গল্পের নাম ঃ গোল্লা ।
লেখক ঃ মোঃ আসাদুর রহমান (শিপন)
ক্যারেক্টারঃ
১ . শান্ত ঃ গল্পের প্রধান ক্যারেক্টার । বয়স ১০। ইলেকট্রনিক যন্ত্রের প্রতি আকর্ষন বেশি । কোন বন্ধু নাই।
২ . মিসেস রশিদ ঃ মিসেস রশিদ শান্তর মা । তিনি পেশায় একজন ডাক্তার, কাজের ব্যাস্ততায় শান্তকে বেশি সময় দিতে পারে না।
৩ . গোল্লা ঃ গোল্লা ভিন গ্রহের প্রানী বা এলিয়েন। মহাকাশে নভোযান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সে পৃথিবিতে পরে আটকে যায়।
৪ . সালমা ঃ সালমা শান্তদের বাড়ীর কাজের মহিলা। শান্ত ও বুয়ার সম্পর্কটা অনেকটা টম এন্ড জেরির সম্পর্কের মত ।
১ম দৃশ্যঃ
মহাকাশে একটি নভোযান চলছে । হটাৎ নভোযানে লাল(বিপদজনক) সিগনাল দেয় । দুটো হাত নভোজানের বিভিন্ন বোতাম টিপে সমাধানের চেষ্টা করছে । কিন্তু কিছুতেই কিছুই হচ্ছে না । নভোযানটি মহাকাশ থেকে পৃথিবী তে একটা বাড়ির বাগানে পরে যায় ।
২য় দৃশ্যঃ
শান্ত তার রুমে বসে একটা ইলেকট্রিনিক্স যন্ত্র নিয়ে খুলে খুলে দেখছে । তার আসে পাশে ছড়ানো ছিটানো রয়েছে আরো অনেক ধরনের যন্ত্রপাতি (ক্যালকুলেটর, কিবোর্ড, মোবাইল, স্ক্র, ইত্যাদি)। বিছানার উপরে অগোছালো জামাকাপড় আর টেবিলে অগোছালো বই খাতা।
শান্ত মনোযোগ দিয়ে ক্যালকুলেটারটা খোলার চেষ্টা করছে।
৩য় দৃশ্যঃ
মিসেস রসিদ হেটে শান্তর রুমে আসে। শান্তর পিছন থেকে দেখে যে শান্ত ক্যালকুলেটর টা খুলে ফেলছে । তাই দেখে মা শান্তর কাছ থেকে ক্যালকুলেটরটা কেড়ে নিয়ে রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বল দেখিয়ে দিয়ে বলে বল দিয়ে খেলো ।
মিসেস রসিদ চলে যায় । শান্ত দারিয়ে লাল বলটির কাছে গিয়ে কিছুখন দাঁড়িয়ে থেকে রেগে গিয়ে একটা লাথি দেয় বলে । বলটা উড়ে গিয়ে রান্নাঘরের দরজায় লেগে বুয়ার মাথায় লেগে জানালা ভেংগে বাইরে চলে যায় । বুয়া মাথাঘুরে পরে যায় ।
মা এসে শান্তকে ঝাড়ি দেয় এবং বল নিয়ে আসতে বলে।
শান্ত বাইরে গিয়ে দেখে বাগানের ভিতর একটা লাল বল । সে বলটি নিয়ে চলে আসে ঘরে ।
৪র্থ দৃশ্যঃ
মিসেস রসিদ টিভি দেখছে আর শান্ত সোফার পিছনে লুকিয়ে রয়েছে । শান্ত টিভির রিমোর্টটি লুকিয়ে নিতে চাচ্ছে ।
মিসেস রসিদ রিমোর্টটি টেবিলে রেখে পাশের রুমে গেলেই শান্ত সোফার পিছন থেকে সামনে এসে টিবেল থেকে রিমোর্টটি নিয়ে তার রুমের দিকে দৌড় দেয় আর সেই মুহুর্তে মা এসে সামনে দাড়ায়। শান্ত মাথা নিচু করে রিমোর্টটি মায়ের হাতে দিয়ে নিজের রুমের দিকে যায়।
৫ম দৃশ্যঃ
শান্ত তার রুমে ঢুকে তার বিছানার পাশে থাকা বলটি ধরতে যায় । কিন্তু বলটি যখনি ধরতে যায় তখনি বলটি সরে যায় । আবার সে বলের কাছে গিয়ে বলটির দিকে হাত বাড়ানো মাত্রই বলটি সরে যায় । পরক্ষনেই শান্ত দৌড় দিয়ে জোড় করে বলটি ধরে দাঁড়িয়ে যায় ।
শান্তবলটির দিকে তাকায় ।বলটি জ্বলতে থাকে । লালনীল বাতি । হটাত বল থেকে দুইটা চোখ বের হয় । শান্ত ভয়ে বলটি ছুরে ফেলে চিৎকার দেয় ।
বলটি টেম(লাফাতে)পারতে পারতে পরে গিয়ে ঘুরে শান্তর কাছে আসে এবং বল থেকে দুইটা হাত বের হয় । বলটি লাফাতে লাফাতে শান্তকে হাতের ইশারায় থামতে বলে(হাতের আংগুল মুখে চেপে ইশারা দেয় , হাত দিয়ে না না করে বুঝায়)।
শান্তঃ তুমি কে ? কোথায় থেকে এসেছো ?
বলটি জানালার কাছে গিয়ে আকাশের তারার দিকে তাকায় ।
আর ঐ সময় মিসেস রশিদ দরজায় নক করে । শান্ত রুমের এদিক সেদিক তাকিয়ে বলটিকে হাতে নিয়ে একটি বক্সে লুকিয়ে রেখে দরজা খুলে দেয় ।
মিসেস রশিদ রুমে ঢুকে দেখে পুরো রুম অগোছালো ।
মিসেস রশিদঃ শান্ত তুমি এখন বড় হয়েছো । নিজের জিনিসপত্র নিজে গুছিয়ে রাখা শিখো । আর এখন খেতে চলো ।
শান্ত তার মায়ের পিছু পিছু খেতে চলে যায় ।
৬ষ্ঠ দৃশ্যঃ
খাবার খেয়ে এসে রুমে ঢুকে শান্ত অবাক । তার অগোছালো রুমে এখন একদম পরিপাটি। শান্তর মুখে হাসি।
শান্তঃ তুমি করেছো এই সব ?
বলটি মুচকি হাসে । তারপর ফ্ল্যাশব্যাকে দেখাবে যে বলটি এক এক করে সব গোছাচ্ছে ।
শান্ত ঃ কি নাম তোমার ?
বলঃ গোল্লা ।
তুমি এখানে কিভাবে এলে ?
(ফ্ল্যাশ ব্যাকে দেখাবে যে নভোযানে লাল(বিপদজনক) সিগনাল দেয় । দুটো হাত নভোজানের বিভিন্ন বোতাম টিপে সমাধানের চেষ্টা করছে । কিন্তু কিছু কিছুই হচ্ছে না । নভোযানটি মহাকাশ থেকে পৃথিবী তে একটা বাগানে পরে যায় । সেখান থেকে দরজা খুলে সে একটা বাগানের পাশে পরে থাকে । তারপর একসময় তারসামনে দিয়েই একটি বল গড়িয়ে যায়। তারও কিছুখন পর শান্ত এসে তাকে নিয়ে যায়।)
শান্ত গোল্লাকে জড়িয়ে ধরে।
৭ম দৃশ্যঃ
পরেরদিন সকালে শান্তর মা এসে শান্তর রুমের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে তার বিছানায় তাকিয়ে দেখে শান্ত বিছানায় নেই , জানালা দিয়ে বাইরের মাঠে তাকিয়ে দেখে সেখানেও সে নেই । তারপর মিসেস রশিদের চোখ পড়ে পড়ার টেবিলে ।
মিসেস রসিদ কাছে এসে দেখে শান্ত পড়ার টেবিলে তার হোমওয়ার্ক করছে। সে শান্তর মাথায় হাত বুকিয়ে দিয়ে বলে গুড বয় । তারপর সে চলে যায়। আর ক্যামেরা শান্তর পড়ার টেবিল থেকে টেবিলের নিচে আসবে আর সেখানে দেখাবে গোল্লা শান্তর হোমওয়ার্ক করে দিচ্ছে ।
৮ম দৃশ্যঃ
প্রতিদিন সকালে গোল্লা শান্তকে ঘুম থেকে উঠিয়ে দেয়। হোমওয়ার্ক করে। শান্ত আর গোল্লা খেলাধুলা করছে । গোল্লা শান্তর রুম গুছিয়ে দিচ্ছে । লুকিয়ে রিমোর্ট চুরি করে এনে শান্তকে দেয় আর শান্ত সেটি খুলে দেয় । গোল্লা ইচ্ছে ইচ্ছে করে বুয়াকে বিভিন্ন ভাবে ডিস্টার্ব করে । তার করা কাজ নষ্ট করে ফেলে । আর এগুলা দেখে শান্ত খুব খুশি।
৯ম দৃশ্যঃ
শান্ত ঘুমিয়ে আছে । তার বিছানার উপরে পাশেই গোল্লা।
শান্তর রুমের দরজা দিয়ে লুকিয়ে তাকায় বুয়া সালমা। দেখে বলটি শান্তর পাশে। ধিরে ধিরে রুমের ভিতর ঢুকে গোল্লাকে চুরি করে এনে বাইরে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়।
১০ম দৃশ্যঃ
সকালে উঠে গোল্লাকে তার পাশে না পেয়ে পুরো রুম খুঁজে। কিন্তু কোথাও পায় না । মন খারাপ করে বিছানায় বসে আর এমন সময় মিসেস রসিদ এর আসার পায়ের শব্দ পায় । আর তখন সে উঠে তার আসে পাশের অগোছালো সব নিজেই গুছিয়ে ফেলে এবং হোমওয়ার্কের খাতা নিয়ে পরতে বসে । মা এসে দেখে শান্ত পরছে । মা মাথায় হাত বুকিয়ে দিয়ে চলে যায় ।
১১তম দৃশ্যঃ
ডাস্টবিনের ঢাকনা আটকানো । গোল্লা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে ঢাকনা খোলার। কোনমতে ঢাকনা খুলে । লুকিয়ে লুকিয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে সে শান্তর রুমে যায় । শান্ত গোল্লাকে দেখে খুশি হয়ে গোল্লাকে জড়িয়ে ধরে। শান্ত রুমের দিকে তাকিয়ে দেখে রুম গোছানো ।
গোল্লাঃ তুমি বড় হয়ে গেছো, নিজের কাজ নিজে করতে শিখে গেছো ।
শান্ত গোল্লাকে জড়িয়ে ধরে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thank you for your participation .