শনিবার, ২০ মে, ২০১৭

ডেভিল হান্টার্স (রহস্য গল্প ) লেখা ঃ MD Asadur Rahman (Sh Ip On) .

ডেভির হান্টার্স (রহস্য গল্প )
(সব পর্ব একসাথে)
লেখা ঃ MD Asadur Rahman (Sh Ip On)

সালাউদ্দিন ঃ দোস্ত আজ তো ইন্টারভিউ , তোর কি মনে হয় কেউ আসবে ?
শিপন ঃ অবশ্যই আসবে , কেনো আসবে না বল ?
সালাউদ্দিন ঃ এই প্রযুক্তির যুগে কি কেউ আসবে এই গোয়েন্দা ফোয়েন্দা হতে ?
মেহজাবিন ঃ তুই এসেছিস কেনো ?
সালাউদ্দিন ঃ আরে আমার তো শখ ছোট থেকে গোয়েন্দা হওয়া । তোরা চান্স দিলি তাই হয়ে গেলাম ।
শিপন ঃ তোর আমার মত এমন অনেক পাগল আছে যারা একটু আকটু ফোয়েন্দা গোয়েন্দা হতে চায় ।
মেহজাবিন ঃ কলিংবেল বাজছে কেউ মনে হয় এসেছে , ইন্টারভিউ দিতে ।
শিপন ঃ আচ্ছা আমি গিয়ে খুলে দেখি ।
শিপন গিয়ে দরজা খেলে দেয় , একটা মেয়ে এসেছে ।
মেয়ে ঃ আমি ইন্টারভিউ দিতে এসেছি ।আমার নাম সায়মা ।
শিপন ঃ আচ্ছা আসুন , ভিতরে আসুন ।
শিপন ঃ এই হচ্ছে মেহজাবিন আর ও সালাউদ্দিন । দোস্ত ইনি সায়মা , আমাদের সাথে কথা বলতে এসেছে ।
মেহজাবিন ঃ কেমন আছেন সায়মা ? আর বসুন প্লিজ ।
সায়মা ঃ আমি ভালো আছি , আপনারা ভালো আছেন ?
শিপন ঃ জি ভালো । আচ্ছা আপনি কোথায় থাকেন ?
সায়মা ঃ আমি উত্তরা থাকি ।
শিপন ঃ হটাৎ গোয়েন্দা হতে চাচ্ছেন কেনো ?
সায়মা ঃ ভালো লাগা থেকে এসেছি । রহস্য খুব ভালো লাগে ,এডভ্যাঞ্চার আর গনিত ও খুব ভালো । আর আমি মনে করি এই ৩টি ভালো লাগা একমাত্র গোয়েন্দাগিরিতেই সম্ভব । তাই আসা
…………………………………………
এভাই একজন একজন করে আসে , আর চলতে থাকে ইন্টারভিউ । ইন্টারভিউ বলা ঠিক হবে না । এই কথা বার্তা বলা আর কি ।
আপনার নাম ?
আমার নাম মিম
্মেহজাবিন ঃ আচ্ছা আপনি কেনো এতো প্রফেশন ছেরে গোয়েন্দা হতে চান ?
মিম ঃ ছোট থেকেই গোয়েন্দা বই পরতাম , এক সময় গোয়েন্দা বইএর পোকা হয়ে যাই । আর আজ সুজোগ পেয়ে নিজেই গোয়েন্দা হতে চাচ্ছি ।
মেহজাবিন ঃ স্ব্প্ন , কল্পনা আর বাস্তব কিন্তু এক না । এখানে অনেক রিস্ক আছে । মারাও যেতে পারেন ?
মিম ঃ আচ্ছা আপু পৃথিবীতে এমন কেউ আছে যে জন্মেছে কিন্তু মারা যাবে না ? আমিও মারা যাবো এটাই সত্যি । আমি মৃত্যু ভয় পাই না ।
এর পর আসে আরো অনেকে
আমি স্বাক্ষর , থাকি ঢাকা । আর ও আমার ফ্রেন্ড কৃ্ষ কলকাতা থেকে এসেছে গোয়েন্দা হতে ।
মেহজাবিন ঃ আচ্ছা আপনা কখনো ভূত দেখেছেন ?
স্বাক্ষর ঃ আমি ভূত বিশ্বাস করি না । এগুলা ভূয়া কথা ।(যেদিন খপ্পরে পরবা সেদিন বুঝবা পিচ্চি , মনে মনে বলছে মেহজাবিন )
আরেকজন
শিপনঃ আপনি কোথায় পরেন ?
আলো ঃ আমি রাজশাহি ইউনিভার্সিটিতে পরছি ।
সালাউদ্দিন ঃ একটা মেয়ে হয়ে কেনো আপনি এই গোয়েন্দা হতে আসলেন ?
আলো ঃ মেয়েদের কি গোয়েন্দা হতে মানা ? দেশের প্রধানমন্ত্রী , স্পিকার , বিচারপতি যদি মেয়েরা হতে পারে তাহলে মেয়েরা গোয়েন্দা হতে পারবে না কেনো ?
মেহজাবিন ঃ সাল্লু তুই একটু থাম । আলো আপু ও একটু আপনার সাথে মজা করছিল ।
এভাবেই টুকটাক কথা বলে ইন্টারভিউ পর্ব শেষ করে নেয়া হয় আলো , স্বাক্ষর , সায়মা , কৃ্ষ , মিম আর রিসান ।
পরেরদিন সবাই অফিসে আসে । ওহ হ্যা অফিস টা হল কলাবাগান মাঠের উলটা দিকে ইয়াকুব সাউথ সেন্টারের বেসমেন্টে । ছোট আর ভৌতিক টাইপের অফিস । তবে গোছানো , এসি আছে ।
সবাই কে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় । পরিচয় পর্বের শেষ সবাই মিলে গল্প করছে এমন সময় দরজায় টোকা ।সালাউদ্দিন দরজা খুলে দেখে ১টা মেয়ে ।
সালাউদ্দিন ঃ কাকে চান আপনি ?
মেয়ে ঃ শিপন ভাই আছে ?
সালাউদ্দিন ঃ হ্যা আছে । আপনি কে , আর কি চান ?
মেয়ে ঃ আমার তার সাথে কথা বলা জরুরী , তার কাছে প্লিজ আমাকে একটু নিয়ে চলুন ।
সালাউদ্দিন ঃ কি দরকার আমাকে বলুন , আমি ওকে গিয়ে বলছি ।
মেয়েটি সালাউদ্দিনকে সরিয়ে ভিতরে ঢুকে যায় । ভিতরের রুমে গিয়ে ওদের সামনে দারায়
মেহজাবিন ঃ আপনি কে ?
মেয়ে ঃ আমি প্রিয়া । আমি শিপন ভাই কে খুজছি , আমি উনার সাথে কথা বলতে চাচ্ছি ।
শিপন ঃ আমি শিপন ।বসুন …………… কি বলবেন বলেন ?
প্রিয়া ঃ আমি আপনার সাথে একা কথা বলতে চাচ্ছি , আর মেহজাবিন আপু আপনি ও আসেন প্লিজ । আপুকে আমি আগে থেকেই চিনি ।
৩জন পাশের রুমে যায় অনেকখন কথা বলে । কথা শেষ হলে বের হয় । সবার সাথে প্রিয়ার পরিচয় করিয়ে দেয় । আর বলে
মেহজাবিন ঃ প্রিয়া আমাদের নতুন সদস্য আর আমরা আগামিকাল কিছুদিনের জন্ন্য পটুয়াখালি যাচ্ছি । সেখানে সুন্দর ১টা রিসোর্ট আছে ছোট ১টা দ্বিপে । আমরা যেহেতু সবাই নতুন তাই শুরুতে একটা আধটু ঘোরাঘুরি করে কাজে নামতে চাচ্ছি । আর আমাদের হাতে তেমন কোণ কাজো নাই ।
শিপন ঃ কাল সকাল ১০টায় আমরা বাসে উঠবো । আর মনে রাখবে আমরা এখন গোয়েন্দা , সো যেখানেই যাই না কেনো একজন গোয়েন্দা হিসেবে যা যা ক্যারি করা উচিৎ সব নিয়ে আসবে ।
রিসান ঃ কাকা আমরা কত দিন থাকবো ?
শিপন ঃ ঠিক নেই ।
মিম ঃ ইটস গ্রেট । তাহলে আমরা এখন চলে যাই । বাসায় গিয়ে সব রেডি করি ।
স্বাক্ষর ঃ হ্যা ভাইয়া আমরা চলে যাই ।
এর পর সবাই চলে যায় । পরেরদিন সবাই ঠিক ১০টার আগেই অফিসে চলে আসে । সেখান থেকে বাসে করে রওনা দেয় মিম , আলো , স্বাক্ষর, কৃ্ষ ,প্রিয়া ,রিসান , শিপন , সালাউদ্দিন , মেহজাবিন , সায়মা ।সন্ধ্যা ৬টার দিকে জাফলং এ গিয়ে পৌছায় পটুয়াখালী । সেখান থেকে ট্রলারে করে পোছে সেই রিসোর্টে ।ট্রলারে শিপন সবাই কে বলে
শিপন ঃ তোমাদের কি কারো মনে প্রশ্ন যাগে নি যে ঢাকার আসে পাশে এতো যায়গা থাকতে কেনো আমরা এখানে এলাম ঘুরতে ?
আলো ঃ ভাইয়া আমরা কি Great Haunted Resort এ যাচ্ছি ? যেখানে নাকি প্রায় রাতেই ভূত দেখা যায় ?
শিপন ঃ এই মেয়ে তুমি জানলা কিভাবে ?
আলো ঃ পটুয়াখালি আর দ্বিপের কথা শুনে কাল রাতে নেটে একটু ঘাটাঘাটি করেছিলাম আরকি ।
শিপন ঃ আচ্ছা শুনো সবাই । আমরা সবাই আসলে ভূত দেখতে আসছি । তোমাদের মধ্যে অনেকেই আছো যারা এগুলো বিশ্বস করো না । তাদের জন্ন্য এই ট্যূর । আর যারা ভয় পাও তারা কখনোই একা থাকবে না । ব্যাগ অলওয়েস ক্যারি করার চেষ্টা করবে ।
রাত ৯টার দিকে ওরা রিসোর্টে পৌছায় । সেখানে গিয়ে রিসোর্টে রুম ভারা করে । খুব বেশি মানুষজন নেই এখানে । জায়গাটা খুব বেশি ভয়ংকর ।রিসোর্ট টা পুরোনো ১টা ভুতের বাড়ির মত । চারপাশে নদী । রিসোর্টের একটু দূরেই আছে বড়১টা বটগাছ । তার ইচে ১টা মন্দির ও দেখা যায় । কোন বিদ্যুতের ব্যাবস্থা নেই । হেরিকেনর আলোয় সব চলে । তার মানে মোবাইল চার্জের ব্যাবস্থা নেই । রিসোর্টের পিছনে একটু বনের মত । যে যার মত করে রাতে রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরে । ওরা সহ সব মিলে ২০জনের মত হবে এখানে ঘুরতে মানে রাত্রীযাপন করে ভূত দেখতে এসেছে । রাত পেরিয়ে যায় কিন্তু ভূত-পেত্নীর কোন খোজ নেই ।রিসোর্টে রাতে খাবার খায় ইলিশ মাছ দিয়ে ।
শিপন রিসোর্টের সামনের শিড়িতে বসে সিগারেট খাচ্ছে । প্রিয়া শিপনের সাথে কথা বলে । অনেকখন ওরা কথা বলে । এক সময় প্রিয়া কেদে উঠে । কিছুখন পর অরা চলে যায় রুমে । যার যার মত হারিয়ে যায় ঘুমের রাজ্যে । সকালে শিপনের ঘুম ভাংগে চিৎকার চেচামেচিতে ।পাশের রুম থেকেই আওয়াজ টা এসেছে । শিপন , স্বাক্ষর , রিসান দৌড়ে পাশের রুমে যায় । গিয়ে দেখে মেহজাবিন্ দের রুমের সামনে ১টা মরা কাক পরে আছে ।কাক টার শরির দিয়ে রক্ত ঝরেছে । দেখে মনে হচ্ছে কেউ খামছিয়ে কাকটাকে মেরেছে । মিম ঘুম থেকে উঠে দেখে কাকটা পরে আছে , আর সেটা দেখে চিৎকার দেই । মেয়ে টা খুব ভয় পেয়েছে  ।
মিম ঘুম থেকে উঠে দেখে কাকটা পরে আছে , আর সেটা দেখে চিৎকার দেই । মেয়ে টা খুব ভয় পেয়েছে হাত পা কাপছে । সবাই মিলে অনেক চেষ্টা করে স্বাভাবিক করে। সকালের নাস্তা সেরে বের হয় ঘুরতে । দ্বীপ টা দিনের বেলায় অনেক সুন্দর । খুবই নির্জন ১টা এলাকা ।বেশ কিছুদুর হাটার পর ছোট ১টা বনের মত সামনে ছোট ১টা সাইনবোর্ডে লিখা *** সামনে বিপদজনক এলাকা *** তবু শিপন ওদের নিয়ে সামনে এগিয়ে যায় । কিছুদুর যাওয়ার পর জায়গাটা কাদা কাদা । হটাৎ ২জন সামনে এগিয়ে আসে
আগত্বক ঃ আপনারা ঐ দিকে কই যান ?
আগত্বক ২ ঃ ঐদিকে যাওন যাইবো না । ফিরত যন।
শিপন ঃ আমরা এখানে ঘুরতে আসছি সুতরাং আমরা সবখানে যেতে পারবো ।
আগত্বক ঃ না বলছি তো না । যান যেইখানে আসছেন সেইখানে যান ।
মেহজাবিন ঃ এটা কেমন ব্যাবহার , আমরা এইখানে অতিথি ।
আগত্বক ২ ঃ অতিথি অতিথির মত থাকেন । যান এহন এইহান থেকা ।
ওরা চলে আসে । সন্ধার আগে দিয়ে শিপন , রিসান আর প্রিয়া আবার যায় সেখানে সবার চোখ ফাকি দিয়ে ।রাত ৮টার কিছু পরে ফিরে আসে । একসাথে ডিনার করে যে যার মত ঘুমাতে যায় ।
রাত ১২টার কিছু পর কারা যেনো তাদের রুমের চালে ঢিল মারে । প্রথমে কয়েকটা করে মারে । ধিরে ধিরে বারতে থাকে । রিসোর্টে থাকা আরো কয়েকজন ছিল তারা চিৎকার করছে । শিপন , সাক্ষর আর সালাউদ্দিন বের হয় । বের হয়ে দেখে ২টা বিশাল দানব ২ হাত দিয়ে ঢিল ছুরছে আর সেগুলা অসংক্ষ হয়ে রিসোর্টের চালে পরছে । চারপাশ থেকে ভংকর শব্দ আসছে । পুরো পরিবেশটা এ ভংকর রুপ ধারন করে । পাসের রুম থেকে মিম , প্রিয়া, মেহজাবিন আর সায়মা বের হয়ে আসে । ঘটনা দেখে সায়মা সেন্সলেস হয়ে যায় । দানব দের সাথে সাথে নতুন করে শুরু হয় কয়েকটি কুকুরের অত্যাচার । কছে এসে কামরিয়ে ধরে সাক্ষরের পা । রিসান লাথী দিয়ে সরিয়ে দেই । তারাতারি করে রুমে ঢুকে পরে ।সবাই একরুমে জরশর হয়ে বসে । বাইরে তান্ডব চালিয়ে যায় ২টো দানব আর কুকুর গুলো । কোন রকমে রাত পার করে ।
সকালে ঘুম ভাংগে সবার আগে সায়মার , সে সবাইকে এক এক করে জাগিয়ে তুলে ।
মিম ঃ মেহজাবিন আপু আমার মনে হয় এখনি আমাদের যাওয়া উচিৎ ।
সায়মা ঃ মিম ঠিক বলছে ।
মেহজাবিন ঃ মোটেও না । আমরা এখানে এসেছি এখান থেকে এর রহস্য বের করে যাবো ।
সাক্ষর ঃ কিন্তু আপু , আজ তো বেচে গেছি , কাল যে ভূত গুলো আমাদের বাচিয়ে রাখবে তার নিশ্চয়তা কি ?
সালাউদ্দিন ঃ বোকার মত কথা বলো কেন সাক্ষর ? আর ভয় পেলে গোয়েন্দা হতে এসেছো কেন ?
রিসান ঃ কাকু তুমি কি ভূতগুলো খেয়াল করেছো ? আমার মনে হচ্ছে এগুলো ভীতু ভূত । ওরা তো চাইলেই আমাদের ক্ষতি করতে পারত ।
হটাৎ একটি দাড়িওয়াল লোক এসে হাজি হয়ে বলে । ওরা আজ মাফ করছে বলে যে কাল মাফ করবে তেমন কিছু না । ওরা খুবই হিংস্রপ্রেত । আজ আপনার না পালাইলে কাল আপনাদের সবার সব কিছু নিয়ে মাইরা ফেলবো ।
শিপন ঃ আপনি কে ? আপনি কি করে জানেন এতো কিছু ?
আমার নাম জামান ।আমি এখানে থাকি অনেকদিন ।
সাক্ষর ঃ আপনাকে ভূত কিছু বলে না ?
জামানঃ আমাকে বলে না , আমি ভূত রাশির । আচ্ছা যাই হোক , আপনারা চলে যান কেমন । আমি নৌকা ঠিক করে দিচ্ছি ।এখন না গেলে দুপুরের পর নৌকাও পাইবেন না ।
শিপন ঃ আচ্ছা বনের ভিতর ১টা বড় পোড়া বাড়ি দেখলাম , চারপাশে কাটাতারের বেরা । সাইনবোর্ড লাগানো আছে *** সামনে বিপদজনক এলাকা *** এটা কি ?
জামান ঃ সর্বনাশ করে ফেলছেন , ওইতদুর চইলা গেছেন ? মরন আপনার অনিবার্জ । এক্ষনি পালান এইহান থেকে যদি বাচবার চান ।
বলে চলে যায় জমান ছেলেটি । সায়মা প্রায় কাদো কন্ঠে বলে
সায়মা ঃ আমার মনে হয় আমাদের চলে যাওয়াই উচিৎ । সব কিছু ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে ।
প্রিয়া ঃ চলে যাবো মানে ? চলে যাওয়ার জন্য তো আসি নাই এখানে । আমার বন্ধু প্রীতির খোজ না নিয়ে আমি এখান থেকে কোথাও যাবো না ।
কৃ্ষ ঃ আসলেই তো , আমরা ভয় পাচ্ছি কেন ? আমরা গোয়েন্দা , এই টুকটাক রিস্ক আমাদের নিতেই হবে ।
শিপন ঃ শোন সবাই । আমরা এখন নাস্তা করবো । নাস্তা শেষ করে আমরা ২ দলে বিভক্ত হয়ে একদল যাবে বনে সেই বাড়িটির উপর নজর রাখতে আর একদল যাবে এখান থেকে লোকালয়ে যাওয়ার রাস্তা খুজতে ।
মেহজাবিন ঃ আমরা কাল কিছুটা খোজ নিয়েছি । কোথাও কিছু পাইনি ।
যেই কথা সেই কাজ । নাস্তা শেষ করে শিপন , রিসান্ , প্রিয়া, আলো আর মিম একদল হয়ে বনে যায় আর অন্যদিকে যায় মেহজাবিন , সালাউদ্দিন , সায়মা , সাক্ষর , কৃ্ষ ।২টার দিকে ফিরে আসে মেহজাবিন কৃ্ষ ওরা কিন্তু তখনো ফেরার খবর নাই শিপন্ দের । ওরা কোন পারাপারের ব্যাবস্থা পায় নি । তবে ১টা ভাংগা নঙ্কা পেয়েছে যেটা দিয়ে হয়তো বিপদের সময় উপকারে আসতে পারে । শিপন রা ৬টার দিকে ফিরে আসে । নাস্তা পানি খেয়ে সবাইকে নিয়ে নদির পাসে বসে গল্প করছে । শিপন ব্যাগ নিয়ে এসেছে ।
শিপন ঃ এইখানে ফোন নেটওয়ার্ক নাই । সম্ভবত ডিভাইস দিয়ে নেটয়ার্ক বন্ধ করা । আমার কাছে ৪টা ওয়াকিটকি আছে । এটা দিয়ে কোন বিপদে পরলে একজন আরেক জনের সাথে যোগাযোগ করবে ।
সালাউদ্দিন ঃ আমরা ৪টা টিমে ভাগ হয়ে যাই । যত বিপদে আসুক আমরা এই টিম থেকে বিভক্ত হবো না ।
রিসান ঃ ঠিক বলেছো ।
শিপন ঃ সালাউদ্দিন , মিম , আর কৃ্ষ একটিম , মেহজাবিন , সায়মা আর সাক্ষর একটি টিম , আমি , আলো আর রিসান একটিম । আর প্রিয়া নিজে একা । আমরা এখন থেকে সবাই প্রিয়া ক সবার নজরে রাখবো । প্রিয়ার এই মিশনে সবচেয়ে বড় ভুমিকা রাখবে ।
আলো ঃ ভাইয়া তোমার প্লানটা কি ?
মেহজাবিন ঃ আজো ভুতেরা আমাদের উপর হামলা করবে । প্রিয়া এখানে আগেও এসেছে । প্রিয়া আর প্রিয়ার বন্ধু প্রিতি ২জনে এসেছিল । প্রিতিকে দানব রা উঠিয়ে নিয়ে যায় (হটাৎ আচমকা ভয় পায় মেহজাবিন )
একটা কাক এসে ওদের মাঝখানে পরে । খতবিক্ষত কাক , রক্ত ঝরছে শরির দিয়ে । পাখনার সাথে ১টা চিঠি বাধা । রিসান চিঠি নিয়ে বের করে পরে । **** সাবধান সাবধান যদি বাচতে চাস তাহলে এখনি পালা । নদীর উত্তর পাশের লাল পতাকার পাশে বোট আর মাঝী আছে ।****
সাক্ষর ঃ আমাদের যেন কে লক্ষ করছে । ঝোপটার পাশে দাঁড়িয়ে লুকিয়ে আমাদের কথা শুনছে ।
ওরা সবাই একসাথে ঝোপের দিকে তাকায় , আর লুকিয়ে থাকা লোকটি হুরমুর করে পালিয়ে যায় ।
শিপন ঃ আচ্ছা আমরা এখান থেকে চলে যাই , রাত হয়ে গেছে । রুমে গিয়ে সবাই আড্ডা দেই ।
সবাই রুমে গিয়ে বসে আড্ডা দেয় । গল্প , কৌ্তুক , গানে মেতে উঠে । এতোটি মেতে থাকে যে লক্ষই করে নি যে ওদের জানালার পাশে একজন ওত পেতে ওদের দিকে নজর রাখছে ।
৯টার দিকে সবাই একসাথে রাতের খাবার খায় । তারপর যে যার মত রুমে ফিরে যায় ।
গত দিনের মত আজও রাত ১২ টার পর আসে সেই দানব আর কুকুর গলো । সাথে যোগহয়েছে কিছু কংকাল আকৃ্তির কিছু একটা । এবার কিন্তু তারা আর আগের দিনের মত শুধু ভয় দেখিয়ে ক্ষ্রান্ত না । রিসোর্টে থাকা লোকদের উপর একরকম মারাত্তক আক্রমন চালাচ্ছে । ইতি মধে তাদের ছোরা আগুনে একজন পর্যটক আহতো হয় ।
শিপন ঃ সালাউদ্দিন তুই মিম আর কৃ্ষ এখনি গিয়ে দেখ অই বনের ভিতর বাড়ী টির অবস্থা । প্রিয়া তুমি সামনে যাও এগিয়ে ।
দানব গুলো এগিয়ে আসছে খুব । শিপন রুম থেকে তার ব্যগ নিয়ে আসে , ব্যাগ থেকে ১টা বাজী বের করে দানবের দিকে ছুরে দেয় । রঙ্গিন আগুন জেলে বাজিটি দানবের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে । বিশাল শব্দ করে ফেটে পরে । ভয়ে বের হয়ে যায় দানবের আসল রুপ । আসলে কয়েকটি মানুশ মিলে আর পোষাক পরে দানব আর ভূত সেজে সবাইকে ভয় দেখিয়েছে ।
ওরা পালিয়ে যাচ্ছে আর যাওয়ার সময় তুলে নিয়ে যাচ্ছে প্রিয়া কে । শিপন কিন্তু এটাই চাচ্ছিল । ওদের আসল আস্তানায় যাওয়ার এটাই সহজ উপায় ।
পিছনে পিছনে চলতে থাকে মেহজাবিন, সায়মা, সাক্ষর, শিপন, আলো আর রিসান । প্রিয়া কে নিয়ে যায় বনের ভিতর সেই বাড়িতে । তবে পিছনের দিক দিয়ে । সেখানে গিয়ে দেখা হয় সালাউদ্দিন এর সাথে ।
সালাউদ্দিন ঃ এরা ১টা বড় টিম তবে এখানে তেমন কেউ নাই । আমি ওদের নেটওয়ার্ক ডিভাইস অন করে দিছি । আর উপরে ১টা রুমে ১টা মেয়েকে আটকে রাখা আছে , সেখানে ২টা পাহাড়াদার আছে । আমিও কৃ্ষ কে রেখে এসেছি । ও নজর রাখছে ।
শিপন ঃ বোকা নাকি তুই ? অরে একা রেখে এসেছিস , ওর তো বিপদ হতে পারে ।
সায়মা ঃ চলো আমরা কৃশ এর কাছে যাই ।
শিপন ঃ রিসান , মোবাইল নেটওয়ার্ক আসছে । তুমি লোকাল পুলিস কে ব্যাপারটা জানাও ।
সালাউদ্দিন ঃ অইদিক দিয়ে চল
ওরা সবাই পাসের ১টা ভাঙ্গাচোরা শিড়ি দিয়ে উপরে উঠে দেখে কৃষ ২টা লোকের সাথে একা মারামারি করছে । সাক্ষর এগিয়ে গিয়ে একজনকে কে ধরে মারতে শুরু করে । বাকি সবাইও এগিয়ে গিয়ে ধরে বাকি গুলোকে ।
কৃ্ষ ঃ আমি দেখি যে ওরা প্রিয়া আপুকে নিয়ে এসেছে , রুমটাতে তালা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে তখন কোনো উপায় না পেয়ে ঝাপিয়ে পরি ।
মেহজাবিন ঃ গুড বয় । আসো এখন প্রিয়া আর প্রিতিকে বের করি ।
সাক্ষর আর সালাউদ্দিন লাথি মেরে ভেঙ্গে ফেলে দরজা । সেখানে গিয়ে দেখে প্রিয়া আর প্রিতিকে । প্রিতি খুব অসুস্থ হয়ে পরেছে ।
শিপন ঃ তোমরা ঠিক আছো ?
সাক্ষর আর সালাউদ্দিন লাথি মেরে ভেঙ্গে ফেলে দরজা । সেখানে গিয়ে দেখে প্রিয়া আর প্রিতিকে । প্রিতি খুব অসুস্থ হয়ে পরেছে ।
শিপন ঃ তোমরা ঠিক আছো ?
প্রিয়া ঃ হ্যা ঠিক আছি আমি কিন্তু প্রিতি অসুস্থ । ওকে ডাক্তার দেখাতে হবে ।
রিসান ঃ কাকা আমি পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছি , খুব তারাতারিই চলে আসবে ।
শিপন ঃ মেজজাবিন তুই প্রিতি আর প্রিয়াকে নিয়ে যা , আমি আর রিসান ঘুরে আসছি একটু , কোথায় কি আছে ?
প্রিতি ঃ আমি যাবো আপনার সাথে ।
মেহজাবিন ঃ তুমি অসুস্থ প্রিতি , তোমার যাওয়া ঠীক হবে না ।
প্রিতি ঃ আপু আমি যেতে পারবো । আর আমি চিনি সব ।
সালাউদ্দিন ঃ আলো আর মেহজাবিন ওকে ধরে নিয়ে আস । আমরা সবাই যাই । কারন বদমাইশ গুলো হয়তো আসে পাশেই আছে । আলাদা হলে আক্রমন করতে পারে ।
কৃষ ঃ ঠিক , আমাদের একসাথে যাওয়া উচিৎ ।
শিপন ঃ আচ্ছা চলো তাহলে ।
এরপর এগিয়ে চলে তারা । প্রথমে শিপন ওদের সবাই কে নিয়ে যায় বিভিন্ন যায়গায়। কিন্তু কোথাও কিছু দেখতে পায় না । এরপর প্রিতি বলে
প্রিতি ঃ ভাইয়া ওই বাড়ির নিচে ১টা ঘর আছে । সেখানে গেলে পেতে পারো হয়তো ।
শিপন ঃ সেটা ঠিক আছে । কিন্তু এখানে কালই অনেক অনেক গরু দেখেছিলাম , সব এতো তারাতারি কোথায় গায়েব হয়ে গেলো ।
রিসান ঃ কাকা আমি নদীর পারে ১টা মরা গরু দেখতে পেয়েছি ।
শিপন ঃ প্রিতি চলো সেই ঘড়টা তে । দেখিকিছু আছে নাকি ।
এরপর ওরা চলে আসে সেই ঘরে । পুরোনো সেই বাড়ির নিচে ঘরটি । ১টা সুরংগ পথ দিয়ে যেতে হয় । সেখানে গিয়েও কাউকে পায় না ওরা । তবে অনেক কিছু দেখতে পায় । কিছু জামাকাপর ,নাগা মরিচের আচার , আর এক রুমে রক্ত পরে জমাট বেধে আছে আর কিছু গরুর চামরা পাশে পরে আছে । জামাকাপর গুলো দেখে বুঝতে পারলো যে ভূত গুলো আসলে ফেক , আচার টা সাক্ষর নিয়ে নেয় । ওরা অভিনয় করতো, বেশ ভালোই অভিনয় করেছে ভূতগুলা । কিছুখন পর পুলিস আসে । পুলিস সব তছনছ করে খুজেই কিছু পায় না । তবে ধন্যবাদ দেয় ওদের সবাই কে , কারন তাদের কাছে এ ব্যাপারে কয়েকবার রিপোর্ট আসছিল এই রিসোর্ট নিয়ে । তখন পাত্তা দেই নাই ।
এরপর পুলিশ ওদের ঐখান থেকে নিয়ে আসে । পরেরদিন ভোরে ওরা ঢাকায় চলে আসে । যে যার বাসায় ফিরে যায় । ২দিন রেস্ট নেয় ।
রেস্ট শেষ হলে আবার শুরু হয় তাদের অফিস । গোয়েন্দাগিরি ।
বিকেলে সবাই হাজির । শিপন, রিসান, মেহজাবিন, সালাউদ্দিন, , সায়মা, সাক্ষর, মিম , আলো আর কৃষ ।সবাই গল্প করছে । প্রিয়া আসে নি তখনো ।
সাক্ষর ঃ ভাইয়া , তাহলে আমরা আমাদের সফল হলাম আমাদের প্রথম গোয়েন্দাগিরিতে ।
সালাউদ্দিন ঃ হ্যা । অনেক ভয় ও পেয়েছিলা । যাক কাজটা শেষ হলো ।
মিম ঃ আমরা প্রিতি কে উদ্ধার করলাম । আমার ভেবেই খুব ভালো লাগছে ।
মেহজাবিন ঃ আমরা সফল না ? আমাদের কাজ শেষ হয় নাই ।
মিম ঃ কি বলো আপু ? আর কি বাকি ?
শিপন ঃ ওরা কেন মানুষদের ডেকে নিয়ে ভয় দেখায় ? এতো গরু কোথায় থেকে আসলো ? আবার গেলোই বা কোথায় ? আর প্রিতিকেই বা কেনো আটকে রেখেছিল ?
রিসান ঃ রাইট । তার মানে কাকা এর ভিতর আরো রহস্য আছে ঠিক না ?
শিপন ঃ আপাতত তাই মনে হচ্ছে । কিন্তু বুঝতেছিনা কিভাবে শুরু করবো ।
মেহজাবিন ঃ হ্যা , আমরা কোন ক্লু নিয়ে আসতে পারি নাই । আমার মনে হয় প্রিতির সাথে কথা বললে কিছু পেতে পারি ।
আর এমন সময় প্রিয়া আর প্রিতি এসে হাজির ।
প্রিতি ঃ আমাকে নিয়ে মনে হয় কিছু বলছেন আপনারা ?
মেহজাবিন ঃ হ্যা । তোমার সাথে কথা বলতে চাচ্ছিলাম ।
শিপন ঃ প্রিয়া আর প্রিতি কেমন আছো তোমরা ? শরিরের খবর কি ? এখন সুস্থ তো ?
প্রিয়া ঃ আমরা একদম সুস্থ ।
প্রিতি ঃ প্রিয়ার কাছ থেকে আপনাদের গোয়েন্দা গ্রুপের কথা শুনেছি । আমার খুব ভালো লেগেছে । আমি কি আপনাদের সাথে কাজ করতে পারি ?
মেহজাবিন ঃ অবশ্যই । আমরাও তোমাকে চাচ্ছি ।
রিসান ঃ আচ্ছা আপু আমাদের কিছু জানার ছিলো তোমার কাছে ?
প্রিতি ঃ আমার কাছে ? কি জানতে চাও বলো ?
রিসান ঃ তোমাকে ওরা কেনো উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছিল ? কিভাবে ? আর তুমি কি কি দেখেছো আমরা কি জানতে পারি ?
প্রিতি ঃ আমি নিজে থেকেই জানাতে চাচ্ছিলাম । রাতে যে ভূত গুলো আসতো সেটা যে ফেক আমি তা ধরে ফেলেছিলাম । তারপরের দিন আমি ওদের হাতে নাতে ধরার জন্ন্য ওত পেতে ছিলাম । ধরেও ফেলি । তারপর আমাকে তারা করে । পুরোনো সেই বাড়িটার পিছনে লুকায় । আর তখন তাদের আরেকটা ক্রাইম আমি দেখি ফেলি ।
সাক্ষর ঃ কি দেখেছো আপু ?
প্রিতি ঃ খুন
মিম ঃ কি ? কি বলো তুমি এইসব ? ঐখানে খুনও হয়েছে ?
প্রিতি ঃ হ্যা । ওদের ব্যাবসায়িক কোন ঝামেলা নিয়ে ওরা ওদেরই একজনকে খুন করে । আর আমি দেখে ভয়ে চিৎকার করি । আর তখন আমাকে দেখে ফেলে । আমাকে বন্দি করে ফেলে । কৃ্ষ না থাওলে হয়তো আমি ঐদিন মারাই যেতাম । কৃষ তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই ।
কৃ্ষ ঃ আপু আমি সেটাই করেছি যেটা আমার করার উচিৎ ছিল ।
সাক্ষর ঃ (দারিয়ে গিয়ে) বাইরে থেকে কে যেনো আমাদের কথা শুনছে । (কথা বলেই সাক্ষর বাইরের দিকে দৌড় দেয় । আর লোকটি পালিয়ে যায় । সবাই পিছন থেকে দেখে যে পালিয়ে যাচ্ছে । সাক্ষর লোকটির পিছনে পিছনে বেশ কিছু দূর ছুটে যায় । কিন্তু ধরতে পারে না )
ফিরে আসে সাক্ষর ।
সালাউদ্দিন ঃ সাক্ষর কে ওইটা চিনতে পারলে ?
সাক্ষর ঃ হ্যা ; জামান নামের ওই লোক টা । যে আমাদের আগেও ওইখানে ফলো করছে ।
শিপন ঃ তারমানে ঘাপলা আরো অনেকদুর ।
আলো ঃ আমাদের সবাই কে একটু সাবধানে থাকতে হবে ।
সায়মা ঃ হ্যা । সেফটি ফার্স্ট । ওরা যেহেতু ফলো করছে তারমানে ভয় দেখানোর জন্য আমাদের উপর আক্রমন ও করতে পারে ।
শিপন ঃ সবাই সাবধানে থাকবে । কিছু হলে আমাকে জানাবে , এখন যার যার বাসায় চলে যাও ।
এর পর যে যার মত বাসায় চলে যায় । শিপন , সালাউদ্দিন আর রিসান একসাথে থাকে । বাসায় ফিরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে সুয়ে পরে শিপন আর সালাউদ্দিন । রিসান টেবিলে বসে গল্পের বই পরছে । রিসান খেয়াল করে বারান্দায় কে জেনো আছে । হালকা ছায়া দেখতে পায় সে ।
রিসান ঃ (নিচু গলায়) কাকা কাকা , উঠ । কে যেন বারান্দায় লুকিয়ে আছে ।
শিপন ঃ চলো কাকা , দেখে আসি বেটাকে ।
ধিরে ধির ২জন আগাচ্ছে । বারান্দার কাছে যাওয়া মাত্র ভিতর থেকে লোকটা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেই শিপন আর রিসান কে । পিছন থেকে আস্ত্র বের করে গুলি করার প্রস্তুতি নেয় ।সালাউদ্দিনের ঘুম ভেংগে যায় । সব দেখে সালাউদ্দিন মোবাইল ছুরে মারে অস্ত্রের দিকে । নিশানা ঠিক মতঅই করে সালাউদ্দিন । তবে শিপন ঘুলির হাত থেকে রক্ষা পেলে গুলিটা কিঞ্চিত আগাত হাতে রিসানের হাতে । অবস্থা বেগতিক দেখে অস্ত্র ফেলেই বারান্দা দিয়ে লাফ দেয় জামান । হ্যা লোকটি সেই জামান । সালাউদ্দিন ফার্স্ট এইডবক্স বের করে রিসানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয় । শিপন পুলিশ কে খবর দেই । পুলিশ আসে , সাক্ষর আর কৃ্ষ ও খবর পেয়ে আসে । শিপন বাকি সবাইকে ফোন দিয়ে খোজ খবর নেয় যে তারা ঠিক আছে কি না ।
থানায় গিয়ে ১টা সাধারন ডায়েরী করে । বিকেল সবাই তাদের অফিসে আসে ।
অফিসে সবাই চুপ । কারো কোন সারা শব্দ নেই । সাওবাই চিন্তিত ।
নিরবতা ভেঙ্গে আলো প্রশ্ন করে শিপন কে
আলো ঃ ভাইয়া আপনি ওদের কাউকে চিনতে পেরেছেন ?
শিপন ঃ হ্যা । জামান নামের ওই দাড়িওয়ালা ছেলে টা ।
আলো ঃ কিন্তু কেন করছে সে এসব ?
সাক্ষর ঃ কেনো করবে না ? আমরা তাদের আস্তানায় ঝামেলা পাকিয়ে পুলিশ দিয়ে সব ভেস্তে দিয়েছি । প্রতিশোধ নিচ্ছে ।
প্রিতি ঃ আরো কারন আছে ।
মেহজাবিন ঃ কি ?
প্রিতি ঃ আমরা ওদের কিছু জেনে গেছি । ওদের আস্তানা নিশ্চই ১টা না বা ঐ ঘটনা ঘটার পর ওরা ওদের ব্যাবসা থামিয়ে দিবে না ।
মিমঃ ঠিক তাই তো ।
প্রিতি ঃ ওরা ভয়ে আছে যে আমরা হয়তো আবার ওদের ব্যাবসায় ক্ষতি করতে পারি । তাই আমাদের উপর হামলা করে ওরা আমাদের ভয় দেখাতে চাচ্ছে ।
মেহজাবিন ঃ হ্যা তাই তো । এভাবে তো ভেবে দেখা হয় নাই ।
শিপন এতোখন ওদের কথা শুনছিল । এবার উঠে বারান্দার দিকে যায় । সিগারেটের প্যাক থেকে ১টা বের করে টানতে থাকে ।
শিপন ঃ রিসান ওই পুরোনো বাড়ি থেকে কি কিছু নিয়ে এসেছিলে ।
রিসান ঃ হ্যা । ১টা আচারের বোতলের ১টা কার্টন বেশ কিছু আচার আছে সেখানে ।
শিপন ঃ কিসের আচার ?
রিসান ঃ নাগা মরিচের আচার নাগা কিং ।
শিপন ঃ সিলেটের আচার ?
রিসান ঃ হ্যা ঐটা তো সিলেট ছাড়া আর কোথাও পাওয়া যায় না ।
শিপন ঃ আচ্ছা । আজ সবাই বাসায় চলে যাও । কাল দেখা হবে আবার ।
এরপর সবাই চলে যায় । রাত হয় । মেহজাবিন এর কোন এক কারনে মনটা খুব খারাপ । ছাদে পায়চারি করছে । কানে হেডফোন , গান শুনছে ।
হটাত কে যেন পিছন থেকে মেহজাবিন কে ধরে ফেলে দেই । আর একজন কিছু ১টা দিয়ে মাথা আঘাত করে ফেলে দেয় তাকে । রক্ত বের হয় । লোক গুলো পালিয়ে যায় ।
সকালে সবাই খবর শুনে মেহজাবিন কে দেখতে যায় , শুধু শিপন আর রিসান ছাড়া । শিপন মেহজাবিনে খোজ খবর নেয় ফোনে আর বলে বিকেলে কষ্ট হলেও যেনো একটু অফিসে আসে ।
বিকেল হয়ে গেছে । সবাই অফিসে । আজ সবাই একসাথে নাস্তা করবে , মোটামুটি ভালোই খাবার দাবারের আয়োজন করা হয়ছে ।
মেহজাবিন ঃ শিপন তুই কি আমার এই অবস্থা পালন করে পার্টি দিচ্ছিস ? আমার মাথা ফাটিয়ে দিয়ে গেলো আর তোকে মনে হচ্ছে খুব খুশি ।
শিপন ঃ হ্যা রে আমি একটু আনন্দিত , তবে তোর মাথা ফাটানোর জন্য না ।
মেহজাবিন ঃ তাহলে কি এমন হলো যে তুই এতো খুশি ?
শিপন ঃ রহস্যের সন্ধান পেয়েছি ।
কৃষ ঃ সত্যি সত্যি ?
মিম ঃ আবারো কি আমাদের বিপদের ভিতর নিয়ে যাবেন ?
আলো ঃ হাহাহা মিম তুমি ভয় পাচ্ছো ?
শিপন ঃ কাল রিসান মেহজাবিন এর বাসার সামনে, সালাউদ্দিন প্রিতির আর আমি সায়মার বাসার সামনে পাহারায় ছিলাম ।
সায়মা ঃ ভাইয়া কি পাহারা দিলেন যে আপুর মাথা ফাটিয়ে দিলেন । আপনারা ভালো পাহাড়াদার না ।
শিপন ঃ হাহাহাহা । আমরা আগেই ভেবেছিলাম যে তোমাদের উপর আক্রমন হতে পারে । তাই এই ব্যাবস্থা । আর কাজও হয়েছে । রিসান মেহজাবিনকে সেভ না করতে পারলেও । অনেক বড় ১টা কাজ করেছে সে ।
আলো ঃ কি কাজ ?
সালাউদ্দিন ঃ রিসান জামান দের পিছু নিয়ে ওদের নতুন আস্তানায় যায় । চিনে আসে ।
মিম ঃ তাহলে তো হয়েই গেল । আসুন আমরা পুলিশ নিয়ে গিয়ে আস্তানা ভেংগে দিয়ে আসি । রহস্য শেষ তাহলে ।
শিপন ঃ হাহাহা । শোন । ওদের বিশাল গ্যাং । ওরা বড় কোণ ক্রাইম করছে । আমি সকাল থেকে এখানে আসার আগ প্রযন্ত ওইখানে ছিলাম । ফলো করে যত টুকু জানতে পারলাম সিলেটে ওদের প্রধান আস্তানা ।
কৃষ ঃ তার মানে আমরা এখন সিলেট যাচ্ছি , তার মানে আবার এডভ্যাঞ্চার । ওয়াও ।
শিপন ঃ হুম । সিলেট । কাল সিলেট যাবো সবাই প্রস্তুতি নাও । সকাল ১১টার ভিতর এখানে আসবে ।
পরেরদিন সবাই ঠিক মতো চলে আসলো । ১১টার সময় কলাবাগান বাস স্টান্ড থেকে রওনা দেয় । রাতে গিয়ে পৌছে । সেখানে ওয়ালী আছে , সে আগেই ডেভিল হানটার্স দের জন্য হোটেলে রুম ঠিক করে রেখেছিল । তারা একটু শহর থেকে দূরে গ্রামের কাছে গিয়েছিল । চা-বাগান এর আসে পাশে । ফ্রেস হয়ে রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরে সবাই । সকাল ঘুম থেকে উঠে পাসের ১টা খাবারের হোটেলে সকালের নাস্তা করে বের হচ্ছে আর এমন সময় সায়মার চোখ পরে এক বৃদ্ধ আর এক বৃদ্ধার উপর । মরা কান্না কাদছে বুড়াবুড়ী ।
সায়মা ঃ ভাইয়া আসো না দেখি আসি ওনারা কেন কান্না করছে ।
সালাউদ্দিন ঃ আরে ধুর । কাইন্দা কাইন্দা ভিক্ষা করতাছে ।
সায়মা ঃ আমার মনে হচ্ছে না । যেভাবে কাদছে তাতে মনে হচ্ছে কোন বিপদে পরেছে ।
শিপন ঃ আচ্ছা ও যেহেতু দেখতে চাচ্ছে তাহলে চল ।
এরপর তারা ওই বুড়াবুড়ির কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে । উত্তরে বলে যে তাদের শেষ সম্বল গরু ২টা চুরি হয়ে গেছে । তাই এই মরা কান্না । আর কেউ নাই তাদের এই দুনিয়াতে । সায়মা আর মেহজাবিন প্রথমে ৫০০ টাকা করে তাদের দেয় পরে ওদের দেখা দেখি সবাই কিছু টাকা করে দিয়ে বুড়াবুড়ি কে হেল্প করে । আসার সময় শিপন ওয়ালীর কাছে জিজ্ঞাস করে ।
শিপন ঃ ওয়ালী বেচারাদের গরূ চুরি করলো কারা । খুব কষ্ট হচ্ছে ।
ওয়ালী ঃ ভাইয়া । কি যে বলব । গত মাসখনেক ধরেই এমন গরু চুরি হচ্ছে প্রায় প্রতিদিন । ভয়ে শিকল পরিয়ে রাখে , তাও চুরি হয় । এক লোক তো গরুকে নিজের ঘরে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিল । সেখান থেকেও চুরি হচ্ছে । পুলিশ ও কিছু করতে পারছে ।
শিপন ঃ কি বলো । এ তো দারুন ক্রিয়েটিভ চোর ।
হাটতে হাটতে হটাৎ মেহজাবিন খেয়াল করে সায়মা তাদের মাঝে নেই । দৌড়াদৌড়ি শুরু করে । কিন্তু কোথাও খুজে পাওয়া যায় না আর সায়মা কে । কোথায় গেলো সায়মা ? নাকি কেউ ওকে কিডন্যাপ করলো ? চিন্তা , রহস্য , আর ভয় ৩টাই এখন ভড় করে বসেছে শিপনের মাথায় ।
হাটতে হাটতে হটাৎ মেহজাবিন খেয়াল করে সায়মা তাদের মাঝে নেই । দৌড়াদৌড়ি শুরু করে । কিন্তু কোথাও খুজে পাওয়া যায় না আর সায়মা কে । কোথায় গেলো সায়মা ? নাকি কেউ ওকে কিডন্যাপ করলো ? চিন্তা , রহস্য , আর ভয় ৩টাই এখন ভড় করে বসেছে শিপনের মাথায় ।

কৃষ, রিসান আর ওয়ালী কে পাঠানো হয় থানায় । জিডি করা হয় ।হাসপাতাল, স্টেশন, পার্ক সব খানে খোজা হয় সায়মা কে । সারাদিনেও কোথাও খুজে পাওয়া যায় না ।
রাত অনেক হয়েছে । সবার মন খারাপ । হোটেলে শিপনের রুমে বসে আছে সবাই …………
প্রিয়া ঃ আপু , আমরা সবাই মিলে তো সারাদিন খুজলাম । কোথাও খুজে পেলাম না । এখন কি করা যায় ?
মেহজাবিন ঃ সেটাই তো বুঝছিনা । আচ্ছা , আমরা খাওয়া দাওয়া শেষ করি সারাদিন সবাই না খাওয়া ।
সালাউদ্দিন ঃ হ্যা ঠিক বলেছিস তুই । চল শিপন , খেয়ে আবার সবাই বসি ।
মেহজাবিন ঃ আচ্ছা সবাই এখানেই খাই ।বাইরে থেকেই তো আনতে হবে তাই না। আমি আর রিসান গিয়ে নিয়ে আসি ।
শিপন ঃ কৃ্ষ কে নিয়ে যা ।
এরপর মেহজাবিন, রিসান আর কৃ্ষ বাইরে যায় খাবার আনতে । পাসের ১টা রেস্টুরেন্টে খাবারের অর্ডার দিয়ে ৩জন বাইরে এসে দারিয়ে গল্প করছে আর এমন সময় একজন এসে রিসান এর উপর ১টা কাগজ ছুরে মারে । তার কিছুখপ্ন পরেই সে এবং আরেকজন মোটর বাইকে করে এসে রেস্টুরেন্টের সামনে ককটেল মেরে পালিয়ে যায় । দোকানের ভিতর সাবাই ভয়ে যে যার মত পালিয়ে যায় । কৃ্ষ কিছুখন বাইকের পিছনে দৌড় দিয়ে যায় তবে কোন সফলতা আসে না । ফিরে এসে খাবার আর মেহজাবিন রিসান কে নিয়ে ফিরে আসে ।
রুমে এসে সব ঘটনা খুলে বলে ।
শিপন ঃ রিসান চিঠিতে কি লিখা ?
রিসান ঃ আমি এখনো পরি নি ।
মেহজাবিন ঃ আমিও পরিনি । দারাও এখনি পরছি ঃ
*** সাহশ থাকা ভালো । কিন্তু অতিরিক্ত সাহশ ভালো না । গোয়েন্দাগীরি দেখানোর অনেক জায়গা আছে , সেখানে গিয়ে দেখাও । আগামিকালকের ভিতর সিলেট ছারবা সবাই । তা নাহলে তোমাদের বন্ধুর লাশ নিয়ে সিলেট ছারতে হবে ***
মিম ঃ কি ভয়ানক ব্যাপার ।
আলো ঃ সায়মা কে উদ্ধার করতে হবে ।
প্রিয়া ঃ সায়মা কে উদ্ধার করতে হবে আর সেই সাথে শয়তান গুলোকেও শিক্ষ্যা দিতে হবে ।
মিম ঃ কাল না চলে গেলে তো ওরা সায়মাকে মেরে ফেলবে ।
সাক্ষর ঃ মারা কি এতো সহজ ? ভাইয়া আমরা এখন কি করবো ?
রিসান ঃ এই সবাই দেখো। এটা কলমের কালি দিয়ে না , রক্ত দিয়ে লিখা ।
আলো ঃ তাহলে কি সায়মাকে মেরে সায়মার রক্ত দিয়ে ………………
মেহজাবিন ঃ আরে না । মনে হচ্ছে গরুর রক্ত ।আমাদের ভয় দেখাতে চাচ্ছে ।
দরজায় করা নারার শব্দ । সাক্ষর এগিয়ে যায় দরজা খুলতে । পিছনে পিছনে রিসান আর কৃ্ষ অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্য পজিশন নেয় । তবে দরজা খুলে দেখে ওয়ালী এসেছে ।
শিপন ঃ কি খবর ওয়ালী ? সায়মার কোন খোজ পেলে ?
ওয়ালী ঃ নাহ । আমাদের পাসের বাসার এক চাচার খামার থেকে ১৫ টা গরু চুরি হয়েগেছে । সেখানে গিয়েছিলাম ।
সালাউদ্দিন ঃ আসার পর থেকে শুনছি গরু চুর আর গরু চুরি । তোমরা ব্যাবস্থা নাও না ।
রিসান ঃ আমি ১টা কথা বলতে চাচ্ছি ।
প্রিতি ঃ হ্যা বলো ।
রিসান ঃ বলবো কাকা ?
শিপন ঃ হ্যা অবস্যই ।
রিসান ঃ সায়মা কে পাওয়া যাচ্ছে না । আমাদের কারো আজ রাতে ভালো মত ঘুম হবে না । সবাই কে শুয়ে শুয়ে টেনশন করতে হবে । তার চেয়ে ভালো আসো আমরা সবাই মিলে রাতে বের হই , সায়মা কে খুজি আর যদি সম্ভব হয় তাহলে গরুচোর দেরও ।
মেহজাবিন ঃ নট এ ব্যাট আইডিয়া ।
প্রিয়া ঃ যদিও বাইরে ঠান্ডা তবে খারাপ হবে না ।
সালাউদ্দিন ঃ আমরা ২টা ভাগ হয়ে বের হই । তাতে পুরো শহর কভার করতে সুবিধা হবে ।
শিপন ঃ আমি, কৃ্ষ, প্রিয়া, প্রিতি, মিম সাক্ষর আর সালাউদ্দিন , মেহজাবিন , রিসান , আলো ,ওয়ালী একসাথে যাও ।
এরপর সবাই বের হয়ে যায় । রাত ১টার দিকে বের হয় ।তার আগে খুব ভালো করে দেখে নেওয়া হয়েছে যে কেউ তাদের উপর নজর রাখছে কি না । সব দেখে শুনে বের হয়েছে ওরা । পাহারী অঞ্চলে রাতে এডভ্যাঞ্চার , খারাপ না ব্যাপার টা । পাহারের ভিতর চা বাগান , কিছুটা চাদের আলো । কুয়াশাও পরছে ।
অনেক খন ধরে হেটে যাচ্ছে ওরা । কিন্তু কোথাও কিছু দেখতে পাচ্ছে না । শিপন মাঝে মাঝেই মেহজাবিন কে ফোন দিয়ে ওদের খোজ নিচ্ছে ।
রাত প্রায় ৩টা বাজে , পাহারে শেষ দিকে একটু আলো দেখা যাচ্ছে । আলো টা নরাচরা করছে । রিসান প্রথমে দেখে মেহজাবিন কে জানায় । তারপর একে ওদের গ্রুপের সবাই দেখে । এগিয়ে যায় আলোর দিকে । হাটার গতি বারিয়ে দেয় । যত কাছে যায় তত স্পষ্ট হয় । এখান দেখা যাচ্ছে কিছু লোক ও আছে । ওরা পাহারে উঠে , কারন পাহার থেকে থেকে সব স্পষ্ট দেখা যাবে । আলো শিপন কে ফোন দিয়ে সব বলে । এবং ঠিক মত ওদের অবস্থান শিপন কে জানিয়ে এখানে আসতে বলে ।
শিপন রওনা দিয়েছে সবাইকে নিয়ে । পুর্নিমার আলোয় ওরা পথ চলছে , বারতি আলো নিয়ে আর ধরা পরার ঝামেলায় যেতে চায় না । পাকা রাস্তা শেষ করে জঙ্গলের দিকে ঢুকেছে শিপন ওরা । কিছুদুর এগিয়ে গিয়ে মিমের চোখ পরে ওদের থেকে কিছুটা দূরে । সেখানে ৪ / ৫ টা বড় ট্রাক । আর সেখান থেকে নামছে অনেক অনেক গরু ।
মিম ঃ ভাইয়া , এরাই মনে হয় গরু চোর ।
শিপন ঃ হ্যা । আমাদের ফলো করতে হবে এরা কোথায় যায় ।
সাক্ষর ঃ কিন্তু মেহজাবিন আপু যে বললো তার ওইখানে যেতে ।
শিপন ঃ রাস্তা তো প্রায় একদিকেইন । চলো এগুতে থাকি । পরে না হয় তোমরা ওইদিকে গেলে আর আমি সব দেখে আসবো ।
কৃ্ষ ঃ চলো , ওরা এগিয়ে যাচ্ছে । আর সাবধানে , পায়ের শব্দ করা যাবে না ।
এরপর পিছু পিছু যেতে থাকে । অনেকদুর পথ এক থাকে । পাহারের কাছে এসে আলাদা হতে হয় । কৃ্ষ আর সাক্ষর গরুর পিছনে যায় । শিপন প্রিতি আর প্রিয়াকে নিয়ে পাহারের উপর যায় ।
পাহারের উপরে উঠে দেখে মেহজাবিন, আলো, সালাউদ্দিন, ওয়ালী আর রিসান শুয়ে মনোযোগ দিয়ে নিচে কি যেন দেখছে । শিপন পাসে গিয়ে
শিপন ঃ কি দেখছো তোমরা ?
মেহজাবিন ঃ ওহ শিপন তুমি ? ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম । দেখো ।
শিপন সহ বাকি সবাই নিচে মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে দেখে কিছু খন । দেখে পুরো হতবাক ওরা । এ যেন জঙ্গলের ভিতর আলাদা আরেক টা গ্রাম । আরেকটু খেয়াল করলে দেখা যায় । কিছু লোক এখানে গরু জবাই করছে , কিছু লোক চামরা আলাদা করছে , কিছু লোক গরুর মাংশ কাটছে আর কিছু লোক অস্ত্র হাতে পাহাড়া দিচ্ছে ।
আলো ঃ ভাইয়া কৃ্ষ আর সাক্ষর কোথায় ?
প্রিয়া ঃ আমার আসার সময় আরেকটা জিনিশ দেখেছি ।
রিসান ঃ কি সেটা ?
প্রিয়া ঃ আমরা যখন জংলের দিকে ঢুকছিলাম তখন দেখি পাসে কিছু ট্রাক থেকে অনেক অনেক গরু নামানো হচ্ছে । সুম্ভবত যে গরু গুলো চুরি হচ্ছে সেগুলাই এখানে আসে ।
ওয়ালী ঃ তারমানে আমার চাচার গরুও এখানে আছে ? আচ্ছা তারপর
প্রিতি ঃ আমরা ওদের পিছু নেই । এই পাহারের নিচ দিয়েই এখানে আসার রাস্তা আছে । কৃ্ষ আর সাক্ষর এখনো ওদের পিছু নিয়ে আছে । ওরা এখানেই আসবে ।
শিপন ঃ দেখ মেহজাবিন , ওরা যেন কাকে মারছে । কৃ্ষ বা সাক্ষর ধরা পরে গেলো না তো ।আচ্ছা আমি যাই ওইখানে ।
সালাউদ্দিন ঃ আরে দারা । মাথা গরম করিস না । আমরা সবাই যাবো ।
এরপর সবাই চলে একসাথে । পাহারের নিচের দিকে প্রায় নেমে এসেছে আর তখন দেখে যে কৃ্ষ আর সাক্ষর উপরের দিকে উঠছে । শিপন দৌড়ে কাছে যায় ।
শিপন ঃ ঠিক আছো তোমরা ? হ্যা আমরা ঠিক আছি ।
সাক্ষর ঃ সায়মা কে খুজে পাওয়া গেছে ।
মেহজাবিন ঃ সত্যি । কোথায় সায়মা ?
কৃ্ষঃ সায়মা কে ওরা আটকে রেখেছে ঐখানে ১টা ঘরে ।আর এই সিলেটে যত গরু চুরি হয় সব এখানেই আসে । বিশাল সিন্ডিকেট ওরা । গরুর চামরা প্রাচার করে , মাংশ ঢাকা নিয়ে বিক্রি করে । আর ওদের কাছে অস্ত্র ও আছে ।
রিসান ঃ কাকা আমাদের কি এখনি পুলিশে জানানো উচিত না ?
শিপন ঃ না , আগে সায়মা কে কিভাবে উদ্ধার করা যায় সেটা ঠিক করতে হবে । অদের হাতে অস্ত্র আছে মনে রাখতে হবে ।
সাক্ষর ঃ কিছুখনের মদ্ধ্যে ওরা সব গুটিয়ে আবার জঙ্গল করে ফেলবে জায়গাটা ।
শিপন ঃ আচ্ছা আজ সারাদিন আমরা ওদের নজরে রাখবে ।কারন এখন প্রায় ৫টা বাজে । একটু পরি সব উধাও হয়ে যাবে । আমি বলে দিচ্ছি কে কোন দিকে থাকবে ।
সাক্ষর ঃ কিছুখনের মদ্ধ্যে ওরা সব গুটিয়ে আবার জঙ্গল করে ফেলবে জায়গাটা ।
শিপন ঃ আচ্ছা আজ সারাদিন আমরা ওদের নজরে রাখবে ।কারন এখন প্রায় ৫টা বাজে । একটু পরি সব উধাও হয়ে যাবে । আমি বলে দিচ্ছি কে কোন দিকে থাকবে ।

মেহাজবিন ঃ আমাদের আগে জানতে হবে সায়মা কোথায় ।
শিপন ঃ রিসান আর সাক্ষর তোময়াদের ২জনের কাজ হলো সায়মা কোথায় আছে সেটা বের করা ।
সালাউদ্দিন ঃ আমার মনে হয় ওরা রুমে গিয়ে ছদ্দবেশে আসতে হবে । তা না হলে ধরা পরে যাবে । বিপদ আরো বারবে ।
আলো ঃ ঠিক ।
মিম ঃ আমিও ওদের সাথে যেতে চাই ।
প্রিয়া ঃ তুমি ভয় পাবে তো ।
মিম ঃ না । আমি যাবো ।
শিপন ঃ আচ্ছা ঠিক আছে যাও । আর ওয়ালী , প্রিয়া আর প্রিতি তোমরা রাস্তার ওইখানে থাকবে । সব কিছু ফলো করতে হবে । লোকাল পুলিশের নাম্বার যোগার কর । কাজে লাগবে ।
প্রিতি ঃ ঠীক আছে ।

এর পর ওরা সবাই চলে যায় । সায়মা কে ১টা কুরে ঘরে আটকে রাখা হয়ছে । একজন লোক আসে সেই ঘরে । এসে সায়মার চোখ থেকে কালো কাপর খুলে দেয় ।
সায়মা ঃ কে আপনি ? আর আমাকে কেনো ধরে নিয়ে এসেছেন ?
আগত্তক ঃ আমি উত্তম , উত্তম কুমার সিনহা । বিশিষ্ট গরু চোর ।
সায়মা ঃ ছিহঃ , লজ্জা লাগে না ।
উত্তম ঃ লজ্জা কিসের ? এটা আমার ব্যাবসা । গরু চুরি করে সেটা জবাই করে তার চামরা বিদেশে পাচার করা আমার কাজ । এতে লজ্জার কি আছে ?
সায়মা ঃ সেটাই এখানে লজ্জার কি , টাকা তো আসতেছে । তো আমাকে কেনো ধরে নিয়ে এসেছেন ?
উত্তম ঃ কেনো ধরে আনবো না ? তোমাদের তো খুন করা উচিত । তোমরা আমার ভুতুরে রিসোর্ট বন্ধ করে আমার বিশাল ক্ষতি করছো । আবার এখন সিলেট এসেছো । নিশ্চয় আমাদের পিছু পিছু এসেছো । বলো মতলব কি তোমাদের ?
সায়মা ঃ মতলব হলো তোমাদের এই অবৈধ্য কাজ বন্ধ করা ।
কথাটা বলার সাথে সাথে উত্তন সায়মা কে চর মারে । সায়মা জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে ।
শিপন পাহারের উপর থেকে লক্ষ করে যে একজন লোক পাহারের নিচের রাস্তা দিয়ে ভিতরে ঢুকছে । সে নিচে নেমে ফলো করে । ভিতরে ঢুকে যায় জঙ্গলের , সাথে আছে কৃ্ষ আর আলো ।
এদিকে রিসান , সাক্ষর আর আলো ও ছদ্দবেশে চলে আসে । তারাও জঙ্গলের ভিতর ঢূকে । আকা বাকা রাস্তা । হাটছে তো হাটছে । হটাৎ চোখ পরে পাসের ২টা ছোট পাহারের মাঝখানে ১টা সুরংগ পথ । পথ টা ঢাকা ছিল কেউ ভুল করে খুলে রেখে গেছে । ঢাকা অবস্থায় হয়তো কেউ বুঝবে না যে এখানে ১টা পথ আছে ।ধির পায়ে ভিতরে ঢুকে , পৌছে যায় ভিতরে আলোর মাঝে । অবাক হয়ে যায় যখন দেখে যে জঙ্গলের ভিতর যেন আরেকটা অদ্ভুদ গ্রাম । সেখানে ছোট ১টা বাজারে গিয়ে তারা পৌছে । লোক গুলো আজব সব পোষাক পরে আছে । কথা বার্তা ও ভিন্ন্য রকম । মনে হচ্ছে যেন ১০০ বছর পুর্বে ফিরে গেছি । ঘোড়ার গাড়ি করে যাচ্ছে মানুষ । আসবাবপত্র গুলো সব কাঠের । ভিতরে ঢুকে পরে আরো । বাজারের মানুষের ভিরের ভিতর ঢুকে পরে লোকটা কে ফলো করতে করতে । এক সময় ভিরের মাঝে হারিয়ে ফেলে তারা । কয়েকটা বাচ্চা এসে ওদের সামনে দারায় হাতে তাদের বেলুন । খুব সুন্দর করে হাসছিল বাচ্চা গুলো । পিছন থেকে কয়েকজন লোক এসে ঘিরে ফেলে শিপন , আলো আর কৃষকে । হাতে তাদের বল্লম , তরবারী , ফলা । ঘোরায় করে আরেকজন এসে ওদের সামনে দারায় । এরপর হাত পা বেধে নিয়ে যায় ১টা মাটির ঘরে ।
সব ঘটনাই লিকিয়ে লুকিয়ে দেখে রিসান , সাক্ষর আর মিম । ওরা এখাঙ্কার মানুশ দের মত পোষাক পরে ছদ্দবেশে এসেছে , তাই কেউ চিনতে পারছে না ।
মিম ঃ রিসান শিপন ভাই রা তো খুব বিপদে আছে ? কি করবো আমরা এখন ?
রিসান ঃ হুম । বাট সায়মা কেউ তো খুজতে হবে ।
মিম ঃ হ্যা । সায়মা কে কোথায় খুজে পাবো ?
সাক্ষর ঃ রিসান ভাই দেখো দেখো !
রিসান ঃ কি ?
সাক্ষর ঃ ওই যে ওই জামান নামের ছেলেটা ।
মিম ঃ হ্যা । জামান বদমাইশ টাই তো ।
রিসান ঃ আমার মনে হয় ওকে ফলো করলে আমরা সায়মার খোজ পাবো ।
সাক্ষর ঃ চলো ।
এরপর ওরা জামানকে ফলো করতে থাকে । আর কথা বলে
মিম ঃ আচ্ছা মেহজাবিন আপু আর সালাউদ্দিন ভাই কোথায় ?
সাক্ষর ঃ আমি জানি না ।
রিসান ঃ হয়তো কোণ কাজে আছে ।
মিম ঃ ওরাও যদি এখানে থাকতো তাহলে কতই না ভালো হতো ।
রিসান ঃ এই দেখো জামান ওই ঘড়ে ঢুকছে ।
জামান ঢোকার কিছু পর পিছন দিক দিকে ঘরের ভিতর উকি দেয় রিসান । ৪জন লোক আগেই ঘরের ভিতর ছিল আর জামান । একটু পর ২জন কালো করে লোক যারা এখানকার অদ্ভুদ মানুশের মত এমন ২জন সায়মাকে ধরে নিয়ে আসে মেঝে তে ফেলে দেয় ।
জামান ঃ বস গ্রামের লোকেরা নাকি কয়েকজন মানুষ কে ধরেছে । আমার মনে হচ্ছে ওরা সেই গোয়েন্দা দলের ।
উত্তম ঃ হুম । তাহলে ওরাও চলে এসেছে ।
রিপন ঃ (সে উত্তমের পার্টনার) সব গুলাকে এক সাথে আগুনে পুরিয়ে মারা উচিৎ ।
সায়মা ঃ ওরা চলে এসেছে ?
উত্তম ঃ মেয়ে তুমি আর চিন্তা করো না । ভেবেছিলাম তোমাকে একা বলি দিব । এখন তো নিজেদের বলি তে শোয়ানোর জন্য তোমার সহযোদ্ধারাও চলে এসেছে ।
এরপর সায়মা কে নিয়ে যায় । উত্তম , রিপন আর জামান নিজেদের মদ্ধ্যে কথা বলছে । আজ রাতে গ্রামে পুজা । আর সেই পুজায় বলি দিবে সায়মাকে , এমনটাই চিন্তা ভাবনা ওদের ।
রিসান ঃ সর্বনাশ । এখন কি করবো আমরা ?
মিম ঃ যেভাবে হোক ওদের রক্ষা করতে হবে আমাদের ।
সাক্ষর ঃ আগে শিপন ভাই , কৃ্ষ আর আলো আপু কে উদ্ধার করতে হবে ।
রিসান ঃ আছা আমরা তো ওদের পোষাক পরেই আছি । ওদের ভাষাটা কোন রকম রপ্ত করি । তারপর ওদের সাথে মিশে গিয়ে ভিতরে ঢুকে ছূটিয়ে আনতে হবে ।
মিম ঃ গ্রেট আইডিয়া ।
সাক্ষর ঃ চলো আমরা কাজে লেগে পরি ।
নেমে পরে মাঠে রিসান , মিম আর সাক্ষর । বাজার দিয়ে হাটছিল ৩জন । বাজারের সবার কথা খুব মনোযোগ দিয়ে সেটা রপ্ত করার চেষ্টা করে । অল্প কিছু রপ্ত ও করে ফেলে । একটা বাচ্চার কাছে গিয়ে বাচ্চার সাথে কথা বলে ।
রিসান ঃ গুম্বে চুলা ছিল হুল ( তোমার নাম কি ?)
বাচ্চা ঃ চুম্বাল ।
রিসান ঃ ঘুমান ফের ( চকলেট খাবে ?)
চুম্বাল ঃ হুম ।( সকলের বুঝার জন্ন্য আমাদের ভাষায় দেওয়া হলো এখন থেকে )
মিম ঃ তুমি কি এই গ্রামের সব জায়গা চিনো ?
চুম্বাল ঃ হ্যা । আজ আমাদের পুজা ।
সাক্ষর ঃ আমাদের নিয়ে যাবে তুমি তোমাদের পুজোয় ?
চুম্বাল ঃ হ্যা । তবে আমাকে আরো অনেক চকলেট দিতে হবে ।
মিম ঃ তোমাকে এত্তো চকলেট দিব বাবু ।
এরপর তিনজন আর চুম্বাল মিলে গ্রাম টা ঘুরে দেখে । অসাধারন সৌন্দর্যে ঘেরা গ্রাম টা , কোন আধুনিক্তার ছোয়া নেই গ্রামে । তাই হয়তো সবাই এখানখার এতো হাসিখুশি । কিন্তু তারা জানে না যে কোন এক অশুভ মহল তাদের এই সরলতার সুজোগ নিচ্ছে ।
শিপন, আলো আর কৃ্ষ একটা অন্ধকার রুমে বন্দি । মাটির ১টা ঘর , স্যাত স্যাতে ।
তিন জনেরই হাত বাধা একটা খূটির সাথে ।
কৃষ ঃ আমাদের আর কত খন এইভাবে হাত বেধে রাখবে ? আর ভালো লাগছে না ।
আলো ঃ কৃ্ষ প্রস্তুত হও আগুনে পুরে মরার জন্য । শুনলে না আজ আমাদের ওরা আগুনে পুরিয়ে মারবে ।
কৃ্ষ ঃ তাই তো মনে হচ্ছে ।
শিপন ঃ আচ্ছা আমরা যদি এখান থেকে বের হতে পারি তাহলে সায়মা কে কিভাবে উদ্ধার করা যায় বলো তো ?
আলো ঃ হাহাহাহাহহাহা , ভাইয়া তুমি কি মজা নিচ্ছ আমাদের সাথে ? আমরা নিজেরাই তো বন্দি ।
শিপন ঃ ধরো মুক্তি পেলে । তারপর ?
কৃ্ষ ঃ আগে মুক্তি দাও , তারপরই বলি ।
কৃ্ষ এর কথা বলতে না বলতে শিপন নিজের হাতের দড়ি খুলে ফেলে । তারপর এক এক করে কৃ্ষ আর আলোর হাত থেকে দড়ি খুলে দেয় ।
আলো ঃ এখন বের হবো কিভাবে ?
শিপন ঃ ভালো করে ঘড় টা খেয়াল করো তাহলেই বুঝতে পারবে ।
কৃ্ষ আর আলো চারপাশ তাকিয়ে দেখে । কিছুখন পর ঃ
কৃ্ষ ঃ পেয়েছি । ঐটা ১টা ভেন্টিলেটরের মত উপরে ।
শিপন ঃ হ্যা । ঐটা দিয়ে দিনে আলো প্রবেশ করে । আশা করি ওইটা ভেঙ্গে ফেলতে বেশি সময় লাগবে না ।
এরপর ৩জন মিলে শুরু করে অন্ধকার রুম থেকে মুক্তির যুদ্ধ ।
ঐ দিকে সালাউদ্দিন , প্রিতি , প্রিয়া এর কোন খোজ নেই । যদিও তাদের বলা ছিল বাইরে থাকতে । মেহজাবিন ঢাকা ।
রিসান , মিম আর সাক্ষর এখন এসেছে পূজোর আয়োজন দেখতে । বাচ্চা চুম্বাল এর সাথে । চুম্বাল সব দেখিয়ে দিচ্ছে , কোথায় কি হবে । এখানে অনেক মানুষ কাজ করছে । এর মাঝে হটাৎ হাটতে গিয়ে ধাক্কা লাগে একজনের সাথে , ধাক্কায় তার দাড়ী খুলে যায় । লোকটা আর কেউ না , সালাউদ্দিন । খুলে যাওয়া দাড়ী তুলে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায় সালাউদ্দিন । সে সাক্ষর কে চিনতে পারে না । কারন সাক্ষরও ছদ্দবেশে ।
সাক্ষর ঃ রিসান । সালাউদ্দিন ভাই এখানে ।
রিসান ঃ কোথায় ?
সাক্ষর ঃ এইতো এখানেই ছিল ।
এরপর খুলে বলে রিসানকে ।
অন্যদিকে পুজোর সব আয়োজন রেডী । বন্দি রুমে সায়মা । কেউ একজন এসে দরজা ভিতরে ঢুকে ।সায়মার চোখের বাধন খুলে দেয় ।
উত্তম ঃ মামনি একটু পর তোমাকে বলি দেওয়া হবে , এইগ্রামের সুভকামনা চেয়ে । তুমি খুব ভাগ্যবতি ।
সায়মা ঃ আমাকে কেনো বলি দেবেন ? আমি তো এইগ্রামের কেউ না ?
উত্তম ঃ হাহাহাহাহা । গ্রামের লোক জানবে গ্রামের মঙ্গলের জন্য আমি তোমাদের বলি দিচ্ছি , কিন্তু আসলে তো আমি আমার শত্র ধংশ করছি । বেশি কথা বলে আর লাভ নেই । চলো
এরপর সায়মা কে নিয়ে যাওয়া হয় পুজার স্থানে । কালো ১টা কাপর পরানো হয় সায়মাকে । শুরু হয় পুজার আনুষ্ঠানিকতা , ঢাক ঢোল এ মুখরিত । উৎসব মুখোর পরিবেশ , সবাই খুব আনন্দিত আর উল্লসিত । সুধু ৩জন কে খুব চিন্তিত লাগছে । রিসান , মিম আর সাক্ষর ।
মিম ঃ রিসান সায়মাকে এনেছে কিন্তু শিপন ভাই , আলো আপু আর কৃ্ষ কোথায় ?
রিসান ঃ হুম টেনশোন হচ্ছে ।
সাক্ষর ঃ চলো যাই ওই ঘরে গিয়ে দেখি আসি ।
তারপর ৩জন যায় সেখানে । আগের সেই ছিদ্র দিয়ে দেখে ভিতরে কেউ নাই ।চিন্তা টা আরো বেরে যায় । তাহলে কি ওদের কে আলাদা মেরে ফেলতে কোথাও নিয়ে গেছে ???? নিজের মনে প্রশ্ন জাগে রিসানের ।
রিসান ঃ আমার মনে হয় আমাদের আগে সায়মার ওইখানে যাওয়া উচিৎ ।
সাক্ষর ঃ হ্যা চলো ।
এর পর আবার দৌড়ে চলে আসে । এসে দেখে সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ , এখনি বলি দেওয়া হবে সায়মা কে ।
উত্তম সরকার নিজে বড় একটা ছুরি নিয়ে দারিয়ে আছে , পরনে সাদা কাপর । মন্ত্র পরা শুরু করে । ছুরি টা উপরে তুলে সায়মার উপর কোপ দেয় ।
পিছন থেকে হটাৎ রিসান এসে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় উত্তম কে , মিম সায়মা কে নিয়ে দূরে সাওরে যায় । জামান এসে রিসানকে জাপটে ধরে । আশেপাশের সবাই অবাক দৃষ্টিতে সব দেখছে । কি হচ্ছে এইসব । শিপন ও কোথায় থেকে এসে জামানকে লাঠি দিয়ে আঘাত হানে । শুরু হয় ২পক্ষের হাতাহাতি । কোন ঠাসা হয়ে পরে শিপন রা । এর মাঝে কোথায় থেকে যেন কিছু বোমা ফেটে উঠে । গ্রামের লোকজন ভয় পেয়ে ছোটাছুটি করে পালিয়ে যায় । সালাউদ্দিন কিছু ককটেল বোম নিয়ে এসেছে । আবার শুরু হয় ২পক্ষের মারামারি । প্রিতি মাথায় আগাত পেয়ে লুটিয়ে পরে মাটিতে । শিপন আর রিসানকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে । উত্তম গুলি করে সাক্ষর কে , তবে লক্ষভ্রষ্ট হয় । এক বিচ্ছিরি অবস্থা । শিপনরা ধরা পরে যায় প্রায় । এমন সময় পুলিশের বাশির শব্দ । চারপাশ থেকে পুলিশ ঘিরে ফেলে । ওয়ালি আর মেহজাবিন পুলিশ নিয়ে এসেছে । পুলিশ গরুচোর দের গ্রেফতার করে । প্রিতি কে সেভ মতো নিয়ে আসে । মেহজাবিন কে আগের রাতে সালাউদ্দিন সব বলে ফোনে । তারপর সে ঢাকা থেকে চলে আসে । সালাউদ্দিন রা আগেই গ্রামে ঢুকে পরে । সব কিছু পর্যবেক্ষন করে প্রস্তুতি নিয়ে রাখে আর সেই মত কাজ করে । যার ফলে বেচে যায় রিসান, মিম, সাক্ষর, আলো, কৃ্ষ , শিপন প্রিতি , ধরা পরে গরুচোর চক্র । পরের দিন ভোরে ঢাকায় চলে আসে । প্রিতি সুস্থ হয়ে যায় । পত্রিকায় শিরোনামে আসে গরুচোর চক্রের খবর আর ডেভিল হানটার্স টিমের সাহষীকতার খবর ।
গল্পটি কোন রকম গোজামিল দিয়ে শেষ করলাম। ভালো হয় নাই জানি । দোয়া করবেন নেক্সট গল্প গুলো যেন আপনাদের মন মত দিতে পারি । আগামীকাল পিশাচ দম্পতীর পর্ব ২ দিব ইনশাল্লাহ ।ভালো থাকবেন ।
( পুরো গল্পটাই আমার কল্পনা । এর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই )
আমার লেখা আরো গল্প পরতে চাইলে আমার পেইজ টি লাইক দিতে পারেন ।
https://www.facebook.com/arshipon15/ আল্লাহ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .