বুধবার, ২২ জুন, ২০২২

কার্বনকপি


 

একাকিত্ব, এ এক গভীর অন্ধকূপের মত। সুখের ছন্দ আসলে মেলানো যায় না। এই একাকিত্বে নিজের মধ্যে জন্ম নিয়েছে নিজ কার্বনকপি। যেটা আপাতদৃষ্টিতে সকলের বোঝা দায়। 

আজকাল আমার বড়ো বেশি ঘুম পায়, কিন্তু সহজে সে ঘুমোতে দেয় না। অনেক রাত জেগে থাকি, আবার অনেক রাত ঘুমের মধ্যে জেগে থেকে তার সাথে খুনসুটি করি।


মাঝে মাঝে ঘুমের ঔষধের উপস্থিতিতে ঘুমিয়ে যাই। হঠাৎ সে জাগিয়ে তোলে, উপস্থিত আমার আমি মনে হয় জীবনানন্দের লাশকাটা ঘরে শুয়ে আছি। হ্যাঁ, এইমাত্র আমার দু চোখ উপড়ে ফেলে নিল আমার নিজ কার্বন কপি, পেট-বুক চিড়ে

ফেললো সে। কী অমায়িক টকটকে রক্ত! চামড়ার নিচে এত আয়োজন জীবনের! আমার কার্বন কপি এসব দেখে সে কি হাসি তার। আমি অবাক হই !

এতো কিছুর পরেও তবুও কোনো বোধ পেলাম না। আখিশূন্য অন্ধকার কোটর থেকে শুধু

অনুভব করলাম পঞ্চমীর চাঁদ সত্যিই ডুবে গিয়েছে।


কিন্তু ‘বাঁচিবার সাধ’ কি আছে?

ঐ তো, এইমাত্র খুলি থেকে আমার মস্তিষ্ক আলাদা করে নিয়ে গেলো সে। নাহ, তাও কিছুই টের পেলাম না। এভাবে হয়ত অনেক সময় কেটে গেল, অনেকগুলি পঞ্চমীর চাঁদ ডুবে গেল। হঠাৎ জানালার পাশে টেবিলের উপর, জ্যোৎস্নার আলোতে রাখা আমার উপড়ে নেয়া দু চোখ থেকে দেখলাম, আমার দ্বিতীয় আমি এক টানে আমার হৃদপিন্ড-টা আলাদা করে ফেললো। এইবার বোধ করি একটু বোধ হল। এক অদ্ভুত নীলচে একাকিত্বের বোধ।


উপড়ে নেয়া, রক্তশূন্য, নীলচে মলিন আর একেবারে শুকনো ঐ দু’চোখ বেঁয়েও কি দু ফোটা নীল অশ্রু গড়িয়ে পড়লো নাকি?

নাকি জ্যোৎস্নার আলোতে ঐ দু ফোটা চিকচিক শুধুই বিভ্রম?