ দেয় ।
সোহার্থ ঃ এই দেখ অনিক । এখানে সমাধান দেওয়া আছে ।কোন পুরোনো শ্বষান থেকে হাড় যোগার করতে হবে । আর সিদূর লাগবে । আর কাচা লোহার গরা কোন দা দিয়ে পিচাশের মাথার মাঝখানে আঘাত করে মারতে হবে । ও মরে গেলে বাকি গুলা একাই মরে যাবে । হাড় আমাদের পিচাশেড় আক্রমন থেকে বাচাবে , সিদুর দিয়ে চক্র করে পিচাশকে আটকাতে হবে । সিদুরের চক্র থেকে বের হতে পারবে না ।
অনিক ঃ এতে কাজ হবে বন্ধু ?
সোহার্থ ঃ আশা রাখি । আর আসল পিচাশ টার এক কান থাকবে না । আমি ঐ পিচাশ টা দেখেছি । আমাকে ঐ পিচাশটাই মারতে চেয়েছিল ।
অনিক ঃ তাহলে প্রথমে আমাদের এগুলা যোগার করতে হবে । চল এখনি বের হয়ে পরি । যত আগে কাজ টা করতে পারবো তত বেশি মানুষকে বাচাতে পারবো ।
সোহার্থ ঃ পুরান ঢাকায় শ্বষান আছে । আর ঐখানে পুজার শিদুর ও পাওয়া যাবে ।
অনিক ঃ চল তো ।
এরপর বের হয় । তখন সন্ধ্যা পেরিয়ে প্রায় রাত । রাস্তা ঘাট একদম ফাকা ।
অনিক ঃ আমি জিবনে ঢাকার রাস্তা এমন ফাকা দেখি নাই ।
সোহার্থ ঃ এর আগে কখনো পিচাশ দেখেছিস ?
অনিক ঃ না ।
সোহার্থ ঃ এখন তো দেখতেছিস । দেখ সামনে ১টা লোক । চল দেখি তো কি করে ।
অনিক ঃ আগে চল তো পুরান ঢাকায় ।
সোহার্থ ঃ হয়তো কোন বিপদে পরেছে ।
দুজনে এগিয়ে যায় । কাছে যেতে হতবাক হয়ে যায় । লোকটার গলার দিকে কাটা , রক্ত বের হচ্ছে । এদিক ওদিক তাকিয়ে কিছু খুজছে । ১টা কুকুর দেখে তারা করে , কিছু দূর গিয়ে ধিরে ফেলে কুকুরটা কে । তারপর আর কি । কুকুরের রক্ত খায় , মাংশ খায় । অনিক দেখে বমি করে দেয় । কি ভয়াবহ অবস্থা । ওরা ওইখান থেকে সরে যায় । রওনা হয় পুরান ঢাকার দিকে । রাস্তা দিয়ে হেটে হেটে যাচ্ছে । মাঝে মাঝে আরো ২টা পিচাশ দেখতে পায় যারা কিনা মানুষ ছিল । কয়েকবার তারা করে সোহার্থ আর অনিককে ।
শ্বষান এ পোছে যায় । খুব ভুতুরে পরিবেশ ।
সোহার্থ ঃ শোন । হাড় উঠানোর সময় আমাদের আসে পাশে অনেক কিছু আসতে পারে । আক্রমন ও করবে কিন্তু কিচ্ছু হবে না । ভয় পাবি না । ভয় পেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে ।
অনিক ঃ ঠিক আছে ।
সোহার্থ শ্বষান এর যেখানে সৎকার করা হয় সেখানে গিয়ে খুজতে থাকে । অনিক ও এসে খুজে । সোহার্থ ১টা অর্ধ পোড়া হাড় পেয়ে যায় । তুলে নেয় হাতে ।
অনিক ঃ দোশ্ত দেখ চারপাশ থেকে কত কুকুর আমাদের দিকে তেরে আসছে ?
সোহার্থ ঃ ওইগুলা কুকুর না । অতৃপ্ত আত্তা । এই শ্বষানে থাকে ।
অনিক ঃ কি বলিশ তুই এইসব ? এখন কি আমাদের মেরে ফেলবে নাকি ?
সোহার্থ ঃ না , তবে ভয় পাওয়া যাবে না ।
অনিক ঃ আমার তো ভয় করছে
সোহার্থ ঃ আমি তোর সাথেই আছি ভয় পাস না ।
সোহার্থ অনিকের হাত ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে । অতৃপ্ত আত্তা গুলো একটু পর পর বিভিন্ন রুপ ধারন করছে , একবার কুকুর , একবার বাঘ , সাপ , ঘোড়া । হটাৎ বেশ জোরে ঝোরো হাওয়া শুরু হয় । যেন উরিয়ে নিয়ে যাবে ওদের ।
সোহার্থ ঃ দোস্ত আমার হাত শক্ত করে ধরে আগা । ভয় পাইস না , আমাদের কিছুই হবে না ।
অনিক ঃ দোস্ত আমি আর ভয় পাচ্ছি না । চল আগাই , সবাই কে তো বাচাতে হবে ।
দুজনে দুজনের হাত শক্ত করে ধরে । আগাতে থাকে । অনেক বাতাসে এগুতে হয় । বার বার পরে যায় কিন্তু হাত ছারে না । এক সময় শ্বষান থেকে বের হয়ে যায় । বাতাশ কমে যায় । আত্তা গুলো বিরাল হয়ে ওদের পিছু পিছু কিছুদুর আসে ।
অনিক ঃ এবার শিদুর ।
সোহার্থ ঃ আমি ওইটা শ্বষান এর মন্দির থেকে নিয়ে এসেছি । রাখ এটা তোর কাছে ।
অনিক ঃ দ্যাটস মাই গুড বয় । আচ্ছা চল শাখারী পট্টিতে ১টা কামারের দোকান আছে । ওইখান থেকে দা নিয়ে আসি ?
সোহার্থ ঃ চল ।
আবার হাটা শুরু করে । পৌছেও যায় দোকানে । কিন্তু এখন তো রাত দোকান বন্ধ । পাশেই কামারের বাসা সেখানে গিয়ে অনেক কিছু বলে তার বাসা থেকেই ১টা কাচা লোহার কাচি নিয়ে রওনা দেয় ।
বাইরে বের হয়ে দেখে ২টা মানুশী পিচাশ ১টা মানুষকে মেরে তার মাংশ খাচ্ছে । সোহার্থ দের দেখে তাদের দিকে তেরে আসে ।
অনিক ঃ দোস্ত পালা
সোহার্থ ঃ নাহ । দেখি হাড় টা কাজ করে কি না ।
পিচাশ টা প্রায় কাছে চলে আসলে সোহার্থ পকেট থেকে হাড় বের করে । হাড় বের করার সাথে সাথে পিচাশ ২টো পরে যায় । তখনি আবার উঠে পিছন দিকে চলে যায় ।
অনিক ঃ কাজ হয়ছে ।
সোহার্থ ঃ এখন আমরা প্রস্তুত । এখন ওই ২জন আমাদের সামনে আসলে হয় ।
অনিক ঃ হাটতে থাকি । চলে আসবে ।
হাটতে হাটতে চলে আসে সাবরিন দের বাসার পাশে । সেখান থেকে
সোহার্থ ঃ চল দোস্ত সাবরিনের কবরের ঐখানে যাই । ওকে খুব মিস করছি রে ।
অনিক ঃ চল পাগলা ।
সাবরিনের কবরের সামনে আসে । দারিয়ে কিছুখন কাদে তারপর কবর যেয়ারত করে গোরস্থান থেকে বের হয়ে আসে ।
হাটতে থাকে এমন সময় পিছন থেকে একজন সোহার্থের কাধে হাত রাখে
সোহার্থ ঃ কে ? (পিছনে তাকিয়ে দেখে সেই পিচাশ টা যে কিনা এর আগে সোহার্থ কে আগাত করেছিল , ওর মাথায় ১টা লাল দাগ । তার মানে এটাই মেইন পাপি )
নেহাল ঃ আমি নেহাল । পিচাশ রাজ্য কলংকপুরের রাজপুত্র ।
সোহার্থ ঃ ও তুমিই সে , যে কিনা আমাদের শেষ করে দিচ্ছ ?
নেহাল ঃ হ্যা , বলতে পারো । এইতো এখন তোমাদের খাবো ।আরো আগেই তোমাকে খেতাম , কিন্তু আমার বউটা কেনো জানি সেদিন তোমাকে বাচিয়ে দিল ।
সোহার্থ ঃ দেখো আমাদের দিকে আসবে না , তাহলে তোমার খবর আছে ।
নেহাল ধিরে ধিরে এগিয়ে যায় সোহার্থের দিকে , কাছে গিয়ে ফেলে দেয় সোহার্থকে । জাপটা জাপটি শুরু হয় । কামর দিতে যায় সোহার্থের গলায় আর এই সময় নাতাশা এসে নেহালকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ।
নেহাল ঃ আজও তুমি এসেছো ?
নাতাশা ঃ আমি তোমাকে বলেছিলাম যে তুমি ওর কিছু করবে না ।
নাহাল ঃ আমি ওকে খাবো । দেখি তুমি কি করো । ( নেহাল আবার সোহার্থের দিকে এগিয়ে যায়)
নাতাশা এবার নাহালকে পিছন থেকে আঘাত করে । তারপর ২জনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয় । নাতাশা নেহাল কে কাবু করে ফেলে , মাটিতে শুয়িয়ে ফেলে । হটাৎ নেহাল মাটি থেকে ছোট ১টা কাঠের টূকরা নাতাশার পেটে ধুকিয়ে দেয় , ধিরে ধিরে নিস্তেজ হয়ে পরে নাতাশা ।
সোহার্থ পকেট থেকে হাড় টা বের করে নেহালের সামন ধরলে নেহাল ভয়ে পিছনে চলে যায়। সোহার্থ নাতাশার কাছে আসে আর অনিক বুদ্ধু করে শিদুর দিয়ে নেহালের চারপাশে সার্কেল একে বন্দি করে ফেলে ।
সোহার্থ ঃ তুমি পিচাশ হয়েও আমার জীবন বাচানোর জন্ন্য জীবন দিলে । কেনো ?
নাতাশা ঃ ভালোবাসার জন্ন্য অনেক কিছুই করা যায় ।
সোহার্থ ঃ কে তুমি ?
নাতাশা তার রুপ বদল করে । আরাত্রিকার রুপে ফিরে আসে ।
সোহার্থ ঃ আরাত্রিকা তুমি ?
আরাত্রিকা ঃ হ্যা আমি আরিত্রিকা আমিই নাতাশা । আমি সাবরিন আর কথাকে মেরে ফেলছি । আমি তোমাকে ভালোবেশে ফেলেছি । যেদিন তোমাকে প্রথম দেখি সেদিনি তোমার প্রেমে পরে যাই । কিন্তু আমি তো পিচাশ আর তুমি মানুষ । সাবরিন আর কথা তোমাকে চাইতো তাই আমি ওদের মেরে ফেলি । আমাকে ক্ষমা করে দিও ।
কথা গুলো বলেই আরাত্রিকা সোহার্থের হাত ধরে , পুরো নিস্তেজ হয়ে যায় ।
অনিক ঃ সোহার্থ সময় বেশি নেই । পিচাশ টা কে আমি বন্দি করেছি ।
সোহার্থ কাচি টা এক হাতে আর এক হাতে হাড় টা নিয়ে সার্কেলে ঢুকে । কিছুখন নেহাল এর সাথে জাপরাজাপরি করে । নেহাল হাড়টার কাছে অসহায় হয়ে পরে , সুজোগ বুঝে সোহার্থ নেহালের মাথা কাচি দিয়ে ২খন্ড করে ফেলে । মরে যায় নেহাল , ধংশ হয় পিচাশ ষরযন্ত্র , মুক্তি পায় মানুষ জাতী পিচাশ দম্পতির মরন থাবা থেকে ।
সমাপ্ত
পুরো গল্পটাই আমার কল্পনা । এর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই । আমার লেখা গল্প যদি ভালো লাগে তাহলে প্লিজ গল্পটি অবশ্যই শের করবেন । আমার পেজটিও লাইক দিবেন আশা করি ।
আমার লেখা আরো গল্প পরতে চাইলে আমার পেইজ টি লাইক দিতে পারেন ।
https://www.facebook.com/arshipon15/


পড়ীর সংসার



দোস্ত তুই প্লিজ ভেঙ্গে পরিস না । এইভাবে গিলতে থাকলে তো মারা পরবি তুই । প্লিজ থাম এখন ।
এভাবেই বলছিলো রিপন রাজেনকে । আজ রাজেনের প্রেমিকা মৌমিতার বিয়ে । গতকাল রাতেও মেয়েটি রাজেনকে কথা দিয়েছিল যে সে রাজেনের হবে, রাজেনের হাত ধরে পালিয়ে যাবে অনেক দূর । যেখানে কেউ তাদের এক হতে বাধা দিবে না । দুজুন মিলে ছোট্ট ১টা সংসার সাজাবে, ডজন খানেক বাচ্চা কাচ্চা হবে, আরো কত কি ।
কিন্তু সে আসায় গুরে বালি। মৌমিতা রাজেনকে ধোকা দিয়েছে। বিয়ে করে নিয়েছে পরিবারের পছন্দ করা ছেলে অনিককে । অনিক রাজেনের খুব কাছের বন্ধু হওয়া সত্ত্যেও সে জেনে শুনে এই কাজটা করল ।
খুব ভালোবাসতে মেয়েটাকে রাজেন । তাই কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছে না যে মৌমিতা এখন থেকে আর তার নয়, সে এখন অন্যকারো ঘরের বউ। আর এই কষ্ট চাপা দিতেই বন্ধুদের নিয়ে মদের আসর জমিয়েছে। রাজেন, রিপন, উত্তম, বাবু আর সারোয়ার মিলে খেয়েই চলছে । রাজেন একটু বেশি খাচ্ছে । কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলছে সে । তাই রিপন রাজেনকে আর গিলতে না করছে ।
এরমধ্যে সেখানে চলে আসে ইমন । ইমন দেশের বাইরে থাকে, কিছুদিন আগে দেশে ফিরেছে।
ইমন ঃ কি রে ! পাগলার কি হইছে ?
রিপন ঃ ফাইজলামি করিস না তো ইমন । ওর এমনিতেই বাজে অবস্থা , সারাদিন কোন খাবার খায় নাই আর এখন ঢক ঢক করে মদ গিলে অবস্থা কেরোসিন করে ফেলছে ।
ইমন ঃ জানি, উত্তম ফোন দিয়েছিল। তেতুলের আচার নিয়ে এসেছি । খাওয়া, ঠিক হয়ে যাবে ।
রিপন রাজেনকে আচার খাওয়ায় । কিছুখন পর ঠিক হয়ে যায় ।
রাত অনেক হয়ছে । একে একে সবাই চলে যেতে চায় । রিপন আর ইমন ছাড়া সবাই চলে গেছে ।
রিপন ঃ রাজেন এখন চল বাসায় যেতে হবে, রাত ১টা বাজে ।
রাজেন ঃ যা তোরা, আমি যাবো না কোথাও।
রিপন ঃ সারারাত কি এই খানে পরে থাকবি নাকি ? চল তোকে বাসায় দিয়ে আসি।
রাজেন ঃ আমি মৌমিতার কাছে যাবো।
রিপন ঃ মৌমিতার কাছে জাইতে হবে না , মৌমিতা এখন অনিকের সাথে বাসর করতেছে ।
ইমন ঃ রিপন তুই বাসায় যা, আমি ওর সাথে আছি ।
রিপন চলে যায় । রাজেন আর ইমন দুজনে
ইমন ঃ চল তোকে আজ স্বর্গে নিয়ে যাবো ।
রাজেন ঃ স্বর্গে ? কোন স্বর্গে ?
ইমন ঃ দুনিয়ার স্বর্গে , যেখনে তোর জন্য মৌমিতা অপেক্ষা করছে ।
রাজেন ঃ সত্যি বন্ধু ?
ইমন ঃ চল ।
রাজেন ঃ চল ।
ইমন রাজেন কে নিয়ে যায় দুনিয়ার স্বর্গে, সেখানে নাকি মৌমিতা আছে ।
রাজেন ঃ দোস্ত স্বর্গে আর কত দূরে ?
ইমন ঃ এইতো চলে এসেছি ।
রাজেন ঃ মৌমিতা কোথায় ?
ইমন ঃ ভিতরে ঢুক, শত শত মৌমিতা তোর জন্য অপেক্ষা করছে ।
ইমন রাজেনকে নিয়ে ১টা বাড়ির ভিতরে ঢুকে।
রাত ২টা বাজে, রাস্তা ঘাট সব ফাকা আর কোলাহল মুক্ত । তবে দুনিয়ার স্বর্গে এখনো মুখরিত অনেক মানুশের কন্ঠে ।
রাজেন ঃ দোস্ত এতো গুলা মৌমিতা কেনো এখানে ?
ইমন ঃ হুম সব গুলাই মৌমিতা । তোর যাকে ভালো লাগে তাকে নিয়ে যা ।
রাজেন ঃ নিয়ে যাবো ? বাড়িতে নিয়ে যাবো ?
ইমন ঃ শালা তোর ঘোর এখনো কাটে নাই ।
ইমন রাজেনকে তার পকেটে থাকা আরো কিছু আচার খায়িয়ে দেই ।
রাজেন ঃ আমি আমার মৌমিতার কাছে গেলাম।
রাজেনর ঘুম ভাংগে ১টা রুমে । ঘুম টা বেশি খনের হয়নি । রুমটা অপরিচিত পাশে ১টা মেয়ে বসে আছে । মেয়েটি বলল
মেয়ে ঃ ওই মিয়া টাকা কি তোমার বেশি হয়ছে ?
রাজেন মেয়েটির দিকে তাকিয়ে রইলো, অসম্ভব সুন্দর মেয়েটা। লাল রঙের ১টা শাড়ী, কালো ব্লাউজ, কপালে লাল টিপ, ঠোটে খয়েরি লিপিষ্টিক, চুল গুলো খোলা ।
রাজেনের এই অবাক তাকিয়ে থাকা দেখে মেয়েটি হেসে ফেলে ।
মেয়ে ঃ কি হয়ছে তোমার শোনা ? আমাকে দেখে কি পাগল হয়ে গেলা ?
রাজেনের হুশ ফিরলো। মেয়েটির কথার উত্তর দিল
রাজেন ঃ নাহ মানে , কে তুমি ? কি নাম তোমার ? আর আমিই বা এখানে কেনো ?
মেয়ে ঃ হাইরে আল্লাহ কত প্রশ্ন একসাথে করে রে ।
রাজেন ঃ তুমি ১টা ১টা করে প্রশ্নের উত্তর দাও
মেয়ে .ঃ আমার নাম পড়ি , আমি ১টা বেশ্যা । গতর বেইচ্চা খাই ।
রাজেন ঃ কিহ । তাহলে আমি এখানে কিভাবে ?
পড়ি ঃ ওই ছ্যাড়া তুমি এইখানে কেন আমি আমি কি কইরা বলবো । তোমার লগে তো আরেকজন আইছে ।
রাজেন ঃ ওহ হ্যা , মনে পরেছে । ইমন নিয়ে এসেছে আমাকে ।
পড়ি ঃ কে আনছে কেন আনছে আর কি দিয়া আনছে সেইটা যাইনা আমার লাভ নাই । এখন কি করবা করো ।
রাজেন ঃ কি করবো আমি ?
পড়ি ঃ ওরে কচি খোকা রে আমার । কিছু বুঝে না । টাকা দিয়ে বেশ্যা ভাড়া কইরা কয় কি করুম আমি ।
রাজেন ঃ শুনো, তুমি যেমন ভাবতেছো আসলে আমি তেমন না ।
পড়ি ঃ তো শোনা তুমি কেমন ?
রাজেন ঃ আজ আমার গার্ল ফ্রেণ্ডের বিয়ে হয়ে গেছে । মনটা খুব খারাপ ছিলো তাই আমার বন্ধু মনে আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে । আসলে আমি এমন না ।
পড়ি ঃ হুম। বুঝছি, তুমি ভালো ছেলে। ছ্যাকা খাইছো । আমিও খাইছি । আমার প্রেমিক আমাকে প্রেমে ফেলে বাসা থেকে পালাই নিয়ে আসে । তারপর এইখানে বিক্রি করে দেয় । আমিও তো এমন ছিলাম না, আমিও তোমার মতই ভদ্রছিলাম (কেদে দেয় পড়ি)
পড়ি কান্না করছে, এই কান্না খুব কষ্টের কান্না। রাজেন বুঝতে পারছে পড়ির খব কষ্ট হচ্ছে । রাজেন পড়ির কাছে গিয়ে ওর হাত ধরে বলে , হাত ধরার পর রাজেনের সারা শরীর সিউরে উঠলো। ওর হাতে এক আধ্যাতিক সুখ অনুভব করলো ।
রাজেন ঃ প্লিজ কাদবে না (পড়ির হাত ধরে) । বিধাতা কেন জানি আমাদের সাথে এমন করে বুঝিনা । এতো সুন্দর ১টা মেয়ে আর তাকে এনে এখানে ফেলে
পড়ি ঃ বাদ দেন । আজ তোমার মন খারাপ আবার এতো টাকা এইখানে দিছ । একটা কাজ করি । সময় তো আর বেশি নাই । আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুম পাড়িয়ে দেই । তোমার ভালো লাগবে ।না হয় কিছুখনের জন্য মনে করলে আমিই তোমার প্রেমিকা ।
রাজেনের নিজেরও ইচ্ছে করছিল পড়িকে একট স্পর্স করতে , সেই সুখ আরেকটু নিতে। তাই পড়ির কথা মত তাই করলো । ঘুমিয়ে পরলো একসময় ।
২দিন পরের কথা
রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছিল রাজেন , হটাৎ চোখ পরলো ১টা রিক্সায় । রিক্সা তে বসা অনিক আর মৌমিতা । খুব হাসাহাসি করছিল দুজনে । এমনকি এক সময় মৌমিতা অনিকের গালে চুমু খায় । এটা দেখার পর রাজেনের আকাশ যেন তার মাথায় ভেঙ্গে পরলো । যার জন্য সে এতো কষ্ট পাচ্ছে আর সে তো খুব ভালোই আছে । তারমানে মৌমিতা সুখেই আছে । মন খারাপ করে চলে যায় সেখান থেকে। রাতে রাজেন পড়ির কাছে আসে । ম্যানেজারের কাছ থেকে পড়িকে সারারাতের জন্য কিনে নেয় রাজেন।
পড়ি ঃ আরে ছ্যাকা খাওয়া বীর পুরুষ যে । কি খবর ? তুমি আবার এখানে কেনো ? এখানে ভদ্র ছেলেরা বেশি আসে না ।
রাজেন ঃ আমি তোমার কাছে এসেছি ।
পড়ি ঃ আমার কাছে ? আমার কাছে কেনো ? আমার কাছে সবাই যার জন্য আসে তুমি তো সেই কাজ করো না ।
রাজেন ঃ তোমার সাথে গল্প করবো। তোমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমাবো ।
পড়ি ঃ হা হা হা হা । আচ্ছা ঠিক আছে ।
রাজেন পড়িকে জরিয়ে ধরে । গল্প শুরু করে। জিবনের গল্প । রাজেনের গল্প, মৌমিতার গল্প, পড়ির গল্প। রাজেন কাদে , পড়ি কাদে । দুজন দুজনের বুকে মাথা রেখে সুখ খুজে পায়, হ্যা স্বর্গ সুখ ।
খুব কাছাকাছি দুজন, একজন আরেকজনের সাথে মিশে আছে । পড়িকে প্রতিদিন এইরকম অনেক পুরুষের সাথে এই বিছানায় শুতে হয়। কিন্তু আজকের মত এতো ভালো তার আগে কখনো লাগেনি। রাজেনকে জরিয়ে ধরে সে স্বর্গ সুখ পাচ্ছে। হারানো ভালোবাসার চেয়ে বেশি কিছু । রাজেনর ঠোট জোরা পড়ির ঠোট ছুয়ে যায়। সারা শরীর ঝাকি দিয়ে উঠে স্বর্গের অপার সুখে পড়ির । আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে রাজেনকে । ধিরে ধিরে দুজনে মত্ত হয়ে উঠে আদিম সেই খেলায় ।
ভোরে চলে আসে রাজেন । সারাদিন কাটে তার অন্যরকম এক আনন্দে । এত ভালো তার আগে কখনোই লাগেনি । সব কিছুই তার ভালো লাগছে । আর মিস করছে একজনকে। মৌমিতাকে ?? নাহ পড়িকে । ফোন নাম্বার নিয়ে এসেছিল । ফোন দেয় পড়িকে রাজেন । কথা বলে, ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলে ।
এভাবেই চলে কিছুদিন । ফোনে কথা আর মাঝে মাঝে দুনিয়ার স্বর্গে গিয়ে পড়ির সংগ নিয়ে আসে ।
পড়িও রাজেনকে খুব মিস করে । যদি রাজেন সারাখন তার পাশে থাকতো, গল্প করতো তার সাথে তাহলে কতই না ভালো লাগতো । কথা গুলো ভাবছিল পড়ি আর তখন ফোন দেয় রাজেন
পড়ি ঃ কেমন আছো ?
রাজেন ঃ ভালো, তুমি ?
পড়ি ঃ ভালো না, তোমাকে খুব মিস করছি ।
রাজেন ঃ আচ্ছা তুমি কেনো আমাকে মিস করছো ?
পড়ি ঃ জানিনা ।
রাজেন ঃ আমার মনে হয় তুমিও আমার মত প্রেমে পরেছো । মানে আমি তোমার আর তুমি আমার । ভালোবেশে ফেলেছি দুজন দুজনকে ।
পড়ি ঃ কি বলো এই সব । মোটেও না। (চোখ বেয়ে গলগল করে পানি ঝরছে)
রাজেন ঃ আমি সত্যিই বলছি । আমরা একজন আরেকজনের প্রেমে এখন অন্ধ আর আমাদের ভালোবাসা পবিত্র ।
পড়ি ঃ দেখো এটা কোন ভাবেই সম্ভব না । তুমি হয়তো ভুলে গেছো আমার পরিচয় । আমাকে সমাজ মেনে নিবে না ।
রাজেন ঃ আমি কিছুই ভুলি নাই । ভালোবাসা এইসব কিছু মানে না । শোন তুমি আজ ঐখান থেকে বেরিয়ে আসো । আমি তোমাকে নিতে আসতেছি । আজই আমরা বিয়ে করব ।
পড়ি ঃ তুমি পাগল হয়ে গেছো । মাথা ঠান্ডা করো ।
রাজেন ঃ আমার মাথা ঠান্ডাই আছে । আমি তোমাকে নিতে আসছি ।
আসছি বলেই ফোন রেখে দেয় রাজেন ।
পড়ি বুঝতে পারছে না কি করবে সে । রাজেনকে খুব বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু আবার ভয়ও হচ্ছে, এই সমাজ তো মেনে নিবে না তাদের সম্পর্ক । বিপদে পরবে ছেলেটা। আবার হারাতেও চাইনা সে রাজেনকে । রাজেনের মধ্যে সে তার নতুন জীবন খুজে পেয়েছে, আবার আলোর পথে ফিরে আসতে চায় ।
রাজেন চলে এসেছে , সাথে নিয়ে এসেছে উত্তম আর রিপনকে । ওদের অনেক কষ্টে আর অনেক কিছু বলে রাজি করিয়েছে । কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করে। তারপর উত্তম ১টা বাসা ম্যানেজ করে দেয়, সেখানে পড়িকে নিয়ে উঠে রাজেন । কথায় আছে মেয়েরা যখন জামাই এর ঘরে আসে তখন নাকি লক্ষি হয়ে আসে ,মানে রিজিক নিয়ে আসে । পড়িও তাই । পড়ির সাথে বিয়ের পরের দিন রাজেনের ভালো ১টা চাকরি হয় । ভালোই চলছিল তাদের সংসার ।
মাঝে মাঝে রাজেন তার বাড়িতে যেত। বাবা মার সাথে দেখা করে টাকা দিয়ে আসতো আর কোথায় থাকে জিজ্ঞাস করলে বলত যে সে ঢাকার বাইরে চাকরি করে ।
একদিন খুব ভোরে তাদের বাসায় রাজেনের বাবা মা আর চাচারা আসে । পড়ি দরজা খুলে দেয় । ভিতরে ঢুকে সবাই পড়িকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে , মারধোর করে । রাজেন প্রতিবাদ করলেও তাদের কাছে হেরে যায় । জোর করে রাজেনকে নিয়ে যায় তার বাবা-মা । আটকে রাখে তাকে ।
২দিন পর অনেক ঝামেলা করে ফিরে আসে রাজেন । ঘরের ভিতর থেকে দরজা লাগানো। অনেক বার কলিংবেল টেপার পরে ভিতর থেকে দরজা কেউ খুলছে না । দরজা ভেঙ্গে ফেলে রাজেন । বেড রুমে গিয়ে দারানো থেকে বস পরে , চিৎকার করে কান্না করে । তার সামনে পরে আছে পড়ির নিথর দেহ । সুইসাইড করেছে মেয়েটা । ছোট ১টা নোট লিখে গেছে রাজেনের জন্য ।
প্রিয় রাজেন, আমার জানের টুকরাটা
আমি চলে গেলাম পৃথিবী ছেরে, তাই বলে তোমাকে ছেরে না ।আমি তোমার সাথেই আছি, তোমার শরীর সাথে মিশে থাকবো । তুমি কি পারবে আমার স্পর্শ ভুলে যেতে ? পারবে না । আমি তোমার দেহেই বাস করব ।
তোমার প্রতি আমার চেয়ে তোমার বাবা-মার অধিকার বেশি। তাদের কাছ থেকে তোমাকে ছিনিয়ে নেওয়া ঠিক হবে না । আবার আমিও তোমাকে ছাড়া থাকতেও পারবো না । তাই এই সিদ্ধান্ত । ভুল কিছু করে থাকলে ক্ষমা করে দিও ।
তোমার হৃদয়হিনা
রাজেন ঘটনাটি সহজে মেনে নিতে পারে না । মানুষিক ভাবে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় । মাস ছয় হাসপাতালে থেকে ফিরে আসে সুস্থ হয়ে । সুস্থ হয় কারন সে তার পড়িকে ফিরে পেয়েছে । পড়ির অতৃপ্ত আত্তা তার কল্পনায় আসে । রাজেন আর পড়ি আবার সংসার শুরু করে । এখন আর কেউ তাদের ডিস্টার্ব করে না । রাজেনের মা পড়িকে দেখে না, রিপনও দেখে । শুধু রাজেন দেখে , রাজেন সংসার করে আর প্রতি রাতে জরিয়ে ধরে পড়ি শিতল স্পর্শে নিজেকে শিহরিত করে রাজেন । এভাবেই চলে পড়ির সংসার ।
সমাপ্ত
( পুরো গল্পটাই আমার কল্পনা । এর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই )
আমার লেখা আরো গল্প পরতে চাইলে আমার পেইজ টি লাইক দিতে পারেন ।
https://www.facebook.com/arshipon15/

বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

ভুত রাজ্য ভ্রমন


ভুত রাজ্য ভ্রমন
লেখা ঃ MD Asadur Rahman 

আইশা ঃ দোস্ত কি করিস রে তুই ?
সাজ্জাদ ঃ রান্না করছি । 
আইশা ঃ তুই রান্না করতেছিস , পারিস তুই রান্না করতে ?
সাজ্জাদ ঃ নাহ , আমি পারি না । ভুত এসে রান্না করে দেয় । জানিশ না ঢাকায় ভুতের সংখ্যা বেরে গেছে ।
আইশা ঃ সেটাই বলছিলাম আমি । দোস্ত চল আজ ভুত ধরতে যাবো ।
সাজ্জাদ ঃ কিহ । মাথা ঠিক আছে ? 
আয়শাঃ হ্যা । আমি আসতেছি তোর বাসায় । আর দেখি আর কাউকে নিয়ে আসা যায় কিনা ।
সাজ্জাদ ঃ বাসায় আসলে আয় , তবে ভুত টুতে আমি নাই ।
রাত ৮টার সময় ফোনে কথা হয় সাজ্জাদ আর আইশার । এরপর আইশা ফোন দেয় নওমিকে ।
নওমি ঃ কিরে গুলুগুলু হটাৎ ফোন দিলি । আমি তো ভেবেছিলাম তুই মরে ভুত হয়ে গেছিস । 
আইশা ঃ ওই তুই সব সময় আমার মৃত্য চাস কেরে বারবার , আমি তোর থেকে সুন্দর বেশি তাই বলে ।
নওমি ঃ হ্যা গো সুন্দরি পড়ি ।
আইশা ঃ ওকে শোন । তুই কি আজ রাতে বের হতে পারবি ?
নওমি ঃ কেনো ? 
আইশা ঃ ভুত খুজতে বের হবো ।
নওমি ঃ ওয়াও । আই লাইক এ্যাডভেঞ্চার । শোন দোস্ত , আমাদের বাসায় আজ গজার মাছ আনছে । আমি ওইটা নিয়ে আসবো । ভুতেরা গজার মাছ লাইক করে । পিঠা হলে আরো ভালো হত।
আইশা ঃ আচ্ছা যা যা লাগে তুই নিয়ে সাজ্জাদের বাসায় চলে আয় ।
১০টার দিকে আইশা সাজ্জাদের বাসায় আসে । এসে দেখে নওমি আগেই চলে এসেছে , সাথে তৌসিফ কে নিয়ে এসেছে । 
আইশা ঃ কি তোরা কখন আসলি ?
নওমি ঃ এইতো একটু আগেই । দোস্ত আমি গজার মাছ , ইলিশ মাছ ভাজা আর পিঠা নিয়ে এসেছি । আর সাথে তৌসিফকে দিয়ে সিদুর আনিয়েছি । শুনেছি এগুলা থাকলে নাকি ভুতে ধরে । সো ভুত আজ আমাদের কাছে আসতে বাধ্য ।
কথা শুনে সাজ্জাদ আর তৌসিফ হাসতে হাসতে গরাগরি ।
সাজ্জাদ ঃ হুম ভুতেরা এসে তোদের নিয়ে যাবে , তারপর বিয়ে করে বছর বছর বাচ্চা দিবে । হাহাহহাহাহহা
তৌসিফ ঃ ভুতেরা আসবে তোদের পিঠা খেতে তাই না ? এই সব কুসংস্কার কোথায় পাস রে তোরা ।
সাজ্জাদ ঃ আরে তুই জানিশ না , ওরা তো কোন এক ভুতের গল্প গ্রুপ এর মেম্বার কি জানি না ?
নওমি ঃ ভুত গোয়েন্দা ।
সাজ্জাদ ঃ হ্যা হ্যা ভুত গোয়েন্দা । ঐ ভুত গোয়েন্দাই তোদের মাথা খেয়েছে ।
আইশা ঃ চুপ , একদম চুপ । ভুত নিয়ে আর কোন কথা না । ভুতই সব । ডোন্ট আন্ডারইষ্টেমেড দ্যা পাওয়ার অব ভুত ।
নওমি ঃ তোরা বিশ্বাস করিস না তো ? আচ্ছা আজই প্রুভ হয়ে যাবে । চল আগে ।
তৌসিফ ঃ আচ্ছা । আজই প্রমান হবে , আর প্রমান করতে না পারলে জিবনে আর ভুত ভুত করবি না ।
রাত ১টার সময় বের হয় চারজন । সাথে আছে পিঠা, কাচা গজার মাছ, ইলিশ ভাজা আর সিদুর । আর তৌসিফের কাছে সিগারেট । তৌসিফ মাঝে মাঝে সিগারেট খায় । আজ সারারাত বাইরে থাকবে তাই আজ ও নিয়ে এসেছে । 
অনেকখন ধরে হাটছে ওরা । আজ রাস্তায় খুব কম মানুষজন । সচরাচর এতো কম মানুষ হয় না । 
হাটতে হাটতে প্রায় কাওরান বাজার চলে এসেছে কিন্তু ভুত পেত্নী আর প্রেতাত্তাদের দেখা নাই ।
সাজ্জাদ ঃ কিরে সকাল তো প্রায় হয়ে এলো, তোদের ভুত কই ?
আইশা ঃ আরে আসবে, আসবে । অপেক্ষ্যা কর ।
নওমি ঃ গাধি চুল বাধা থাকলে ভুত আসবে? চুল খোল ।
আইশা ঃ ও আচ্ছা ।
তৌসিফ ঃ হাইরে কপাল আমার ।
সাজ্জাদ ঃ আচ্ছা আজ রাস্তায় লোকজন খুব কম মনে হচ্ছে না ?
তৌসিফ ঃ হুম , ঠিক বলেছিস ।
নওমি ঃ ঈদের দিন মনে হচ্ছে । ঈদেও তো ঢাকা এমন ফাকা থাকে ।
কথা বলতে বলতে হেটে যাচ্ছে । এমন সময় সাজ্জাদ বলে 
সাজ্জাদ ঃ এই দেখ তো ওইখানে কিছু মানুশ দেখা যাচ্ছে না ?
নওমি ঃ কোথায় ? আমি তো দেখতে পাচ্ছি না ।
তৌসিফ ঃ ওই বিল্ডিংটার ওইখানে তো , হ্যা কিছু মানুষ মনে হচ্ছে ১টা দেয়াল ঠেলছে ।
আইশা ঃ হাহাহহাহা আজিব তো । পাগল মনে হয় এরা । তা না হলে কি আর কেউ বিল্ডিং ধাক্কায় । সাজ্জাদ ঃ অন্য কোন কাজও হতে পারে । চল সামনে গিয়ে দেখি ।
নওমি ঃ এই দারা । আমার জানি কেমন ভয় ভয় লাগছে । ভুত হতে পারে । চল ফিরে যাই ।
সাজ্জাত ঃ আবার ভুত । ভুত ভুত করবি না। আর হ্যা তোরা তো ভুতই দেখতে আসছিস । চুপ করে সামনে চল ।
আইশা ঃ হ্যা চল।
সামনের দিকে এগিয়ে যায় । কাছে গিয়ে দখে ৩জন লোক ১টা বিল্ডিং উপরে উঠানোর চেষ্টা করছে । 
আইশা ঃ দেখছিস তো , বলছিলাম না এরা পাগল ।
সাজ্জাত ঃ হ্যা , পাগল । চল ফিরে যাই । এই রাতে পাগলের সাথে পাগলামী করার ইচ্ছে নাই আমার । চল ।
সাজ্জাত, নওমি আর আইশা পিছনে ফিরে যাচ্ছিল , এমন সময় তৌসিফ ডাক দেই ওদের । বলে দেখে যা ।
সাজ্জাদ ঃ কি হইছে তোর আবার ?
তৌসিফ ঃ আমরা আজ বাসা থেকে কেনো বের হয়েছিলাম ?
নওমি ঃ ভুত দেখতে । কিন্তু পোরা কপালে ভুত নাই । চল বাসায় ফিরে যাবো ।
তৌসিফ ঃ ভুত ধরা দিয়েছে । আমাদের সামনেই ভুত ।
এবার বাকি তিন জন ভালো মত দেখে ।
আইশাঃ হ্যা তাই তো । ওরা ভুত ।
নওমি ঃ ওরা শুন্যের উপর দারিয়ে আছে , মাটিতে পা নেই ।
সাজ্জাত ঃ বড় বড় নখ , আর হাতে ৩টা আঙ্গুল ।
তৌসিফ ঃ আমি দেখেছি । চোখও ৩টা ।
আইশা ঃ এখন আমরা কি করবো ?
তৌসিফ ঃ কথা বলবো , পরিচিত হব ।
নওমি ঃ তুই কি পাগল হয়েছিস দোস্ত ? যদি ঘার মটকে দেয় ।
সাজ্জাত ঃ মাছ, পিঠা, এনেছি এগুলা দিতে হবে না ।
তৌসিফ আগে এগিয়ে যায় , সাথে সাজ্জাদও । আর পিছনে পিছনে আসে আইশা আর নওমি । পিছন থেকে ভুতদের ডাক দেয় তৌসিফ ।
তৌসিফ ঃ এক্সকিউজ মি ।
একসাথেই ৩টি ভুত ওদের দিকে ফিরে । ভুতেদের চেয়ারা দেখে আইশা আর নওমি চিৎকার দিয়ে উঠে ।
সাজ্জাদ ঃ এই থাম মাথা মোটারা । চিৎকার করার কি হলো । তৌসিফ, আমার মনে হয় ওরা ইংলিশ বুজে না । বাংলায় বল ।
তৌসিফ ঃ আপনারা ভালো আছেন ?
একটা ভুত বলে উঠে 
ভুত ১ ঃ আপনারা এখানে কেনো ? আর কিভাবে আমাদের দেখলেন ?
সাজ্জাদ ঃ আমরা মানুষ । আমরা আজ ভুত দেখতে বের হয়েছি । আপনার কারা ? এখানে কেনো ?
ভুত ১ ঃ আমরা মানুষ দেখতে বের হয়েছি । আমরা ভুত ।
আইশা ঃ কিহ , ভুতেরাও আমাদের মত মানুষ দেখতে বের হয় নাকি ?
ভুত ২ ঃ হুম , আমরা ভুত রাজ্য থেকে অনেক কষ্টে মানুষ রাজ্যে আসার পথ খুজের বের করে এখানে এসেছি । শুনেছি মানুষরা নাকি চকলেট নামের ১টা বস্তু খায় , সেটাও নিয় এসেছি । এই নাও , দেখো ।
নওমি ঃ এই দেখি দেখি । বাহ , চকলেট আমার খুব পছন্দের ।
তৌসিফ ঃ আমাদের কাছেও তোমাদের জন্য কিছু খাবার আছে । 
তৌসিফ পিঠা , আর মাছ গুলো ভুতেদের দেয় । ভুতেরা এগুলা পেয়ে খুব খুশি হয় । সেখান থেকে বন্ধুত্ত হয় ভুত আর মানুষের ।
আচ্ছা তোমাদের নাম কি ? প্রশ্ন করে আইশা । উত্তরে ভুত ১ পরিচয় করিয়ে দেয় । আমি হিমু , আর ও শান্ত । শান্ত এর পাসের জন শাম্মি আর একবারে পিছনের দিকে ইমন ।
আমি সাজ্জাদ , আর ও তৌসিফ । আর ও যে তোমাদের জন্য পিঠা নিয়ে এসেছে নওমি আর ওর পাসে আইশা । 
শান্ত ঃ তোমারা আমাদের রাজ্যা যাবে । আমরা তো তোমাদের শহর ঘুরে গেলাম । 
সাম্মি ঃ চলনা প্লিজ । গুরে আসবে , দেখে আসবে নতুন এক শহর ।
নওমি ঃ কিন্তু কিভাবে ?
আইশা ঃ আমি যাবো ।
তৌসিফ ঃ আমি এক পায়ে দারানো ।
হিমু ঃ খুব মজা হবে তোমরা আমাদের রাজ্যে গেলে । আসাকরি ইঞ্জয় করবে ।
সাজ্জাদ ঃ কিন্তু কিভাবে যাবো ।
আরিফ ঃ চিন্তা করো না । এই যে বড় বাড়ী(বিল্ডিং) টা দেখছো । এটা নিচে আমাদের ভুতের রাজ্য যাওয়ার পথ আছে । সেখানে আমাদের গাড়ী রাখা আছে । 
তৌসিফ ঃ এই বিল্ডিঙ্গের নিচে যাবো কিভাবে ?
হিমু ঃ দেখো , কিভাবে যাবে ।
এর পর বলতে বলতে চার ভুত বিল্ডিং এর চার কোনায় গিয়ে বিল্ডিং টা উপরে উঠানো চেষ্টা করে । অনেক কষ্টের পর ঠিকই এক্সময় পেরে যায় । এবং নিচ দিয়ে ১টা সুরুংগ পথ বের হয় ।
সুরুংগ পথে এখন ৮জন । কিছুদুর সামনে এগিয়ে যাওয়ার পর দেখে ১টা রিক্সা । আজব ব্যাপার জানো কি ? রিক্সার কোন চাকা নেই, আর অনেক বড় ।
সাজ্জাদ ঃ তোমাদের এইটাই কি গাড়ী ?
শান্ত ঃ হ্যা । আমাদের শহরে শুধু এই একধরনেরই গাড়ি । 
আইশা ঃ গাড়ির তো চাকা নেই , তাহলে চলে কিভাবে ?
শান্ত ঃ হাহাহাহহাহা , ভুত দের আবার চাকা লাগে নাকি । আমরা শুন্যেই চলা ফেরা করি । আচ্ছা এবার গাড়ীতে উঠো ।
গাড়িতে উঠে পরে সবাই । তারপর হিমু চালকের আসনে বসে । গাড়ি চলতে শুরু করে । প্রথমে ধিরে চললেও কিছুসময় পর এতো স্পিডে গাড়ি ছুটতে যে সেই স্পিডে ওয়া কখনো কোন গাড়িতে চরে নাই । 
গাড়িটি থেমে যায় ১টা খোলা জায়গায় । গাড়ী থেকে নেমে যায় ওরা । জায়গাটা একটু ভয়ংকর মনে হয় । খোলা মাঠ , মাঠের শেষে ২টা ঘর । ১টা দোতালা আর ১টা ছোট । 
নওমি ঃ আমরা কি চলে এসেছি ? 
হিমু ঃ ভুত রাজ্যে চলে এসেছি কিন্তু এখনো শহরে আসিনি । 
নওমি ঃ শহর আর কতদূর ? 
হিমু ঃ এইতো আমরা আমাদের ভুত কেন্দ্রে চলে এসেছি । এখান থেকেই চলে যাবো । ঐযে সামনে দোতালা ঘরটা দেখছো ঐটা । চলো । 
সবাই মিলে ভুত কেন্দ্রের সামনে যায় । ভয় ভয় লাগছে সাজ্জাদ, নওমি , আইশা আর তৌসিফের । ঘরটির সামনে যেতেই খুলে যায় দরজা । ভিতরে ঢুকে ওরা আটজন । চারজনের পা সমতলে আর চারজনের পা শুন্যে । শীড়ি বেয়ে দোতালায় উঠছে , উপরে শব্দ শোনা যাচ্ছে কথা বলার । তারমানে কেউ আছে উপরে , কিন্তু কারা আছে উপরে ? মনে মনে ভাবছে সাজ্জাদ । 
উপরে উঠে দেখে অনেক গুলো লোক , যারা কিনা হিমু, ইমন, সাম্মী আর শান্তর মত শুন্যের উপর দিয়ে হাটছে । বুঝতে পারলাম এরা ভুত । আইশা অবাক হয় । অবাক হওয়ার কারনটা হচ্ছে এখানে কংকাল ভূত ভুত , কিছু ভুত ধুতি পরে আছে , কেউ কেউ পাঞ্জাবী আবার কোর্ট প্যান্ট পরা অফিসারও আছে । 
তৌসিফ ঃ আচ্ছা আমরা এখানে আসলাম কেনো ? 
সাম্মি ঃ এটা ভুত কেন্দ্র । ভুত রাজ্যে যেতে হলে এবং বের হতে হলে এখানে তথ্য দিয়ে যেতে হয় । 
হিমু ঃ আচ্ছা তোমরা এখানে বসো , আমি তোমাদের ব্যাপারে একটু কথা বলে আসি । ভুত রাজ্যে মানুষ প্রবেশের জন্য কি কি নিয়ম আর কি কি করতে হয় আমার জানা নেই , তাই একটু খোজ নিয়ে আসি । 
হিমু চলে যায় সেখান থেকে । নওমি আর সাজ্জাদ কথা বলছে । 
নওমি ঃ আমার দোস্ত ভয় লাগছেরে । 
সাজ্জাদ ঃ সত্ত্যি কথা বলতে আমারও ভয় লাগছে । 
নওমি ঃ কি করবি এখন ? 
সাজ্জাদ ঃ কিছু করার নাই । পরিস্থিতি মেনে নিতে হবে । 
হিমু ভুত কেন্দ্রের পরিচালকের সামনে দাঁড়িয়ে ।
পরিচালক ঃ কি চাই হে বাছা ? 
হিমু ঃ স্যার , আমি মন্যুশ্য শহরে গিয়েছিলাম । সেখান থেকে আজ ফিরলাম । 
পরিচালক ঃ ভালো কথা । ভ্রমন দপ্তরে যাও , সেখানে ফিরে আসার বইয়ে সই করে বাসায় ফিরে যাও । 
হিমু ঃ না , মানে । 
পরিচালক ঃ কিসের মানে ? 
হিমু ঃ মন্যুশ্য শহর থেকে আমরা ৪জন মানুষ নিয়ে এসেছি । ওরা আমাদের সাথে বন্ধুত্ব করে আমাদের রাজ্য ঘুরে দেখতে এসেছে । 
পরিচালক ঃ কি সর্বনাশে কথা গো । নাহ নাহ মানুশ জাতী ভুত রাজ্যে ঢুকতে পারবে না । 
হিমু ঃ প্লিজ স্যার । ওদের আমরা ইনভাইট করে নিয়ে এসেছি । ফিরিয়ে দিলে মান ইজ্জতের ব্যাপার , ভুত রাজ্যের মান ইজ্জত সব পাঞ্চার হয়ে যাবে । 
এরপর অনেক দরাদরির পর ১০০টাকা ঘুষের বিনিময়ে পরিচালক রাজি হয়ে মনুশ্যজাতিকে ভুত রাজ্য প্রবেশের অনুমতি দিতে । 
শান্ত ঃ কি হলো সব ঠিক ? 
হিমু ঃ হুম । ১০০টাকা ঘুষের বিনিময়ে । 
সাজ্জাদ ঃ ভুত রাজ্যেও ঘুষ!!! দারুন তো । 
সাম্মি ঃ তোমাদের ঐখানেও কি ঘুষ দিতে কাজ করাতে ? 
সাজ্জাদ ঃ হ্যা । আমদের তো সব কাজেই ঘুষ দিতে হয় ।
এরপর ছোট্ট ১টা রুমে যায় ওরা । সেখানে ১টা হাজিরা খাতার মত ১টা খাতায় নাম ঠিকানা লিখে সেখান থেকে আরেকটা রুমে যায় । রুমের ভিতর ১টা স্পেস শিপ এর মত কিছু ১টা । সেখানে চরে বসে । তার পর চারদিক থেকে লাল নিল সাদা আলো বের হওয়া শুরু হয় । পুরো ঘর সেই আলো ভরে যায় । আর কিছু দেখা যায় না । কিছু সময় আলো কমে যায় । আজব ব্যাপার । তারা এখন সেখানে নেই যেখান থেকে উঠেছিল । এ এক নতুন শহর । গাড়ী থেকে নিচে নামলো ওরা । সব কিছুই অবাক হওয়ার মত । গাছ গুলো সব শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে । কিছু কিছু গাছ উল্টো, মানে গোড়া শুন্যে আর মাথা নিচের দিকে । তারপর দেখা গুলো ঘর আছে কিন্তু ঘরের কোন দরজা নেই ।
হিমু সাজ্জাদ, তৌসিফ, নওমি আর আইশাকে তার বাসায় নিয়ে গেলো । ঘরের ভিতর কোন বসার কিছু ছিলো না। তবে হিমু এসে হাতে তালি দেয়ার সাথে সাথে সোফা হাজির । 
তৌসিফ ঃ হিমু তুমি কি জাদুকর নাকি ? 
হিমু ঃ ভুত মানেই তো জাদু , আমরা সবাই জাদুকর। 
তৌসিফ ঃ ওহ তাই তো । 
তৌসিফ, সাজ্জাদ, নাওমি আর আইশা ফ্রেশ হয়ে নেয় । এখন খাওয়া দাওয়ার । হিমু এসে ওদের একটা রুমে নিয়ে যায় । বিশাল একরুম, রুমের মাঝখানে রয়েছে ১টা টেবিল । টেবিলের উপর সাজানো রয়েছে অনেক ধরনের পিঠা ।সেখান থেকে মন ভরে পিঠা খেয়ে নেয় ওরা । খাওয়া শেষে বের হয় ঘুরতে । ভুতের শহরে ঘুরতে । 
বাসা থেকে বের হয় । রাস্তায় ভুতেরা মিছিল করছে । 
সাজ্জাদ ঃ কিসের মিছিল হচ্ছে ? 
হিমু ঃ আমাদের এখানে নির্বাচন , সেটার মিছিল হচ্ছে ।
সাজ্জাদ ঃ কিসের নির্বাচন ? 
হিমু ঃ আমাদের রাজ্যের মহারাজা বাছাইএর নির্বাচন । 
আইশা ঃ হাহাহাহহা তোমাদের এখানেও নির্বাচন হয় । মজার তো । 
হিমু ঃ চলো সামনে যাই , শান্ত, সাম্মি আর আরিফ অপেক্ষা করছে । 
হাটা শুরু করে । হিমু শুন্যের উপর ভেসে ভেসে যাচ্ছে । হটাৎ একটা কংকাল ভূত এসে সামনে হাজির হয় নওমির । ভয়ে চিৎকার করে উঠে সে । 
কংকাল ভূত ঃ(নেকিয়ে নেকিয়ে কথা) এই কে গো তোমরা ? এর আগে তো দেখিনি এদের , আবার তলে পা দিয়ে হাটছে । মনুশ্য নাকি ? 
নওমি ঃ আমরা মানুষ । 
হিমু ঃ এরা আমার বন্ধু । মনুশ্য শহর থেকে আমার সাথে ঘুরতে এসেছে । ২দিন ঘুরে চলে যাবে । 
কংকাল ভূত ঃ কিহ!! মনুশ্য ভুতের রাজ্যে , সেটা তো মোটেও ভালো কথা নয় । তো, মহারাজা কি জানেন তাদের ব্যাপারে ? 
হিমু ঃ নাহ । এখনো বলা হয়নি । তবে আজই বলবো । 
কংকাল ভূত ঃ কি সর্বনেশে কথা । আমি এখনি যাচ্ছি মহারাজার কাছে । 
এরপর চলে যায় কংকাল ভূত ভুত । আর হিমু আইশা, তৌসিফ, নওমি, আর সাজ্জাদ কে নিয়ে যায় ১টা বিলের সামনে । বিলে অনেক গুলো ভুত ডোবা-ডুবি করছিল । ডুব দিয়ে মাছ ধরছে আর সাথে সাথেই খেয়ে ফেলছে কাচা মাছ । সে গুলোই দেখছিল ওরা । কিছুখন পর সেখানে আসে শান্ত, সাম্মি আর আরিফ ।
সাম্মি ঃ কেমন আছো তোমরা ?
আইশা ঃ আমরা ভালো আছি ।
সাম্মি ঃ আমাদের শহর টা সুন্দর না তাই না ?
আইশা ঃ কে বলছে । অনেক সুন্দর ।
সাম্মি ঃ চলো তোমাদের কে আমাদের ইউনিভার্সিটি থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসি ।
শান্ত ঃ হ্যা , ওখানে গেলে ভালো লাগবে ।
সেখান থেকে সবাই মিলে হেটে হেটে ইউনিভার্সিটির দিকে যায় । রাস্তার ভুত গুলো ওদের দেখে তাকিয়ে থাকে । বাচ্চা ভুতেরা হাসে দেখে। বাচ্চাদের কাছে এটা নতুন । কারন এর আগে হয়তো ওরা মানুশ দেখে নাই । 
ইউনিভার্সিটিতে পৌছে যায় । পুরোনো ১টা গেট । গেটের গা ঘেশে জরিয়ে আছে শুকনো লতাপাতা । ভিতরে শুনশান নিরবতা । হাটছে আটজন , চারজন মাটিতে পা দিয়ে আর চারজন মাটি থেকে কিছুটা উপরে । হটাৎ শুন্য থেকে ১টা মেয়ে সামনে আসে সাম্মির । সাম্মির সাথে কথা বলে । মনে হয় সাম্মির বন্ধু । তারপর আবার সামনে আগায় । ১টা ক্লাস রুমে যায় । ক্লাসে কাউকে দেখা যাচ্ছে না , তবে শব্দ শোনা যাচ্ছে যে এখানে কেউ আছে । মানে ক্লাস হচ্ছে । এভাবে পুরো ইউনিভার্সিটি ঘুরে দেখে । সত্ত্যি কথা বলতে দেখার কিছু ছিল না । অনুভব করে নিল ভয়ের মাধ্যমে । 
ইউনিভার্সিটি থেকে বের হলো । গেটের সামনে এসে দারালো ।
আরিফ ঃ আমি আর হাটতে পারবো না ।
সাজ্জাদ ঃ আমারও আর হাটতে ইচ্ছে করছে না । তোমাদের এখানে কোন গাড়ি নেই ?
হিমু ঃ হ্যা আছে তো ।
নওমি ঃ কই দেখলাম না তো । 
হিমু ঃ তোমার সামনেই তো । ঐযে রাস্তায় ।
নওমি ঃ কই রাস্তাতো ফাকা । কেউ নাই । 
শান্ত ঃ হাহাহাহহাহা । আরে তুমি দেখতে পাচ্ছো না কারন তোমরা তো মানুষ তাই । আচ্ছা আমি ডাক দিচ্ছি । ওয়েট ।
শান্ত ডাক দেয় ১টা গাড়িকে । ১টা গাড়ী আসে । চাকা বিহিন সেই গাড়ি ।
হিমু কি যেনো দেখছিলো । 
হিমু ঃ শান্ত, আরিফ দেখ , দেখ ঐশী আসছে ।
তৌসিফ ঃ ঐশিটা কে ? 
সাম্মি ঃ ভুত রাজ্যের মহারাজার মেয়ে, খুবই পাজি । কিন্তু হটাৎ ও এখানে কেনো?
হিমু ঃ সরেস(কংকাল ভূত) দেখেছে আমাদের । দেখে বলে মনুশ্য এখানে কেনো । তারপর মহারাজের কাছে বলতে গেছে ।
আরিফ ঃ হ্যা , শয়তানটাও তো আছে ।
ধিরে ধিরে ঐশির গারী সামনে চলে আসে । গাড়ি থেকে নেমে এসে সামনে দারায় তৌসিফের ।
ঐশি ঃ তোমরা নাকি মনুশ্য রাজ্য থেকে এসেছো ?
হিমু ঃ জি । আমরা ওদের সাথে করে নিয়ে এসেছি ।
ঐশি ঃ আমি তাদের কাছে প্রশ্ন করেছি ।
তৌসিফ ঃ হ্যা । ভুত রাজ্য ভ্রমনে এসেছি ।
ঐশি ঃ খুব ভালো কথা । কিন্তু সব সব কিছুর ১টা নিয়ম আছে । আচ্ছা আপনারা কি কোন অনুমতি নিয়ে এসেছে ?
সাম্মি ঃ জি । আমরা ভুত রাজ্যের শহরে প্রবেশের সময় ভুত কেন্দ্রের পরিচালকের অনুমতি নিয়ে এসেছি ।
ঐশি ঃ আবার ??? আমি তাদের কাছ থেকে শুনতে চাচ্ছি ।
নওমি ঃ হ্যা । আমরা অনুমতি নিয়ে এসেছি ।
ঐশি ঃ ওহ । খুব ভালো কথা । আচ্ছা এখন আপনারা আমার সাথে চলেন ।
তৌসিফ ঃ কোথায় যাবো ?
ঐশি ঃ ভুতের বাড়ী ।
আইশা ঃ মানে । ভুতের বাড়ী যাবো কেনো ?
সাম্মি আইশার কানের কাছে গিয়ে আস্তে আস্তে বলে যে ভুতের বাড়ি হলো ভুতের রাজার প্রাসাদ
ঐশি ঃ চলো তোমরা ।
ঐশি তার সাথে করে তৌসিফ, সাজ্জাদ, নওমি আর আইশাকে নিয়ে আসে ভুতের বাড়ি মানে ভুতের রাজার প্রাসাদ ।
সেখানে তাদের খুব আপ্যায়ন করা হয় । অনেক ধরনের খাবার , আলিশান থাকার ব্যাবস্থা করা হয় ।
আইশা ঃ আচ্ছা আমাদের এতো আপ্যায়ন করছে কেনো ? কোন মতলব ঠবলব আছে নাকি আবার ।
নওমি ঃ ধুর কি যে বলিস না তুই । আমরা অতিথি তাই ।
সাজ্জাদ ঃ কিন্তু হিমু ওরা যে বললো ঐশি নাকি খুব পাজি । আমার কেনো জানি সন্দেহ হচ্ছে ।
আইশা ঃ হ্যা আমারো । আচ্ছা আমরা চলে যাই চল এখান থেকে ।
নওমি ঃ হ্যা চল । বাসায়ও কিছু বলে আসি নাই, মনে আছে ?
তৌসিফ ঃ হ্যা বাড়ির সবাই নিশ্চয় খুব টেনশন করছে ।
সাজ্জাদ ঃ হুম । ওদের বলতে হবে যে আমরা ফিরে যেতে চাই ।

ভুত রাজার সামনে তার ভুতকন্যা ঐশি । কথা হচ্ছে 

ভুত রাজা ঃ মা তুমি নাকি মনুশ্যগুলোকে এখানে নিয়ে এসেছো ?
ঐশি ঃ জি পিতা । তারা এখন থেকে আমাদের এখানেই থাকবে ।
ভুত রাজা ঃ কিন্তু সেটা কিভাবে সম্ভব ?
ঐশি ঃ পিতা, তাদের মধ্য থেকে একজনকে আমার পছন্দ হয়েছে । আমি তাহাকে বিবাহ করিতে চাই ।
ভুত রাজা ঃ না না । ভুত আর মনুশ্য বিয়ে । কখনই না ।
ঐশি ঃ পিতা এটা আমাদের সবার জন্যি ভালো । আপনি ভুলে যচ্ছেন যে সামনে নির্বাচন । আমাদের রাজ্যের সব ভুতগনদের মন জোগার করতে হবে ।
ভুত রাজা ঃ মনুশ্য বিয়ে করলে সব ভুতেরা আমার বিরুদ্ধে চলে যাবে ।
ঐশি ঃ মোটেও না । তাদের বুঝাতে হবে । মনুশ্যরা প্রযুক্তিতে অনেক আগানো । সবাইকে বলতে হবে যে আপনার মেয়ের জামাই এই ভুত রাজ্যে প্রযুক্তি আর আধুনিকায়ন করবে। আর এই বিয়ের ফলে পুরো রাজ্যে আপনাকে নিয়ে কথা হবে । সবার মুখে মুখে আপনার নাম থাকবে । সো ভোটের সময় সবাই আপনাকে ভোট দিবে ।
ভুত রাজা ঃ সত্যিই তো , এভাবে তো চিন্তা করে দেখা হয় নাই । মনুশ্যদের এখানে আনা হোক ।
ভুত রাজার হুকুম পেয়ে আনতে যাওয়া হয় সাজ্জাদ দের । ওইদিকে সাজ্জাদ, তৌসিফ, নওমী আর আইশা ফিরে যাওয়ার জন্য প্ল্যান করছে ।

আইশাঃ শুন আজ রাতেই আমরা চলে যাবো ।
সাজ্জাদ ঃ এককথা বার বার । বলেছি তো ওরা কেউ আসলে বলবো আমাদের দিয়ে আসতে ।
তৌসিফ ঃ আমরা তো আর এখন চাইলেও নিজেরা ফিরে যেতে পারবো না। 
নওমি ঃ আচ্ছা ওরা যদি এখন আমাদের আর ফিরে যেতে না দেয় , আটকে রাখে এখানে ?
আইশা ঃ (ভিতো কন্ঠে) আরে নান নাহ এমন কেনো করবে আমাদের সাথে, আমরা তো আর ওদের কোন ক্ষতি করি নাই ।
তৌসিফ ঃ হ্যা ক্ষতি করি নাই । কিন্তু আমরা এক জগতের প্রানী হয়ে অন্য জগতে এসেছি । আমারা কি করতাম যদি পৃথিবীতে ভুত পেতাম, পরিক্ষ্যা নিরিক্ষ্যার জন্য আটকে রাখতাম না ?
আইশাঃ আমার কিন্তু সত্যি ভয় লাগছে ।
সাজ্জাদ ঃ ভয় পেলেও কিছু করার নাই । যেটা কপালে আছে সেটাই হবে ।
আইশা কেদে দেয় । নওমী ওর কাছে গিয়ে সান্তনা যাতে ভয় না পায় সে । এমন সময় ৩টা কংকাল ভুত আসে । ওহ বলা হয়নি । আমাদের পৃথিবীতে পুলিশ যেমন আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রন করে এখানে ঠিক সেম দায়িত্ব পালন করে কংকাল ভুতেরা ।
কংকাল ভুত ঃ আপনাদের আমাদের সাথে যেতে হবে ।
সাজ্জাদ ঃ কোথায় যেতে হবে ?
কংকাল ভুত ঃ ভুত রাজার কাছে , সে অপেক্ষা করছে ।
আর কোন কথা না বাড়িয়ে কংকাল ভুতদের সাথে যায় ওরা।

ভুত রাজার দরবারে । রাজাকে মাথা নিচু করে সম্মান জানায় ওরা । 
ভুত রাজা ঃ ভুত রাজ্যে স্বাগতম তোমাদের ।
তৌসিফ ঃ আপনাকেও আমাদের তরফ থেকে ধন্যবাদ এতো সুন্দর আপ্যায়ন এর জন্য ।
ভুত রাজ্য ঃ কেমন লাগছে আমাদের শহর ?
আইশা ঃ খুব ভালো । তবে
ভুত রাজা ঃ কি তবে ? কোন অসুবিধা হচ্ছে তোমাদের ?
আইশা ঃ নাহ কোন অসুবিধা হচ্ছে ।
নওমি ঃ আসলে আমরা ফিরে যেতে চাচ্ছি আমাদের দেশে ।
কথা টা শুনে রাজা তার মেয়ে ঐশির দিকে তাকায় । তারপর উত্তর দেয় 
ভুত রাজা ঃ কিন্তু সেটা তো হবে না ।
সাজ্জাদ ঃ কেনো ?
ঐশি ঃ কারন টা আমি বলছি 
সাজ্জাদ ঃ হ্যা বলেন, আমরা যেতে চাই ফিরে
ঐশি ঃ তোমাকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে , আমি তোমাকে বিয়ে করবো । আগামিকাল তোমার আমার বিয়ে ।
সাজ্জাদ ঃ কিহ । মাথা ঠিক আছে আপনার ? আপনি আর আমি দুই প্রজাতীর । কোনদিনই এটা সম্ভব না ।
ঐশি ঃ সব সম্ভব।
সাজ্জাদ ঃ আমি বিয়ে করবো না, আমি চলে যাবো । 
(চেচিয়ে বলছিল সাজ্জাদ, তৌসিফ সাজ্জাদের কাছে এসে কানে কানে বলে)
তৌসিফ ঃ সাজ্জাদ মাথা গরম করিস না , তাহলে বেশি বিপদে পরতে হবে । ঠান্ডা মাথায় চিন্তা ভাবনা করতে হবে ।
সেখান থেকে ওদের ১টা রুমে নিয়ে যায় । সেখানে খাবার খেয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে কিভাবে এই ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে । তারপর সেখান থেকে ভুত রাজা আর তার মেয়ের সাথে বের হয় । একটা নির্বাচনি সমাবেশে নিয়ে যাচ্ছে । তৌসিফ, নওমি আর আইশা ১টা গাড়ীতে উঠে । আর রাজা, ঐশি আর সাজ্জাদ আরেকটা গাড়ীতে । আগেই বলেছি গাড়ির কিন্তু চাকা নাই , শুন্যে ভেসে চলে তবে গাড়ির চালক কিন্তু আছে । 
সমাবেশ শুরু হয়ে গেছে । হাজার হাজার ভুত । অনেকর বক্তব্য শেষে রাজার বক্তব্য শুরু ।
প্রিউ ভুতবন্ধুরা, 
আশাকরি ভালো আছেন সবাই । আজ আমি আপনাদের সামনে বেশি কিছু বলবো না।শুধু আপনাদের জানাচ্ছি যে আজ আমি আপনাদের জন্য ১টা গিফট নিয়ে এসেছি । (সাজ্জাদ,তৌসিফ,নওমি আর আইশাকে দেখিয়ে বলে) এই হলো গিফট।(ভুতেরা সবাই কানাকানি করতে থাকে) অবাক হচ্ছেন আপনারা ? হ্যা মনুশ্য , এদের মধ্যে একজন আমার কন্যার বর হবে । এরা অনেক জ্ঞ্যানি । এদের সাথে আমার কথা হয়েছে । এরা এখন থেকে ভুত রাজ্যে থাকবে এবং আমাদের রাজ্য ডিজিটাল করে গড়ে তুলবে । আজ থেকে আমি ভুত রাজ্যকে ডিজিটাল ভুত রাজ্য ঘোষনা করলাম । (সকল ভুত একসাথে তালি দিয়ে উঠে)।

তৌসিফ ঃ ওই আমরা কখন বললাম যে আমরা এখানে থাকবো ?
নওমি ঃ আমরা তো ফিরে যেতে চাইতেছি ।
আইশা ঃ এখন আমাদের কি হবে ।
তৌসিফ ঃ চল ডাকছে আমাদের ।
ওরা চলে আসে । তারপর রাজা রাস্তায় ভুত সংযোগে নামে । সাজ্জাদ আর ঐশিকে সামনে নিয়ে রাজা ভুতদের কাছে তার জন্য ভোট চায় । আর পিছনে অন্যদের সাথে হাটছে তৌসিফ, আইশা আর নওমি। হটাত পিছন থেকে হিমু আসে। হিমু তৌসিফকে টেনে নিয়ে আরো একটু পিছনে আসে । সাথে নওমি আর আইশাও আসে ।
হিমু ঃ কি শুনি এগুলো ? তোমরা নাকি এখানে থেকে যাচ্ছো ? বিয়ে করছো ?
তৌসিফ ঃ আরে নাহ । আমরা ফিরে যেতে চাচ্ছি । কিন্তু রাজা আর তার কন্যা নাকি আমাদের যেতে দিবে না ।
আইশা ঃ হিমু প্লিজ আমাদের হেল্প করো প্লিজ । 
হিমু ঃ কি যে করবো বুঝতেছিনা ।আচ্ছা শুনো । তোমরা ১টা কাজ করো । তারপর কানের কাছে মুখ নিয়ে কি যেনো বলে হিমু ।
সন্ধায় রুমে বসে কথা বলছে সাজ্জাদ, তৌসিফ, নওমি আর আইশা । এমন সময় সেখানে আসে ঐশি । আইশা সাজ্জাদের কানের কাছে বলে যা বলছি ঠিক সেইভাবেই বলবি। ঐশি সাজ্জাদ কে নিয়ে ছাদের এক কোনায় আসে । 
ঐশি ঃ আচ্ছা আমাকে কি তোমার ভালো লাগে না ?
সাজ্জাদ ঃ হ্যা খুব ভালো লাগে তো ।
ঐশি ঃ আমাকে বিয়ে করতে কি তোমার আপত্তি আছে ?
সাজ্জাদ ঃ নাহ, কেনো আপত্তি থাকবে । কিন্তু
ঐশি ঃ কিন্তু কি ? বলো আমাকে 
সাজ্জাদ ঃ নাহ । মানে আমি তোমার ঠোটে ১টা চুমু দিতে চাই ।
ঐশিঃ হাহাহাহহাহা । না করেছে কে ? দাও
সাজ্জাদ ঃ নাহ এখানে না । আমার লজ্জা লাগে । তোমার রুমে চলো ।
ঐশি ঃ চলো ।
ঐশি আর সাজ্জাদ ঐশির রুমে যায় । ধিরে ধিরে ঐশি সাজ্জাদের কাছে চলে আসে । ঐশির কালো ঠোট জোরা সাজ্জাদের ঠোট স্পর্স করে । চুমু খায় দুজন।

কিছুখন পর ঐশি জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে । সাজ্জাদ ঐশির হাতের আঙ্গুলে থাকা আংটি টি খুলে নিয়ে তৌসিফদের কাছে চলে আসে ।
নওমি ঃ কাজ হয়েছে ?
সাজ্জাদ ঃ হ্যা । হিমুর দেওয়া পাওডার টা ঠোটে মেখে নিয়েছিলাম । তারপর ...........
আইশা ঃ কিহ । তুই ...... আচ্ছা যাই হোক । এখন ?
সাজ্জাদ ঃ ঐশির গাড়িটা বাগানে আছে, আমি ছাদ থেকে দেখেছি ।
তৌসিফ ঃ এখন তাহলে নওমি বা আইশা ওই আংটি পরবি । তারপর গাড়িতে উঠে মনে মনে বলবি যে মনুশ্য রাজ্যে নিয়ে যেতে তাহলেই পৌছে যাবো আমরা ।
নওমি ঃ আমি পরবো প্লিজ আংটিটা ।
আইশা ঃ আচ্ছা তুই পর । আমাদের খুব সাবধানে বের হতে হবে এখান থেকে ।
সাজ্জাদ ঃ চল আমরা এখন বের হই । যত তারাতারি বের হওয়া যায় ।
এরপর ওরা খুব সাবধানে বের হয়ে বাগানে আসে । সেখানে থাকা ঐশির অদ্ভুদ গাড়িতে উঠে বসে। নওমী গাড়িতে বসে চোখ বন্ধ করে মনে মনে কি যেনো বলে । 
হটাত গাড়িটা ঝাকুনি দিয়ে উঠে । চারপাশ ধোয়ায় ভরে যায় । জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে সবাই ওরা । সব অন্ধকার হয়ে যায় ।
ওদের জ্ঞ্যান ফিরলে দেখতে পায় যে ১টা হাসপাতালে আছে ওরা । চারজন পর পর চারটি বেডে । পরে জানতে পারে যে ওরা নাকি কাওরান বাজারে জ্ঞ্যান হারিয়ে পরেছিল । সকালে লোকজন ওদের পরে থাকতে দেকে হাসপাতালে এনে ভর্তি করে এবং মোবাইলে নাম্বার থেকে বাড়িতে ফোন দিয়ে জানায় । তারপর সবাই আসে । এখন ওরা সুস্থ । তবে ১টা প্রশ্নখুজে ফিরে , আসলে কি হয়েছিল সেদিন ? ভুত বলতে কি সত্যিই কিছু আছে ? সত্যি কি তারা ভুতের রাজ্য গিয়েছিল ? সব প্রশ্ন গুলোর উত্তর ওদের কাছে এলোমেলো ।
আমার লেখা ভালো লাগলে গল্পটি শেয়ার করবেন আর আমার আরো গল্প পরতে চাইলে আমার পেইজ টি লাইক দিতে পারেন ।
https://www.facebook.com/arshipon15/