কন্টেন্ট রাইটিং
লেখালেখি থেকেই মূলত
ধিরে ধিরে কনটেন্ট রাইটিং এ আসা বা আসা চেষ্টা। আজ আমি খুব সহজ ভাষায় কন্টেন্ট রাইটিং
সম্পর্কে সামান্য ধারনা দিয়ে যাবো। সঙ্গে থাকুন।
একজন কন্টেন্ট রাইটারের মূল কাজ লেখালেখি করা। আপনি চাইলে
যে কোন বিষয় নিয়েই লেখালেখি করতে পারেন। কিন্তু তার আগে সে বিষয় সম্পর্কে পড়াশোনা করে
নেয়া প্রয়োজন।
কন্টেন্ট কি | What is Content?
কন্টেন্ট হলো তথ্য, ধারণা এবং বার্তাগুলোর একটি সংকলন যা
লিখিত, ভিজ্যুয়াল কিংবা শ্রবণযোগ্য ফরম্যাটে তৈরি করা হয়।
কন্টেন্ট মূলত তিন ধরনের:
১. অডিও কন্টেন্ট: ভয়েস রেকর্ডের মাধ্যমে যে কন্টেন্ট তৈরি
করা হয় তাকে অডিও কন্টেন্ট বলে। উদাহরণ: রেডিও, পডকাস্ট, এফএম, ইত্যাদি।
২. ভিডিও কন্টেন্ট: ভিডিও ধারণ করে কোন নির্দিষ্ট টার্গেট
অডিয়েন্সের জন্য তৈরি করা কন্টেন্টকে ভিডিও কন্টেন্ট বলে। যেমন: MP4, MKV ফরম্যাটের
ফাইল।
৩. লিখিত কন্টেন্ট : পঠনযোগ্য আকারে নির্দিষ্ট টার্গেট পাঠকের
জন্য প্রকাশিত কন্টেন্টকে লিখিত কন্টেন্ট বা Text Content বলে। যেমন: বই, ব্লগ, সংবাদপত্র,
চিঠি, ইত্যাদি।
লেখার ধরন অনুযায়ী কন্টেন্ট রাইটার কয়েক ধরনের হতে পারেন।
যেমনঃ
ব্র্যান্ড জার্নালিস্ট: কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা ব্র্যান্ড
সম্পর্কে লেখা
এসইও (SEO) কপিরাইটার: গুগল ও অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে সহজে
খুঁজে পাওয়া যাবে, এমন লেখা তৈরি করা
সোশ্যাল মিডিয়া রাইটার: ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক গণমাধ্যমগুলোর
জন্য কন্টেন্ট বানানো
অ্যাডভার্টাইজিং কপিরাইটার: বিজ্ঞাপনের কপি লেখা
টেকনিক্যাল রাইটার: টেকনিক্যাল কোন বিষয় নিয়ে কন্টেন্ট তৈরি
করা
নির্দিষ্ট শিল্প বা ইন্ডাস্ট্রির উপরও লেখালেখি করে থাকেন
অনেকে। যেমনঃ আপনি ঘোরাঘুরি পছন্দ করলে একজন ট্রাভেল রাইটার হিসাবে কাজ করতে পারেন।
কন্টেন্ট রাইটিং ভালো করবেন কীভাবে?
কন্টেন্টের উদ্দেশ্য ঠিক করুন।
কন্টেন্ট টার্গেট
অডিয়েন্স সিলেক্ট করুন।
কন্টেন্টের আউটলাইন ঠিক করে নিন।
প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করুন যে বিষয় নিয়ে কন্টেন্ট বানাবেন।
কন্টেন্টের মূল পয়েন্টগুলোতে স্থির থাকুন।
নিজস্ব স্টাইল থেকে লিখুন।
টার্গেট অডিয়েন্সের উপকারে আসে এমন কন্টেন্ট লিখুন।
কন্টেন্টের গঠন পরিষ্কার রাখুন।
সহজ ভাষায় কন্টেন্ট লিখুন।
কয়েকবার পুরো কন্টেন্ট পড়ুন এবং প্রয়োজনে এডিট করুন।
কন্টেন্টের রাইটিং এর আগে এর উদ্দেশ্য ঠিক করুন।
কন্টেন্ট বানানোর আগে আপনাকে জানতে হবে আপনার টার্গেট অডিয়েন্স আপনার কন্টেন্ট থেকে কী কী পাবেন। তাহলে একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আপনার লেখাকে সুন্দর করে সাজাতে পারবেন। সে উদ্দেশ্য হতে পারে :
·
টার্গেট অডিয়েন্সকে কোনো ব্যাপারে অনুপ্রেরণা দেয়া।
·
টার্গেট অডিয়েন্সকে নতুন কিছু শিখতে সাহায্য করা।
·
টার্গেট অডিয়েন্সের কোনো সমস্যার সমাধান করা।
কন্টেন্ট
টার্গেট অডিয়েন্স সিলেক্ট করুন।
কন্টেন্ট দিয়ে আপনি নির্দিষ্ট টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে যেতে চান। তাই যাদের জন্য কন্টেন্ট বানাচ্ছেন, তাদের পছন্দ-অপছন্দ, প্রয়োজন আর আচরণ সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা থাকা দরকার আপনার।
টার্গেট অডিয়েন্স সিলেক্ট করার সময় এ বিষয়গুলো মাথায় রাখুনঃ
·
টার্গেট অডিয়েন্সের বয়সের সীমা কত?
·
টার্গেট অডিয়েন্স কোন জেন্ডারের?
·
টার্গেট অডিয়েন্সের এ বিষয়ে কতটুকু জানার সম্ভাবনা রয়েছে?
·
টার্গেট অডিয়েন্স এ বিষয়কে কীভাবে দেখতে পারেন?
কন্টেন্টের মূল পয়েন্টগুলোতে স্থির থাকুন।
যেকোনো বিষয়ের আলোচনা থেকে অন্যান্য বিষয় উঠে আসা স্বাভাবিক। কিন্তু ওয়েব কন্টেন্ট তৈরির বেলায় মূল বিষয়ের বাইরে যেন আপনার বক্তব্য সরে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
মনে করি, ভালো একটি মোবাইল ফোন কেনার উপায় নিয়ে আপনি ১৫ মিনিটের একটি ভিডিও বানাতে চাচ্ছেন। এ জন্য আপনার ভিডিও কন্টেন্ট স্ক্রিপ্টে ভালো মানের বিভিন্ন মোবাইল ব্র্যান্ডের নাম চলে আসতে পারে। কিন্তু প্রতিবারে বিভিন্ন মডেলের নাম উল্লেখ করতে থাকলে সেগুলোর ফিচার নিয়ে কথাবার্তা জটিল হয়ে উঠবে। তাই শুধু মাত্র আপনার আউটলাইন পয়েন্টগুলো ব্যাখ্যা করুন। প্রয়োজন পড়লে বাছাই করা ফিচার নিয়ে পরবর্তীতে বিভিন্ন মডেলের উপর ভিডিও বানাতে পারেন।
নিজস্ব স্টাইল থেকে লিখুন।
·
একেক কন্টেন্ট রাইটারের লেখার ভাব প্রকাশের ধরন একেক রকম হয়ে থাকে।
·
কারো ভাষা খুব জটিল ।কেউ কেউ হাসি তামাশা, কৌতুক মূলক বাক্য, মিশিয়ে দেন কন্টেন্টে।
·
আবার বক্তব্য উপস্থাপন করতে বিভিন্ন যুক্তি আর তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করতে ভালোবাসেন অনেকে।
·
কারো চিন্তাধারা মতামতের প্রকাশ শুধু মাত্র আবেগে পরিপূর্ণ।
·
কেউ কেউ কন্টেন্টের মধ্যে নিজেদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে থাকেন।
একজন কন্টেন্ট রাইটারের কাজ কী?
একজন কন্টেন্ট রাইটারের মূল কাজ লেখালেখি করা। আপনি চাইলে যে কোন বিষয় নিয়েই লেখালেখি করতে পারেন। কিন্তু তার আগে সে বিষয় সম্পর্কে পড়াশোনা করে নেয়া প্রয়োজন।
লেখার ধরন অনুযায়ী কন্টেন্ট রাইটার কয়েক ধরনের হতে পারেন। যেমনঃ
- ব্র্যান্ড জার্নালিস্ট: কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা ব্র্যান্ড সম্পর্কে লেখা
- এসইও (SEO) কপিরাইটার: গুগল ও অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে সহজে খুঁজে পাওয়া যাবে, এমন লেখা তৈরি করা
- সোশ্যাল মিডিয়া রাইটার: ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক গণমাধ্যমগুলোর জন্য কন্টেন্ট বানানো
- অ্যাডভার্টাইজিং কপিরাইটার: বিজ্ঞাপনের কপি লেখা
- টেকনিক্যাল রাইটার: টেকনিক্যাল কোন বিষয় নিয়ে কন্টেন্ট তৈরি করা
একজন
কন্টেন্ট রাইটারের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?
বাংলায় লিখতে চাইলে বাংলা ভাষা ও ব্যাকরণের উপর ভালো জ্ঞান
ইংরেজিতে লিখতে চাইলে ইংরেজি ভাষা ও ব্যাকরণের উপর ভালো জ্ঞান
কোন বিষয় নিয়ে গবেষণা করার দক্ষতা
সহজেই বোঝা যায়, এমনভাবে লেখার ক্ষমতা
লেখার ভেতর বৈচিত্র্য নিয়ে আসতে পারা
ঠিক বানানে দ্রুত লেখার অভ্যাস
পরিশেষে
কন্টেন্ট রাইটিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রচুর
পড়ালেখা করা, গবেষণা করা আর লেখালেখির চর্চা করা। লেখায় বৈচিত্র্য আনতে চাইলে বিভিন্ন
লেখকের আর বিভিন্ন বিষয়ের বই পড়ার অভ্যাস করতে হবে।
কাজ শেখার জন্য ইন্টারনেট অন্যতম একটি মাধ্যম। বর্তমানে বিভিন্ন
অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম (যেমনঃ Coursera) লেখালেখির উপর ফ্রি অনলাইন কোর্স ও সার্টিফিকেট
দিয়ে থাকে। এছাড়া আউটসোর্সিং সম্পর্কিত ডিপ্লোমা কোর্স করার ব্যবস্থা রয়েছে কিছু শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thank you for your participation .