সোমবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৭

সাহিত্যের খাতাটি আজ অলশ পরে রয় টেবিলে ,
তার পাশেই মৃৃত প্রায় কালিশুন্য কলম।
সাহিত্যের বিজ সমূলে বিনষ্ট করে সে,
আমি তাই অন্ধকার ছাদে দাঁড়িয়ে খোলা আকাশ দেখি।
অসাড়, নিষ্ক্রিয়, নির্লিপ্ত মস্তিষ্কে দেখা ছাড়া আর কিইবা করার আছে।

রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৭

অন্ধকার জগৎ

অন্ধকার জগৎ
লেখা .. ঃ প্রে তা ত্তা
মেয়েটির নাম তরন্নীতা , থাকে পুরান ঢাকার এক বারিতে ।বাড়িটিকে মহল্লার সবাই ভুতের বাড়ি বলে জানে ।লোকমুখে শোনা যায় এইবারিতে নাকি বদ ভুত , পেত্নি , জিন আর পরিরা থাকত । আর বাড়ির লোকদের অনেক জালাতন করতো । বারীর কোন উন্নতি হতে দিত না । তরন্নীতা তার বাবার মুখে ও শুনেছে এই কথা । শুনেছে তার মাও নাকি তার মতই সুন্দরি ছিল ।তার মা মারা যাবার পর থেকে এই বাড়িতে এখন প্রজন্ত আর কোন ভুত পেতের ঘটনা ঘটেনি এই বাড়িতে ।১৭ বছর ৩৬৪ দিন আগে এই বাড়িতেই জন্ম হয় তরন্নীতর , আর তাকে জন্ম দিতে গিয়ে মারা যায় তার মা ।কিছুদিন আগে তরন্নীতার বাবাও মারা গেছে ।
আজ তরন্নীতার তার মাহের কথা খুব মনে পরছে । তার খুব কষ্ট হচ্ছে যে তাকে জন্ম দিতে গিয়ে তার মা মারা গেছে ।সন্ধার দিকে তরন্নীতা ছাদের এক কোনে একা একা বসে কাদছে ।
কিছুখন পর হটাত একটা ঝোড় হাওয়া বয়ে যায় । তরন্নীতা ভয় পেয়ে যায় । চারিদিক অন্ধকার । সে দোর দিয়ে ছাদের দরজার কাছে গিয়ে দেখে দরজাটা বন্ধ । সে আরো ভয় পেয়ে যায় ।
কে যেন তরন্নীতার পিছন থেকে তার ঘারে হাত দেয় , পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখে একজন ছেলে দারিয়ে আছে । দেখে মনে হচ্ছে ছেলেটা কোন রাজপুত্র । কিন্তু এই আধুনিক জুগে রাজপুত্র আসবে কোথা থেকে ।
ছেলেটা বলল আমি সপ্নপুরির রাজকুমার , আমার নাম দুপুর । আমি তোমাকে আজ নিয়ে যাব আমাদের সপ্নপুরিতে ।
তরন্নীতা ঃ হাহাহাহাহাহা …………… আপনি রাজকুমার ? এই আধুনিক যুগে রাজকুমার ?
দুপুর ঃ সপ্নপুরিতে তোমার মা তোমার জন্ন্য অপেক্ষা করছে ।আজ তোমার ১৮ বছর হবে । রাত ১২ টার সময় আমি তোমাকে নিতে আসবো ।
তরন্নীতা ঃ আমার মা ? আমার মা আছে তোমাদের ওইখানে ? প্লিজ আমাকে এখনি নিয়ে চলো ।
দুপুর ঃ না এখন সম্ভব না । অন্ধকার জগতের রানির কালোছায়া তোমার উপরে আছে তাই তোমাকে আমি এখনি নিতে পারছি না । আর হ্যা শোনো , তুমি কিন্তু সাবধানে থাকবে । ওরা যেকোন সময় তোমাকে আক্রমন করতে পারে । অন্ন্য বেশ ধরেও তোমার কাছে এসে তোমাকে নিয়ে যেতে পারে ।
এর পর রাজকুমার দুপুর চলে যায় । তরন্নীতা ও নিচে নেমে এসে ড্রয়ার থেকে তার মায়ের ছবিটা বের করে জরিয়ে ধরে কাদতে থাকে । তবে সে কান্নার মাঝে একটা আনন্দও আছে ।
রাত ১১টার কিছু পর রাজকুমার আসে , রাজকুমার তরন্নীতা কে বলে চলো আমার সাথে ।
তরন্নীতা ঃ তুমি না বলে ছিলে ১২টার সময় আসবে ?
দুপুর ঃ তোমার মা তোমাকে এখনি নিয়ে যেতে বলেছে ।
ওই সময় ওইখানে হাজির হয় ১টা পড়ি আর সে তরন্নিতা কে বলে যে সে রাজকুমার না , সে তোমাকে ধোকা দিয়ে এখান থেকে নিতে এসেছে । তুমি যেও না ।
দুপুর ঃ তরন্নীতা এই বুরিকে অন্ধকার জগত থেকে পাঠানো হয়েছে । তুমি আমার সাথে চলো , আমি তোমাকে তোমার মায়ের কাছে নিয়ে যেতে এসেছি ।
এর পর তরন্নীতা তার সাথে ১টা কালো ঘোড়া করে ঊরে চলে যায় । কিছুখন পর তরন্নীতা তার জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ।
জ্ঞান ফিরলে সে দেখে যে সে অন্ন্য এক জগতে এসে পরছে , দারিয়ে সামনে গিয়ে দেখে তার চারপাশে গলাকাটা লাশ আর লাশ । দরজার কাছে গিয়ে দেখে দরজা বন্ধ ।
সে বুঝে গেছে যে সে অন্ধকাররাজ্যের রানির প্রতারনার শিকার হয়েছে । রাজপুত্রের ছদ্দ ধরে তাকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে ।
এদিকে ১২টার কিছু সময় আগে রাজপুত্র দুপুর এসে পড়িটার কাছ থেকে সব শুনে সে সপ্নপূরিতে ফিরে যায় । সেখানে গিয়ে সব খুলে বলে রানির কাছে । তখন রানি বলে
রানি ঃ এটা তো খুবই ভয়ের বিষয় । আজ রাতে তরন্নীতার ১৮ বছর হবে । অন্ধকার জগতের সময় অনুযায়ি আর ৩ ঘন্টা বাকী আছে । এই সময়ের ভিতর তাকে উদ্ধার করতে না পারলে অন্ধকার জগতের রানি তরন্নীতাকে বলি দিয়ে তার রক্ত পান করে সে তার জগত কে অমর করে তুলবে । তারপর চলতে থাকবে থাকবে তার ভয়ংকর লিলা খেলে । এটা হতে দেওয়া যাবে না । যাও এক্ষনি বুড়িমাকে ডেকে নিয়ে এসো ।
তারকিছুখন পরই বুড়িমাকে আনা হয় । আর বুড়িমা বলে
বুড়িমা ঃ আজই সব ফয়সালা করার সময় । আজ তরন্নীতাকে উদ্ধার করতে হবে আর এই সারা জগত থেকে অশুভ অন্ধকার জগত টা কে ধংস করতে হবে । তবে সেটা এতো সহজ বেপার না । আজ ওরা ৩টা টকবকে যুবক নিয়ে তাদের মেরে সেই রক্ত দিয়ে তরন্নীতাকে গোসল করাবে , তারপর তরন্নিতাকে রানি নিজ হাতে বলি দিয়ে তার রক্ত খেয়ে অমর হবে ।এ থেকে বাচার উপায় হলো আমাদের রাজকুমার ছদ্দবেসে ওই ৩ যুবুকের একজন হয়ে যাবে সেখানে । তাকে যখন মারতে আসবে তখন সে ওই জল্লাদকে মেরে দ্রুত অন্ধকারের রানির হাত থেকে তলোয়ার নিয়ে রানির মাথা কেটে ফেলতে হবে এবং সে মাথা সেখান থেকে নিয়ে আসতে হবে । তারপর এখানে এসে মন্ত্র পরে তরন্নীতার হাত কেতে রক্ত এনে তার মাথায় দিয়ে মাথাটা পুরিয়ে ফেললে এই সারাজগত পাবে অন্ধকারজগত থেকে মুক্তি ।
রানি ঃ তাহলে দেরি না করে রাজকুমার রওনা হয়ে যাক ?
বুড়িমা ঃ হ্যা । আর আর রাজকুমার কে জাদুর বালি গুলো নিতে হবে । এই বালি গুলো জল্লাদের মুখে ছুরে দিলে অর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে ।
তারপর রাজকুমার তার পংখিরাজ নিয়ে ছদ্দবেসে যুবকদের ভিতরে ঢুকে চলে আসে অন্ধকার রাজ্যে । তাদের নিয়ে আসা হয় বিশাল এক ঘরের ভিতর সেখানে আগুন জালিয়ে পুজো দিচ্ছে রানি । তার সামনে ১টা তলোয়ার । বেশ কিছু জল্লাদ তার আসে পাসে ঘুরছে । তরন্নীতাকে ১টা কালো শাড়ি পরিয়ে চোখ বেধে বসিয়ে রাখা হয়েছে ।
২ জল্লাদ ১ম যুবককে ধরে তরন্নীতার সামনে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে তার রক্ত তরন্নীতার শরিরে ঢেলে দিল । ২ জনকে এনেও একই কাজ করা হলো ।এবার রাজকুমারের পালা । জল্লাদ যখন তাকে ধরে নিয়ে তরন্নীতার সামনে যাচ্ছে তখন সে তার হাতের বাধন প্রায় খুলে ফেলেছে । আর জল্লাদ যখন তার গলায় তলোয়ার বসাবে তখনি রাজকুমার হাত খুলে পকেট থেকে বালি বের করে ফু দিয়ে জল্লাদের চোখে ছিটেয়ে দেয় আর তখন রাজকুমার দোর দিয়ে রানির কাছে গিয়ে তলোয়ার নিয়ে রানির গলায় ১ঘায়ে রানির মুন্ডুটা আলাদা করে ফেলে । তারপর দোর দিয়ে তরন্নীতার কাছে গিয়ে সে তার চোখের বাধন খুলে বলে তার সাথে যেতে ।
তরন্নিতা ঃ না আমি তোমার সাথে যাব না । আমাকে রাজকুমার নিতে আসবে ।
রাজকুমার ঃ আমি ই তোমার রাজকুমার ।এখানে ছদ্দবেসে এসেছি তোমাকে উদ্ধার করতে । চলো আমার সাথে ।
তরন্নীতা ঃ না । আমার রাজকুমার কে আমি দেখেছি । তুমি আমার রাজকুমার না ।
তরন্নীতা কোনভাবেই রাজকুমারের সাথে যেতে রাজি হয় না । তাই রাজকুমার তরন্নীতার মাথায় আঘাত করে এবং নিয়ে যায় ।
রাজকুমার তরন্নিতা কে সপ্নপুরিতে নিয়ে যায় । জ্ঞান ফিরলে তরন্নীতা তার মাকে তার পাসে দেখতে পায় । সেখানে আরো অনেক মানুষ । রাজকুমার ও আছে । তরন্নীতার মা তরন্নীতাকে সব ঘটনা খুলে বলে । তরন্নীতা আরো অবাক হয় তার বাবাকে দেখে ।
তার মা তাকে বলে ঃ তরন্নীতার জন্মের সময় অন্ধকার জগতের রানি তাকে কালোছায়া ফেলে আর তার মাকে মেরে ফেলতে চায় , তাই তার মাকে সপ্নপুরির রানি সপ্নপুরিতে নিয়ে আসে । আর একই কারনে তার বাবা কেও নিয়ে আসে ।
তরন্নীতা সুস্থ হলে বুরিমা পুজোর আয়োজন করে আর তরন্নীতার হাতকেটে রক্ত নিয়ে অন্ধকার জগতের রানির মুন্ডুতে মাখিয়ে আগুন জালিয়ে শেষ করে অন্ধকার জগতের রাজত্ত । তারপর তরন্নীতাকে রাকুমার দুপুরের সাথে বিয়ে দিয়ে তাদের হাতে রাজত্ত তুলে দেন রানি । এর পর সুখে শান্তিতে কাটতে থাকে তাদের দিন ।
( পুরো গল্পটাই আমার কল্পনা । এর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই )
আমার লেখা আরো গল্প পরতে চাইলে আমার পেইজ টি লাইক দিতে পারেন ।
https://www.facebook.com/arshipon15/

পিশাচ দম্পত্তি (সব পর্ব একসাথে)

পিশাচ দম্পত্তি
লেখা ঃ প্রে তা ত্তা

ধুর বেটা ভাললাগে না , তুই কি তোর বাসা থেকে নামবি কিনা বলতো ?
দোস্ত এতো রাতে বের হলে বাবা আর বাসায় ঢুকতে দিবে না ।
- ¬তারমানে তুই বের হবি না । আচ্ছা আমি আজ একাই চাদ দেখবো ।
ঐ সালা আমি কি তোর গার্লফ্রেন্ড যে তুই আমাকে নিয়ে বের হবি , আমার বাসার নিচে আয় ।
এই হলো সোহার্থ আর অনিকের কথোপকথন ।সোহার্থ প্রায় রাতেই বের হয় রতের ঢাকা দেখতে । আর সংগী হয় অনিক , যদিও বেশিরভাগ সময়ই অনিচ্ছাকৃত । আজও বের হয়েছে । অনিকের বাসার সামনে ।
অনিক ঃ আসতে এতো সময় লাগে ?
সোহার্থ ঃ তুই তোর বাসা থেকে নামছিস আর আমি ১৭টা বাড়ি পার করে এসেছি ।চল সামনে যাই ।
অনিক ঃ আচ্ছা আজ হটাৎ আবার বের হলি কেন ? মন খারাপ নিশ্চয় ?
সোহার্থ ঃ হুম । বিড়ি আনছিস ?
অনিক ঃ হ্যা । আব্বুর একবন্ধু আব্বুওকে ১ কার্টুন সিগারেট গিফট করছে । ঐখান থেকে ১প্যাকেট নিয়ে আসছি ।
সোহার্থ ঃ এইতো আমার গুড গার্ল ।
অনিক ঃ ঐ হারামী আমি গুড গার্ল ? ……… আচ্ছা মন খারাপ কেন আগে সেটা বল ?
সোহার্থ ঃ সাবরিনের সাথে ঝগরা হয়েছে । ব্রেকাপ ।
অনিক ঃ আবার । এবার দিয়ে ৬৪বার হলো । এইবার আর আমি মিটমাট করতে পারবো না ।
সোহার্থ ঃ তোর মিটমাট করতে হবে না । চল আজ সাবরিন দের বাসায় ঢেল মেরে জানলার কাচ ভাংগবো ।
অনিক ঃ সত্ত্যি দোস্ত । এইধরনের বিটলামি করতে আমার সেই লাগে । তাইলে চল ।
এরপর ২ বিটল সাবরিন দের বাসার সামনে গিয়ে হাজির হয় । ইটের ঢিল মেরে ভেঙ্গে ফেলে ২তালার সাবরিনের বাবার রুমের জানালা । টের পেয়ে দারোয়ান বেশ খানিক দৌ্রের উপর রাখে সোহার্থ আর অনিককে । সাবরিনের বাবা আজ সাবরিনকে বলে দিয়েছে যে সে জেনো আর সোহার্থের সাথে কোন সম্পর্ক না রাখে । সোহার্থ বলতে গেলে এতিম , বাবা মা অনেক আগেই মারা গিয়েছে আর চাচা সব সম্পত্তি নিজের নামে করে নিয়ে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে সোহার্থকে । তাই সাবরিনের বাবা কোন এতিম ছেলের হাতে তার মেয়েকে দিবে না । আর সাবরিনও বাধ্য সন্তানের মত ব্রেকয়াপ করে । তবে মনে হয় না সে সোহার্থের সাথে কথা না বলে থাকতে পারবে । ২জনই তো ২জনকে অনেক ভালোবাশে ।
অনিক ঃ দোস্ত আর দৌড়াতে পারবো না রে । একটু থাম প্লিজ ।
সোহার্থ ঃ আমিও ।
অনিক ঃ তোর ফোন বাজে ।
সোহার্থ ঃ দারা সাবরিন ফোন দিছে ।
হ্যালো ব্রেকাপ গার্ল
সাবরিন ঃ তুমি এইকাজ টা কেন করলা ?
সোহার্থ ঃ আমি আবার কি করলাম ?
সাবরিন ঃ কি করলাম মানে ? আমি বারান্দায় বসে সব দেখেছি । এইটা ঠিক করো নাই ।
সোহার্থ ঃ যা করছি ভালো করছি ।
সাবরিন ঃ আন্ডা ভালো করছেন আপনি ? অনেক রাত হয়েছে , বাসায় যাও । কাল লেকে যাবো , দেখা হবে ।
সোহার্থ ঃ জি মহারানী ।
ফোন টা কেটে পকেটে রাখে সোহার্থ ।
অনিক ঃ কি মহারাজ , অভিমান পর্ব শেষ ?
সোহার্থ ঃ হুম । চল বাসায় গিয়ে ঘুমাবো ।
অনিক ঃ হুম । আজ তোর মেসে থাকবো । বাসায় গেলে বাপে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবে ।
হেটে যাচ্ছে ২জন । এমন সময় পিছনে চিৎকারের শব্দ শুনতে পায় ওরা । চিৎকারের উৎস খুজতে পিছনে দৌড় দেয় ওরা ২জন । বুঝতে পারে পাশের গলি থেকে আসছে আর্তনাদ । ঢুকে পরে গলিতে । গলির শেষ মাথায় দেখতে পায় , যা দেখে সেটা দেখে নিজের চোখকে বিশ্বআস করতে পারছে না । হাত পা কাপছে । ওদের দেখে সামনে ২জন পালিয়ে যায় । এগিয়ে যায় সোহার্থ আর অনিক । দুজনেরই হাত পা কাপছে । চিৎকার বন্ধ হয়ে গেছে । সামনে পরে আছে ক্ষত বিক্ষত একটি নথর দেহ । একটু আগে ২জন লোক এই লাশ থেকে মাংশ ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছিল ।
অনিক ঃ দোশ্ত এখানে আর একমুহুর্ত ও থাকা ঠিক হবে না । চল ।
সোহার্থ ঃ কি বলিশ তুই এইসব > একটা লাশ এভাবে রেখে চলে যাবো ?
অনিক ঃ হ্যা । কারন সে মৃত । বেচে থাকলে কিছু চেষ্টা করতাম । চল এখন । এখানে থেকে নতুন করে কোন বিপদে পরতে চাই না ।
এর পর চলে আসে তারা । বাসায় এসে বমি করতে থাকে অনিক । পরের দিন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । ।
বিকেলে সাবরিন আর সোহার্থ দেখা করে লেকে ।
সাবরিন ঃ তোমার মন খুব খারাপ তাই না ? আমি তোমাকে ছেরে যাবো না বাবু , আমি তোমাকে ছেরে বাচতে পারবো না ।
সোহার্থ ঃ সাবরিন আমার মনে হয় তোমার বাবাই ঠিক । আমি তোমার যোগ্য না । আমার উচিত তোমার থেকে দূরে সরে যাওয়া ।
সাবরিন ঃ জান প্লিজ এভাবে বলে না । আমার খুব কষ্ট হয় ।
সোহার্থ ঃ কষ্ট হলেও এটাই সত্ত্যি । প্রথম প্রথম এমন লাগবে । পরে ঠীক হয়ে যাবে ।
কথাগুলো বলেই সোহার্থ উঠে চলে যায় । সাবরিন কিছু খন একা একা কেদে ফিরে যায় বাসায় ।
রাতে সুস্থ হয়ে উঠে অনিক ।বাসায় নিয়ে আসে ।
পরেরদিন
দুপুর ২টা বাজে । অনিক ফোন দেয় সোহার্থকে ।
অনিক ঃ দোস্ত পত্রিকা পরেছিস ?
সোহার্থ ঃ না। কেনো ?
অনিক ঃ পত্রিকায় দেখ , শিরোনামে এসেছে * নগরীতে আরো ৪টি সহ মোট ৯টি বিভৎস লাশ *
সোহার্থ ঃ তাই কি বলিশ এই সব ?
অনিক ঃ ময়না তদন্ত করে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না যে কিভাবে মানুষ গুলির এই হাল হলো । কিন্তু আমরা তো জানি ।
সোহার্থ ঃ তুই আমার বাসায় আয় ।
অনিক ঃ আচ্ছা আসতেছি ।
রাস্তায় আসার সময় একটা মেয়ের সাথে পরিচয় হয় অনিকের । অনিক সচরাচর মেহেদের সাথে কথা বলে না । কিন্তু কেনো জানি আজ হটাৎ করে এই মেয়েটার সাথে যেচে অনেক কথা বললো । বন্ধুত্ব হয়ে গেলো ২জনের ।
সোহার্থের মেসে চলে এসেছে অনিক
অনিক ঃ দোস্ত জানিশ আজ তো আকাশের পরি মাটিতে নেমে এসেছে ।
সোহার্থ ঃ কেন তোম পরিমনি কি ছিনেমা করা ফেলে রেখে কোমর দুলিয়ে তোর সাথে নাচতে এসেছে ?
অনিক ঃ আরে না । মেয়েটির নাম আরাত্রিকা ।
সোহার্থ ঃ আরাত্রিকা ? এটা কোন মানুষের নাম ?
অনিক ঃ নাহ , এটা তো পরির নাম ।
সোহার্থ ঃ তুই কি মেয়েটার প্রেমে ট্রেমে পরিছিস ?
অনিক ঃ হ্যা দোস্ত ।
সোহার্থ ঃ শালা তুই ও শেষ । আচ্ছা যেটা বলতে চাই ছিলি ।
অনিক ঃ ওহ হা আ। মানুষ গুলোকে কোন জানোয়ার মেরে খাচ্ছে । দোস্ত আমি খুব রোমান্টিক মুডে আছি সো আজ আর এইসব বলে মন খারাপ করতে চাচ্ছি না । আমি চলে যাই কাল কথা হবে ।
সাবরিন বেশ কয়েকবার ফোন দেই সোহার্থের ফোনে কিন্তু ফোন পিক করে না । রাতে ১টা এসএমএস পাঠায় সাবরিন * তুমি এমন করতে থাকলে হয়তো আমি মারায় যাবো , প্লিজ আমাকে বাচাও শোনা *
এসএমএস পরে বেশ কিছুখন কাদে সোহার্থ , আর ভাবে নিজের অযোগ্যতার কথা । একসময় ঘুমিয়ে পরে । খুব ভোড়ে অনিক সোহার্থের মেসে আসে । ঘুম থেকে উঠায় সোহার্থকে ।
সোহার্থ ঃ কি রে এতো সকালে তুই ?কি হয়েছে ?
অনিক ঃ দোস্ত , সাবরিন ।
সোহার্থ ঃ কি হয়েছে সাবরিনের ? (বলেই ফোন হাতে নেয় সাবরিনকে ফোন দেওয়ার জন্য)
অনিক ঃ সাবরিন মারা গেছে ,
সোহার্থ ঃ হোয়াট ? ও সুইসাইড করেছে ।
অনিক ঃ না । বাসার ছাদে ওর ক্ষত বিক্ষত লাশ পরে ছিল । আমাকে কথা ফোন দিয়ে রাতে জানায় , তারপর আমি ওদের বাসায় গিয়ে শিওর হই ।
সোহার্থ দৌড় দেয় , অনিক ও পিছু পিছু ।অনিক ঃ না । বাসার ছাদে ওর ক্ষত বিক্ষত লাশ পরে ছিল । আমাকে কথা ফোন দিয়ে রাতে জানায় , তারপর আমি ওদের বাসায় গিয়ে শিওর হই ।
সোহার্থ দৌড় দেয় , অনিক ও পিছু পিছু ।
সাবরিন দের বাসায় এসে ওর লাশ দেখে কান্নায় ভেংগে পরে সোহার্থ । টেনে হিচরে রক্ত মাংশ খেয়েছে জানোয়ারটা । জানাজা দাফন শেষ করে সোহার্থ রুমে ফিরে । বার বার কান্না করছে সে , সারাদিন না খেয়ে আছে । সন্ধ্যার পর কথা আসে । অনেক রিকোয়েষ্ট করে কিছু খাবার খাওয়ায় সোহার্থকে । কথা সোহার্থকে মনে মনে ভালোবাসে , যদিও সোহার্থ সেটা জানে না । রাত হলে চলে যায় কথা । তারপর বারান্দায় বসে সারারাত সিগারেট খায় সোহার্থ ।
সকাল সকাল চলে আসে অনিক সোহার্থের কাছে সাথে আসে আরাত্রিকা ।
অনিক ঃ দোস্ত নাস্তা করেছিস ?
সোহার্থ ঃ না । ফ্রিজে ব্রেড এর পুডিং রাখা আছে খেয়ে নে ।
অনিক ঃ দোস্ত ও আরাত্রিকা ।
সোহার্থ ঃ নাইস টু মিট ইউ আরাত্রিকা।
আরাত্রিকা ঃ আমি সব জানি , গতকাল আপনার .........।।
সোহার্থ ঃ জি । আচ্ছা বসুন । অনিক উনাকে নাস্তা দে ।
বলে সোহার্থ বারান্দায় চলে যায় , সিগারেট ধরিয়ে টানোট থাকে ।অনিক আর আরাত্রিকা চলে যায় । তার কিছুখন পরেই কথা আসে । গত রাতের মতই অনেক চেষ্টার পর সোহার্থকে নাস্তা করায় । তারপর কথা চলে যায় । দুপুর ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পরে । সেই ঘুম ভাংগে বিকেলে । ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে রবিন্দ্র সরবরে আসে সোহার্থ ।
জায়গাটা তার অনেক পছন্দের । সাবরিনের ও তাই ছিল । এক কোনায় বসে সিগারেট খাচ্ছে সোহার্থ । হটাৎ পিছন থেকে
আরাত্রিকা ঃ কেমন আছেন আপনি ?
সোহার্থ পিছনে তাকিয়ে
সোহার্থ ঃ জি ভাল । আপনি এখানে ?
আরাত্রিকা ঃ এইতো এক বন্ধুর সাথে আসছিলাম । তারপর ও ওর বিএফের সাথে সামনে গেলো আর আমি একা একা হাটছিলাম ।
সোহার্থ ঃ ওহ । আপনার বিএফকে নিয়ে আসতেন ।
আরাত্রিকা ঃ আমার বিএফ নাই । আচ্ছা আমি কি আপনার পাশে বসতে পারি ?
সোহার্থ ঃ বসেন ।
আরাত্রিকা ঃ আপনার মন খুব খারাপ তাই না ?
সোহার্থ ঃ হুম ঃ
আরাত্রিকা ঃ আচ্ছা এমন যদি হয় যে ওই পিশাচ আপনাকে আর আমাকেউ সাবরিনের মত মেরে ফেলে , দুনিয়ার সব মানুষকেই মেরে ফেলে । এমনটা কি হতে পারে ?
সোহার্থ ঃ কখনই না । তার আগেই আমি ওদের খুন করে ফেলবো ।
আরাত্রিকা ঃ হাহাহাহা তাই । আপনি পারবেন ওদের সাথে ।
এভাবেই কিছুখন কথা বলে ওরা তারপর চলে যায় একসময় । রাতে রুমে ফিরে দেখে কথা এসে বসে আছে ।
কথা ঃ দুপুরে খেয়েছিলে ?
সোহার্থ ঃ নাহ ।
কথা ঃ কেনো খাওনি ?
সোহার্থ ঃ ভালো লাগছিল না ।
কথা ঃ আচ্ছা আমি খাবার নিয়ে এসেছি । খেয়ে নাও ।
সোহার্থ ঃ এখন খাবো না , খেতে ইচ্ছে করছে না ।
কথা ঃ আমি খাইয়ে দেই ?
সোহার্থ ঃ না থাক ।
কথা ঃ না তোমাকে আমি এখন খায়িয়ে দিব আর তোমাকে খেতে হবে ।
কথা সোহার্থকে খায়িয়ে দেয় । তারপর চলে যায় । যাওয়ার আগে ১টা চকলেট বক্স দিয় যায় আর বলে চকলেট গুলো খেয়ে নিতে ।
রাত অনেক হয়েছে । বারান্দায় বসে আছে সোহার্থ । নির্জন চারিপাশ । মাঝে মাঝে দু একটি গাড়ি আর হটাৎ হটাৎ মানুষ যাচ্ছে । কিছুখন পর সোহার্থের মনে হয় কেউ একজন চিৎকার করছে । কে করছে চিৎকার দারিয়ে সেটা খোজার চেষ্টা । বাসা থেকে নিচে নামে সোহার্থ । রাস্তায় গিয়ে দেখে ৩জন পুলিশ কি জেন কথা বলছে আর খুব চিন্তিত ।
সোহার্থ ঃ ভাই একটু আগে এখানে চিৎকারের শব্দ পেলাম । কি হয়েছে ?
একজন পুলিশ ঃ ভাই পত্রিকায় তো নিশ্চয় পরেছে যে কয়েকদিন যাবত নগরী তে লাশ পাওয়া যাচ্ছে ।
সোহার্থ ঃ হ্যা ।
পুলিশ ঃ আসলে এক আজব দানব এসেছে শহরে । ওরা মানুষ খাচ্ছে । আমারা নিজের চোখে দেখছি । ঐ দেখেন
সোহার্থ তাকিয়ে দেখে ২জন মানুশ আকৃতির জানোয়ার যাদের চোখ আর মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে , হাতের নখ বড় , এলো মেলো চুল একজন মানুশের গলায় কামর দিয়ে রক্ত খাচ্ছে ।
সোহার্থ ঃ আরে লোকটা দাপাচ্ছে , বেচে আছে এখনো । চলেন লোকটাকে বাচাই ।
পুলিশ ঃ আরে না । আমাদের পরে আক্রমন করবে ।
সোহার্থ ঃ কিচ্ছু হবে না । আপনারা আমার সাথে আসুন তো ।
তারপর সোহার্থ হাতের সিগারেট জালিয়ে চিৎকরে ওইদিকে ছুটে যায় । পিশাচ ২টো সোহার্থের দিকে তাকিয়ে থাকে , পুলিশ ৩টাও শিপনের পিছনে ছুটে আসে । পিশাচ ২টো আস্তে আস্তে হেটে গিয়ে অন্ধকারে মিশে যায় ।
সোহার্থ লোকটিকে নিয়ে হসপিটালে ভর্তি করে । অবস্থা আসংকা জনক ।
পিশাচ ২টো কোথায় আছে জানতে ইচ্ছে করে না আপনাদের ? কি বা করে তারা ? আচ্ছা আমিই বলছি ।
ট্যানারীপট্টির একটা ডোবার পাশে থাকে রাতে । দিনে মিশে যায় মানুষের সাথে সাধারন মানুষের সাথে । তবে রাত হলে সেই ছদ্দরুপ আর ধরে রাখতে পারে না । ফুটে উঠে পিশাচের রুপ । নাতাশা আর নেহাল পিশাচ দম্পতি । পৃথিবীতে তাদেরকে পাঠানো হয়েছে তাদের রাজ্য থেকে । রাজ্যের নাম কলংকপুর । সেখানকার রাজার পুত্র নেহাল , আর নাতাশা নেহালে স্ত্রী ।
নেহাল ঃ আজ আর পেট পুরে খেতে পেলাম না ।
নাতাশা ঃ হ্যা । লোকটা এসে সব নষ্ট করে দিল ।
নেহাল ঃ একটু পরেই ভোড় হবে । ধুর আজ সারাদিন খিদে পেটে থাকতে হবে । ব্যাটার খোজ খবর নিতে হবে আজ । ঘাড় মটকে খাবো বদের হাড্ডীটার ।
নাতাশা ঃ পরের টা পরে দেখা যাবে । এখন বলো কিভাবে আমরা এই দেশটাকে আমাদের আস্তানা বানাতে পারবো ?
নেহাল ঃ বাবার সাথে দেখা করতে হবে । আচ্ছা শুনো , আমি কাল কলংকপুরে যাই । রাত হওয়ার আগেই চলে আসবো ।
নাতাশা ঃ আচ্ছা ঠিক আছে ।
রাতে আর ঘুম হয়নি সোহার্থের । সারারাত ভেবেছে পিশাচ রা কত কষ্ট দিয়েই না মেরেছে সাবরিন কে । এই ব্যাটাদের একটা ব্যাবস্থা তাকেই করতে হবে , এই সপথ নেই সে । অনিক কে ফোন দিয়ে আসতে বলে । অনিক আসে , সাথে আসে আরাত্রিকা ।
অনিক ঃ দোস্ত কি রে এতো জরুরী তলব ?
সোহার্থ ঃ তুই আজ পত্রিকা পরিস নি ?
অনিক ঃ না আজ এখনো পরা হয় নাই ।
সোহার্থ ঃ এই প্রযন্ত ১০৭ জনের জীবন গেছে এই পিচাশের থাবায় । আমাদের কিছু ১টা করতে হবে ।
অনিক ঃ কি করবো আমরা ?
আরাত্রিকা ঃ কি বলো এই সব । প্লিজ তোমরা এই সবে যাবে না । তোমরা তো পারবে না ওদের সাথে ।
সোহার্থ ঃ অবশ্যই পারবো , চেষ্টা করলে বৃথা যাবে না ।
অনিক ঃ আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোর সাথে আছি । ঐ এটা কি ?
সোহার্থ ঃ চকলেট বক্স । কাল রাতে কথা দিয়ে গেছিল ।
অনিক চকলেট বক্সটা খুলে চকলেট বের করে । চকলেটের সাথে ১টা চিঠিও বের হয় , যেটায় কথা তার ভালোবাসার কথা লিখে রাখে । চিঠিটা পরে অনিক সোহার্থ কে জানায় । চিঠি পরার পর থেকেই আরাত্রিকার মন খারাপ ।
চলে যায় অনিক আর আরাত্রিকা । সোহার্থ ভাবতে থাকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায় এই পিশাচদের কাছে থেকে ।
পরেরদিন রাতের কথা । সোহার্থ ১টা বই নিয়ে এসেছে নিলক্ষেত থেকে । পিশাচ সম্পর্ক্কে কালোজাদুর ১টা বই । বারান্দায় লাইট জালিয়ে বইটা পরছিল । এমন সময় আবার সেই চিৎকার । তবে এবার বেশ কয়েকজনের আর চিৎকার টা এই বিল্ডিং থেকেই আসছে । দৌড় দিয় নিচে নামে সোহার্থ । একদম নিচতালার বারান্দায় ছটফট করতে করতে মারা গেলো ১টা ছেলে । পাশে বসে কাদছে তার অন্য রুমমেট রা একটু পরে পাসের বাসা থেকে আবার সেই চিৎকার । এর পর সোহার্থ অন্যদের সংগে নিয়ে ছুটে যায় পাসের বাড়িতে । ওদের দেখে পিচাশ রা পালিয়ে যেতে থাকে , সোহার্থও পিছনে দৌড় দেয় । কিছুদুর যাওয়ার পর হারিয়ে যায় পিচাশরা । সোহার্থ খুজতে থাকে কিন্তু আসে পাশে সুধুই অন্ধকার । হটাৎ পিছন থেকে ১টা পিচাশ এসে কিছু ১টা দিয়ে আঘাত করে সোহার্থের মাথা । অজ্ঞ্যান হয়ে যায় সে । কুৎসিত হাসিতে হেসে উঠে ১টা পিচাশ । এখনি সে সোহার্থের রক্ত দিয়ে রক্ত স্নানে মেতে উঠবে , শরীরের কাচা মাংশ ছিরে খাবে । কাচা গিলবে সোহার্থের কলিজা ।
হটাৎ পিছন থেকে ১টা পিচাশ এসে কিছু ১টা দিয়ে আঘাত করে সোহার্থের মাথা । অজ্ঞ্যান হয়ে যায় সে । কুৎসিত হাসিতে হেসে উঠে ১টা পিচাশ । এখনি সে সোহার্থের রক্ত দিয়ে রক্ত স্নানে মেতে উঠবে , শরীরের কাচা মাংশ ছিরে খাবে । কাচা গিলবে সোহার্থের কলিজা । নেহাল ধির পায়ে এগিয়ে যায় সোহার্থের দিকে । এখনি রাক্ষসী থাবা দিবে নেহাল , আর সেই মুহূর্তে নাতাশা এসে নাহালকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ।
নাতাশা ঃ তুমি ওর কোন ক্ষতি করতে পারবে না ।
নেহাল ঃ কেনো পারবো না ।
নাতাশা ঃ পারবে না বলছি তাই পারবে না ।
নেহাল ঃ এর জন্ন্য আমি আজ দিয়ে ২দিন শিকার মিস করছি । আজ ওকে খাবোই আমি । (বলে নেহাল ওকে খেতে যায় )
নাতাশা ঃ (নেহালকে আবার ধাক্কা দিয়ে ফেলে) তুমি ওর কিচ্ছু করতে পারবে না ।
নেহাল ঃ শাকচুন্নির কি মাইনষের জন্য প্রেম জাগছেনি ?
নাতাশা ঃ প্রেম কিনা জানিনা । ওর কোন ক্ষতি হতে দিবনা আমি ।
নেহাল ঃ নাতাশা সাবধান । ওল্টা পালটা কিছু কুরলে তোকে মেরেই ফেলবো আমি ।
নেহাল আর নাতাশার কথা কাটাকাটির সময় পুলিশ চলে আসে । দেখে পালিয়ে অন্ধকারে মিশে যায় পিশাচ দম্পত্তি । পুলিশ সোহার্থকে তুলে নিয়ে হসপিটালে নিয়ে যায় । সকালে সবাই দেখতে আসে । কথাও আসে । কিছুক্ষন আগেই জ্ঞ্যান ফিরেছে ।
কথা ঃ তুমি কেনো এভাবে একা বিপদে পরতে যাও বলতো ?
সোহার্থ কোন উত্তর দেয় না । শুধু মনে মনে বলে * আমার সাবরিনের খুনি কে আমি নিজ হাতে মারবো , যদি মরতে হয় তবুও *
অনিক হাসপাতালের সব বিল মিটিয়ে এসেছে । এখন সোহার্থকে নিয়ে যাবে বাসায় । গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় আরাত্রিকার সাথে দেখা হয় । সেও সোহার্থকে দেখতে এসেছে । আরাত্রিকাকে কথা সহ্য করতে পারে না। মেয়েটা সোহার্থের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে ।
আরাত্রিকা ঃ এখন কি অবস্থা তোমার ?
সোহার্থ ঃ জি ভাল ।
আরাত্রিকা ঃ আপনি শুধু শুধু ওদের সাথে লাগতে যচ্ছেন , আমাদের পক্ষে কি ওদের সাথে পেরে উঠা সম্ভব ?
কথা ঃ মিস আরাত্রিকা , আমার মনে হয় এখন এইসব কথা বলার সময় না । ওর রেষ্ট দরকার ।
আরাত্রিকা ঃ ওহ হ্যা ঠিক । সরি । চলুন ।
এরপর সোহার্থকে বাসায় নিয়ে যায় । বাসায় গিয়ে ঘুম দিয়ে বিকেলের দিকে উঠে । উঠে দুপুরের খাবার খেয়ে সেই বই টা নিয়ে বসে । #পিশাচ । বিকেল থেকে রাত প্রযন্ত বই টা পরে । মনে হয় সারারাতই পরবে ।
ওই দিকে নেহাল আর নাতাশার মধ্যে শুরু হয় ঝামেলা
নেহাল ঃ তোমার সমস্যা টা কি ?
নাতাশা ঃ আমার কোন সমস্যা নেই ।
নেহাল ঃ তাহলে ঐ মানুষটাকে খেতে দিলে না কেন ?
নাতাশা ঃ এমনি । মায়া হচ্ছিল ।
নেহাল ঃ কি !!!!! মানুষের জন্য মায়া ? তোমার লক্ষন আমার ভালো লাগছে না । কালই বাবাকে জানাতে হবে ।
নাতাশা ঃ যা ইচ্ছে জানাও । তবে এখন চলো খাবারের সন্ধ্যানে । আজ তোমাকে আমি এক জায়গায় নিয়ে যাবো । চলো ।
এরপর নাতাশা নেহালকে নিয়ে যায় কথা দের বাসায় । কথা নিজের রুমে টেবিলে বসে পরছিল ।
নাতাশা ঃ নেহাল , আজ ঐ মেয়ে মানুষটা কে খাবো । তুমি থাকো এখানে , আমি ব্যাবস্থা করে তোমাকে ডাকছি

নাতাশা এর পর কথার বাসার দরজা নক করে । কথা নিজেই দরজা খুলে ।
কথা ঃ তুমি এতো রাতে ? আমার বাসা চিনলে কিভাবে ?
আরাত্রিকা ঃ কথা খুব বড় ১টা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে । সোহার্থ ............।।
কথা ঃ কি হয়ছে সোহার্থের ? বলো
আরাত্রিকা ঃ ওকে পিশাচ রা ............ তুমি আমার সাথে চলো ।
কথা ঃ কি । এক্ষনি চলো ।
এরপর কথা আরাত্রিকার পিছনে পিছনে ছুটে চলে । আরাত্রিকা কথাকে ১টা পার্কের ভিতর নিয়ে যায় ।
কথা ঃ এখানে নিয়ে এলে কেনো ? সোহার্থ কোথায় ?
আরাত্রিকা ঃ দারাও , এখানেই ছিল । তুমি এইপাশটা খুজো , আমি এই পাশে খুজি ।
এই বলে ২জন ২দিকে চলে যায় সোহার্থকে খুজতে । একটু পরেই একজন আরেক জনকে দেখতে পায় না ।
কে জেনো কথা পিছনে আসছে । একজন না , ২জন আসছে পায়ের শব্দ তাই বলছে । ধিরে ধিরে তারা সামনে আসে । খুব কুৎসিত চেহারার ২জন । ২জনের চোখ দিয়ে রক্ত ঝরছে । গায়ের পশম গুলো কালো আর বড় বড় ।
কথা ঃ আপনারা কে ? সোহার্থথথথথথথ............ আরাত্রিকাাাাাাাাাাাা বলে চিৎকার করে ডাকে ।
নেহাল ঃ এই মেয়ে চুপ । একদম চিৎকার করবি না । নাতাশা ওর মুখটা বন্ধ করার ব্যাবস্থা করো তো ।
নাতাশা ঃ হ্যা শোনা ।
নাতাশা কথার কাছে আসতে থাকে । কথা দৌড় দেয় । বেশি খন সে দৌড়ে পারে না । নেহাল তার চুল টেনে ধরে । নাতাশা কাছে এসে কথা কে ইচ্ছে মত গালে চর মারে ।
নেহাল ঃ কি করছো তুমি নাতাশা । মানুশদের মত ধিরে ধিরে মারছো কেন ?
নাতাশা ঃ আমার সাধ মিটাতে দাও । ডিস্টার্ব করবে না ।
নাতাশা কথা চল ধরে টেনে ফেলে দেয় । মাথা ইট দিয়ে আঘাত করে । আবার চুল টানলে মাথার চামরা সহ চুল উঠে আসে । চিৎকার করে উঠে কথা ।
নেহাল ঃ তুমি পাগল হয়ে গেছো নাতাশা । চিৎকার শুনে আরো মানুষ জন আসবে । তারপর কাল ও না খেয়ে থাকতে হবে ।
নাতাশা ঃ আচ্ছা আমি ওর কথা বন্ধ করে দিচ্ছি ।
নাতাশা কথা কে মাটিতে শিয়ে ফেলে ওর উপর বসে আবার গালে জোরে জোরে চর মারে , তারপর ওর গলার কাছে মুখ নিউএ প্রথমে ছোট ১টা কাপর দেয় । কথা তখন বুঝতে পারে তার জীবন শেষের দিকে । সে সুধু ১টা কথাই বলে খুব নিচু স্বরে
কথা ঃ আমার সোহার্থের প্লিজ কোন ক্ষতি করো না ।
কথার কথা শুনে নাতাশা যেন আরো ক্ষ্রিপ্ত হয়ে যায় । জোরে করে আরেকটা চর মেরে কথা গলায় কামর দিয়ে তার গলার রগ ছিরে ফেলে । তারপর শুরু করে রক্ত খাওয়া । নাতাশার পর নেহাল খায় কথার রক্ত । রক্ত পর্ব শেষে টেনে ছিরে ছিরে খায় কথার মাংশ এই পিশাচ দম্পত্তি । খাওয়া শেষ হয় আর ভোরের পাখিও ডাকা শুরু করে ।
সকাল সকাল অনিক সোহার্থের মেসে এসে হাজির
সোহার্থ ঃ কি রে আজ আবার কার মৃত্যুর খবর নিয়ে আসলি ?
অনিক ঃ মানে কি ঃ
সোহার্থ ঃ প্রতিদিন ই তো কেউ না কেউ মরছে ।
অনিক ঃ মরছে না, মারছে ।আজ কথা কে শেষ করে দিল ।
সোহার্থ ঃ কিহ ! কি বলিস তুই এইসব ।
অনিক ঃ হ্যা সত্ত্যি । পার্কে ওর ক্ষত বিক্ষত লাশ পরে ছিল । পুলিশ এখন লাশ ওদের বাড়িতে নিয়ে গেছে । চল ।
সোহার্থের চোখে পানি চলে আসে । টিশার্ট টা পরে চলে কথার বাসায় । এইতো গতকাল রাতেই কথার দেওয়া চকলেট বক্সটা খুলে জানতে পারে কথার ভালোবাসার কথা , আর আজ কথা নেই ।
বিকেলে জানাজা শেষ করে রুমে আসে সোহার্থ আর অনিক । ফ্রেশ হয়ে টিভি ওপেন করে অনিক । টিভিতে ব্রেকিং নিউজ ।
** ঢাকায় পিচাশের আক্রমনে একদিনে ৩০জন নিহিত **
সোহার্থ সোহার্থ দেখ টিভিতে ব্রেকিং নিউজ । পিচাশ তো ঢাকা দখল করে ফেলতেছে ।দেখ কি হচ্ছে । পিচাশ গুলো গলায় কামর দিয়ে রক্ত খেয়ে মেরে ফেলছে মানুষ গুলো । আর যারা বেছে যাচ্ছে কোন মতে তারাও নাকি কিছুখন পর পিচাশ হয়ে যাচ্ছে । পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে ।এখন কি হবে ।
সোহার্থ ঃ আচ্ছা আমার বইটা কোথায় ?
অনিক ঃ কোন বই ? আর এখন বই দিয়ে কি করবি ?
সোহার্থ ঃ আরে পিচাশ কাহিনি বই টা । ঐখানে এর থেকে উদ্ধারের সমাধান দেওয়া আছে ।
এর পর অনিক আর সোহার্থ খোজাখুজি করে । টেবিলের উপরেই ছিল বইটা ।
অনিক ঃ এই বইটা ?
সোহার্থ ঃ হ্যা ।
বই টা সোহার্থ হাতে নেয় । পাতা উল্টাতে থাকে । শেষের দিকে ১টা পৃষ্টা তে মনোযোগ দেয় ।
সোহার্থ ঃ এই দেখ অনিক । এখানে সমাধান দেওয়া আছে ।কোন পুরোনো শ্বষান থেকে হাড় যোগার করতে হবে । আর সিদূর লাগবে । আর কাচা লোহার গরা কোন দা দিয়ে পিচাশের মাথার মাঝখানে আঘাত করে মারতে হবে । ও মরে গেলে বাকি গুলা একাই মরে যাবে । হাড় আমাদের পিচাশেড় আক্রমন থেকে বাচাবে , সিদুর দিয়ে চক্র করে পিচাশকে আটকাতে হবে । সিদুরের চক্র থেকে বের হতে পারবে না ।
অনিক ঃ এতে কাজ হবে বন্ধু ?
সোহার্থ ঃ আশা রাখি । আর আসল পিচাশ টার এক কান থাকবে না । আমি ঐ পিচাশ টা দেখেছি । আমাকে ঐ পিচাশটাই মারতে চেয়েছিল ।
অনিক ঃ তাহলে প্রথমে আমাদের এগুলা যোগার করতে হবে । চল এখনি বের হয়ে পরি । যত আগে কাজ টা করতে পারবো তত বেশি মানুষকে বাচাতে পারবো ।
সোহার্থ ঃ পুরান ঢাকায় শ্বষান আছে । আর ঐখানে পুজার শিদুর ও পাওয়া যাবে ।
অনিক ঃ চল তো ।
এরপর বের হয় । তখন সন্ধ্যা পেরিয়ে প্রায় রাত । রাস্তা ঘাট একদম ফাকা ।
অনিক ঃ আমি জিবনে ঢাকার রাস্তা এমন ফাকা দেখি নাই ।
সোহার্থ ঃ এর আগে কখনো পিচাশ দেখেছিস ?
অনিক ঃ না ।
সোহার্থ ঃ এখন তো দেখতেছিস । দেখ সামনে ১টা লোক । চল দেখি তো কি করে ।
অনিক ঃ আগে চল তো পুরান ঢাকায় ।
সোহার্থ ঃ হয়তো কোন বিপদে পরেছে ।
দুজনে এগিয়ে যায় । কাছে যেতে হতবাক হয়ে যায় । লোকটার গলার দিকে কাটা , রক্ত বের হচ্ছে । এদিক ওদিক তাকিয়ে কিছু খুজছে । ১টা কুকুর দেখে তারা করে , কিছু দূর গিয়ে ধিরে ফেলে কুকুরটা কে । তারপর আর কি । কুকুরের রক্ত খায় , মাংশ খায় । অনিক দেখে বমি করে দেয় । কি ভয়াবহ অবস্থা । ওরা ওইখান থেকে সরে যায় । রওনা হয় পুরান ঢাকার দিকে । রাস্তা দিয়ে হেটে হেটে যাচ্ছে । মাঝে মাঝে আরো ২টা পিচাশ দেখতে পায় যারা কিনা মানুষ ছিল । কয়েকবার তারা করে সোহার্থ আর অনিককে ।
শ্বষান এ পোছে যায় । খুব ভুতুরে পরিবেশ ।
সোহার্থ ঃ শোন । হাড় উঠানোর সময় আমাদের আসে পাশে অনেক কিছু আসতে পারে । আক্রমন ও করবে কিন্তু কিচ্ছু হবে না । ভয় পাবি না । ভয় পেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে ।
অনিক ঃ ঠিক আছে ।
সোহার্থ শ্বষান এর যেখানে সৎকার করা হয় সেখানে গিয়ে খুজতে থাকে । অনিক ও এসে খুজে । সোহার্থ ১টা অর্ধ পোড়া হাড় পেয়ে যায় । তুলে নেয় হাতে ।
অনিক ঃ দোশ্ত দেখ চারপাশ থেকে কত কুকুর আমাদের দিকে তেরে আসছে ?
সোহার্থ ঃ ওইগুলা কুকুর না । অতৃপ্ত আত্তা । এই শ্বষানে থাকে ।
অনিক ঃ কি বলিশ তুই এইসব ? এখন কি আমাদের মেরে ফেলবে নাকি ?
সোহার্থ ঃ না , তবে ভয় পাওয়া যাবে না ।
অনিক ঃ আমার তো ভয় করছে
সোহার্থ ঃ আমি তোর সাথেই আছি ভয় পাস না ।
সোহার্থ অনিকের হাত ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে । অতৃপ্ত আত্তা গুলো একটু পর পর বিভিন্ন রুপ ধারন করছে , একবার কুকুর , একবার বাঘ , সাপ , ঘোড়া । হটাৎ বেশ জোরে ঝোরো হাওয়া শুরু হয় । যেন উরিয়ে নিয়ে যাবে ওদের ।
সোহার্থ ঃ দোস্ত আমার হাত শক্ত করে ধরে আগা । ভয় পাইস না , আমাদের কিছুই হবে না ।
অনিক ঃ দোস্ত আমি আর ভয় পাচ্ছি না । চল আগাই , সবাই কে তো বাচাতে হবে ।
দুজনে দুজনের হাত শক্ত করে ধরে । আগাতে থাকে । অনেক বাতাসে এগুতে হয় । বার বার পরে যায় কিন্তু হাত ছারে না । এক সময় শ্বষান থেকে বের হয়ে যায় । বাতাশ কমে যায় । আত্তা গুলো বিরাল হয়ে ওদের পিছু পিছু কিছুদুর আসে ।
অনিক ঃ এবার শিদুর ।
সোহার্থ ঃ আমি ওইটা শ্বষান এর মন্দির থেকে নিয়ে এসেছি । রাখ এটা তোর কাছে ।
অনিক ঃ দ্যাটস মাই গুড বয় । আচ্ছা চল শাখারী পট্টিতে ১টা কামারের দোকান আছে । ওইখান থেকে দা নিয়ে আসি ?
সোহার্থ ঃ চল ।
আবার হাটা শুরু করে । পৌছেও যায় দোকানে । কিন্তু এখন তো রাত দোকান বন্ধ । পাশেই কামারের বাসা সেখানে গিয়ে অনেক কিছু বলে তার বাসা থেকেই ১টা কাচা লোহার কাচি নিয়ে রওনা দেয় ।
বাইরে বের হয়ে দেখে ২টা মানুশী পিচাশ ১টা মানুষকে মেরে তার মাংশ খাচ্ছে । সোহার্থ দের দেখে তাদের দিকে তেরে আসে ।
অনিক ঃ দোস্ত পালা
সোহার্থ ঃ নাহ । দেখি হাড় টা কাজ করে কি না ।
পিচাশ টা প্রায় কাছে চলে আসলে সোহার্থ পকেট থেকে হাড় বের করে । হাড় বের করার সাথে সাথে পিচাশ ২টো পরে যায় । তখনি আবার উঠে পিছন দিকে চলে যায় ।
অনিক ঃ কাজ হয়ছে ।
সোহার্থ ঃ এখন আমরা প্রস্তুত । এখন ওই ২জন আমাদের সামনে আসলে হয় ।
অনিক ঃ হাটতে থাকি । চলে আসবে ।
হাটতে হাটতে চলে আসে সাবরিন দের বাসার পাশে । সেখান থেকে
সোহার্থ ঃ চল দোস্ত সাবরিনের কবরের ঐখানে যাই । ওকে খুব মিস করছি রে ।
অনিক ঃ চল পাগলা ।
সাবরিনের কবরের সামনে আসে । দারিয়ে কিছুখন কাদে তারপর কবর যেয়ারত করে গোরস্থান থেকে বের হয়ে আসে ।
হাটতে থাকে এমন সময় পিছন থেকে একজন সোহার্থের কাধে হাত রাখে
সোহার্থ ঃ কে ? (পিছনে তাকিয়ে দেখে সেই পিচাশ টা যে কিনা এর আগে সোহার্থ কে আগাত করেছিল , ওর মাথায় ১টা লাল দাগ । তার মানে এটাই মেইন পাপি )
নেহাল ঃ আমি নেহাল । পিচাশ রাজ্য কলংকপুরের রাজপুত্র ।
সোহার্থ ঃ ও তুমিই সে , যে কিনা আমাদের শেষ করে দিচ্ছ ?
নেহাল ঃ হ্যা , বলতে পারো । এইতো এখন তোমাদের খাবো ।আরো আগেই তোমাকে খেতাম , কিন্তু আমার বউটা কেনো জানি সেদিন তোমাকে বাচিয়ে দিল ।
সোহার্থ ঃ দেখো আমাদের দিকে আসবে না , তাহলে তোমার খবর আছে ।
নেহাল ধিরে ধিরে এগিয়ে যায় সোহার্থের দিকে , কাছে গিয়ে ফেলে দেয় সোহার্থকে । জাপটা জাপটি শুরু হয় । কামর দিতে যায় সোহার্থের গলায় আর এই সময় নাতাশা এসে নেহালকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ।
নেহাল ঃ আজও তুমি এসেছো ?
নাতাশা ঃ আমি তোমাকে বলেছিলাম যে তুমি ওর কিছু করবে না ।
নাহাল ঃ আমি ওকে খাবো । দেখি তুমি কি করো । ( নেহাল আবার সোহার্থের দিকে এগিয়ে যায়)
নাতাশা এবার নাহালকে পিছন থেকে আঘাত করে । তারপর ২জনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয় । নাতাশা নেহাল কে কাবু করে ফেলে , মাটিতে শুয়িয়ে ফেলে । হটাৎ নেহাল মাটি থেকে ছোট ১টা কাঠের টূকরা নাতাশার পেটে ধুকিয়ে দেয় , ধিরে ধিরে নিস্তেজ হয়ে পরে নাতাশা ।
সোহার্থ পকেট থেকে হাড় টা বের করে নেহালের সামন ধরলে নেহাল ভয়ে পিছনে চলে যায়। সোহার্থ নাতাশার কাছে আসে আর অনিক বুদ্ধু করে শিদুর দিয়ে নেহালের চারপাশে সার্কেল একে বন্দি করে ফেলে ।
সোহার্থ ঃ তুমি পিচাশ হয়েও আমার জীবন বাচানোর জন্ন্য জীবন দিলে । কেনো ?
নাতাশা ঃ ভালোবাসার জন্ন্য অনেক কিছুই করা যায় ।
সোহার্থ ঃ কে তুমি ?
নাতাশা তার রুপ বদল করে । আরাত্রিকার রুপে ফিরে আসে ।
সোহার্থ ঃ আরাত্রিকা তুমি ?
আরাত্রিকা ঃ হ্যা আমি আরিত্রিকা আমিই নাতাশা । আমি সাবরিন আর কথাকে মেরে ফেলছি । আমি তোমাকে ভালোবেশে ফেলেছি । যেদিন তোমাকে প্রথম দেখি সেদিনি তোমার প্রেমে পরে যাই । কিন্তু আমি তো পিচাশ আর তুমি মানুষ । সাবরিন আর কথা তোমাকে চাইতো তাই আমি ওদের মেরে ফেলি । আমাকে ক্ষমা করে দিও ।
কথা গুলো বলেই আরাত্রিকা সোহার্থের হাত ধরে , পুরো নিস্তেজ হয়ে যায় ।
অনিক ঃ সোহার্থ সময় বেশি নেই । পিচাশ টা কে আমি বন্দি করেছি ।
সোহার্থ কাচি টা এক হাতে আর এক হাতে হাড় টা নিয়ে সার্কেলে ঢুকে । কিছুখন নেহাল এর সাথে জাপরাজাপরি করে । নেহাল হাড়টার কাছে অসহায় হয়ে পরে , সুজোগ বুঝে সোহার্থ নেহালের মাথা কাচি দিয়ে ২খন্ড করে ফেলে । মরে যায় নেহাল , ধংশ হয় পিচাশ ষরযন্ত্র , মুক্তি পায় মানুষ জাতী পিচাশ দম্পতির মরন থাবা থেকে ।
সমাপ্ত
পুরো গল্পটাই আমার কল্পনা । এর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই । আমার লেখা গল্প যদি ভালো লাগে তাহলে প্লিজ গল্পটি অবশ্যই শের করবেন । আমার পেজটিও লাইক দিবেন আশা করি ।
আমার লেখা আরো গল্প পরতে চাইলে আমার পেইজ টি লাইক দিতে পারেন ।
https://www.facebook.com/arshipon15/

প্রেমের পাগলামী

#প্রেমের_পাগলামী
লেখা ঃ A R Shipon 

সেই দিনটি ছিল আজকের এই দিন, মানে ২৩শে জানুয়ারী। এখনকার মত তখনও লেখালেখির সাথে টুকটাক সম্পর্ক ছিলো। লেখার ভিক্তের সংখ্যাও নেহাত মন্দ ছিল না।একটু পাগল বাচ্চামী স্বভাবের ছিলাম এবং এখনো আছি। তবে বাচ্চামীটা শুধু ভার্চুয়াল জগৎ এই ছিল , বাস্তব জিবনে যথেষ্ট শান্তশিষ্ট।
গল্পটা শুরু করি । তার আগে আমার পরিচয়টা দেই , আমি হৃদয় । বগুরা শহরে আমাদের ছোট্ট ১টা বাড়ি । আমি বগুড়া থেকে ডিপ্লোমা পাশ করে উচ্চ শিক্ষার্জনের জন্য ঢাকায় পারি জমাই । একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি তে এডমিট হই । শুক্রাবাদে ১টা মেসে ব্যাচেলর জীবন শুরু।
নাহ এইভাবে জমছে না , গল্পের মত করেই বলি ............

হৃদয় ১টা মেসে থাকে । ডিপ্লোমা করলেও ঢাকা এসে প্রেমে পরে এনিমেশনের । চারুকলায় ভর্তি হয় সাথে লেখালেখির বদ অভ্যাস তো আছেই। হৃদয় ভৌতিক গল্প লিখে ব্লগে, ফেসবুকে, মাঝে মাঝে রোমান্টিক গল্পও। ফেসবুকে তার সাথে পরিচয় হয় অনামিকার। অসম্ভব সুন্দরি মেয়েটা। এতো সুন্দর যে মুখের ভাষায় সেটা প্রকাশ করার মত নয় । হৃদয় অন্য সবার সাথে খুব ফ্রিলি কথা বললেও এই মেয়েটার সাথে ঠিক জমিয়ে উঠতে পারে না । মাঝে মাঝে মেয়েটি হৃদয়ের পোষ্টে লাইক দেয় আর তখন সে নিজেকে পৃথিবীর সবচাইতে ভাগ্যবান  মানষদের মধ্যে নিজেকে একজন 
মনে করে। হৃদয় নিজে থেকে মনে করে সে হয়তো মেয়েটির যোগ্য না।

জানুয়ারী ১ তারিখ। 
 হৃদয় মনস্থির করলো যে সে আজ অনামিকাকে উইস করবে।

হৃদয় – ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা ।
অনামিকা কিছুখন পর রিপ্লে দেয় ।
অনামিকা ঃ happy new year 2011 .
হৃদয় আরেকটু সাহস নেয় বিভোরের কাছ থেকে । বিভোর বলে 
- কেমন আছে জিজ্ঞেস কর গাধা ।
হৃদয় ঃ কেমন আছেন আপনি ?
অনামিকা ঃ আপনি কথা বলতে পারেন ?
হৃদয় ঃ জি মানে বুঝলাম না ।
অনামিকা ঃ আজ প্রায় ৬ মাস হলো আপনি আমাকে আপনার ফ্রেণ্ড লিষ্টে এড করেছেন । কিন্তু এই প্রথম আমাকে কিছু বললেন ।
হৃদয় বিভোর কে স্ক্রিনশট দেখায় । হৃদয় বলে আমার ভয় লাগছে আমি আর কথা বলতে পারছি না । 
বিভোর- তুই ১টা গাধা রে, মেয়েটা তোর সাথে কথা বলতে চাইছে আর তুই কি না, দে আমাকে দে তো ফোন টা। 
 হৃদয়ের কাছে থেকে ফোন নিয়ে চ্যাট শুরু করে বিভোর ।

হৃদয় ঃ না আসলে আমি সুন্দরিদের ভয় পাই , বিশেষ করে তোমাকে ।
অনামিকা ঃ আমি কি বাঘ না ভাল্লুক ?
হৃদয় ঃ তুমি জাহান্নামি ।
অনামিকা কোন উত্তর দেই না । হৃদয় বিভোরকে অনেক রাগারাগি করে । 
হৃদয়- তুই এইটা লিখতে গেলি কেনো ? বিভোর- আরে আমি তো অন্য কিছু বলতে চাইছিলাম কিন্তু মেয়েটা তো কোন উত্তর দিল না।

দুইদিন হয়ে গেলো মেয়েটা হৃদয়ের কোন পোষ্টে লাইক দেয় না । আর রিপ্লে তো দুরের কথা ।
রাতে ১টা কবিতা লিখলো হৃদয় ।

"তুই কী জানিস, কেমন করে
এক শালিকের মেঘলা চোখে
শ্রাবণ বিকেল থমকে থাকে,
টিনের চালে ব্যাকুল কিছু
মেঘ ঝরে যায়,
রক্তজবার রং ধুঁয়ে যায় বিকেল শেষে ?"

কবিতাটা পোষ্ট করার পর সবার আগেই লাইক অনামিকার। শুধু তাই না সে ‘অসাধারন’ লিখে কমেন্টও করে ।
হৃদয় মহাখুশি কমেন্টস দেখে । এর কিছুখন পরেই অনামিকার ম্যাসেজ ।
অনামিকা ঃ আমার ফোনে একটূ সমস্যা হয়েছিল তাই ফেসবুকে দুদিন আসতে পারিনি। কেমন আছেন।
হৃদয়ের কিছুটা সাহস এখন হয়ে গিয়েছে ।
হৃদয় ঃ  ঠিক আছে ।
অনামিকা ঃ আচ্ছা আমি জাহান্নামী কেনো ?
হৃদয় হতভম্ব হয়ে যায় । এখন সে কি উত্তর দিবে । বিভোরকে কিছুক্ষন মনে মনে গালাগালি করে নিজেই ১টা সুন্দর উত্তর সাজিয়ে নিল ।

হৃদয় ঃ হ্যা তুমি তো জাহান্নামিই ।
অনামিকা ঃ কেনো ? কি করেছি আমি ?
হৃদয় ঃ একটা মানুষ কেনো এত সুন্দরী হবে? কি প্রয়োজন এতো সুন্দরী হওয়ার। যে মেয়েটার জন্য আমি এতো কষ্ট পাচ্ছি, রাতের ঘুম হাড়িয়ে ফেলেছি, এর জন্য কি তোমার জাহান্নামী হওয়া উচিত না ?
অনামিকা ঃ হাহাহাহাহা । আমি এতোটা সুন্দরী না যতটা আপনি বলছেন ।

এভাবে চলতে থাকে কথা তাদের কথোপকথন। বাইরে দেখা হয় একটা রেস্টুরেন্টে। সে এক আজব ডেট । দুজন দুজনের সামনে প্রায় ১ঘন্টা বসে ছিল কিন্তু কেউ কারোর সাথে কথা বলেনি । আচ্ছা ব্যাপারটা তাহলে কি দাঁড়াচ্ছে ? অনামিকাও কি আমাকে ভালোবাসে ? হৃদয় নিজেই নিজেকে এভাবে প্রশ্ন করছিল ।

হৃদয় একসময় সিদ্ধান্ত নেয় সে তার মনের কথা অনামিকা কে বলবে । বড় ১টা টেক্সট লিখে অনামিকা কে সেন্ড করে। এরপর ফেসবুক আইডি ভয়ে ডিএকটিভ করে দেয় ।
৩দিন পর ফেসবুকে ফিরে আসে হৃদয়। প্রথমেই অনামিকার আইডিতে ঢুঁ মারে । হৃদয় অবাক হয়ে যায় অনামিকার ১টা পোষ্ট পরে । পোষ্টটা এমন ছিল

“”আমি এক কাপুরুষকে খুব মিস করছি, প্লিজ কাপুরুষ আমার সাথে একবার কথা বলো। তানাহলে হয়তো আমি নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যাবো “”
পোষ্টটি পরে হৃদয় এক স্বর্গীয় ভালোলাগা অনুভব করে । পরক্ষনেই অনামিকার এসএমএস।
অনামিকা ঃ এই কাপুরুষের বাচ্চা প্রপোজ করে পালাই যাস কেন? জানিস আমার কত কষ্ট হচ্ছিল?
হৃদয় ঃ সর।
অনামিকা ঃ আচ্ছা তুমি আমাকে কখনো ছেড়ে যাবে না তো?
হৃদয় ঃ তুমি আমার হাত ছেরে পালিয়ে না গেলে আমি এই হাত কোনদিন ছাড়বো না।
অনামিকা ঃ আমি পালিয়ে যেতে চাইলেও তুমি যেতে দিবে না, বুঝলে পাগলা।
হৃদয় ঃ খুব বুঝেছি পাগলি ।

এভাবেই সম্পর্ক এগিয়ে যায় । হৃদয়ের আর্থিক অবস্থা খুব ১টা ভালো ছিলো না । অনামিকা কোটিপতির মেয়ে। অনামিকা অনেকভাবে হেল্প করে হৃদয়কে । যেমন  ফোন কিনে দেয় , ক্যামেরা , কম্পিউটার সহ অনেককিছু যা দিয়ে হৃদয় অনেক চেষ্টা করে জিবনে আরেকটু এগিয়ে নিতে , আর একটু বড় হতে । কিন্তু ব্যর্থতা হৃদয় কে মনে হয় অনামিকার চেয়ে বেশি ভালোবাসে তাই হৃদয়কে ছেরে যেতে চায় না। হৃদয়ের ব্যাপারটা ভাল লাগে না এই যে অনামিকার কাছ থেকে হেল্প নিতে। দুই বছর পরের কথা , হৃদয়ের ১টা জব হয়েছে ছোট খাটো ১টা এ্যানিমেশন ফার্মে। চলার মতো আরকি ।

জানুয়ারী ১ ২০২১ ,

ফেসবুকে কথা বলছে দুজন ,
অনামিকা ঃ হৃদয় আমরা বিয়ে করবো কবে ?
হৃদয় ঃ এখনি বিয়ে কেনো ?
অনামিকা ঃ আমাদের রিলেশনশিপের অনেকদিন হয়ে গেছে , আর বড় কথা তুমি আমাকে এখন অনেক এভোইড করো ।
হৃদয় ঃ কি বলছো উল্টা পাল্টা। আমার পক্ষে এখন বিয়ে করা সম্ভব নয় ।
এক কথায় ২ কথায় ২জনের ঝগড়া । একসময় ব্রেকাপ ।
ব্রেকাপের পর অনেক কান্নাকাটি করে মেয়েটি। হৃদয় আর কোন যোগাযোগ করে না অনামিকার সাথে। কয়েকদিন খুব মান খারাপ নিয়ে চলাফেরা করে অনামিকা, বাসায় বিষয়টা নজরে আসে । বিয়ে ঠিক করে অনামিকার । ছেলেটার নাম সজল । অনামিকা আর সজল দেখা করে রেস্টুরেন্টে , সেই রেস্টুরেন্ট যেখানে অনামিকা আর হৃদয় প্রথম দেখা করেছিল ।
সজল ঃ কেমন আছো তুমি ?
অনামিকা ঃ সুস্থ আছি , ভালো আছি।
সজল ঃ ওহ গুড । আচ্ছা তুমি এতো সুন্দরী কেনো ?
অনামিকা ঃ মৃত্যুর পর আল্লাহকে জিজ্ঞেস করবেন কারন তিনি আমাকে বাঁনিয়েছেন। আমি নিজে না।
সজল ঃ হাহাহাহাহা দারুন উত্তর দিলে তো । আচ্ছা কি খাবে বলো ?
অনামিকা ঃ আপনি কিছু অর্ডার করেন।

অনামিকা খুব মিস করে হৃদয়কে। কিন্তু সে বেইমানটাকে ভুলতে চায় । তাই সে সিদ্ধান্ত নেয় যে সে সজলের সাথে কিছু দিন মিশবে আর তারপর যদি ভালো লাগে তাহলে তাকেই বিয়ে করবে ।

অনামিকা আর সজল মাঝে মাঝেই বের হয় বাইরে ঘুরতে । সজলের গাড়ী আছে সেটাতে করেই বের হয় , সজলের রেস্টুরেন্টও আছে । সেও অনামিকাদের মতই কোটিপতি আর ইংল্যান্ড থেকে পাশ করা। কিছুদিন মেলামেশার পর অনামিকা সিদ্ধান্ত নেয় যে সে সজলকে বিয়ে করবে। বাসা থেকে বিয়ের ডেট ফিক্সড করা হয়। সপ্তাহ পরেই অনামিকার বিয়ে, সেটাই জানিয়ে গেল তার বাবা । বিয়ের ডেট শোনার পর থেকে কেমন জানো লাগছে অনামিকার। খুব মিস করছে হৃদয়কে। মিস তো করারই কথা । হৃদয়কেই যে ভালবাসে সে, অনেক বেশি ভালোবাসে। কিন্তু ছেলেটা বুঝে না মেয়েটার ব্যাথা । অনামিকা ভাবে নিশ্চয় হৃদয় অন্য কোন মেয়ের প্রেমে পরেছে তা না হলে কেন সে তাকে ছেরে যাবে। সে তো কম সুন্দরী না , এতো সুন্দরী মেয়ে সহজে চোখে পরে না। আর অনামিকাও তো এমন কিছু করে নাই যে কারনে রাগ করে দূরে সরে যাবে হৃদয়। কথা গুলো ভাবতে ভাবতে চোঁখে জল চলে আসে অনামিকার । কেঁদে লাভ নেয়, যে তাকে চায় না তার জন্য আর কাঁন্না নয়, হৃদয়কে ভুলে সজলকে নিয়ে ভাবনার সূচনার সিদ্ধান্ত নেয় । কিন্তু সেটা কি এতোটাই সহজ?

আচ্ছা এখন আমরা একট হৃদয়ের খোজ নেই সে কোথায় আর কেমন আছে।

হৃদয় জব টা ছেরে দিয়েছে । বেকার হয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে , ইদানীং সে স্মোকিং শুরু করেছে। কারনটা সবার এখনো অজানা । বন্ধুরা খুজে পায় না কেনো সে হটাৎ এমন বদলে গেলো , কেনো স্বপ্নের চাকরিটা ছেরে দিয়ে ভব ঘুরে হয়ে গেলো ।

বিভোর ঃ কি হয়েছে তোর? তুই এমন বদলে গেলি কেনো?
হৃদয় ঃ আমি বদলায় নি । যেমন ছিলাম তেমনি আছি ।
বিভোর ঃ অবশ্যই বদলে গেছিস, সেটা নাহলে জব টা ছেরে দিলি কেনো ? আর অনামিকার খবর কি ?
হৃদয় ঃ অনামিকার বিয়ে ঠিক হয়েছে শুনলাম।
বিভোর ঃ ওহ বুঝলাম । বদলানোর কারন টা ।

হৃদয় এর চোখে পানি চলে আসে ।

বিভোর ঃ আরে গাধা কাঁদছিস কেনো । আর তুই থাকতে কার সাথে বিয়ে হচ্ছে?
হৃদয় ঃ ওর এক কাজিনের কাছ থেকে শুনলাম সজল নামের এক ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে। লাভ ম্যারেজ।

বিভোর ঃ ইম্পসিবল । অনামিকা তোকে অনেক ভালোবাসে। অন্য কারো সাথে রিলেশন ও জিবনেও জরাবে না ।
হৃদয় ঃ করেছে তো । ছেলেটা অনেক বড়লোক আর ওয়েল এডুকেটেড ।
বিভোর ঃ এই কি হয়েছিল সব খুলে বলতো ।
হৃদয় সব খুলে বলে বিভোরকে । বিভোর কিছুক্ষন চুপ করে থাকে ।
বিভোর ঃ দোষটা তোর । তুই কেন ওর সাথে ব্রেকাপ করতে গেলি গাধা ?
হৃদয় ঃ কারন আমি ওকে ভালোবাসি। আমি জানি আমি ওকে বিয়ে করলে ওকে সুখে রাখতে পারবো না।
বিভোর ঃ আরে টাকা পয়সায় শুধু সুখ দেয় না, ভালোবাসার মানুষটা পাশে থাকাটা অনেক গুরুত্বপূর্ন ।

হৃদয় মন খারাপ করে রুম থেকে বের হয়ে যায় ।

কিছুদিন পর

আজ অনামিকার গাঁয়ে হলুদ । পুরোবাড়ি সাজানো হয়েছে রঙ বেরঙ এর আলোক স্বজ্জায়। হৃদয় এসেছে অনামিকাদের বাসার সামনে । বাইরে থেকে দাঁড়িয়ে দেখছে । এমন সময় পিছন থেকে অনামিকার এক বান্ধবী হৃদয়কে দেখে ডাক দেয়।

রিয়া ঃ কেমন আছেন ভাইয়া ?
হৃদয় ঃ ভালো। তুমি ?
রিয়া ঃ আমিও ভাইয়া ভালো। আসেন ভিতরে যাই ।
হৃদয় ঃ নাহ । আমি এদিক দিয়েই যাচ্ছিলাম । তাই একটু দাঁড়ালাম ।
রিয়া ঃ সেটা বললে হবে না , আমার সাথে যেতে হবেই ভিতরে । অনামিকার সাথে দেখা করতেই হবে।

রিয়া জোর করে ধরে নিয়ে যায় ভিতরে হৃদয়কে। ভিতরে ঢুকেই সবার মুখে কানাকানি কথা বলতে শুনে। কিন্তু বিষয়টি বুঝে উঠতে পারে না । ঠিক ওই সময় হৃদয়ের ফোনে কল আসে। বিভোর কল দিয়েছে।

হৃদয় ঃ হ্যা বল বিভোর।
বিভোর ঃ গাধারাম কোথায় তুই ?
হৃদয় ঃ অনামিকা দের বাসায় ।
বিভোর ঃ আরে করেছিস কি তুই পাগলা। তারাতারি পালা ঐখান থেকে।
হৃদয় ঃ কেনো পালাবো আমি?

বিভোরের কাছ থেকে অনামিকা ফোনটা নিয়ে নেয় ।আর হৃদয়ের প্রশ্নের উত্তর দেয় ।

অনামিকাঃ কারন আমি বিয়ে ফেলে পালিয়ে এসেছি । আর আসার সময় চিঠি লিখে এসেছি যে, আমি হৃদয় এর সাথে পালিয়ে গেছি ।

হৃদয়ঃ (মুচকি হাসি দিয়ে) মাইরালছে। এখন আমি পালাবো কিভাবে? আচ্ছা থাকো আমি আসতেছি।

সেই সময় রিয়া এসে হৃদয়কে বলে

রিয়া ঃ ভাইয়া তুমি এখনি পালাও। রিয়া বাসা থেকে পালিয়ে গেছে, আর যাওয়ার আগে চিঠিতে লিখে গেছে যে ও নাকি তোমার সাথে পালিয়ে গেছে। কিন্তু তুমি তো এইখানে , আল্লাহ জানে অনামিকা কোথায়।
হৃদয় ঃ অনামিকা আমার সুধু আমার ।

হৃদয় সেখান থেকে লুকিয়ে বিভোরদের বাসায় চলে আসে । এসে দেখে তার বাসায় সবাই চলে এসেছে , মানে গ্রাম থেকে বাবা-মা এবং ঢাকার তার সকল আত্মীয়স্বজন । শরীর দিয়ে ঘাম ঝরছে হৃদয়ের। মাথা নিচু করে বিভোরের রুমের দিকে যাচ্ছে। এমন সময় হৃদয়ের মামা বলে...

মামা ঃ শুনো । ঐ রুমে অনামিকা কে সাজানো হচ্ছে । তুমি পাশের রুমে যাও । ওইখানে গিয়ে রেডি হও । অনামিকার বাবা- মা আসছে । আসলেই তোমাদের বিয়ে।
সেই রাতে বিয়ে হয় দুজনের। বাসরঘরে হৃদয় আর অনামিকা । বিছানার উপর বসে আছে অনামিকা । হৃদয় কাছে যায় ।

হৃদয় ঃ এইটা কি হলো ?
অনামিকা ঃ কোনটা ?
হৃদয় ঃ বিয়ে বাড়ি ফেলে আরেক ছেলের কপাল পুরিয়ে এইভাবে চলে আসলে যে, এগুলা কি হ্যা ?

অনামিকা ঃ (হৃদয়কে জরিয়ে ধরে , মাথাটা হৃদয়ের বুকে গুঁজে দিয়ে) এই গুলা পাগলামী , তোমার আমার প্রেমের পাগলামী । তুমি শুরু করেছো, আর আমি শেষ করলাম ।
সমাপ্ত ।
( পুরো গল্পটাই আমার কল্পনা । এর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই )
আমার লেখা আরো গল্প পরতে চাইলে আমার পেইজ টি লাইক দিতে পারেন ।
https://www.facebook.com/arshipon15/
সমাপ্ত ……

নীল তরন্নিতা

নীল তরন্নিতা
লেখা : প্রে তা ত্তা


বকুল ফুল বকুল ফুল সোনা দিয়া হাত কেন বান্দাইলি …………………… রবিন্দ্র সরবরে বসে গান গাচ্ছিল শিপন , রহিত আর নাঈম । নাঈম আর রহিত ভালোই গায়তে পারে , কিন্তু শিপন গান এর গ ও গাইতে পারে না । তবু গায় , গায়তে ওর ভালো লাগে । গান গাচ্ছে শিপন , হটাত পিছন থেকে ১টা মেয়ে এসে বলে
মেয়ে ঃ এই মিয়া কি পায়ছেন আপনি ? এখানে কি আপনার জন্ন্য আর অন্ন্য কেউ বসতে পারবে না ? গান গায়তে পারেন না গান কেনো ? মানুষদের একটু শান্তি দিন প্লিজ ।
কথা গুলো বলে মেয়েটা চলে যা। শিপন হা করে মেয়েটার দিক তাকিয়ে থাকে । কিছক্ষন পরে শিপন বলে
শিপন ঃ মেয়েটা সত্তিই খুব সুন্দর তাই না ?
ওর কথা শুনে নাঈম আর রহিত হাসতে হাসতে বলে আরে বোকা মেয়েটা তোমাকে অপমান করে গেল আর তুমি কি তার প্রেমে পরে গেলা । তারপর কিছখন পর তারা চলে যায় ।
পরেরদিন আবার অফিস শেষ করে ওরা ৩ জন আসে । তবে আজ আর শিপন গান গায় না । নাঈম গান গাচ্ছে …। কিছুক্ষন পর সেই মেয়ে টি
মেয়ে ঃ এক্সকিউজমি … আমি সরি গতকালের খারাপ ব্যবহার এর জন্ন্য ।
শিপন ঃ আরে না , আপনি তো আর ভুল বলেন নাই । আজ কিন্তু আর আমি গান গাচ্ছি না ।
(মেয়ে টা একটু লজ্জা পায় )
মেয়ে ঃ না আপনি সত্ত্যি খুব ভাল গান করেন , আমি শুনেছি ।
(মেয়েটার কথা শুনে ওরা সবাই হেসে উঠে )
শিপন ঃ আপনি কিন্তু খুব ভালো মিথ্যা বলতে পারেন না , সেটা কি আপনি জানেন ? যাই হোক আমি শিপন , আর ওরা আমার বন্ধু রহিত আর নাঈম ।
মেয়ে ঃ আমি নিলা । খুব ভালো লাগলো আপনাদের সাথে পরিচয় হতে পেরে । আজ আমি উঠি বাড়ি যেতে হবে । আরেকদিন দেখা হবে আসি ।
শিপন ঃ ঠিক আছে । আল্লাহ হাফেজ ।
শিপন মেয়েটার দিকে একপলকে চেয়ে আছে । মেয়ে টা কিছুদুর যাওয়ার পর পিছনে ফিরে ওদের টাটা দেই । শিপন ওদের বলে নীলা সত্ত্যিই অসম্ভব সুন্দর …।
পরেরদিন নীলা সরবরে আসে কিন্তু এসে ওদের খুজে পায় না । মনে মনে ভাবে ওদের নাম্বারটা কাল রেখে দিলেই পারত । কিছক্ষন হাটাহাটির পর চলে যায় । আসলে নীলা খুব একা , ওর তেমন কোন বন্ধুও নাই । তাই হইত শিপন এর সাথে বন্ধুত্ত করার পর ওকে মিস করছে । আবার হয়ত ওর প্রেমেও পরতে পারে ।
আজ নভেম্বরের ৭ তারিখ । আজ শিপনের জন্মদিন । অফিস শেষে একা সরবরে এসেছে । নাঈম আর রহিত আজ অফিসে আসে নাই … তাই শিপন একা । ১টা সিগারেট নিয়ে টানছে আর হাটছে । পিছন থেকে কে জেনো ডাক দিল শিপন বলে । পিছনে তাকিয়ে দেখে নীলা এসেছে । কালো রঙের ১টা ড্রেস পরেছে । দারুন সুন্দর লাগছে ওকে ।
নীলা ঃ কি দেখছো তুমি এমন করে আমাকে ? আমাকে কি দেখতে খুব সুন্দর লাগছে ?
শিপন ঃ সরবরে আজ পড়ি নেমে এসেছে , তাই পড়ি দেখছি …।। আমার মনে হয় পড়িটার জাহান্নামে যাওয়া উচিত ।
নীলাঃ কি … আমি কি করছি যে আমি জাহান্নামে যাব ?
শিপন ঃ তোমার অপরাধ হচ্ছে তুমি অসম্ভব সুন্দর । মানুষকে কেন এত সুন্দর হতে হবে ?
কথা শেষ হতে না হতেই নিলা শিপনের পিঠে আস্তে করে থাপ্পর দেই । তার পর দুজনে হাটতে থাকে …।আর গল্প করে । আজ যাওয়ার আগে নীলা শিপনের নাম্বাব নিয়ে নেয় ।
মাঝরাতে শিপনের ফোন আসে । রিসিভ করে বলে হ্যালো কে । ওই পাস থেকে আমি নীলা ,
শিপন ঃ ওহ নীলা , এত রাতে কী মনে করে ?
নীলা ঃ না ,ম মানে তোমার ফেসবুক আইডি টা দিবা ?
শিপন ঃ হ্যা । Sh Ip On লিখে search দিলেই আমাকে পাবা …।
নীলা ঃ thank you . কি কর তুমি ?
শিপন ঃ ফেসবুকে চ্যট করছি , তুমি ?
এইভাবে শুরু হয় শিপন আর নীলার সম্পরক । খুব তারাতারিই ওরা একে অপরের প্রেমে পরে যায় । খুব ভালোই চলছিল ওদের । প্রতিদিন অফিস শেষে ২জন মিলে সরবরের এককোনায় বসে হাতে হাত রেখে গল্পে জমে উঠতো । এত গল্প যে ওরা কোথায় পেত সেটা শুধু ওরাই যানে ।। আর শুক্রবার নীলা নীল শাড়ি পরে আসত । ছুটির দিন ২ জন ২ জন কে প্রায় সারাদিনই সময় দিত । মাঝে মাঝে নীলা বাসায় থেকে রান্না করে নিয়ে এসে শিপন কে নিজ হাতে খায়িয়ে দিত ।এভাবেই চলে ওদের প্রেম । একসময় ওরা সিদ্ধান্ত নেই যে ওরা বিয়ে করবে । তারপর এক্অসময় তারা নিজেরা বিয়ে ও করে ফেলে ।
ছোট্ট ১টা বাসা নেই । আল্প আসবাবপত্র দিয়েও হলে সুন্দর করে বাসাটা গুছিয়ে ফেলে । ২জনের সংসার চলতে থাকে , শিপনের অল্প টাকার বেতনে চলতে ওদের একটু কষ্ট হয় । তবু সে চালিয়ে যাবার চেষ্টা করে । নীলাও হ্যাপি । একদিন হটাত নীলা অসুস্থ হয়ে পরে , তারপর সে ডাক্তারের কাছে যায় । ফিরে আসার পর থেকে নীলার মন খারাপ । মাঝে মাঝে একা একা কাদে কিন্তু শিপন ধরতে পারে না । নীলা শিপনের সাথে হটাত খারাপ ব্যবহার শুরু করে । তারপর একদিন নিলা এই অভাবের সংসারে থাকবে না বলে চলে যায় । শিপন ওকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করেও ধরে রাখতে পারে না । যাবার আগে সেই প্রথমবার ফিরে দেখার মত পিছনে ফিরে তাকায় , সেইদিন নীলার মুখে হাশি থাকলেও আজ কিন্তু তার ২চোখে পানি ……। নীলা চলে যায় তার বাবার কাছে । আর শিপন পরে থাকে একা । কান্না ছারা শিপনকে আর কিছুই দিয়ে যায় নি । বার বার তার বাবার কাছ থেকে আনার চেষ্টা করেও পারেনি শিপন ।
এভাবে প্রায় ৬ মাস চলে যায় । শিপন অনেক বদলে গেছে , মুখে দাড়ি । আর হাতে সব সময় সিগারেট থাকে ।
এক দুপুরে শিপনের কাছে ফোন আসে নীলার বাবার নাম্বার থেকে । সে শিপন কে তার বাসায় আসতে বলে । শিপন আর কিছু না ভেবে সাথে সাথেই নীলা দের বাসায় যায় ।বাসায় গিয়ে সোফায় বসে আছে শিপন । কিছুখন পর নীলারবাবা আসে । শিপন পাগলের মত দারিয়ে বলে
শিপন ঃ বাবা নীলা কোথায় , আমি ওর সাথে কথা বলতে চাই ।
বাবা ঃ( কাদতে কাদতে ) নীলা আর নেই বাবা , ও তোমাকে মেমরী টা দিয়ে গেছে ।
বলে সে চলে যায় । শিপন যেন কথা গুলো শুনে আকাশ থেকে পরলো । কোন্ রকমে বসে মোবাইলে মেমরী টা ভরে দেখলো একটা ভিডিও আর নীলা আর শিপন এর অনেক গুলো ছবি । ভিডিও টা ওপেন করলো ………………
নীলা হাসপাতালের একটা বেডে শুয়ে ভিডিওটা করেছে , সে কিছু বলছে …। কথা গুলো এমন
নীলা ঃ কেমন আছো শোনামনি । যানি ভালো নাই তুমি । তুমি খুব কষ্ট পেয়েছ তাই না যেদিন আমি তোমাকে ছেরে চলে এসেছি । বিশবাস কর জান আমি তোমাকে ছেরে আসতে চাই নি । আমি এটাও চাই নি তোমাকে কষ্ট দিতে । কিন্তু নিয়তি আমাকে তাই করতে বাধ্য করেছে । হাসপাতালে গিয়ে শুনি আমার ব্রেইন ক্যান্সার হয়েছে । তোমাকে বলে আমি কষ্ট দিতে চাই নাই । তাই পালিয়ে এসেছি তোমাকে একা ফেলে । আসার পর প্রতিটা দিন তোমাকে ছারা খুব কষ্টে কেটেছে । বাবু তোমার আদর আর ভালোবাসা খুব মিস করছি , তোমার হাতের বানানো চা খুব খেতে ইচ্ছে করে । কতদিন হয় তুমি আমার চুল বেধে দাও না । মনে পরে তোমার আমার একবার জর হয়েছিল তারপর তুমি কত …… আর পারছি না আমি । আমাকে ক্ষমা করে দিও বাবু । আর প্লিজ আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা টা ধরে রেখ । আমার জন্ন্য মাঝে মাঝে চা বানাবে কিন্তু , আর প্রতিদিন আমার কবরে এসে আমার সাথে দেখা করে যাবে …।। আমি খুব মিস করছি তোমাকে । আমি আর পারবো না শোনা ……… ছোট্ট করে ১টা চুমু দিয়ে ভিডিওটা বন্ধ হয়ে যায় ।
শিপন কিছুখন পর মাথা ঘুরে পরে যায় ।।
পরের দিন থেকে রোজ সকালে শিপন নীলার কবর একবার করে জেয়ারত কর । প্রতিবার ২ কাপ চা বানায় , সিগারেট খাওয়া ছেরে দেই । আর ৫ ওয়াক্ত নামাজ পরে নীলার জন্ন্য দোওয়া করে ।
এইভাবেই চলে শিপন এর বাকি জীবন ।

অদ্ভুত ভালোবাসা

অদ্ভুত ভালোবাসা
লেখা ঃ প্রে তা ত্তা


সন্ধ্যা প্রায় ৬টা বাজে , ধানমন্ডি লেকের ধারে বসে ঝগড়া করছে রাব্বি আর সাথি । আমি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি।
আমি , রাব্বি আর সাথি এক সাথে পড়ে । তিন জন-ই আমার ভাল বন্ধু।
ঘড়ি ধরে তিরিশ মিনিট হল ওরা ঝগড়া করছে। আমি এসেছি ওদের ঝগড়া মেটানোর জন্য। আগের দিন ফোন করে এখানে আসার কথা বলেছিল সাথি। কিন্তু দু জনকে থামিয়ে দিয়ে সব মিলিয়ে এখনো পাঁচটা কথা বলতে পেরেছি কিনা সন্দেহ।
সাথি মেয়েটা সুন্দরী । সাদামাঠা একটা ড্রেস পরে এসেছে। মুখেও তেমন একটা মেকাপ নেই। চোখে সামান্য একটু কাজল, আর ঠোঁটে লিপস্টিক।
রব্বি কালো হলেও তার মধ্যে এমন একটা ম্যানলি ব্যাপার আছে যে, কোন মেয়ে একবার দেখলে আগ্রহ নিয়ে তার দিকে দ্বিতীয়বার তাকাবে।
তুই-ই বল শিপন , আমার দিকে তাকিয়ে বলল সাথি ।ওর মত মিথ্যুক আর ইরেস্পন্সিবল ছেলে তুই তোর জীবনে দেখেছিস?
"তোদের ঝগড়ার মধ্যে আমাকে টানছিস কেন"
"ওমা এ কী কথা তোকে এখানে আসতে বললাম কেন?"
"যে কাজের জন্য আসতে বলেছিস তা তো তোরা নিজে নিজে-ই কী সুন্দর সমাধান করছিস!"
"তুই আবার রাগ করছিস কেন?" রাব্বি বলল; "আচ্ছা থাক এখন বল আমাদের মধ্যে কার দোষ বেশি আর আমাদের কার কি করা উচিত?"
আমি বললাম,"প্রথমে সাথি বল, ঘটনাটা কি হয়েছে? তারপর রাব্বি বলবি । ওকে?"
"ওকে!" বলল দু জন-ই।
"ঘটনা হচ্ছে" সাথি বলতে শুরু করল,"তুই তো ইরাকে চিনিস? ওই যে লম্বা মত ফর্সা মেয়েটা?"
হ্যাঁ হ্যাঁ চিনেছি বল"
"ওই মেয়ের সাথে ও কাল সারারাত গুজুর গুজুর ফুসুর ফুসুর করেছে"
"মিথ্যা বলছে ও" রাব্বি বলল, "আমি মোটেই ওর সাথে কথা বলিনি; আমি রাতে নোট নিয়ে তাহমিনার সাথে কথা বলেছি"
"এত বড় মিথ্যা কথা!" চেচিয়ে উঠল সাথি "আল্লা সইবেনা"
"এই তো আবার শুরু করেছিস" বিরক্ত হলাম আমি; "আমি তাহলে চলে যাচ্ছি।
"না! না! না!" দু জনই বলে উঠল "আর করবনা"
"আচ্ছা সাথি" বললাম আমি "তুই কি করে বুঝলি ও কাল ইরার সাথে কথা বলেছে?"
"কাল ভোর পাঁচটা পর্যন্ত ওর ফোন বিজি ছিল"
"এতেই কি প্রমান হয়ে যায় যে আমি ইরার সাথে কথা বলেছি?" প্রতিবাদ করল রাব্বি
"রাব্বি তো ঠিকই বলছে এতে তো তা প্রমান হয়না"।
"আমার কাছে প্রমান আছে শিপন" ওর কন্ঠটা হঠাৎ খুব শান্ত শোনাল।
"তাহলে বল কি প্রমান?"
"আমি তা বলতে পারবনা" গলাটা কেঁপে উঠল ওর । তারপর না জানি কি হল। দু হাতে মুখ ঢেকে কাঁদতে শুরু করল। বিব্রত বোধ করলাম খুব। রাব্বির চেহারা-ও খেয়াল করলাম চেঞ্জ হয়ে গেছে। অপরাধবোধের কালো একটা ছায়া নেমে এসেছে ওর চেহারায়।
বুঝতে পারলাম রাব্বি আর সাথি আজকের ঘটনটা ঝগড়ার অন্যান্য দিনগুলোর মত নয়। ওরা প্রচুর ঝগড়া করে ঠিকই তবে তা কখনো রিলেশন ব্রেকের মত ব্যাপার নয় কিন্তু সাথি এই কান্না আর রাব্বির অপরাধীর মত ওই কালো মুখ তাদের সম্পর্কের মধ্যে ফাটলের পূর্বাভাস বলেই মনে হচ্ছে।
"সাথি শোন" কান্নার বেগ একটু কমে আসাতে বললাম আমি "তুই আমাকে ঘটনাটা পুরো খুলে বল নইলে আমি তোদের কোন সমাধান দিতে পারছিনা।"
"কোন সমাধান নেই শিপন! ওর সাথে আমার সম্পর্ক রাখা সম্ভব না।"
"কিন্তু কেন?"
"ও একটা বেঈমান,মিথ্যুক, বিশ্বাসঘাতক"
"বিশ্বাসঘাতকতার কি করল সেটাই তো জানতে চাচ্ছি।"
হঠাৎ করে ্সাথি এক ঝটকায় উঠে দাঁড়াল- "আমি চলে যাচ্ছি শিপন"
"ওমা সে কী! কোন কথাই তো বলা হয়নি"
"আর কোন কথা নেই শিপন আর কোন কথা নেই! ওকে বলে দিস অন্তত বৌ এর সাথে যেন এ ধরনের বেঈমানী সে না করে"
হন হন করে হাঁটতে শুরু করল ও। এতক্ষন চুপচাপ ছিল রাব্বি । এবার উঠে দাঁড়াল। বলল "প্লীজ ্সাথি প্লীজ । আমি ক্ষমা চাচ্ছি, ভুল হয়ে গেছে আমার। আর কখনো হবেনা। প্লীজ তুমি যেয়োনা। আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে । প্লীজ যেয়োনা। আমি বুঝতে পারছি আমি অন্যায় করেছি।"
সাথি হেঁটেই চলেছে। পিছন পিছন রাব্বি । আমি হতভম্ব হয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে থেকে যেখানে ছিলাম সেখানেই বসে রইলাম।
রাত নয়টা। ফোনে কথা বলছি আমি আর সাথি । এর মধ্যে আমার সব ঘটনা জানা হয়ে গেছে। ঘটনা সামান্য না।
সাথির এক কাজিনের বিয়েতে সে আবিষ্কার করল ইরা তাদের বেশ কাছের আত্বীয়। একই ভার্সিটিতে পড়ার কারনে আগেই সামান্য পরিচয় ছিল ওদের মধ্যে। তবে ইরা দু ব্যাচ জুনিয়র। আত্বীয় সূত্রে আবদ্ধ হবার পর এদের মধ্যে ঘনিষ্টতা আরো গাঢ় হল।
ঘটনাটা গতকালের । সাথি বেড়াতে গিয়েছিল ইরাদের ওখানে। সারা রাত একসাথে ছিল। এ কথা সে কথার পর রাব্বির কথা উঠল। সব কিছু বলল ইরাকে ও। এক পর্যায়ে ইরা বলল, "ছেলেদের বেশি বিশ্বাস করোনা আপু, ওরা খুব খারাপ!"
"রাব্বি ওরকম ছেলেই নয়"
আত্মবিশ্বাসের সাথে বলেছিল ও। তারপরই একটা চ্যালেঞ্জ করে বসল মেয়েটা; বলল, "তুমি চাইলে এখনই তার প্রমান দিতে পারব আমি। তুমি ওই ছেলের ফোন নাম্বার দাও,তোমার সামনেই কথা বলি;দেখ কি বলে তোমার ওই ভাল ছেলেটা"।
এ ধরনের একটা ব্যাপারে ও জড়াতে চায় নি। কিন্তু কি আর করা। আত্মসম্মানবোধের কারনে ও বাধ্য হল ইরাকে রাব্বির ফোন নাম্বার দিতে। তারপর যা ঘটার তাই ঘটল। প্রেমে গদ্গদ হয়ে ইরার সাথে সারারাত কথা বলল রাব্বি গাধাটা। ঘটনাটা যাতে বেশি দূর না এগোয় সাথি ওকে ফোন করছিল বারবার। কিন্তু রাব্বি বুঝতেই পারেনি যে সাথি ফোন করেছে। কারন সেদিনই ওকে মানা করছিল সাথি-যাতে কোন প্রকার কল করা না হয় কারন সে তার কাজিনের শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছে।

রাত ২ টার মত বাজে। ঘুমুতে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছি( আমি দেরীতে ঘুমায়) এমন সময় তীব্র আর্তনাদ করে উঠল আমার মোবাইলটা। ডিসপ্লে তে তাকিয়ে দেখি রাব্বি গাধার ফোন । অত্যন্ত বিরক্তিরসাথে ফোন টা রিসিভ করলাম।
"শিপন আমাকে বাঁচা! কিছু একটা কর!"
"দোষ তো তোর"
"আমি সব স্বীকার করছি,কিন্তু তুই তো জানিস আমি ওকে কত ভালবাসি"
"এখন আমি কি আর করতে পারি বল? তোর দোষ তো আর একটা না,একেতো সারারাত কথা বলেছিস মেয়েটার সাথে। তার উপর স্বীকার করিসনি। সম্পর্ক নষ্ট হবার জন্য এর যেকোন একটি কারনই তো যথেষ্ট"
"আমি এখন কি করবো? আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।"
মনে হল রাব্বি কাঁদছে। কিছুক্ষন চুপ থেকে বললাম "ঠিক আছে আমার যথা সাধ্য চেষ্টা করবো। এখন ঘুমুতে যা! প্রচুর জ্বালিয়েছিস আমাকে!"

দুই বছর পর।

একদিন বিকেলে জানালার ধারে বসে দূরের আকাশ দেখছি। এমন সময় কলিং বেলের শব্দ। বোন দরজা খুলে দিল। সাথি এসেছে। হাতে একটি কার্ড। তাকে দেখে মনে হল বেশ তাড়াহুরার মধ্যে আছে। কার্ড আমাকে দিয়েই বলল "অবশ্যই যাবি"
"অবশ্যই যাব" বললাম আমি।
এ কথা সে কথা বলার পর আর জামাই কি করে না করে ইত্যাদী জানার পর বললাম,"একটা কথা বলব। রাগ করবিনা তো?"
"আমি জানি তুই কি বলবি? তবু তোর কথা শুনব,কোন রাগ করবনা"।
"রাব্বির সাথে ব্রেকের ব্যাপারটা মনে হচ্ছে তোর ঠিক হয়নি ।ছেলেটা তোকে সত্যি ভালবাসতরে...
"কথা শেষ হয়েছে?" ভ্রু নাচিয়ে বলল ও।
"না" বললাম আমি "সে না হয় ভুল করেছে কিন্তু এতদিন ওর সাথে তুই যা করেছিস সেটা অপরাধ ছাড়া আর কিছু বলতে পারছিনা আমি"
"মানে?"
"তোর আর মানে বুঝার কাজ নেই। ভালকরে বিয়ের প্রস্তুতি নে"।

আরো পাঁচ বছর পর।

রাব্বিদের ড্রয়িং রুম । আমি আর মিঠু গল্প করছি। বন্ধুদের মধ্যে আমরা প্রায় সবাই বিয়ে করে সংসার ধর্ম পালন করছি। কিন্তু রাব্বি করেনি কিংবা করছেনা । যদিও এখন আর্থিক ও সামাজিকভাবে সে বেশ প্রতিষ্টিত। বিয়ের দায়িত্ব নেবার সব যোগ্যতাই তার আছে।
কথাবার্তার এক পর্যায়ে ওকে বললাম "তুই কি জীবনেও বিয়ে করবিনা?"
"না"
"পারবি তুই এ শপথ ধরে রাখতে?"
"তুই জানিসনা দোস্ত?" অদ্ভুত রকমের শান্ত কন্ঠে রাব্বি বলল "আমি কোরান ছুঁয়ে শপথ করেছিলাম সাথিকে যদি বিয়ে না করি তাহলে জীবনে আর কখনো কাউকে বিয়ে করবনা!"
বিস্ময়ে হতবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। এ কী শুনলাম আমি! আর ঠিক তখুনি জানিনা কেন, হঠাৎ আমার প্রায় সাত আট বছর আগে সাথিকে বলা ইরার একটি কথা মনে পড়ে গেল- "ছেলেদের বেশি বিশ্বাস করোনা আপু, ওরা খুব খারাপ!"

আপুদের কে বলছি , ভালোবাসার মানুষটাকে বিশ্বাস করতে শিখুন ।

অন্যরকম মেয়েটি



অন্যরকম মেয়েটি
লেখা ঃ প্রে তা ত্তা


ফেসবুকে স্টাটাস দিয়েছিলাম '''''''''''' একটা গল্প লিখতে চাচ্ছি , কিন্তু কি লিখবো বুঝতেছিনা ''''''''''''' অনেক কমেন্ট আর ম্যসেজ আসা শুরু করে এরপর থেকে । অনেকে অনুরোধ করে তাদের নিয়ে গল্প লিখতে । কিন্ত কোন এক কারনে মন টা ভীষন খারাপ হয়ে যায় । গল্প টা আর সেদিন কিন্তু লেখা হয় নি ।
এর কিছুদিন পরের কথা । ধানমন্ডী লেকে একাই হাটছিলাম । পিছন থেকে হটাৎ আমার সামনে এসে দাড়ায় ।
মেয়েটি ঃ আপনি কেমন মানুষ বলুন তো ?
আমি ঃ মানে ? কি করলাম আবার আমি ?
মেয়েটি ঃ কি করলেন মানে ? সেদিন আমি এতো রিকোয়েষ্ট করলাম । আর আপনি আমার কথাই রাখলেন না ।
আমি ঃ কবে , কোথায় কি রিকোয়েস্ট করলেন ?
মেয়েটি ঃ সেদিন আপনাকে অনেকবার এফবিতে এসএমএস , কমেন্ট করেছিলাম যে আমার ১টা গল্প আছে সেটা আপনি সুন্দর করে লিখে দিন । কিন্তু আপনি লিখলেন ই না ।
আমি ঃ ওহ সে কথা । আচ্ছা আজ লিখবো ।
মেয়েটি ঃ আজিবতো । কি লিখবেন আপনি শুনি ?
আমি ঃ সেটাই তো ।
মেয়েটি ঃ হ্যা । আমি বলছি আপনি শুনুন ।
এরপর মেয়েটি তার গল্প কেমন হবে সেটা বলে । লেকের এক কোনে বসে অনেকখন কথা বলে । মেয়েটির নাম ঈতু । সে একটা ছেলে কে ভালোবাসে , ছেলেটিও তাকে ভালোবাসে । ছেলেটির নাম রাজেন । তেজগা কলেজে অনার্স করছে ।
আমি মেয়েটির সাথে কথা বলে সালাউদ্দিন এর সাথে দেখা করে রাতে বাসায় ফিরি । খাবার দাবার শেষ করে শুয়ে পরি । একটা ফোন আসে ।
আমি ঃ হ্যালো , কে বলছেন ?
ওপারথেকে ঃ আপনি শুয়ে পরছেন তাই না ?
আমি ঃ হ্যা । আপনি কে ?
ওপারথেকে ঃ আমি ঈতু । আপনার না গল্প লিখার কথা , এতো কষ্ট করে আমি আপনাকে এতো কিছু বললাম আর আপনি কিনা শুয়ে পরছেন । খুব খারাপ । কান ধরেন ।
আমি ঃ সরি ভুল হয়ে গেছে । আমি এখনি বসছি ।
ঈতু ঃ আচ্ছা ঠিক আছে । রাগ করবেন না প্লিজ । আমি এমনি , একটু বেশি কথা বলি ।
ফোনে কথা শেষ করে আমি একটু বারান্দায় আসি , প্যাকেট থেকে ১টা সিগারেট বের করে কিছু খন টানাটানি করি আর ভাবি কিভাবে গল্পটা শুরু করা যায় । এক-সময় মাথায় চলেও আসে । দেরি না করে পিসিতে বসে পরি । আমার আবার ডায়রী মেইনটেইন করার অভ্যাস নাই । গল্পের নাম দিলাম অন্যরকম মেয়েটি । এর কারন হচ্ছে মেয়েটির সাথে দেখা হওয়াটা অন্যরকম ভাবেই হয়েছিল । আর আমি সিউর মেয়েটি অন্য মেয়েদের চেয়েও আলাদা , একেবারেই অন্যরকম । চঞ্চল , চেহারায় আলাদা ১টা মায়া আছে । মেয়েটি কাজল পরেছিল । আর সব চেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে মেয়েটি আমাদের মত বিভিন্ন মনোমুগ্ধকর পারফিউম ইউস করে না । গোলাপ জলের আতর ইউস করে । জিজ্ঞাসা করেছিলাম কেনো এটা ইউস করো । উত্তরে মেয়েটি বললো
ঈতু ঃ আচ্ছা আপনি কি বলতে পারবেন যে আপনি কখন মারা যাবেন ? আমিও পারবো না । যে কোন সময় মারা যেতে পারি । আমরা মানুষরা ভুলে যাই মৃত্যুর কথা , তারপর পাপে ডুবে যাই । তাই মৃত্যুর কথা মনে রাখতেই আমার এই পদ্ধতি । ভালো না বুদ্ধিটা ?
আমিও উত্তরে বলেছিলাম অসাধারন । আচ্ছা অনেক কথাই তো হলো , এখন কি গল্পে আসা উচিত না ??? তাহলে গল্পে আসি
অন্যরকম মেয়েটি
মেয়েটির নাম ঈতু । ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার , থাকে ঢাকা । দেখতে সিমপ্লি সুন্দর । মাঝে মাঝে চোখে কাজল পরে । সে একটা ছেলে কে ভালোবাসে , ছেলেটিও তাকে ভালোবাসে । ছেলেটির নাম রাজেন । তেজগা কলেজে অনার্স করছে । একটু দুষ্টু প্রকৃতির । ঈতু আর রাজেনের পরিচয় বসুন্ধরা শপিংমলে । সেদিন ২জনেই গিয়েছিল সিনেপ্লেক্সে মুভি দেখতে । সেখানথেকেই পরিচয় । রাজেন ঈতু টিস করতেছিল । ভার্সিটি পরুয়া ছেলেরা হলে গিয়ে যেই ধরনের করে আরকি । রাজেন বুঝতে পারে যে সে আজ একটু বেশি করে ফেলেছে । তাই মুভি দেখা শেষে ঈতুকে খুজে বের করে ।
রাজেন ঃ হ্যালো আপু ।
ঈতু ঃ আপু ? কে আপু ? একটু আগে না কি যেন বলে ডাকছিলেন , সেটা বলে ডাকেন । (চেচিয়ে চেচিয়ে বলছিল ঈতু)
রাজেন ঃ আপু আমি সরি ।
ঈতু ঃ মেয়েদের কি মনে করেন আপনারা ? মানুষ মনে করেন না তাই না ?
রাজেন ঃ আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি , তাই নিজে থেকে সরি বলতে এসেছি । আবার বলছি সরি । বন্ধুদের সাথে থেকে দুষ্টুমি টা একটু বেশি হয়ে গেছে ।
ঈতু ঃ আচ্ছা ঠিক আছে ।
রাজেন ঃ কিছু মনে না করলে আমি আপনাকে কফি খাওয়াতে চাচ্ছি । এই তো এখানেই আছে ।
এরপর কফি খেতে খেতে বাকি পরিচয় । ফেসবুকের আইডি নেওয়াও হয় । তারপর রাতে চ্যাটিং । আবার দেখা করা , কফি খাওয়া । এক সময় চ্যাটিং আর কফিমিট থেকে তাদের প্রেমের সম্পর্ক শুরু । প্রতিদিন বারতে থাকে কথা বলা । সারা রাত জেগেও অনেক কথা হয় । মাঝে মাঝে ঢাকার বিভিন্ন পার্ক গুলো তে বসে একজন আরেকজনে একটু বেশি কাছাকাছি আসা । এই তো তাদের প্রেমের প্রাথমিক পথা চলা ।
এরপর কিছুদিন এভাবেই চলে যায় । রাজেন একটা চাকরি খুজছে । প্রাইভেট পরিয়ে তাকে চলতে হয় । একটা চাকরি হলে খারাপ হয় না , পরিবারেও কিছু দিতে পারবে তাহলে ।
এইটুকু লিখার পর প্রচন্ড ঘুম পায় আমার । এমনিতেই আমি ঘুম প্রিয় মানুষ , তার মধ্যে ঘুম নিজে আমার কাছে আসতে চাচ্ছে । তাহলে বুঝেন ২টা মিলে কি হতে পারে । লেখাটা সেভ করে সাথে সাথেই সুয়ে পরলাম । এই সময় ইউসুফ এসে হাজির ১টা সিগারেটের জন্য । বলা হয় নি । আমি আর আমার কয়েকজন বন্ধু মিলে মিরপুরে ১টা ফ্লাট নিয়ে থাকি । আমি, ইউসুফ, মাহাদি, নীরব , সাকিল আর জনি ।
ইউসুফ চলে যাওয়ার পর আমি ঘুমিয়ে পরি । সকালে ঘুম ভাংগে কলিং বেলের শব্দে । দরজা খুলে দেখি ঈতু ।
আমি ঃ ঈত তুমি এতো সকালে ?
ঈতু ঃ এখন সকাল না ভাইয়া , ১১.৩০ মিনিট ।
আমি ঃ ওহ , আসো ভিতরে আসো ।
ভিতরে গিয়ে বসে ঈতু । আমি ফ্রেশ হয়ে ২টা কফি নিজ হাতে বানিয়ে নিয়ে আসি ।
আমি ঃ ঈতু নাও , গরম কফি । আমি নিজে বানিয়েছি ।
ঈতু ঃ ( কফি মুখে দিয়ে ) দারুন হয়েছে ভাইয়া ।
আমি ঃ থাংক ইউ ।
ঈতু ঃ আচ্ছা কাল বলা হয় নি । রাজেন কিন্তু একটা চাকরি পেয়েছিল । সেটা গল্পে উল্লেখ করতে পারেন । আর আপনি হয়তো ভাবছেন আমরা বিয়ে না করে একসাথে ছিলাম । না , আমরা ঢাকা থেকে বিয়ে করেই সিলেটের উদ্দ্যেশে রওনা দেই ।
আমি ঃ আচ্ছা ঠিক আছে । বাট এতো ছোট গল্প কি কেউ পরবে ? আবার বলছো তোমাকে গল্পের শেষে মেরে ফেলতে হবে । কেনো গো ভাই ?
ঈতু ঃ বুঝবেন না ভাই আপনি । আপনি লিখেন ।
এরপর ঈতু বিদায় নেয় । আমি কোন রকম নাস্তা শেষ করে আবার লিখতে বাসি , কিন্তু ভালো লাগছিল না ।
গল্পে আমরা
একদিন সকালে রাজেন ঈতু কে ফোন দেয়
রাজেন ঃ ঈতু একটা ভালো খবর আছে ।
ঈতু ঃ আমার ও একটা নিউস আছে , তবে সেটা ভালো না । আচ্ছা তোমার টা আগে বলো ।
রাজেন ঃ আমার ১টা ভালো চাকরি হয়েছে । ভালো স্যালারী । ১ তারিখ জয়েন করতে হবে ।
ঈতু ঃ আমার পরিবার আমার বিয়ে ঠিক করেছে । আজ ১৯ তারিখ , সামনের ২১ তারিখ আমার বিয়ে ।
রাজেন ঃ কি বলছো এইসব ? এখন কি করবো আমরা ?
ঈতু ঃ আমি তোমাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করতে পারবো না ।
রাজেন ঃ চলো আমরা পালিয়ে যাই ।
ঈতু ঃ চলো শোনা ।
এরপর রাজেন আর ঈতু পালিয়ে যায় । বিয়ে করে ফ্রামগেটের কাজী অফিসে । বন্ধুরা সবাই মিলে চাদা তুলে ওদের বিয়ে দেয় । আর কিছু টাকা দেয় । কারন ওরা এখন সিলেট যাবে । সেখানে কিছু দিন লুকিয়ে থাকবে । সামনের মাসের আগেই চলে আসবে । ১ তারিখ থেকে রাজেনের চাকরি । রওনা দেয় ওরা । বন্ধু মানিক এর বাসায় উঠবে । বিকেল ৪টার সময় মানিক দের বাসার সামনে এসে পৌছে । কিন্তু বাসায় এসে দেখে কেউ নাই । খোজ নিয়ে জানতে পারে মানিকের এক আত্তীয় মারা যাওয়ায় তারা সেখানে গেছে আসতে ২/৩ দিন সময় লাগবে । মানিক ফোন ও ধরছে না । কোন উপায় না দেখে তারা ১টা বাংলো তে উঠে । বাংলোটা ১টা চা বাগানের মাঝখানে । অসাধারন একটা যায়গা । সেখানে গিয়ে উঠলো ।
ধুর গল্পটা আর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি না । মেয়েটা তো এর পর আর কোন ক্লু দিয়ে যায় নাই । আর গল্পে তাকে নাকি মেরে ফেলতে হবে । কি যে ঝামেলায় পরলাম আমি ।
কলিংবেল বেজে উঠে । খুলেই দেই দরজা । হ্যা আপনার ভাবনাই ঠিক । ঈতু এসেছে ।
ঈতু ঃ বাইরে অনেক বৃষ্টি হচ্ছে , পুরো ভিজে গেছি আমি ।
আমি ঃ গামছা টা দিয়ে মুছে নাও । তোমার কথাই ভাবছিলাম
ঈতু ঃ জানি আমি । আচ্ছা কি বলবেন বলেন ।
আমি ঃ তোমার গল্প নিয়ে আরকি । পরে তো আর কোন ক্লু দিলে না , গল্পটা কিভাবে এগুবে বলো ?
ঈতু ঃ গল্পের বাকি অংশটুকু আমি বলে দিচ্ছি ।
আমি ঃ তুমি ? হাহাহাহাহা । আচ্ছা ঠিক আছে । বলো
ঈতু ঃ জায়গাটা ঈতু খুব পছন্দ হয় । ২জন মিলে বারান্দায় এসে গল্প করছিল । খুব জোসনা ছিল । ঈতুর তখন ১টা ইচ্ছে জাগে । সে তার ইচ্ছেটা রাজেন কে বলে । রাজেন ঈতুর ইচ্ছে পুরোন করতে ঈতুকে নিয়ে চা বাগানে যায় , ২জনে হাত ধরে চা বাগানের সরু পথ দিয়ে হাটে । হটাৎ কোথায় থেকে ৪/৫ জনে ছেলে আসে । রাজেন কে পিছন থেকে আঘাত করে । রাজেন জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে । লোক গুলো ঈতু কে তুলে নিয়ে যায় পাসের ১টা পুকুর ধারে । ঈতু বুঝতে পারে যে লোক গুলো এখন তার উপর হিংস্র জানোয়ার হয়ে তাকে ভক্ষন করতে নেমে আসবে । কিন্তু ঈতু তো সেটা হতে দিবে না । সে তো নিজেকে রাজেনের জন্য সাজিয়েছে । আর রাজেন কে তো তারাই মেরে ফেললো । তাহলে , তাহলে আর কি । পাসেই চা বাগানের কর্মিদের ১টা কাচি ছিল । সেটা দিয়ে নিজেকে শেষ করে দিল ঈতু ।
আমি ঃ ঈতু তুমি কি পাগল ?
ঈতু ঃ কেনো ? (উচ্চ কন্ঠে)
আমি ঃ আমি এই ধরনের গল্প লিখতে আর আমার আইডিতে পোষ্ট করতে পারবো মা ।
ঈতু ঃ পারতে হবে আপনাকে
আমি ঃ না পারলে কি করবে তুমি ?(চিৎকার করে )
ঈতুঃ দেখেন মেয়েটার লাশ ওরা ওইখনেই পুতে রেখেছে । জানাজা হয় নাই । মেয়েটা কষ্টে আছে ।
আমি ঃ মানে কি ? তুমি কি নেশা করে এসেছ?
ঈতু ঃ ভাইয়া , আমি সত্ত্যি বলছি । আমিই সেই মেয়ে ।
নীরব ঃ কি রে দোস্ত কি হইছে ? চিৎকার করছিস কার সাথে ?
আমি ঃ দেখ দোস্ত এই মেয়ে কি বলছে ?
নীরব ঃ কই মামা ? এখানে তো কেউ নাই ? রাতে ঘুম হয় নাই মনে হয় তোর ।
ঈতু ঃ তুমি ছাড়া আমাকে কেউ দেখতে পাবে না । এখন প্লিজ আমার কথা শোন ।
আমি ঃ নীরব তুই যা । আমি ঘুমাবো।
নীরব চলে যায় ।
ঈতু ঃ রাজেন বেচে আছে আর সে তোমার ফ্রেন্ডলিষ্টে আছে । Rion al rajen আইডি নাম । তুমি প্লিজ গল্প টা লিখে ওরে ট্যাগ দিও । তাহলে ও সব বুঝতে পারবে । আমাকে ও নিতে আসবে । আর আমি মুক্তি পাবো যন্ত্রনা থেকে । প্লিজ ভাইয়া ।
ঈতু বলে ভ্যানিস হয়ে যায় । প্রায় ১ঘন্টা এর পর আমি থ হয়ে বসে থাকি । গল্প টা এবার ঈতুর কথা মত শেষ করি । শেষে রাজেনকে অনুরোধ করি সে যেন ঈতুর লাশ সঠিক ভাবে দাফনের ব্যাবস্থা করে । গল্পটা পোষ্ট করে রাজেনকে ট্যাগ ও দেই । গল্প টা তেমন কে উ পরে না । আগ্রহ হারিয়ে ফেলি গল্প লেখার । আর গল্প লিখা হয় না এর পর ।
১৪ দিন পরের একদিন একটা ছেলে আসে আমার কাছে । তার নাম রাজেন । নাম বলার পর চিনে ফেলি আমি । সে জানতে চায় কিভাবে আমি এগুলা জানলাম ।
আমি আমার আর ঈতুর সব খুলে বললাম । কেদে দিল ছেলেটা । সে আমার গল্প পরেই সিলেটে গিয়ে ঈতুর লাশ উদ্ধার করে । জানাজা দিয়ে দাফন করে । আর খুনী গুলো কে পুলিশে ধরিয়ে দেয় ।
সমাপ্ত
( পুরো গল্পটাই আমার কল্পনা । এর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই )
আমার লেখা আরো গল্প পরতে চাইলে আমার পেইজ টি লাইক দিতে পারেন ।
https://www.facebook.com/arshipon15/

রহস্যময়ী নীল্মবরী



রহস্যময়ী নীল্মবরী
লেখা : প্রে তা ত্তা



রাত ৮টায় বাস ছারে । রিওন ১টা প্রোডাকশন ফার্মে জব করে । আজ তারা ১টা শুটিং এর কাজে খুলনা যাচ্ছে । ভোর ৪টার দিকে তারা খুলনার খালিশপুর শহরের ১টা সরকারি কোয়াটারে উঠে । জায়গাটা খুবই নির্জন কিন্তু অসম্ভব সুন্দর ।

শুটিং দল কে ৩টা আলাদা জায়গা ভাগ করে থাকার ব্যবস্থা করা হয় । পরিচালক রনি সাহেবকে ১টি বাংলো বাড়িতে ৩ তালার রুমে থাকতে দেওয়া হয় । আর বাকি সবাই বিভিন্ন যায়গায় । রিওন , দুপুর আর রিপন থাকে ১টা বাংলোর বড় ১টা রুমে । পরিচালক সাহেব এর রুম তকে হেটে যেতে মিনিট ১০ এর মত সময় খরচ হবে হয়তো ।

পুরো কোয়াটার এলাকা টাই খুব নির্জন । চারদিকে কেমন জানি ভুতুরে ১টা পরিবেশ ।

রুমে গিয়ে যে যার মত ফ্রেস হয়ে ঘুম দেয় । আজ সারাদিন ছুটি সবার , রনি সাহেব রেকি তে গিয়েছে । সন্ধ্যায় মিটিং কল করেছে । সন্ধ্যায় একে একে টিংকু, রতন, অনিক, উত্তম, বাবু, দুপুর, রিপন, বিপ্লব আর রিওন যে যার জায়গা থেকে এসে রনি সাহেব এর রুমে হাজির । রাত ১১ টার কিছু পর মিটিং শেষ । মিটিং মানে তাদের কাছে একরকম আড্ডাবাজিই বলা চলে ।

পরিচালকের বাসা থেকে নামার সময়  ,

রিপন ঃ রিওন ভাই জায়গা টা কিন্তু অনেক সুন্দর , বউটারে নিয়ে আসতে পারলে ভালো হইতো , তাই না ?

দুপুর ঃ রিপন ভাই আপনি কি বউ ছারা আর কিছু বুঝেন না ?

রিওন ঃ মিয়া একলা আসছেন তো একলাই মজা নেন , বউ বউ কইরা কান্না করে লাভ নাই ।

কথা বলার সাথে সাথেই রিওন দারিয়ে যায় , একটু দূরে ২তালার ১টা বাংলোর বেলকুনির দিকে তাকিয়ে আছে রিওন ।

দুপুর ঃ রিওন ভাই এই ভাই কি দেখেন ? চলেন তো , আমার এমনিতেই ভয় লাগতেছে । আমি শিওর এই এলাকায় ভূত আছে ।

রিওন ঃ অসাধারন ।

রিওন হাটা শুরু করে , পুরো রাস্তায় সে আর কোন কথা বলে না । রিপন আর দুপুর কথা বলতে বলতে চলে যায় ।

পরের দিন ১০টার দিকে শুটিং । রনি সাহেব এর বাংলোর সামনে থেকে ছারে শুটিং এর গাড়ি ।

গাড়িতে কথোপকথন

রনি সাহেব ঃ রিপন সবাই কি আসছে ?

দুপুর ঃ ভাইয়া রিওন ভাই তো আসে নাই , ফোন ও ধরছে না ।

রনি সাহেব ঃ যাও তো দেখো লেট লতিফা টা কোথায় আছে ।

দুপুর আর বিপ্লব গাড়ি থেকে নেমে একটু হাটতেই দেখতে পায় রিওন কে । সে দোতালা বাংলোর সামনে ১টা নারিকেল গাছের সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে বেল্কুনির দিকে তাকিয়ে আছে ।

দুপুর ঃ রিওন ভাই কি মিয়া আপনি । সবাই বাসে বসে আছে আর আপনে ……… চলেন তো

রিওন ঃ দুপুর ভাই মেয়ে টা কে দেখছেন ? কত সুন্দর তাই না ?

দুপুর ঃ কই ভাই আমি তো কাউ কে দেখতে পাচ্ছি না ।

রিওন ঃ আপনাদের আসতে দেখে ভিতরে ঢুকে গেছে ।

বিপ্লব ঃ লেট হয়ে গেছে , চলেন তো ।

এরপর চলে আসে হয় গাড়িতে । তারপর শুটিং । ওইদিনের মত শুটিং শেষ করে সন্ধ্যার দিকে ফিরে আসে । রাত ৮টায় সবার রাতের খাবার রনি সাহেবের বাংলোতে । রিওন আর দুপুর সব সময়ের মত এবার ও আসতে লেট । রনি ভাইএর বাংলোর কাছে এসে রিওন দুপুরকে বলে

রিওন ঃ দুপুর ভাই আপনি সামনে যান আমি আসতেছি ।

দুপুর ঃ ভাই এমনিতেই লেট হয়ে গেছে , আর লেট কইরেন না প্লিজ ।

রিওন ঃ আপনি যান আমি আসতেছি ।

এর পর রিওন সামনের দিকে এগিয়ে যায় ।সাম্নেই দাঁড়িয়ে অসম্ভব সুন্দরী এক ললনা

রিওন ঃ এক্সকিউজমি ।

মেয়েটি পিছনে ফিরে তাকায় ।

মেয়ে ঃ কেমন আছেন ?

রিওন ঃ ভালো । আপনি এই রাতে এমন ১টা নির্জন পরিবেশে একা একা কি করছেন ?

মেয়ে ঃ আচ্ছা আপনি অন্ধকার ভালোবাসেন না ?

রিওন ঃ অন্ধকার কে আবার ভালোবাসা যায় নাকি ? আচ্ছা আপনার নাম ?

মেয়ে ঃ আমার নাম নিলাম্বরী , আপনি তো রিওন তাই না ?

রিওন ঃ আজিব তো , আপনি আমার নাম জানলেন কি করে ?

মেয়েটি এক অসম্ভব মায়াবি হাসিতে ফেটে পরে , তার হাসি দেখে মুগ্ধ হয়ে যায় রিওন । তার মনে হতে থাকে তার জিবনের সব অপ্রাপ্তির সুখ এই হাসিতে লুকিয়ে আছে ।

রিওন ঃ আপনি খুব সুন্দরী । এতো সুন্দরী যে আপনি যেখানে থাকেন সেখানে চাদের আলোর প্রয়োজন হয় না ।

নিলাম্বরী ঃ আপনি খেতে যান , আর একটু লেট করলেই দেখবেন খাবার শেষ । যান যান …………।

বলেই নিলাম্বরী আস্তে দৌড়ে যায় , তার পায়ের নুপুর এর শব্দ । রিওন রনি সাহেবের রুমে ফিরে আসে , কোন রকমে রাতের খাবার খেয়ে ফিরে আসে রুমে । সারা রাত ঘুম হয় না , কানের ভিতর মেয়েটার হাসির শব্দ আর নুপুরের রিমঝিম আওয়াজ তার ঘুম হারাম করে দেয় । রিওনের মনে ১টাই প্রশ্ন জাগে যে ১টা মানুশ এত সুন্দর হয় কি করে ? সে কি মানুশ নাকি অন্ন্য কিছু ? হয়তো আকাশের হুরপড়ি । সারা রাত এই প্রশ্নের উত্তরের পিছনে দৌউড়াদৌ্রি করে রিওন ।

তারপরের দিন সারাদিন রিওন খুজে ফিরে নিলাম্বরীকে । কিন্তু কোথাও খুজে পায় না । রিওন কিন্তু আজ শুটিং যায় নি । সন্ধ্যার দিকে রনি ভাই নিজে রিওন কে ফোন দিয়ে তার রুমে আসতে বলে । রিওন আসে । রনি সাহেবের রুমে আগে থেকেই অন্যরা সবাই ছিল । রিওন মাঝখানে এসে হাজির হয় ।

রিওন ঃ ভাইয়া কেমন আছেন ?

রনি ঃ আমি ভালো । তুই নাকি প্রেমে পরেছিস ? আজ ডেটীং এ গেছিলি তাই  শুটিং এ আসতে পারিস নি ?

রিওন ঃ না ভাইয়া তেমন কিছু না । শরির টা খারপ লাগছিল তাই আর কি ...।

রনি ঃ কাল ও কি শরির খারাপ থাকবে ?

রিওন ঃ না ভাইয়া । কাল ঠিক হয়ে যাবো । শুটিং এও যাবো

রনি ঃ আচ্ছা ঠিক আছে । এখন এই নে যাদব ঘোশের কাচা গোল্লা খা ।

রিওন ঃ (হাতে মিষ্টি নিয়ে) ভাইয়া আমার ভালো লাগছে না । আমি এখন যাই ?

রনি ঃ আচ্ছা ঠিক আছে যা । ভালো করে ঘুম দে , সকালে ঠিক হয়ে যাবি ।

রিওন চলে আসে । ৩ তালা থেকে নেমে হাটা দিয়েছে আর এমন সময় মিষ্টি কন্ঠের গান । পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে নীলাম্বরী । রিওন নীলাম্বরীর কছে যেতেই নীলাম্বরী গান থামিয়ে দেয় ।

রিওন ঃ গান থামালেন কেনো ?

নীলাম্বরী ঃ আপনি  আসলেন তাই ।

রিওন ঃ অসাধারন গাচ্ছিলেন কিন্তু আপনি ।

নীলাম্বরী ঃ ধন্যবাদ । আচ্ছা আপনার নাকি শরীর খারাপ ?

রিওন ঃ হ্যা কিছুটা । আজ সারাদিন আপনাকে খুজেছি । কোথায় ছিলেন আপনি ?

নীলাম্বরী ঃ আমাকে খুজেছেন ? আমি তো ঐ রুম টা তেই ছিলাম ।

রিওন ঃ বের হন নি রুম থেক ?

নীলাম্বরী ঃ নাহ । আমার রুম থেকে বের হওয়া নিষেধ । আমাকে কেন খুজছিলেন ?

রিওন ঃ এমনি । খুব দেখতে ইচ্ছে করছিল তাই ।

নীলাম্বরী ঃ দেখবেন আবার আমার প্রেমে পরে যাবেন না কিন্তু , তাহলে আপনি শেষ ।

রিওন ঃ এতো সুন্দর ১টা মেয়েকে দেখে প্রেমে না পরে উপায় আছে ?

নীলাম্বরী কথা টা শুনে আবার সেই মায়াবী হাসিতে উজার করে দেয় নিজেকে , আর রিওন সেই হাসিতে মুগ্ধ , সে হাসির মাঝে নিজেকে একদম হারিয়ে ফেলে ।

নীলাম্বরী ঃ আচ্ছা তোমার সংগীরা আসছে , আমি যাই ।

বলেই নীলাম্বরী দৌড় । বাজতে থাকে তার পায়ের নুপুর । পিছন থেকে রিপন

রিপন ঃ ভাই আপনি এখনো যাননি ?

রিওন ঃ হ্যা যাচ্ছিলাম । মাঝপথে নীলাম্বরীর সাথে দেখা , কথা বলছিলাম আর আপনি এলেন ।

রিপন ঃ চলেন যাই ।

রিপন আর রিওন রুমে ফিরে যায় । পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে শুটিং এ যায়। দুপুরের কিছু পরে শুটিং শেষ করে ফিরে আসে । এসেই রিওন খুজতে যায় নীলাম্বরীকে । ওই সে রুমটার কাছে যায় । রুম টা তালা । অনেকখন রুমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে ।বেশ কিছুখন পর এক বয়স্ক লোক এসে রিওন কে চেচিয়ে ডাক দেয় ।

বয়স্কলোক ঃ কে আপনে ? আপনের কি মরনের ইচ্ছে হইছে যে এখনে আসছেন ?

রিওন ঃ আমি রিওন ঃ এখানে ১টা শুটিং এর কাজে এসছি ।

বয়স্কলোক ঃ যেই কাজেই আসেন না কেন , এই জায়গাটা ভালো না ।

রিওন ঃ ভালো না মানে ? কি ব্যাপার খুলে বলুন তো ?

বয়স্কলোক ঃ এখানে মাঝে মাঝে এক রহস্যময়ীকে দেখা যায় । মানুষ না ভূত কেউ বলতে পারে না । এর আগে ২/৩ জনকে মেরে ফেলতে নাকি চাইছিল । পাসের এই লেকটাতেই চুবায় মারতে চাইছিল ।

রিওন ঃ কে মেয়েটা ? আর আপনি তো মিথ্যেও বলতে পারেন ?

বয়স্কলোক ঃ কে মেয়েটা সেটা জানিনা । অনেক সুন্দর আর ইয়ং পোলাপাইন মেয়েটা কে দেখছে । একটূ পাগলী টাইপের ওরা বলে । নাম নাকি নীলাম্বরী , পোলাপাইন এখন নাম দিছে রহস্যময়ী নীল্মাবরী । আর বুইরা বয়সে কেউ মিথ্যা কইনা বাপজান । সাবধানে থাইকো ।

বয়স্কলোক আর রিওনের কথোপকথন এখানেই শেষ । রিওন রুমে ফিরে আসে । রাতের খাবের খেয়ে সে চলে আসে ঐখেন যেখানে গতকাল নীল্মবরীর সাথে দেখা হয়েছিল । সেখানে ১টা উপরে পরা গাছের উপর বসে রিওন সিগারেট খাচ্ছিল একটার পর ১টা । অনেকখনেও না আসায় সিগারেট ফেলে চলে যাওয়ার জন্য উঠে হাটা দেয় রিওন । আর তখনি নীল্মবরী আসে ।

নীল্মবরী ঃ চলে যাচ্ছো কেনো ?

রিওন ঃ তুমি আসছিলে না তাই ।

নীল্মবরী ঃ সিগারেট এর গন্ধ আমি একদমি সহ্য করতে পারি না ।

রিপন ঃ আচ্ছা তুমি নাকি রহস্যময়ি ? অনেক ছেলেকে নাকি মারতেচেয়েছিলে ?

নীল্মবরী ঃ হ্যা ।

রিওন ঃ কেনো ?

নীল্মবরী ঃ মুক্তি পেতে ।

এরপর আরো কিছু কথা হয় । শেষের দিকে কথা গুলো ছিল ।

রিওন ঃ আমি তোমার সাথে যেতে চাই ।

নীল্মবরী ঃ না সম্ভব না ।

রিওন ঃ কেনো না । তুমি ওদের নিয়ে যেতে চাইতে পারো , আমাকে কেনো নয় ?

নীল্মবরী ঃ কারন আমি তোমাকে ভালোবেশে ফেলেছি ।

রিওন ঃ আমিও তোমাকে ভালোবেশে ফেলেছি । সুতরাং আমি তোমার সাথে যাবো তুমি যাওয়ার ব্যাবস্থা করো ।

নীলাম্বরী ঃ আমি পারবো না ।

রিওন খেপে যায় । অনেক খন তর্ক বিতর্ক চলে তাদের মধ্যে । এদিকে অনেক রাত হয়ে যায় । রিপন আর দুপুর অনেক রাতেও ফিরে না আসায় রনি সাহেব কে জানায় । সবাই মিলে একসাথে খোজাখুজি করে । কোথাও খুজে পায় না । সকাল হয়ে যায় । ঐ রুমটার সামনের দেয়ালে রক্ত দিয়ে লেখা ।

আনি রহস্যময়ী নীলাম্বরী বলছি । আমি আজ তোমাদের ছেরে চলে গেলাম । আর কোন ডিস্টার্ব না তোমাদের । আমি আমার সংগী পেয়ে গেছী । সে আর আমি চলে যাচ্ছি কলংকপুরে । সেখানেই থাকবো দুজনে অনন্তকাল ।

শুভ বিদায়।

দুপুরের কিছু পরে রিওনের লাশ ভেষে উঠে লেকে । পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায় । ময়নাতদন্ত হয় তারপর লাশ ঢাকায় । এই মৃত্যর তদন্তও হয় , কিন্তু রিওনের মৃত্যুর রহস্য কেউ জানে না , আর জানে না রহস্যময়ী নীল্মবরীর রহস্য বা দেয়ালের লেখা সেই কথা গুলোর রহস্য । যদি আপনি বা আপনারা কেউ জেনে থাকেন তাহলে প্লিজ আমাকে জনাবেন ।

সমাপ্ত
( পুরো গল্পটাই আমার কল্পনা । এর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই )
আমার লেখা আরো গল্প পরতে চাইলে আমার পেইজ টি লাইক দিতে পারেন ।
https://www.facebook.com/arshipon15/

অভিশপ্ত যাত্রা




#অভিশপ্ত_যাত্রা
লেখা : MD Asadur Rahman - Shipon
 

হটাৎ দুপুরের ফোনটা বেজে উঠে । রানা ফোন দিয়েছে ………

দুপুর ঃ হ্যা বল কি হয়েছে ?

রানা ঃ দোস্ত তুই কোথায় ?

দুপুর ঃ আমি সাভার , কেনো ?

রানা ঃ এখনই ঢাকা আয় , সরাসরি শাকিলের বাসায় । খুব ইমারজেন্সি ।

দুপুর ঃ এখন ৫টা বাজে , কাল আসলে হয় না ?

রানা ঃ না ।

দুপুর ঃ ঠিক আছে । আসছি .

রাত ৯টার পরে বাংলামটরে একসাথে হয় রানা আর দুপুর , সেখান থেকে রাত ১০টার দিক শাকিলের বাসায় হাজির । ঐখানে গিয়ে জানতে পারে শাকিল আর দুপুর যে, আজ রাতে রানা ফেনি যাচ্ছে । রানা তার প্রেমিকা নীল এর সাথে দেখা করতে যাবে । ১১টা ৩০ মিনিটে বাস । বাস স্টান্ডে এসে টিকিট কেটে বাসে গিয়ে বসে । দুপুর আর শাকিলও রানার পিছু ধরে। রানার খুব জ্বর তাই ওকে একা ছাড়তে নারাজ। আর ১টা ট্যুর ও হবে। 

দুপুর ঃ দেখছিস শাকিল রানা কি ১টা বোরিং টুরে নিয়ে যাচ্ছে , সারা বাসে ১টা মেয়েও নাই ।
শাকিল ঃ ওই তোর মুখে কি পেত্নী আর মেয়ে ছারা কোন কথা নাই ?

দুপুর ঃ সরি , যা আর কথাই বলবো না 

রানা ঃ চিন্তা করিস না দুপুর , নীল ওর বান্ধবী নিয়ে আসবে ।

দুপুর ঃ সত্যি মামা ?

রানা ঃ হ্যা ।

বাস চলতে থাকে । বাস কুমিল্লা গিয়ে হিসু ব্রেক দেই ২০ মিনিটের । ওরা সবার পরে নামে বাস থেকে । নামার সময় দেখে ওদের সামনে থেকে ১টা মেয়ে নামছে । শাকিল দুপুরকে বলে , মামা তোমার জিনিশ চলে আসছে । যাও পিছু নাও । এই বলে নেমে ফ্রেসরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে পাসের মিষ্টির দোকানে আসে , সত্যি কথা বলতে ওরা ওই মেয়েটাকে দেখে আসেনি দোকানে । দোকানে গিয়েঃ

শাকিল ঃ কাকা মিষ্টি পিস কতো করে ?

দোকানদার ঃ দাদা পিস বিক্রি হয় না ।

শাকিল ঃ কিন্তু আমরা তো এখানে খাবো , বেশি নিব না ।

দোকানদার ঃ নেন , মালিকের অর্ডার আছে কেউ খাইতে চাইলে ফ্রি দিতে বলছে ।

ওরা ফ্রি মিষ্টি খেয়ে দোকান থেকে বেড়িয়ে সেলফি তুলে । পিছনে মেয়েটিকে দেখে দুপুর বলে ওই ঐ দেখ মেয়েটা । মেয়েটাকে পিছনে রেখে ছবি তুল ।

ছবি তুলে সবার পরে ওরা বাসে উঠে । দুপুরের কেন জানি মেয়েটাকে নিয়ে সন্দেহ হয় । ওদের বললে ওরা বলে নিশ্চয় তোর ওই মেয়েটাকে কোন প্রেতাত্মা মনে হচ্ছে, তাই না ? বলে শাকিল ।

দুপুর ঃ মেয়েটার হাটা টা খেয়াল কর , দেখ আমার কেন জানি মনে হলো মেয়েটা মাটি থেকে কিছুটা উপর দিয়ে হাঁটছে । আত্মারা মাটি থেকে কিছু উপরে হাঁটে , ওরা মাটিতে হাঁটতে পারে না ।

রানা ঃ সব কিছুর ১টা মাত্রা আছে । এখানে তোর প্রেতাত্মা গবেষনাটা প্লিজ বাদ দে ।
ওরা যার যার মত সিটে গিয়ে বসে । পুরো বাস ওরা তিনজন মাতিয়ে রাখে ।

৩টা ৪০ মিনিটে বাস ফেনি পৌছে । ঐখানে প্রথমবার তাই তেমন কিছু চিনে না । স্টারলাইন বাসের কাউন্টারের লোকের কাছে হোটেলের কথা জিজ্ঞাস করলে সে বলে এখন থাকার জন্য একটা হোটেলও পাবেন না। এক কাজ করেন কাউন্টারে কোন রকম বসে থাকার ব্যাবস্থা আছে । ঐখানে গিয়ে বসে কোন রকম রাত টা পার করতে পারেন । উপায় না দেখে ঐখানে থাকার সিদ্ধান্ত নেয় । সেখানে গিয়ে দেখা গেল আরো অনেকে সেখানে আছে । ওরা গিয়ে একপাসে বসলো । শাকিল ব্যাগ থেকে ১টা চিপসের প্যাকেট বের করে দিয়ে বলল

শাকিল ঃ প্যাকেট টা বাসে পাইছি , চল খেয়ে ফেলি ।
রানা ঃ পানির বোতল বের করে বলে আমিও এটা পাইছি ।
দুপুর ঃ ভালোই তো সবই তো ফ্রি পাচ্ছি ।
রানা খেয়াল ওই মেয়েটা এসে পাসে বসল । রানা শাকিল কে বলল মামা দেখ কে । নিজেদের মধ্যে মেয়েটাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করতে লাগলো । এর ভিতর ডিসিশন নিল যে শাকিলের পক্ষ থেকে ওই মেয়েটাকে দুপুর প্রোপজ করবে । এভাবেই ভোর হয়ে গেল । শাকিল এবং দুপুরকে বলাতে রাজি না হওয়ায় রানা নিজেই মেয়েটার কাছে গিয়ে (ততক্ষনে  সবাই চলে গিয়েছে)

রানা ঃ Excuse me আপু আমি ফেনি তে প্রথম এসেছি । ছাগলনাইয়া কিভাবে যবো বলবেন কি ?

মেয়ে ঃ আমি রিয়া । আমি এখানটা ভালো করে চিনি না সো কোন সাহায্য করতে পারছি না ।

রানা ঃ ঠিক আছে ।

ফিরে এসে রানা ওদের বলে শালির বেটি ভাব নিচ্ছে দোস্ত । এদিকে বারবার দুপুর মেয়েটার দিকে তাকাচ্ছে আর মেয়েটাও দুপুরের দিকে তাকাচ্ছে । কিছুক্ষন পর মেয়েটা এসে রানা কে বলে আমি একা এসেছি,  সামনে যাবো, আপনারা চাইলে আমরা একসাথে যেতে পারি । সাথে সাথেই ওরা রাজি হয়ে যায় । মেয়েটাকে পাশাপাশি রেখে হাঁটছে।

রানা ঃ আপনি একা কেঁন এসেছেন ?

রিয়া ঃ আমি আসলে বাসা থেকে পাঁলিয়ে এসেছি ।

রানা ঃ এখন কোথায় যাবেন ?

রিয়া ঃ এখানে আমার বয়ফ্রেন্ড থাকে , আমি ওর কাছেই যাবো। আপনাদের কারো ১টা ফোন দিবেন আমি রাকিব কে কল করবো ।

দুপুর তার ফোনটা এগিয়ে দিয়ে বলে ফোন করেন । কথা শেষ করে ফোনটা ফিরিয়ে দিয়ে দুপুরকে থ্যাংকস জানায় । আর বলে......

রিয়া ঃ রাকিব আসছে । ততোখন কি আমি আপনাদের সাথে থাকতে পারি ?

শাকিল ঃ হ্যা , কেন না । আসুন সকাল হয়েছে আমরা নাস্তা করে নেই ।

এইবলে তারা হোটেলের খোজে হাঁটা শুরু করে । হটাৎ রানার ফোন বেঁজে উঠে , সে কাকে জেন বলে 
-হ্যা দোস্ত আমি আসতেছি । তুই থাক । রানা কাছে বলে, 
রানাঃ দুপুর সালাউদ্দিন ফোন দিয়েছে ও স্টান্ডে দাঁড়িয়ে আছে । চল । 
দুপুর রানার বুদ্ধিটা বুঝতে পারে। সে বলে চল

দুপুর ঃ সরি আপু । আমাদের বন্ধু চলে এসেছে । আমাদের যেতে হবে ।

এই বলে চলে আসে । শাকিলের এসব বুঝতে একটু সময় লাগে। রানা বলে , আমার মেয়েটাকে সুবিধার মনে হচ্ছিল না তাই এই নাটক । দুপুর ওর সাথে এক মত প্রকাশ করে। পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে মেয়েটি নেই । তখন তার মনে পরে সে না মেয়েটার হাটা লক্ষ করতে চেয়েছিল । যাই হোক আপদ বিদেয় হয়েছে ।

নিলের সাথে রানার কথা হয়েছে নিল ১০;৩০ এ কলেজে আসবে , সেখানেই রানা আর নিল প্রথমবারের মত দেখা করবে। এর মাঝের সময়টুকু ওরা ফেনি শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখে, ছবি তুলে । ফেনি রেলস্টেশনে অনেকক্ষন সময় কাটায় , অনেক ছবি তুলে । হটাৎ দুপুরের চোখে পরে রিয়া মেয়েটার দিকে । দুপুর রানাকে বলে ওই দেখ এখানেও রিয়া । রানা তাকিয়ে দেখে কেউ নেই । দুপুর অবাক হয়ে যায় । সে কি তাহলে ভুল দেখেছে ।

১০;৩০ এ কলেজে পৌছে যায় ওরা , সাথে নিলের জন্য কিছু গিফট নিয়ে নেয় ।

১০;৩৫ মিনিটে নিল আসে , মুখে নেকাব পরা । নিল বলে আমি ১টা ক্লাস করে বের হব । তোমরা তারপর কোথায় যাবে ঠিক কর ।

রান, শাকিল আর দুপুর অনেকের সাথে কথা বলে ঠিক করে যে তৃপ্তি গার্ডেন যাবে। যেই বলা সেই কাজ, নিল ক্লাস শেষ করে আসলে ১টা সি এন জি নিয়ে তারা সেখানে চলে যায় । জায়গাটা আসলেই সুন্দর, তবে ভিতরে ঢোকার পর শাকিল আর রানা বুঝতে পারে যে আসলে এটা মনে হয় প্রেমিক আর প্রেমিকাদের জন্যই । রানা আর নিল কে প্রেম করার সুজোগ করে দিয়ে শাকিল আর দুপুর পুরো বাগান টা ঘুরে আর ছবি তোলে । হটাৎ দুপুর খেয়াল করে রিয়া মেয়েটাক এখানেও আবার । সে এবার রিয়ার পায়ের দিকে খেয়াল করে দেখে পা টা সত্যিই মাটি থেকে একটু উপরে। আর তার পা থেকে রক্ত ঝরছে । সে শাকিল কে বলে শাকিল দেখ রিয়া । শাকিল তাকিয়ে দেখে কেউ নাই । দুপুর দৌড়ে সেখানে যায় , যেখানে রিয়া দাড়িয়ে ছিল । ঐ বাগানের ১টা পুকুরের ধারে দাড়িয়ে ছিল । সেখানে গিয়ে দুপুর উল্টো করা একটা নৌকা দেখতে পায় ।একজন দূর থেকে দুপুর কে বলছে , ঐ মিয়া ওইখান গেছেন কেন ? ঐখানে যাওয়া নিষেধ, চলে আসেন, ঐখানে কি মরতে গেছেন ?

দুপুর কিছু বুঝতে পারল না । হেঁটে চলে আসছে , হটাৎ তার মনে হলো কে জেন তার কাধে হাত রেখেছে । পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই , সে এবার ভয় পেয়ে যায় আর শিউর হয় যে কিছু ১টা প্যারানরমাল ঘটনা তার সাথে ঘটছে । সে শাকিলকে কিছু বলে না । রানা আর নীল ফিরে এলে তারা ৪জন একসাথে বসে ফুসকা খায় আর গল্পে মেতে উঠে । নীল মেয়েটা সত্যিই অনেক সুন্দর । দুপুর আবার রিয়া কে ওই পুকুরের পাশে দেখলো ।

দুপুর ঃ শাকিল চল আমরা সামনে থেকে হেঁটে আসি । ওরা আরেকটু একটু প্রেম করে নিক ।

নীল ঃ আরে না , থাকো তোমরা । একসাথে গল্প করি ।

শাকিল ঃ হইছে হইছে আর ভাব ধরতে হবে না ।

এই বলে দুপুর পুকুরের কাছে এগুতে থাকে আর শাকিল পিছনে পিছনে । পুকুরের কাছে গিয়ে দুপুর অবাক , নৌকাটা একটু আগে উল্টোনো ছিল । দুপুর আস্তে করে পুকুরের পারে নামে পিছন থেকে শাকিল বলে ঐ কই যাচ্ছিস দুপুর ?

দুপুর ঃ আরে অনেকদিন পুকুরের পানিতে মুখ ধোয়া হয় না তাই ।

শাকিল ঃ দাড়া আমিও আসছি ।

দুপুরঃ আয় ।

দুপুর পানি নিয়ে মুখে দিয়ে মুখ ধোয়, দেখে হাতে রক্ত । মাথা তুলে তাকিয়ে দেখে নৌকাটা আবার উল্টানো । দুপুরের পিছন দিকে রিয়া দৌড় দেয় । দুপুর পিছনে দৌড় দেয় । কিছুদুর যাওয়ার পর দেখে রিয়া নেই। হটাৎ শাকিলের চিৎকারে দুপুর আবার পুকুরের পারে ফিরে আসে,  এসে দেখে শাকিল পানিটে হাবুডুবু খাচ্ছে । শাকিল তো সাতার জানে ভালো । কথা না বাড়িয়ে দুপুর তার ব্যাগ থেকে মাদবর দাদার দেওয়া তাবিজ টা বের করে পানিতে লাফ দিয়ে শাকিলকে ধরে উপরে উঠানোর চেষ্টা করে কিন্তু কে জেনো নিচ থেকে পা টেনে ধরে । দুপুর যে হাতে তাবিজ ধরা ছিল সে হাতটা পায়ের কাছে আনতেই সে হাল্কা মনে করে । শাকিলকে উপরে তুলে আনে । এতোখনে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে গেছে । রানা আর নীল ও এসেছে ।

রানা ঃ কি হয়ছে সাকিল ?

দুপুর ঃ এখান থেকে আমাদের যত তারাতারি সম্ভব যেতে হবে ।

শাকিল ঃ হ্যা । আমি আর এখানে একটুও থাকবো না ।

দুপুর আর শাকিল ফ্রেসরুমে গিয়ে কাপর চেঞ্জ করে । ফ্রেস রুমে গিয়ে দুপুর খেয়াল করে তার ২পায়ের গোড়ালির ঐখানে গোল করে কেটে গেছে আর রক্ত পরছে , যেমনটা সে রিয়ার পায়ে দেখেছিল ।

একটা সি,এন,জি ভাড়া করে তারা ফেনি সরকারি কলেজের সামনে আসে ।সি,এন,জি থেকে নেমে ওরা হাঁটা ধরে । দুপুর পিছনের দিকে তাকিয়ে দেখে শাকিল সি,এন,জির পিছনে দৌড়াচ্ছে , কোনকিছু না ভেবে দুপুরও শাকিলের পিছনে দৌড় দেয় । অনেক দূর গিয়ে শাকিলের কাছে আসে দুপুর

দুপুর ঃ কি হয়েছে ?

শিকিল ঃ সি,এন,জি তে আমার ব্যাগ রেখে আসছি , যেভাবেই হোক ব্যাগটা আমাকে পেতে হবে ।

এই বলে শাকিল আর দুপুর সি,এন,জি আর সি,এন,জি স্টান্ড গুলোতে খুজতে থাকে । রানাকে ফোন করে সব বলে , রানাও খুজতে থাকে । কিছুক্ষন পর তিনজন তিনদিকে খুজতে যায় ।

শাকিল দুপুর কে ফোন দিয়ে বলে

শাকিল ঃ দুপুর ব্যাগ পাওয়া গেছে , আমি টেকনিকাল কলেজ গেটে আছি । তুই আয় ।

দুপুর ঃ আসছি ।

টেকনিকাল কলেজ গেটে তিনজন আসে , শাকিল অলরেডি ব্যাগটা নিয়ে নিয়েছে ।

দুপুর ঃ কিভাবে খোজ পেলি শাকিল ?

শাকিল ঃ আর বলিস না, রিয়া খোজটা দিল । তৃপ্তির সামনে যখন ব্যাগের খোজ করছিলাম তখন ও কোথা থেকে হটাৎ এসে বলে শাকিল তোমার ব্যাগটা টেকনিকাল কলেজ গেটে ১টা সি,এন,জি ড্রাইভার নিয়ে বসে আছে , তোমাকে খুজছে ।

দুপুর ঃ তুই ওকে জিজ্ঞেস করিস নি যে ও কিভাবে জানলো ?

রানা ঃ আজিব ব্যাপার তো, আমাকেও তো রিয়া বলল । আমি সরকারি কলেজের সামনে দাড়িয়ে ছিলাম । এসে বলল শাকিলকে দেখলাম টেকনিকাল কলেজ গেটে দাড়িয়ে আছে । হাতে ১টা ব্যাগ । তারপর আমি শাকিলকে ফোন দিয়েছি ।

শাকিল ঃ জানিস দুপুর ও যখন চলে যাচ্ছিল তখন ওর পায়ে দেখলাম কাটা দাগ , রক্তও পরছে ।

দুপুর ঃ দেখতো (নিজের পা এগিয়ে দিয়ে) কাটা দাগ ২টা কি এমন নাকি ?

শাকিল ঃ আল্লাহ !!!! (অবাক হয়ে) এটা কিভাবে সম্ভব ?

দুপুর ঃ আমার মনে হয় রিয়া মেয়েটা ১টা প্রেতাত্না । তৃপ্তিতে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা গুলোও ওর ঘটনা । যত তারাতারি সম্ভব আমাদের ফেনি ছাড়তে হবে ।

রানা ঃ হ্যা । আমিও খেয়াল করেছি রিয়া মাটি থেকে একটু উঁচু দিয়েই হাঁটে । দুপুরের কথাটা মনে ছিল আমার, তাই খেয়াল করে দেখেছি । আমার মনে হয় এখনি আমাদের চলে যাওয়া উচিত ।

দুপুর ঃ হ্যা চল ।

সন্ধ্যার ৬টার বাসে উঠে ওরা । বাস কুমিল্লা আসার আগে ২টা বড় আক্সিডেন্ট থেকে বেঁচে যায় । কেনো জানি ওদের মনে হলো এগুলা রিয়াই করাচ্ছে । কিন্তু কেনো মেয়েটা ওদের সাথে এমন করছে ?

কুমিল্লা এসে দুপুরের পাসের সিটের লোকটা নেমে গেল। দুপুরের দুচোখ ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আছে ।

বাসটা হটাৎ খুব ঝাকি খেয়ে উঠে । দুপুরের ঘুম ভেঙ্গে যায় । পাশে তাঁকিয়ে দুপুরের মেরুদন্ডের শিরে যেন শীতল ঘাম বেঁয়ে যায় । চিৎকার করতে যাবে এমন সময় রিয়া তার মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে ।

রিয়া ঃ প্লিজ চিৎকার করবে না । আমি তোমার কোন ক্ষতি করবো না । তোমাকে কিছু কথা বলবো আমি ।

(দুপুর নিজের হাত দিয়ে রিয়ার হাত সরিয়ে)

দুপুর ঃ তুমি আসলে কে ? কি চাও ?

রিয়া ঃ আমার নাম রিয়া । আমাকে প্রায় ১ বছর আগে মেরে ফেলা হয়েছে । তুমি এখন আমার আত্মার সাথে কথা বলছো ।

দুপুর ঃ (ভীত কন্ঠে) কি ? তুমি আত্মা ? কিভাবে কি হয়েছে ? আর আমরা তোমাকে কি করেছি যে আমাদের ক্ষতি করতে চাইছো তুমি ?

রিয়া ঃ একটা একটা করে প্রশ্ন করো , গলা আটকে যাবে তো (হাসতে হাসতে) ।

দুপুর ঃ ভুতরা আবার হাসতে জানে ? তাও আবার এত সুন্দর হাসি ?

রিয়া ঃ হাহাহাহাহাহাহাহা(হেসে উঠে) । কেনো ভুতদের কি হাসতে মানা ?

দুপুর ঃ হইছে । এখন আমার প্রশ্নের উত্তর দাও ?

রিয়া । তোমাদের না শুধু , আমি তোমাদের বয়সের সব ছেলেদেরই মারতে চাই । আর তোমার কত বড় সাহষ তুমি ওই নৌকার সামনে যাও । ঐখানেই আমাকে রাকিব মেরে রেখে গেছে ।

দুপুর ঃ খুলে বলতো সব আমাকে ।

রিয়া ঃ আমার বাড়ি ঢাকার মুগদা । আর রাকিবের বাড়ী ফেনি । আমাদের ফেসবুকে রিলেশন হয় । একদিন আমি বাসায় ঝগড়া করে বেড়িয়ে আসি । চলে আসি রাকিবের কাছে। রাকিব আমাকে ওর এক বন্ধুর বাসায় রাখে ৩দিন । আমি বার বার ওকে বিয়ের কথা বললে ও এরিয়ে যায় । আমরা ৩ দিন ১ঘরে ছিলাম । (কেঁদে কেঁদে) পরেরদিন রাতে রাকিব ওর আরো ২টা বন্ধুকে নিয়ে এসে আমাকে ………………… ।

দুপুর ঃ প্লিজ কাঁদবে না ।

রিয়া ঃ তারপর আমাকে বালিস চাপা দিয়ে মেরে ফেলে । আর লাশ রাতের অন্ধকারে ওই পুকুরের ভিতর বস্তায় ভরে ফেলে দেয় আর নৌকা উল্টিয়ে চাপা দিয়ে রাখে । তারপর থেকেই আমার অতৃপ্ত আত্মা ঘুরে বেড়ায় সারা শহর জুড়ে । খুজে ফিরি মুক্তির অপেক্ষায় আর রাকিবের বয়সের ছেলেদের উপর সুজোগ পেলে প্রতিশোধের জ্বালা মেটানোর চেষ্টা করি ।

দুপুর ঃ কিভাবে তোমার মুক্তি হবে ?

রিয়া ঃ কেউ গিয়ে আমার জন্য জানাজা পরলেই আমি মুক্তি পাবো । তুমি আমাকে সাহায্য করবে ?

দুপুর ঃ আগে বলো , দেখি করতে পারি নাকি ।

রিয়া ঃ মুগদা ১৭/৩ বাড়ির ৪তালা আমার বাবা মা কে খবর দিবে যে আমি মারা গেছি আর তাদের বলবে আমার জন্য ১টা গায়েবানা জানাজা পড়িয়ে দিতে । আমার বাবার নাম আবুল কালাম আর মা জান্নাতুন নেসা । পারবে না তুমি ?

দুপুর ঃ (একটু ভেবে ) হ্যা পারব ।

রিয়া দুপুরের কাছ থেকে বিদায় নেয় । রাত ১১টার দিক দুপুর , শাকিল আর রানা ঢাকায় পৌছে । তারপর যার যার বাসায় ফিরে যায় । পরেরদিন বিকেলে দুপুর মুগদা যায় । কিন্তু ওই বাড়িতে এখন আর রিয়ার বাবা মা থাকে না । কোথায় থাকে কেউ জানে না ।

দুপুর ব্যাপারটা শাকিল আর রানার সাথে শেয়ার করে । তারা সিদ্ধান্ত নেই যে তারা রিয়ার জন্য গায়েবানা জানাজার ব্যাবস্থা করবে । আগামি ২৯ তারিখ শুক্রবার মালিবাগ মসজিদে রিয়ার গায়েবানা জানাজা হবে । ইনশাআল্লাহ তারপর রিয়ার অতৃপ্ত আত্তা মুক্তি পাবে সেই অপেক্ষায় আছে দুপুর , রানা আর শাকিল ।

( পুরো গল্পটিই কাল্পনিক, বাস্তবতার সাথে এর কোন মিল নেই)