সোমবার, ২৯ জুন, ২০২০

উপলব্ধি



#উপলব্ধি
প্রেতাত্মার লেখা গল্প - Written By A R Shipon.
রান্না করছি, রেডি হতে হবে। রোদেলা আসবে একটু পরেই। প্রতি রাতেই সে আসে ছাদে। নীল শাড়ী, খোপায় বেলি ফুলের মালা, হাতে নীল চুরি, কপালে কালো টিপ আর চোখে গাড় কাজল।
রাত ১০ টা,
পাশের ফ্ল্যাটে বাচ্চা মেয়ের চিৎকার আর কান্নার শব্দ। এরকম প্রতিদিনই প্রায় হয়। আমার এখন সহ্য হয়ে গেছে। এই শুরু হয়েছে আর রাত ১২/১ টার আগে আর থামবে না।
আমি রান্না শেষ করে খাবার খেয়ে নিলাম। ১১ টা বেজে গেছে। কান্নার শব্দ আজ হটাৎ আগেই থেমে গেছে। আমি কিছুটা অবাক হলাম। আজ এতো আগে থেমে গেলো কান্না?
ভাবাভাবি বাদ। রোদেলার সাথে দেখা করতে যাবো। সিগারেটের গন্ধ সে একদমই পছন্দ করে না। তাই আজ একটু আগেই গিয়ে সিগারেট টেনে ছাদের কোন চুপটি করে বসে থাকবো। রোদেলা আসতে আসতে গন্ধ ভ্যানিস হয়ে যাবে।
ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে বাইরে থেকে ডোর লক করছি, এমন সময় পাসের ফ্ল্যাটের ভাই-ভাবি একটা স্যুটকেস নিয়ে বের হচ্ছে। আমি ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
দুপুরঃ ভাবি এতো রাতে ব্যাগ গুছিয়ে কোথায় যাচ্ছেন? ভাই এর সাথে ঝগড়া হয়েছে নাকি?
ভাইঃ (তোতলিয়ে) হ্যা ভাই। বাপের বাড়ি যাচ্ছে। পরে কথা হবে।
ভাই ভাবি আর স্যুটকেস নিয়ে তারাতাড়ি নেমে যায় লিফট ধরে৷ আর আমি উপরে চলে আসি।
সিগারেট খেয়ে বসে আছি রোদেলার অপেক্ষায়। সময় গড়িয়ে রাত এখন ১ টা বাজে। কিন্তু রোদেলা এখনো আসেনি। হয়তো কোনভাবে টের পেয়েছি সিগারেটের গন্ধ তাই হয়তো রাগ করে আসেনি। কিন্তু না আসলে আমি তার রাগ কমাবো কিভাবে? ক্ষমা চাওয়ার অন্তত একটা সুজোগ তো আমায় দিতে হবে।
ছাদের উপর পায়চারি করছি। আর এমন সময় ছোট বাচ্চা মেয়ের কান্নার শব্দ। পাশ  থেকে আমার পরিচিত প্রিয় কন্ঠটি। বাচ্চাটিকে স্বান্তনা দিচ্ছে।
রোদেলা ঃ কান্না করে না বাবু, পৃথিবীর মানুষগুলো এমনি নিষ্ঠুর। ক্ষুদ্র, অসহায়, নাড়িদের এরা মানুষ মনে করে না। ভোগের পন্য। তোর মত ছোট বাচ্চাটিকেও ছাড় দেয়নি।
রোদেলাও কান্নায় শুরু করে বাচ্চাটিকে জরিয়ে ধরে।
রোদেলার পাশে বাচ্চা মেয়েটি দাড়িয়ে। মেয়েটিকে দুই একবার দুপুর দেখেছে। হ্যা, মনে পরেছে। মেয়েটিতো পাশের বাসায় কাজ করতো।
মেয়েটির মাথা ফেটে রক্ত ঝড়ছে। অর্ধনগ্ন। গাল, ঠোটে কামড়ের দাগে রক্তাক্ত। হাতে খুনতি দিয়ে পোড়ানোর দাগ। কি বিভৎ দৃশ্য। বুঝতে আর বাকি রইলো না মেয়েটির সাথে কি হয়েছিলো আর তার শেষ পরিনতি কি হয়েছে। মানুষ হিসেবে নিজেকে উপলব্ধি করতে ইদানীং বড্ড লজ্জা লাগে। 

সোমবার, ২২ জুন, ২০২০

রহস্যময় খুন

প্রেতাত্মার লেখা গল্প - Written by A R Shipon. 
ফেসবুক গ্রুপ থেকে পরিচয় তৃষা আর রিফাতের। কল্পকাহিনির অন্যতম লেখিকা তৃষার গল্প প্রেম থেকে ধিরে ধিরে প্রেম শুরু। মাঝখানে বাদ সাধে শিপন। তৃষা আর রিফাতের অমর প্রেমে বিষের কাটা হয়ে দাড়ায় শিপন। শতচেষ্টায় বিফল সে।
অনেক কিছুর পর তৃষা আর রিফাতের প্রেম সফলতার মুখ দেখতে যাচ্ছে। আজ তাদের বিয়ে। দুজনের পরিবার রাজি না হওয়ায় বন্ধুদের সাহায্যে কোর্ট ম্যারিজ করতে যাচ্ছে তারা। বন্ধু হৃদয়, অর্নব, তাহমিদ, শিলা, সাদিয়া আর তানহা।
শিলাঃ তোমাদের বিয়ে ব্যাবস্থা যশোর এর বাইরে করা হয়েছে। ঢাকার পাশে। সেখানে ধরা খাবার ভয় নেই।
রিফাতঃ কিন্তু এতোদূর কেনো?
তৃষাঃ রিফাত ওরা যেটা ভাল মনে করে সেটাই করো।
রিফাত রাজি হয়। সেদিনই রওনা দিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসে। ঢাকার পাশের একটা গ্রামের নির্জন একটা বাড়িতে নিয়ে যায়। বন্ধুরা অভয় দেয় ভেতরে সব ব্যাবস্থা করা আছে। কাজি ভেতরেই রয়েছে।
তৃষা রিফাতের হাত ধরে ভিতরে ঢুকে। অন্ধকার রুম।
পরের দিন.
প্রতিটি দৈনিক পত্রিকার প্রধান শিরোনাম।
প্রেমিক রিফাতের হাতে প্রেমিকা তৃষার নির্মম খুন। 

রবিবার, ২১ জুন, ২০২০

রিভার্স


#রিভার্স (অনুগল্প) 
প্রেতাত্তার লেখা গল্প - Written by A R Shipon.

সিমরান, অনামিকা, রাতুল, অপু, মুন্না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ধনীর দুলাল-দুলালী। অন্ধকার রুমে বসে ইয়াবা নিচ্ছে। পাশে বসে মধ্যবিত্ত পরিবারের সুন্দরী মেয়ে অরিন।
ফেসবুকে ভূতের গল্প লিখে কিন্তু ভূত দেখেনি কোনদিন। তার ভূতের গল্প শুনে সবাই হাসাহাসি করে।
রাতুল, অপু, মুন্না তিনজনই অরিনকে পছন্দ করে কিন্তু অরিনের কাছে তারা বন্ধুর চাইতে বেশিকিছু না। 
সিমরান, অনামিকা অরিনের বন্ধু বটে তবে অরিনের রূপে তাদের হিংসে।
সন্ধ্যায় অনামিকা অরিনকে ফোন দিয়ে জানায় যে রাতে তারা গাজীপুরে মুন্নাদের বাংলোবাড়িতে যাবে ভূতের দেখতে। অরিনের ভূত দেখানোর সখ পূরন করবে।
অরিন ওদের সাথে প্রথমে যেতে না চাইলেও ভূত দেখার লোভ সামলাতে না পেরে রাজি হয়ে যায়।
রাত ১ টার কিছু পর পর বাংলোতে এসে পৌছে ওরা। অন্ধকার রাতে শেয়াল আর জোনাকির ডাক ভৌতিক পরিবেশ করে তুলছে। ভেতরে একটা রুমে বিছানায় বসে সবাই। কিছুক্ষন পরই বিদ্যুৎ চলে যায়।
মুন্না মোমবাতি জ্বালানোর জন্য পাশের রুমে যায়। হটাৎ মুন্নার ভূত ভূত বলে ভয়ার্ত চিৎকার। অরিন ভূত দেখবে বলে বের হতে চাইলে সিমরান ওকে ধরে বলে, তুই বস আমরা দেখে আসি। অরিন ছাড়া সবাই বের হয়ে যায়।
খানিক পরেই অরিনের রুমে সাদাকাপড় পরে শয়তানের অট্টহাসি হেসে একটা ভূত ঢুকে। অরিনের সাথে ধস্তাধস্তি করে। দূর থেকে দেখে সিমরান আর অনামিকা মুচকি হাসে।
দুজন মিলে বাংলো ঘুরে দেখতে থাকে। হটাৎ এক রুমের জানালার বাইরে দেখে এক বুড়ি দাঁড়িয়ে। রাগান্বিত চোখ দিয়ে রক্ত ঝড়ছে। বুড়িকে দেখে ভয় চিৎকার করে উঠে সিমরান আর অনামিকা। বুড়ি ওদের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। ভূতবুড়ির হাত থেকে প্রান বাঁচাতে বন্ধুদের খোজে দৌড় দেয়। কিছু একটার সাথে পা উষ্ঠা খেয়ে পরে গিয়ে জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে সিমরান।
সকালে সিমরান নিজেকে আবিস্কার করে একটি ধানক্ষেতের মধ্যে। তার পাশেই উল্টো করে পরে আছে নগ্ন ক্ষত বিক্ষত একটি মেয়ের লাশ। মেয়েটিকে হায়েনারা জেনো কামড়িয়ে কামড়িয়ে ছিরে ফেলেছে। যৌনাঙ্গ গুলো...
সিমরানের মনে পরে বন্ধুদের সাথে প্ল্যানের কথা। নিশ্চয় এই লাশ অরিনের। সে লাশটা উপর করে উল্টিয়ে দেখে চিৎকার করে উঠে। নগ্ন মেয়েটি লাশ আর কারো নয়, সেটা তার নিজেরই লাশ।
সমাপ্ত।