বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

ভুত রাজ্য ভ্রমন


ভুত রাজ্য ভ্রমন
লেখা ঃ MD Asadur Rahman 

আইশা ঃ দোস্ত কি করিস রে তুই ?
সাজ্জাদ ঃ রান্না করছি । 
আইশা ঃ তুই রান্না করতেছিস , পারিস তুই রান্না করতে ?
সাজ্জাদ ঃ নাহ , আমি পারি না । ভুত এসে রান্না করে দেয় । জানিশ না ঢাকায় ভুতের সংখ্যা বেরে গেছে ।
আইশা ঃ সেটাই বলছিলাম আমি । দোস্ত চল আজ ভুত ধরতে যাবো ।
সাজ্জাদ ঃ কিহ । মাথা ঠিক আছে ? 
আয়শাঃ হ্যা । আমি আসতেছি তোর বাসায় । আর দেখি আর কাউকে নিয়ে আসা যায় কিনা ।
সাজ্জাদ ঃ বাসায় আসলে আয় , তবে ভুত টুতে আমি নাই ।
রাত ৮টার সময় ফোনে কথা হয় সাজ্জাদ আর আইশার । এরপর আইশা ফোন দেয় নওমিকে ।
নওমি ঃ কিরে গুলুগুলু হটাৎ ফোন দিলি । আমি তো ভেবেছিলাম তুই মরে ভুত হয়ে গেছিস । 
আইশা ঃ ওই তুই সব সময় আমার মৃত্য চাস কেরে বারবার , আমি তোর থেকে সুন্দর বেশি তাই বলে ।
নওমি ঃ হ্যা গো সুন্দরি পড়ি ।
আইশা ঃ ওকে শোন । তুই কি আজ রাতে বের হতে পারবি ?
নওমি ঃ কেনো ? 
আইশা ঃ ভুত খুজতে বের হবো ।
নওমি ঃ ওয়াও । আই লাইক এ্যাডভেঞ্চার । শোন দোস্ত , আমাদের বাসায় আজ গজার মাছ আনছে । আমি ওইটা নিয়ে আসবো । ভুতেরা গজার মাছ লাইক করে । পিঠা হলে আরো ভালো হত।
আইশা ঃ আচ্ছা যা যা লাগে তুই নিয়ে সাজ্জাদের বাসায় চলে আয় ।
১০টার দিকে আইশা সাজ্জাদের বাসায় আসে । এসে দেখে নওমি আগেই চলে এসেছে , সাথে তৌসিফ কে নিয়ে এসেছে । 
আইশা ঃ কি তোরা কখন আসলি ?
নওমি ঃ এইতো একটু আগেই । দোস্ত আমি গজার মাছ , ইলিশ মাছ ভাজা আর পিঠা নিয়ে এসেছি । আর সাথে তৌসিফকে দিয়ে সিদুর আনিয়েছি । শুনেছি এগুলা থাকলে নাকি ভুতে ধরে । সো ভুত আজ আমাদের কাছে আসতে বাধ্য ।
কথা শুনে সাজ্জাদ আর তৌসিফ হাসতে হাসতে গরাগরি ।
সাজ্জাদ ঃ হুম ভুতেরা এসে তোদের নিয়ে যাবে , তারপর বিয়ে করে বছর বছর বাচ্চা দিবে । হাহাহহাহাহহা
তৌসিফ ঃ ভুতেরা আসবে তোদের পিঠা খেতে তাই না ? এই সব কুসংস্কার কোথায় পাস রে তোরা ।
সাজ্জাদ ঃ আরে তুই জানিশ না , ওরা তো কোন এক ভুতের গল্প গ্রুপ এর মেম্বার কি জানি না ?
নওমি ঃ ভুত গোয়েন্দা ।
সাজ্জাদ ঃ হ্যা হ্যা ভুত গোয়েন্দা । ঐ ভুত গোয়েন্দাই তোদের মাথা খেয়েছে ।
আইশা ঃ চুপ , একদম চুপ । ভুত নিয়ে আর কোন কথা না । ভুতই সব । ডোন্ট আন্ডারইষ্টেমেড দ্যা পাওয়ার অব ভুত ।
নওমি ঃ তোরা বিশ্বাস করিস না তো ? আচ্ছা আজই প্রুভ হয়ে যাবে । চল আগে ।
তৌসিফ ঃ আচ্ছা । আজই প্রমান হবে , আর প্রমান করতে না পারলে জিবনে আর ভুত ভুত করবি না ।
রাত ১টার সময় বের হয় চারজন । সাথে আছে পিঠা, কাচা গজার মাছ, ইলিশ ভাজা আর সিদুর । আর তৌসিফের কাছে সিগারেট । তৌসিফ মাঝে মাঝে সিগারেট খায় । আজ সারারাত বাইরে থাকবে তাই আজ ও নিয়ে এসেছে । 
অনেকখন ধরে হাটছে ওরা । আজ রাস্তায় খুব কম মানুষজন । সচরাচর এতো কম মানুষ হয় না । 
হাটতে হাটতে প্রায় কাওরান বাজার চলে এসেছে কিন্তু ভুত পেত্নী আর প্রেতাত্তাদের দেখা নাই ।
সাজ্জাদ ঃ কিরে সকাল তো প্রায় হয়ে এলো, তোদের ভুত কই ?
আইশা ঃ আরে আসবে, আসবে । অপেক্ষ্যা কর ।
নওমি ঃ গাধি চুল বাধা থাকলে ভুত আসবে? চুল খোল ।
আইশা ঃ ও আচ্ছা ।
তৌসিফ ঃ হাইরে কপাল আমার ।
সাজ্জাদ ঃ আচ্ছা আজ রাস্তায় লোকজন খুব কম মনে হচ্ছে না ?
তৌসিফ ঃ হুম , ঠিক বলেছিস ।
নওমি ঃ ঈদের দিন মনে হচ্ছে । ঈদেও তো ঢাকা এমন ফাকা থাকে ।
কথা বলতে বলতে হেটে যাচ্ছে । এমন সময় সাজ্জাদ বলে 
সাজ্জাদ ঃ এই দেখ তো ওইখানে কিছু মানুশ দেখা যাচ্ছে না ?
নওমি ঃ কোথায় ? আমি তো দেখতে পাচ্ছি না ।
তৌসিফ ঃ ওই বিল্ডিংটার ওইখানে তো , হ্যা কিছু মানুষ মনে হচ্ছে ১টা দেয়াল ঠেলছে ।
আইশা ঃ হাহাহহাহা আজিব তো । পাগল মনে হয় এরা । তা না হলে কি আর কেউ বিল্ডিং ধাক্কায় । সাজ্জাদ ঃ অন্য কোন কাজও হতে পারে । চল সামনে গিয়ে দেখি ।
নওমি ঃ এই দারা । আমার জানি কেমন ভয় ভয় লাগছে । ভুত হতে পারে । চল ফিরে যাই ।
সাজ্জাত ঃ আবার ভুত । ভুত ভুত করবি না। আর হ্যা তোরা তো ভুতই দেখতে আসছিস । চুপ করে সামনে চল ।
আইশা ঃ হ্যা চল।
সামনের দিকে এগিয়ে যায় । কাছে গিয়ে দখে ৩জন লোক ১টা বিল্ডিং উপরে উঠানোর চেষ্টা করছে । 
আইশা ঃ দেখছিস তো , বলছিলাম না এরা পাগল ।
সাজ্জাত ঃ হ্যা , পাগল । চল ফিরে যাই । এই রাতে পাগলের সাথে পাগলামী করার ইচ্ছে নাই আমার । চল ।
সাজ্জাত, নওমি আর আইশা পিছনে ফিরে যাচ্ছিল , এমন সময় তৌসিফ ডাক দেই ওদের । বলে দেখে যা ।
সাজ্জাদ ঃ কি হইছে তোর আবার ?
তৌসিফ ঃ আমরা আজ বাসা থেকে কেনো বের হয়েছিলাম ?
নওমি ঃ ভুত দেখতে । কিন্তু পোরা কপালে ভুত নাই । চল বাসায় ফিরে যাবো ।
তৌসিফ ঃ ভুত ধরা দিয়েছে । আমাদের সামনেই ভুত ।
এবার বাকি তিন জন ভালো মত দেখে ।
আইশাঃ হ্যা তাই তো । ওরা ভুত ।
নওমি ঃ ওরা শুন্যের উপর দারিয়ে আছে , মাটিতে পা নেই ।
সাজ্জাত ঃ বড় বড় নখ , আর হাতে ৩টা আঙ্গুল ।
তৌসিফ ঃ আমি দেখেছি । চোখও ৩টা ।
আইশা ঃ এখন আমরা কি করবো ?
তৌসিফ ঃ কথা বলবো , পরিচিত হব ।
নওমি ঃ তুই কি পাগল হয়েছিস দোস্ত ? যদি ঘার মটকে দেয় ।
সাজ্জাত ঃ মাছ, পিঠা, এনেছি এগুলা দিতে হবে না ।
তৌসিফ আগে এগিয়ে যায় , সাথে সাজ্জাদও । আর পিছনে পিছনে আসে আইশা আর নওমি । পিছন থেকে ভুতদের ডাক দেয় তৌসিফ ।
তৌসিফ ঃ এক্সকিউজ মি ।
একসাথেই ৩টি ভুত ওদের দিকে ফিরে । ভুতেদের চেয়ারা দেখে আইশা আর নওমি চিৎকার দিয়ে উঠে ।
সাজ্জাদ ঃ এই থাম মাথা মোটারা । চিৎকার করার কি হলো । তৌসিফ, আমার মনে হয় ওরা ইংলিশ বুজে না । বাংলায় বল ।
তৌসিফ ঃ আপনারা ভালো আছেন ?
একটা ভুত বলে উঠে 
ভুত ১ ঃ আপনারা এখানে কেনো ? আর কিভাবে আমাদের দেখলেন ?
সাজ্জাদ ঃ আমরা মানুষ । আমরা আজ ভুত দেখতে বের হয়েছি । আপনার কারা ? এখানে কেনো ?
ভুত ১ ঃ আমরা মানুষ দেখতে বের হয়েছি । আমরা ভুত ।
আইশা ঃ কিহ , ভুতেরাও আমাদের মত মানুষ দেখতে বের হয় নাকি ?
ভুত ২ ঃ হুম , আমরা ভুত রাজ্য থেকে অনেক কষ্টে মানুষ রাজ্যে আসার পথ খুজের বের করে এখানে এসেছি । শুনেছি মানুষরা নাকি চকলেট নামের ১টা বস্তু খায় , সেটাও নিয় এসেছি । এই নাও , দেখো ।
নওমি ঃ এই দেখি দেখি । বাহ , চকলেট আমার খুব পছন্দের ।
তৌসিফ ঃ আমাদের কাছেও তোমাদের জন্য কিছু খাবার আছে । 
তৌসিফ পিঠা , আর মাছ গুলো ভুতেদের দেয় । ভুতেরা এগুলা পেয়ে খুব খুশি হয় । সেখান থেকে বন্ধুত্ত হয় ভুত আর মানুষের ।
আচ্ছা তোমাদের নাম কি ? প্রশ্ন করে আইশা । উত্তরে ভুত ১ পরিচয় করিয়ে দেয় । আমি হিমু , আর ও শান্ত । শান্ত এর পাসের জন শাম্মি আর একবারে পিছনের দিকে ইমন ।
আমি সাজ্জাদ , আর ও তৌসিফ । আর ও যে তোমাদের জন্য পিঠা নিয়ে এসেছে নওমি আর ওর পাসে আইশা । 
শান্ত ঃ তোমারা আমাদের রাজ্যা যাবে । আমরা তো তোমাদের শহর ঘুরে গেলাম । 
সাম্মি ঃ চলনা প্লিজ । গুরে আসবে , দেখে আসবে নতুন এক শহর ।
নওমি ঃ কিন্তু কিভাবে ?
আইশা ঃ আমি যাবো ।
তৌসিফ ঃ আমি এক পায়ে দারানো ।
হিমু ঃ খুব মজা হবে তোমরা আমাদের রাজ্যে গেলে । আসাকরি ইঞ্জয় করবে ।
সাজ্জাদ ঃ কিন্তু কিভাবে যাবো ।
আরিফ ঃ চিন্তা করো না । এই যে বড় বাড়ী(বিল্ডিং) টা দেখছো । এটা নিচে আমাদের ভুতের রাজ্য যাওয়ার পথ আছে । সেখানে আমাদের গাড়ী রাখা আছে । 
তৌসিফ ঃ এই বিল্ডিঙ্গের নিচে যাবো কিভাবে ?
হিমু ঃ দেখো , কিভাবে যাবে ।
এর পর বলতে বলতে চার ভুত বিল্ডিং এর চার কোনায় গিয়ে বিল্ডিং টা উপরে উঠানো চেষ্টা করে । অনেক কষ্টের পর ঠিকই এক্সময় পেরে যায় । এবং নিচ দিয়ে ১টা সুরুংগ পথ বের হয় ।
সুরুংগ পথে এখন ৮জন । কিছুদুর সামনে এগিয়ে যাওয়ার পর দেখে ১টা রিক্সা । আজব ব্যাপার জানো কি ? রিক্সার কোন চাকা নেই, আর অনেক বড় ।
সাজ্জাদ ঃ তোমাদের এইটাই কি গাড়ী ?
শান্ত ঃ হ্যা । আমাদের শহরে শুধু এই একধরনেরই গাড়ি । 
আইশা ঃ গাড়ির তো চাকা নেই , তাহলে চলে কিভাবে ?
শান্ত ঃ হাহাহাহহাহা , ভুত দের আবার চাকা লাগে নাকি । আমরা শুন্যেই চলা ফেরা করি । আচ্ছা এবার গাড়ীতে উঠো ।
গাড়িতে উঠে পরে সবাই । তারপর হিমু চালকের আসনে বসে । গাড়ি চলতে শুরু করে । প্রথমে ধিরে চললেও কিছুসময় পর এতো স্পিডে গাড়ি ছুটতে যে সেই স্পিডে ওয়া কখনো কোন গাড়িতে চরে নাই । 
গাড়িটি থেমে যায় ১টা খোলা জায়গায় । গাড়ী থেকে নেমে যায় ওরা । জায়গাটা একটু ভয়ংকর মনে হয় । খোলা মাঠ , মাঠের শেষে ২টা ঘর । ১টা দোতালা আর ১টা ছোট । 
নওমি ঃ আমরা কি চলে এসেছি ? 
হিমু ঃ ভুত রাজ্যে চলে এসেছি কিন্তু এখনো শহরে আসিনি । 
নওমি ঃ শহর আর কতদূর ? 
হিমু ঃ এইতো আমরা আমাদের ভুত কেন্দ্রে চলে এসেছি । এখান থেকেই চলে যাবো । ঐযে সামনে দোতালা ঘরটা দেখছো ঐটা । চলো । 
সবাই মিলে ভুত কেন্দ্রের সামনে যায় । ভয় ভয় লাগছে সাজ্জাদ, নওমি , আইশা আর তৌসিফের । ঘরটির সামনে যেতেই খুলে যায় দরজা । ভিতরে ঢুকে ওরা আটজন । চারজনের পা সমতলে আর চারজনের পা শুন্যে । শীড়ি বেয়ে দোতালায় উঠছে , উপরে শব্দ শোনা যাচ্ছে কথা বলার । তারমানে কেউ আছে উপরে , কিন্তু কারা আছে উপরে ? মনে মনে ভাবছে সাজ্জাদ । 
উপরে উঠে দেখে অনেক গুলো লোক , যারা কিনা হিমু, ইমন, সাম্মী আর শান্তর মত শুন্যের উপর দিয়ে হাটছে । বুঝতে পারলাম এরা ভুত । আইশা অবাক হয় । অবাক হওয়ার কারনটা হচ্ছে এখানে কংকাল ভূত ভুত , কিছু ভুত ধুতি পরে আছে , কেউ কেউ পাঞ্জাবী আবার কোর্ট প্যান্ট পরা অফিসারও আছে । 
তৌসিফ ঃ আচ্ছা আমরা এখানে আসলাম কেনো ? 
সাম্মি ঃ এটা ভুত কেন্দ্র । ভুত রাজ্যে যেতে হলে এবং বের হতে হলে এখানে তথ্য দিয়ে যেতে হয় । 
হিমু ঃ আচ্ছা তোমরা এখানে বসো , আমি তোমাদের ব্যাপারে একটু কথা বলে আসি । ভুত রাজ্যে মানুষ প্রবেশের জন্য কি কি নিয়ম আর কি কি করতে হয় আমার জানা নেই , তাই একটু খোজ নিয়ে আসি । 
হিমু চলে যায় সেখান থেকে । নওমি আর সাজ্জাদ কথা বলছে । 
নওমি ঃ আমার দোস্ত ভয় লাগছেরে । 
সাজ্জাদ ঃ সত্ত্যি কথা বলতে আমারও ভয় লাগছে । 
নওমি ঃ কি করবি এখন ? 
সাজ্জাদ ঃ কিছু করার নাই । পরিস্থিতি মেনে নিতে হবে । 
হিমু ভুত কেন্দ্রের পরিচালকের সামনে দাঁড়িয়ে ।
পরিচালক ঃ কি চাই হে বাছা ? 
হিমু ঃ স্যার , আমি মন্যুশ্য শহরে গিয়েছিলাম । সেখান থেকে আজ ফিরলাম । 
পরিচালক ঃ ভালো কথা । ভ্রমন দপ্তরে যাও , সেখানে ফিরে আসার বইয়ে সই করে বাসায় ফিরে যাও । 
হিমু ঃ না , মানে । 
পরিচালক ঃ কিসের মানে ? 
হিমু ঃ মন্যুশ্য শহর থেকে আমরা ৪জন মানুষ নিয়ে এসেছি । ওরা আমাদের সাথে বন্ধুত্ব করে আমাদের রাজ্য ঘুরে দেখতে এসেছে । 
পরিচালক ঃ কি সর্বনাশে কথা গো । নাহ নাহ মানুশ জাতী ভুত রাজ্যে ঢুকতে পারবে না । 
হিমু ঃ প্লিজ স্যার । ওদের আমরা ইনভাইট করে নিয়ে এসেছি । ফিরিয়ে দিলে মান ইজ্জতের ব্যাপার , ভুত রাজ্যের মান ইজ্জত সব পাঞ্চার হয়ে যাবে । 
এরপর অনেক দরাদরির পর ১০০টাকা ঘুষের বিনিময়ে পরিচালক রাজি হয়ে মনুশ্যজাতিকে ভুত রাজ্য প্রবেশের অনুমতি দিতে । 
শান্ত ঃ কি হলো সব ঠিক ? 
হিমু ঃ হুম । ১০০টাকা ঘুষের বিনিময়ে । 
সাজ্জাদ ঃ ভুত রাজ্যেও ঘুষ!!! দারুন তো । 
সাম্মি ঃ তোমাদের ঐখানেও কি ঘুষ দিতে কাজ করাতে ? 
সাজ্জাদ ঃ হ্যা । আমদের তো সব কাজেই ঘুষ দিতে হয় ।
এরপর ছোট্ট ১টা রুমে যায় ওরা । সেখানে ১টা হাজিরা খাতার মত ১টা খাতায় নাম ঠিকানা লিখে সেখান থেকে আরেকটা রুমে যায় । রুমের ভিতর ১টা স্পেস শিপ এর মত কিছু ১টা । সেখানে চরে বসে । তার পর চারদিক থেকে লাল নিল সাদা আলো বের হওয়া শুরু হয় । পুরো ঘর সেই আলো ভরে যায় । আর কিছু দেখা যায় না । কিছু সময় আলো কমে যায় । আজব ব্যাপার । তারা এখন সেখানে নেই যেখান থেকে উঠেছিল । এ এক নতুন শহর । গাড়ী থেকে নিচে নামলো ওরা । সব কিছুই অবাক হওয়ার মত । গাছ গুলো সব শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে । কিছু কিছু গাছ উল্টো, মানে গোড়া শুন্যে আর মাথা নিচের দিকে । তারপর দেখা গুলো ঘর আছে কিন্তু ঘরের কোন দরজা নেই ।
হিমু সাজ্জাদ, তৌসিফ, নওমি আর আইশাকে তার বাসায় নিয়ে গেলো । ঘরের ভিতর কোন বসার কিছু ছিলো না। তবে হিমু এসে হাতে তালি দেয়ার সাথে সাথে সোফা হাজির । 
তৌসিফ ঃ হিমু তুমি কি জাদুকর নাকি ? 
হিমু ঃ ভুত মানেই তো জাদু , আমরা সবাই জাদুকর। 
তৌসিফ ঃ ওহ তাই তো । 
তৌসিফ, সাজ্জাদ, নাওমি আর আইশা ফ্রেশ হয়ে নেয় । এখন খাওয়া দাওয়ার । হিমু এসে ওদের একটা রুমে নিয়ে যায় । বিশাল একরুম, রুমের মাঝখানে রয়েছে ১টা টেবিল । টেবিলের উপর সাজানো রয়েছে অনেক ধরনের পিঠা ।সেখান থেকে মন ভরে পিঠা খেয়ে নেয় ওরা । খাওয়া শেষে বের হয় ঘুরতে । ভুতের শহরে ঘুরতে । 
বাসা থেকে বের হয় । রাস্তায় ভুতেরা মিছিল করছে । 
সাজ্জাদ ঃ কিসের মিছিল হচ্ছে ? 
হিমু ঃ আমাদের এখানে নির্বাচন , সেটার মিছিল হচ্ছে ।
সাজ্জাদ ঃ কিসের নির্বাচন ? 
হিমু ঃ আমাদের রাজ্যের মহারাজা বাছাইএর নির্বাচন । 
আইশা ঃ হাহাহাহহা তোমাদের এখানেও নির্বাচন হয় । মজার তো । 
হিমু ঃ চলো সামনে যাই , শান্ত, সাম্মি আর আরিফ অপেক্ষা করছে । 
হাটা শুরু করে । হিমু শুন্যের উপর ভেসে ভেসে যাচ্ছে । হটাৎ একটা কংকাল ভূত এসে সামনে হাজির হয় নওমির । ভয়ে চিৎকার করে উঠে সে । 
কংকাল ভূত ঃ(নেকিয়ে নেকিয়ে কথা) এই কে গো তোমরা ? এর আগে তো দেখিনি এদের , আবার তলে পা দিয়ে হাটছে । মনুশ্য নাকি ? 
নওমি ঃ আমরা মানুষ । 
হিমু ঃ এরা আমার বন্ধু । মনুশ্য শহর থেকে আমার সাথে ঘুরতে এসেছে । ২দিন ঘুরে চলে যাবে । 
কংকাল ভূত ঃ কিহ!! মনুশ্য ভুতের রাজ্যে , সেটা তো মোটেও ভালো কথা নয় । তো, মহারাজা কি জানেন তাদের ব্যাপারে ? 
হিমু ঃ নাহ । এখনো বলা হয়নি । তবে আজই বলবো । 
কংকাল ভূত ঃ কি সর্বনেশে কথা । আমি এখনি যাচ্ছি মহারাজার কাছে । 
এরপর চলে যায় কংকাল ভূত ভুত । আর হিমু আইশা, তৌসিফ, নওমি, আর সাজ্জাদ কে নিয়ে যায় ১টা বিলের সামনে । বিলে অনেক গুলো ভুত ডোবা-ডুবি করছিল । ডুব দিয়ে মাছ ধরছে আর সাথে সাথেই খেয়ে ফেলছে কাচা মাছ । সে গুলোই দেখছিল ওরা । কিছুখন পর সেখানে আসে শান্ত, সাম্মি আর আরিফ ।
সাম্মি ঃ কেমন আছো তোমরা ?
আইশা ঃ আমরা ভালো আছি ।
সাম্মি ঃ আমাদের শহর টা সুন্দর না তাই না ?
আইশা ঃ কে বলছে । অনেক সুন্দর ।
সাম্মি ঃ চলো তোমাদের কে আমাদের ইউনিভার্সিটি থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসি ।
শান্ত ঃ হ্যা , ওখানে গেলে ভালো লাগবে ।
সেখান থেকে সবাই মিলে হেটে হেটে ইউনিভার্সিটির দিকে যায় । রাস্তার ভুত গুলো ওদের দেখে তাকিয়ে থাকে । বাচ্চা ভুতেরা হাসে দেখে। বাচ্চাদের কাছে এটা নতুন । কারন এর আগে হয়তো ওরা মানুশ দেখে নাই । 
ইউনিভার্সিটিতে পৌছে যায় । পুরোনো ১টা গেট । গেটের গা ঘেশে জরিয়ে আছে শুকনো লতাপাতা । ভিতরে শুনশান নিরবতা । হাটছে আটজন , চারজন মাটিতে পা দিয়ে আর চারজন মাটি থেকে কিছুটা উপরে । হটাৎ শুন্য থেকে ১টা মেয়ে সামনে আসে সাম্মির । সাম্মির সাথে কথা বলে । মনে হয় সাম্মির বন্ধু । তারপর আবার সামনে আগায় । ১টা ক্লাস রুমে যায় । ক্লাসে কাউকে দেখা যাচ্ছে না , তবে শব্দ শোনা যাচ্ছে যে এখানে কেউ আছে । মানে ক্লাস হচ্ছে । এভাবে পুরো ইউনিভার্সিটি ঘুরে দেখে । সত্ত্যি কথা বলতে দেখার কিছু ছিল না । অনুভব করে নিল ভয়ের মাধ্যমে । 
ইউনিভার্সিটি থেকে বের হলো । গেটের সামনে এসে দারালো ।
আরিফ ঃ আমি আর হাটতে পারবো না ।
সাজ্জাদ ঃ আমারও আর হাটতে ইচ্ছে করছে না । তোমাদের এখানে কোন গাড়ি নেই ?
হিমু ঃ হ্যা আছে তো ।
নওমি ঃ কই দেখলাম না তো । 
হিমু ঃ তোমার সামনেই তো । ঐযে রাস্তায় ।
নওমি ঃ কই রাস্তাতো ফাকা । কেউ নাই । 
শান্ত ঃ হাহাহাহহাহা । আরে তুমি দেখতে পাচ্ছো না কারন তোমরা তো মানুষ তাই । আচ্ছা আমি ডাক দিচ্ছি । ওয়েট ।
শান্ত ডাক দেয় ১টা গাড়িকে । ১টা গাড়ী আসে । চাকা বিহিন সেই গাড়ি ।
হিমু কি যেনো দেখছিলো । 
হিমু ঃ শান্ত, আরিফ দেখ , দেখ ঐশী আসছে ।
তৌসিফ ঃ ঐশিটা কে ? 
সাম্মি ঃ ভুত রাজ্যের মহারাজার মেয়ে, খুবই পাজি । কিন্তু হটাৎ ও এখানে কেনো?
হিমু ঃ সরেস(কংকাল ভূত) দেখেছে আমাদের । দেখে বলে মনুশ্য এখানে কেনো । তারপর মহারাজের কাছে বলতে গেছে ।
আরিফ ঃ হ্যা , শয়তানটাও তো আছে ।
ধিরে ধিরে ঐশির গারী সামনে চলে আসে । গাড়ি থেকে নেমে এসে সামনে দারায় তৌসিফের ।
ঐশি ঃ তোমরা নাকি মনুশ্য রাজ্য থেকে এসেছো ?
হিমু ঃ জি । আমরা ওদের সাথে করে নিয়ে এসেছি ।
ঐশি ঃ আমি তাদের কাছে প্রশ্ন করেছি ।
তৌসিফ ঃ হ্যা । ভুত রাজ্য ভ্রমনে এসেছি ।
ঐশি ঃ খুব ভালো কথা । কিন্তু সব সব কিছুর ১টা নিয়ম আছে । আচ্ছা আপনারা কি কোন অনুমতি নিয়ে এসেছে ?
সাম্মি ঃ জি । আমরা ভুত রাজ্যের শহরে প্রবেশের সময় ভুত কেন্দ্রের পরিচালকের অনুমতি নিয়ে এসেছি ।
ঐশি ঃ আবার ??? আমি তাদের কাছ থেকে শুনতে চাচ্ছি ।
নওমি ঃ হ্যা । আমরা অনুমতি নিয়ে এসেছি ।
ঐশি ঃ ওহ । খুব ভালো কথা । আচ্ছা এখন আপনারা আমার সাথে চলেন ।
তৌসিফ ঃ কোথায় যাবো ?
ঐশি ঃ ভুতের বাড়ী ।
আইশা ঃ মানে । ভুতের বাড়ী যাবো কেনো ?
সাম্মি আইশার কানের কাছে গিয়ে আস্তে আস্তে বলে যে ভুতের বাড়ি হলো ভুতের রাজার প্রাসাদ
ঐশি ঃ চলো তোমরা ।
ঐশি তার সাথে করে তৌসিফ, সাজ্জাদ, নওমি আর আইশাকে নিয়ে আসে ভুতের বাড়ি মানে ভুতের রাজার প্রাসাদ ।
সেখানে তাদের খুব আপ্যায়ন করা হয় । অনেক ধরনের খাবার , আলিশান থাকার ব্যাবস্থা করা হয় ।
আইশা ঃ আচ্ছা আমাদের এতো আপ্যায়ন করছে কেনো ? কোন মতলব ঠবলব আছে নাকি আবার ।
নওমি ঃ ধুর কি যে বলিস না তুই । আমরা অতিথি তাই ।
সাজ্জাদ ঃ কিন্তু হিমু ওরা যে বললো ঐশি নাকি খুব পাজি । আমার কেনো জানি সন্দেহ হচ্ছে ।
আইশা ঃ হ্যা আমারো । আচ্ছা আমরা চলে যাই চল এখান থেকে ।
নওমি ঃ হ্যা চল । বাসায়ও কিছু বলে আসি নাই, মনে আছে ?
তৌসিফ ঃ হ্যা বাড়ির সবাই নিশ্চয় খুব টেনশন করছে ।
সাজ্জাদ ঃ হুম । ওদের বলতে হবে যে আমরা ফিরে যেতে চাই ।

ভুত রাজার সামনে তার ভুতকন্যা ঐশি । কথা হচ্ছে 

ভুত রাজা ঃ মা তুমি নাকি মনুশ্যগুলোকে এখানে নিয়ে এসেছো ?
ঐশি ঃ জি পিতা । তারা এখন থেকে আমাদের এখানেই থাকবে ।
ভুত রাজা ঃ কিন্তু সেটা কিভাবে সম্ভব ?
ঐশি ঃ পিতা, তাদের মধ্য থেকে একজনকে আমার পছন্দ হয়েছে । আমি তাহাকে বিবাহ করিতে চাই ।
ভুত রাজা ঃ না না । ভুত আর মনুশ্য বিয়ে । কখনই না ।
ঐশি ঃ পিতা এটা আমাদের সবার জন্যি ভালো । আপনি ভুলে যচ্ছেন যে সামনে নির্বাচন । আমাদের রাজ্যের সব ভুতগনদের মন জোগার করতে হবে ।
ভুত রাজা ঃ মনুশ্য বিয়ে করলে সব ভুতেরা আমার বিরুদ্ধে চলে যাবে ।
ঐশি ঃ মোটেও না । তাদের বুঝাতে হবে । মনুশ্যরা প্রযুক্তিতে অনেক আগানো । সবাইকে বলতে হবে যে আপনার মেয়ের জামাই এই ভুত রাজ্যে প্রযুক্তি আর আধুনিকায়ন করবে। আর এই বিয়ের ফলে পুরো রাজ্যে আপনাকে নিয়ে কথা হবে । সবার মুখে মুখে আপনার নাম থাকবে । সো ভোটের সময় সবাই আপনাকে ভোট দিবে ।
ভুত রাজা ঃ সত্যিই তো , এভাবে তো চিন্তা করে দেখা হয় নাই । মনুশ্যদের এখানে আনা হোক ।
ভুত রাজার হুকুম পেয়ে আনতে যাওয়া হয় সাজ্জাদ দের । ওইদিকে সাজ্জাদ, তৌসিফ, নওমী আর আইশা ফিরে যাওয়ার জন্য প্ল্যান করছে ।

আইশাঃ শুন আজ রাতেই আমরা চলে যাবো ।
সাজ্জাদ ঃ এককথা বার বার । বলেছি তো ওরা কেউ আসলে বলবো আমাদের দিয়ে আসতে ।
তৌসিফ ঃ আমরা তো আর এখন চাইলেও নিজেরা ফিরে যেতে পারবো না। 
নওমি ঃ আচ্ছা ওরা যদি এখন আমাদের আর ফিরে যেতে না দেয় , আটকে রাখে এখানে ?
আইশা ঃ (ভিতো কন্ঠে) আরে নান নাহ এমন কেনো করবে আমাদের সাথে, আমরা তো আর ওদের কোন ক্ষতি করি নাই ।
তৌসিফ ঃ হ্যা ক্ষতি করি নাই । কিন্তু আমরা এক জগতের প্রানী হয়ে অন্য জগতে এসেছি । আমারা কি করতাম যদি পৃথিবীতে ভুত পেতাম, পরিক্ষ্যা নিরিক্ষ্যার জন্য আটকে রাখতাম না ?
আইশাঃ আমার কিন্তু সত্যি ভয় লাগছে ।
সাজ্জাদ ঃ ভয় পেলেও কিছু করার নাই । যেটা কপালে আছে সেটাই হবে ।
আইশা কেদে দেয় । নওমী ওর কাছে গিয়ে সান্তনা যাতে ভয় না পায় সে । এমন সময় ৩টা কংকাল ভুত আসে । ওহ বলা হয়নি । আমাদের পৃথিবীতে পুলিশ যেমন আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রন করে এখানে ঠিক সেম দায়িত্ব পালন করে কংকাল ভুতেরা ।
কংকাল ভুত ঃ আপনাদের আমাদের সাথে যেতে হবে ।
সাজ্জাদ ঃ কোথায় যেতে হবে ?
কংকাল ভুত ঃ ভুত রাজার কাছে , সে অপেক্ষা করছে ।
আর কোন কথা না বাড়িয়ে কংকাল ভুতদের সাথে যায় ওরা।

ভুত রাজার দরবারে । রাজাকে মাথা নিচু করে সম্মান জানায় ওরা । 
ভুত রাজা ঃ ভুত রাজ্যে স্বাগতম তোমাদের ।
তৌসিফ ঃ আপনাকেও আমাদের তরফ থেকে ধন্যবাদ এতো সুন্দর আপ্যায়ন এর জন্য ।
ভুত রাজ্য ঃ কেমন লাগছে আমাদের শহর ?
আইশা ঃ খুব ভালো । তবে
ভুত রাজা ঃ কি তবে ? কোন অসুবিধা হচ্ছে তোমাদের ?
আইশা ঃ নাহ কোন অসুবিধা হচ্ছে ।
নওমি ঃ আসলে আমরা ফিরে যেতে চাচ্ছি আমাদের দেশে ।
কথা টা শুনে রাজা তার মেয়ে ঐশির দিকে তাকায় । তারপর উত্তর দেয় 
ভুত রাজা ঃ কিন্তু সেটা তো হবে না ।
সাজ্জাদ ঃ কেনো ?
ঐশি ঃ কারন টা আমি বলছি 
সাজ্জাদ ঃ হ্যা বলেন, আমরা যেতে চাই ফিরে
ঐশি ঃ তোমাকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে , আমি তোমাকে বিয়ে করবো । আগামিকাল তোমার আমার বিয়ে ।
সাজ্জাদ ঃ কিহ । মাথা ঠিক আছে আপনার ? আপনি আর আমি দুই প্রজাতীর । কোনদিনই এটা সম্ভব না ।
ঐশি ঃ সব সম্ভব।
সাজ্জাদ ঃ আমি বিয়ে করবো না, আমি চলে যাবো । 
(চেচিয়ে বলছিল সাজ্জাদ, তৌসিফ সাজ্জাদের কাছে এসে কানে কানে বলে)
তৌসিফ ঃ সাজ্জাদ মাথা গরম করিস না , তাহলে বেশি বিপদে পরতে হবে । ঠান্ডা মাথায় চিন্তা ভাবনা করতে হবে ।
সেখান থেকে ওদের ১টা রুমে নিয়ে যায় । সেখানে খাবার খেয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে কিভাবে এই ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে । তারপর সেখান থেকে ভুত রাজা আর তার মেয়ের সাথে বের হয় । একটা নির্বাচনি সমাবেশে নিয়ে যাচ্ছে । তৌসিফ, নওমি আর আইশা ১টা গাড়ীতে উঠে । আর রাজা, ঐশি আর সাজ্জাদ আরেকটা গাড়ীতে । আগেই বলেছি গাড়ির কিন্তু চাকা নাই , শুন্যে ভেসে চলে তবে গাড়ির চালক কিন্তু আছে । 
সমাবেশ শুরু হয়ে গেছে । হাজার হাজার ভুত । অনেকর বক্তব্য শেষে রাজার বক্তব্য শুরু ।
প্রিউ ভুতবন্ধুরা, 
আশাকরি ভালো আছেন সবাই । আজ আমি আপনাদের সামনে বেশি কিছু বলবো না।শুধু আপনাদের জানাচ্ছি যে আজ আমি আপনাদের জন্য ১টা গিফট নিয়ে এসেছি । (সাজ্জাদ,তৌসিফ,নওমি আর আইশাকে দেখিয়ে বলে) এই হলো গিফট।(ভুতেরা সবাই কানাকানি করতে থাকে) অবাক হচ্ছেন আপনারা ? হ্যা মনুশ্য , এদের মধ্যে একজন আমার কন্যার বর হবে । এরা অনেক জ্ঞ্যানি । এদের সাথে আমার কথা হয়েছে । এরা এখন থেকে ভুত রাজ্যে থাকবে এবং আমাদের রাজ্য ডিজিটাল করে গড়ে তুলবে । আজ থেকে আমি ভুত রাজ্যকে ডিজিটাল ভুত রাজ্য ঘোষনা করলাম । (সকল ভুত একসাথে তালি দিয়ে উঠে)।

তৌসিফ ঃ ওই আমরা কখন বললাম যে আমরা এখানে থাকবো ?
নওমি ঃ আমরা তো ফিরে যেতে চাইতেছি ।
আইশা ঃ এখন আমাদের কি হবে ।
তৌসিফ ঃ চল ডাকছে আমাদের ।
ওরা চলে আসে । তারপর রাজা রাস্তায় ভুত সংযোগে নামে । সাজ্জাদ আর ঐশিকে সামনে নিয়ে রাজা ভুতদের কাছে তার জন্য ভোট চায় । আর পিছনে অন্যদের সাথে হাটছে তৌসিফ, আইশা আর নওমি। হটাত পিছন থেকে হিমু আসে। হিমু তৌসিফকে টেনে নিয়ে আরো একটু পিছনে আসে । সাথে নওমি আর আইশাও আসে ।
হিমু ঃ কি শুনি এগুলো ? তোমরা নাকি এখানে থেকে যাচ্ছো ? বিয়ে করছো ?
তৌসিফ ঃ আরে নাহ । আমরা ফিরে যেতে চাচ্ছি । কিন্তু রাজা আর তার কন্যা নাকি আমাদের যেতে দিবে না ।
আইশা ঃ হিমু প্লিজ আমাদের হেল্প করো প্লিজ । 
হিমু ঃ কি যে করবো বুঝতেছিনা ।আচ্ছা শুনো । তোমরা ১টা কাজ করো । তারপর কানের কাছে মুখ নিয়ে কি যেনো বলে হিমু ।
সন্ধায় রুমে বসে কথা বলছে সাজ্জাদ, তৌসিফ, নওমি আর আইশা । এমন সময় সেখানে আসে ঐশি । আইশা সাজ্জাদের কানের কাছে বলে যা বলছি ঠিক সেইভাবেই বলবি। ঐশি সাজ্জাদ কে নিয়ে ছাদের এক কোনায় আসে । 
ঐশি ঃ আচ্ছা আমাকে কি তোমার ভালো লাগে না ?
সাজ্জাদ ঃ হ্যা খুব ভালো লাগে তো ।
ঐশি ঃ আমাকে বিয়ে করতে কি তোমার আপত্তি আছে ?
সাজ্জাদ ঃ নাহ, কেনো আপত্তি থাকবে । কিন্তু
ঐশি ঃ কিন্তু কি ? বলো আমাকে 
সাজ্জাদ ঃ নাহ । মানে আমি তোমার ঠোটে ১টা চুমু দিতে চাই ।
ঐশিঃ হাহাহাহহাহা । না করেছে কে ? দাও
সাজ্জাদ ঃ নাহ এখানে না । আমার লজ্জা লাগে । তোমার রুমে চলো ।
ঐশি ঃ চলো ।
ঐশি আর সাজ্জাদ ঐশির রুমে যায় । ধিরে ধিরে ঐশি সাজ্জাদের কাছে চলে আসে । ঐশির কালো ঠোট জোরা সাজ্জাদের ঠোট স্পর্স করে । চুমু খায় দুজন।

কিছুখন পর ঐশি জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে । সাজ্জাদ ঐশির হাতের আঙ্গুলে থাকা আংটি টি খুলে নিয়ে তৌসিফদের কাছে চলে আসে ।
নওমি ঃ কাজ হয়েছে ?
সাজ্জাদ ঃ হ্যা । হিমুর দেওয়া পাওডার টা ঠোটে মেখে নিয়েছিলাম । তারপর ...........
আইশা ঃ কিহ । তুই ...... আচ্ছা যাই হোক । এখন ?
সাজ্জাদ ঃ ঐশির গাড়িটা বাগানে আছে, আমি ছাদ থেকে দেখেছি ।
তৌসিফ ঃ এখন তাহলে নওমি বা আইশা ওই আংটি পরবি । তারপর গাড়িতে উঠে মনে মনে বলবি যে মনুশ্য রাজ্যে নিয়ে যেতে তাহলেই পৌছে যাবো আমরা ।
নওমি ঃ আমি পরবো প্লিজ আংটিটা ।
আইশা ঃ আচ্ছা তুই পর । আমাদের খুব সাবধানে বের হতে হবে এখান থেকে ।
সাজ্জাদ ঃ চল আমরা এখন বের হই । যত তারাতারি বের হওয়া যায় ।
এরপর ওরা খুব সাবধানে বের হয়ে বাগানে আসে । সেখানে থাকা ঐশির অদ্ভুদ গাড়িতে উঠে বসে। নওমী গাড়িতে বসে চোখ বন্ধ করে মনে মনে কি যেনো বলে । 
হটাত গাড়িটা ঝাকুনি দিয়ে উঠে । চারপাশ ধোয়ায় ভরে যায় । জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে সবাই ওরা । সব অন্ধকার হয়ে যায় ।
ওদের জ্ঞ্যান ফিরলে দেখতে পায় যে ১টা হাসপাতালে আছে ওরা । চারজন পর পর চারটি বেডে । পরে জানতে পারে যে ওরা নাকি কাওরান বাজারে জ্ঞ্যান হারিয়ে পরেছিল । সকালে লোকজন ওদের পরে থাকতে দেকে হাসপাতালে এনে ভর্তি করে এবং মোবাইলে নাম্বার থেকে বাড়িতে ফোন দিয়ে জানায় । তারপর সবাই আসে । এখন ওরা সুস্থ । তবে ১টা প্রশ্নখুজে ফিরে , আসলে কি হয়েছিল সেদিন ? ভুত বলতে কি সত্যিই কিছু আছে ? সত্যি কি তারা ভুতের রাজ্য গিয়েছিল ? সব প্রশ্ন গুলোর উত্তর ওদের কাছে এলোমেলো ।
আমার লেখা ভালো লাগলে গল্পটি শেয়ার করবেন আর আমার আরো গল্প পরতে চাইলে আমার পেইজ টি লাইক দিতে পারেন ।
https://www.facebook.com/arshipon15/

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .