শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩


 ভালোবাসলাম, হ্যা আমি তারে ভালোবাসলাম কিন্তু সে আমাকে বাসলোনা, আমায় বুঝতেও চাইলো না।
এই রকম অন্তত ছোট একটা গড়ান অনুভূতিও
একফোঁটা বিরহ বোধকে ভয়াবহ উসৃঙ্খল করে দিতে পারে!
এই রকম একটা সস্তা অনুভূতির খাতিরেও
একটা নিতান্ত ভদ্র ছেলে দাড়ি-গোঁফ-বাবরী রেখে
রাস্তায় রাস্তায় বছরের পর বছর ঘুরে বেড়াতে পারে
টানা সাত রাত সাত দিন না ঘুমিয়ে অপলক তাকিয়ে থাকতে পারে
সাত তালার কার্নিশে রাতের পর রাত পা ঝুলিয়ে বসে থাকতে পারে
অথবা মুহূর্তের সিদ্ধান্তে একটা লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করে নিতে পারে-
একটা মাত্র লাফ, হ্যাঁ/না হ্যাঁ/না একটা সিদ্ধান্তের ব্যাবধান মাত্র!
অথবা বিরহের চেয়েও সস্তার এক বোতল মদ কিনে এনে
ঢক ঢক করে এক নিঃশ্বাসে সব গিলে নিতে পারে!
লক্ষ লক্ষ দেশেলাই, লক্ষ লক্ষ ছিগারেট,
বোতলে বোতলে মদ। 
যাক, হৃদপিণ্ড, ফুসফুস, যকৃত সব ছারখার হয়ে যাক
যাক, চরিত্র নামের ঠুনকো বিষয়টিও নষ্ট হয়ে যাক
যাক, ভালোবাসার নথিপত্র গুলোও পুরে পুরে ছারখার হয়ে যাক
যাক, অতি সাধারণ ভদ্র ছেলেটিও একদম নষ্ট ভ্রষ্ট হয়ে যাক…
একটু একটু করে, ধীরে ধীরে অথবা একবারেই ধ্বংস হয়ে যাক।
” না! না! না! সে আমাকে ভালোবাসে নি” …শুধু এই একটা বোধইকি যথেষ্ট নয়!
বিনিময়ে এক নিঃশ্বাসে পুরো পৃথিবীটাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়া যায় ,
তসনস করে দেয়া যায়, এলিয়ে টলিয়ে টালমাটাল করে দেয়া যায়
জগতের সব সুর ছন্দ তাল এক থাবায় ছিনিয়ে নেয়া যায়, মুঠু খুলে ফুঁ দিয়ে তা আবার উড়িয়েও দেয়া যায়!
আবার অঙ্কের খাতা গুলু সোনালি শস্যের মতো কবিতায় কবিতায় ভরেও উঠতে পারে
রাতারাতি বেড়ে উঠতে পারে সব ভয়াবহ প্রেমের কবিতা, সর্বনাশা সব বিরহের কবিতা,
তীব্র পাওয়া না পাওয়ার কবিতা… অর্থহীন সৃষ্টি ধ্বংসের কবিতা ।।
ধ্বংস? হ্যাঁ, ছেলেটি ধ্বংস হয়ে যেতে পারতো, অথচ সে এখন সৃষ্টির খেলায় মেতে উঠেছে
মৃত্যুর দ্বারগোঁড়ায় দাঁড়িয়ে হয়তো বা এই অর্থহীন জীবনটাকেও তার কাছে ভয়াবহ অর্থবহ মনে হয়েছে…
মনে হয়েছে এই তুমি আছ, এই আমি আছি,
একই পৃথিবীর বুকে নিঃশ্বাস নিচ্ছি.
ইচ্ছে করলেই তোমাকে নিয়ে কবিতা লিখছি ..

মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

আমার ভয় হয় খুব

 


আমার ভয় হয় খুব;

যদি কখনো আমার চোখের ক্ষুধা মিটে যায়

যদি কখনো আমার হৃদয়ের তৃষ্ণা মিটে যায়

যদি আর কখনো তোমার গন্ধ না পাই দখিনা হাওয়ায়,

তবে আমি নিশ্চিত সেই দিন আমি মৃত

আমার দেহ কোন খেজুরের কাঁটা ঘেরা নতুন কবরে!


তোমাকে না দেখার খুব ভয় হয় তাই-

তোমাকে রেখে গেলাম মেঘের ভাঁজে ভাঁজে

তোমাকে রেখে গেলাম জোছনার নরম আলোর মাঝে

তোমাকে রেখে গেলাম বসন্তের সুখী পাখিদের গানে

তোমাকে রেখে গেলাম কঁচি পাতার সবুজ রঙে,

তোমাকে রেখে গেলাম লেবু ফুলের তীব্র ঘ্রাণে

তোমাকে রেখে গেলাম পৌষ, শ্রাবণ আর অঘ্রানে,

তোমাকে রেখে গেলাম মমী করা হৃদয়ে ভালোবেসে

তোমাকে রেখে গেলাম পৃথিবীর জল, মাটি আর ঘাসে।


হে প্রভু

আমার কবর যেন কুমারী বৃষ্টিতে ভিঁজে

আমার কবর যেন জোছনার আলোয় ভাসে

আমার মাথার কাছে একটা রাঁধাচূড়া জাগে

আমার পায়ের কাছে একটা কৃষ্ণচূড়া থাকে

আমার বুকে যেন অবারিত বুনো ঘাস জন্মায়

আমার শিয়রে যেন একটা লেবু গাছ ফুল ফুটায়।


হে প্রিয়া-প্রতি বর্ষার প্রথম দিনে, মেঘ মেলায় আমার কবরের পাশে তোমার নিমন্ত্রণ।