রবিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

রাজকুমারী লাইলা (৯ম পর্ব)



#রাজকুমারী_লাইলা

(ভৌতিক কল্পকাহিনী)

পর্বঃ ৯ম নবম (#কামরুপ_কামাখ্যা_মন্দির)

লেখা ঃ MD Asadur Rahman - Shipon







সারা রাত শিলার জন্মদিন উদযাপন এর পর ভোরে গাড়ি ছাড়ে। হৃদয় গাড়ী চালায় আর বাকি সবাই ঘুম।

অন্যদিকে শিপন আর ওয়ালিও উঠে রওনা দেয়। গাছপালা আর ছোট ছোট টিলা পেরিয়ে দুপুরের পর পরই কামরুপ কামাখ্যাতে পৌছে যায় ওরা। এ এক আজব জায়গা। এখানে রয়েছে সারি সারি পর্বতমালা। এর ঠিক পাশেই ভক্তদের আগ্রহের কেন্দ্রে কামাখ্যার মন্দির।

মন্দিরের অন্যতম আকর্ষণ ভক্তদের নৃত্যগীত। তবে সবকিছু ছাপিয়ে কামাখ্যার জাদুবিদ্যা আর সাধকদের অতিপ্রাকৃত ক্ষমতার গল্পই সবার মুখে মুখে।

কামরূপ কামাখ্যাকে বলা হয় জাদুটোনা, জাদু তন্ত্র-মন্ত্রের দেশ৷ রহস্যঘেরা এক জায়গা এটি৷ কামরূপ কামাখ্যা শুধু নয়, ওখানের আশেপাশে অরণ্যে আর নির্জন পথে দেখা যায় ভূত-পেত্নী আর ডাকিনী-যোগিনীর।।

কামরূপ-কামাখ্যা নারী শাসিত পাহাড়ী ভূ-খন্ড। সেখানকার নারীরা ছলাকলা কামকলায় ভীষণ পারদর্শী। কামরূপ-কামাখ্যার ডাকিনী নারীরা পুরুষদের মন্ত্রবলে ভেড়া বানিয়ে রাখে । ভেড়া বলতে নিজেদের পৌষ করে রাখে।

এ মন্দিরে মোট চারটি কক্ষ আছে। একটি গর্ভগৃহ ও তিনটি মণ্ডপ। যেগুলোর স্থানীয় নাম— চলন্ত, পঞ্চরত্ন ও নাটমন্দির। গর্ভগৃহটি পঞ্চরথ স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত। অন্যগুলোর স্থাপত্য তেজপুরের সূর্যমন্দিরের সমতুল্য। এগুলোতে খাজুরাহো বা অন্যান্য মধ্যভারতীয় মন্দিরের আদলে নির্মিত খোদাইচিত্রও রয়েছে। আর মন্দিরের চূড়াগুলো উল্টো মৌচাকের মতো। গর্ভগৃহটি মূলত ভূগর্ভস্থ একটি গুহা। এখানে কোনো মূর্তি নেই। শুধু একটি পাথরের সরু গর্ত আছে। এ গর্ভগৃহটি ছোট ও অন্ধকারাচ্ছন্ন। সরু খাড়া সিঁড়ি পেরিয়ে এখানে পৌঁছাতে হয়। আর এটিই কলংকপূরে যাওয়ার রাস্তা।

ওয়ালিঃ ভাই এই মন্দির টা কিন্তু বেশ। দেখছো খোদাই করা কি সুন্দর কারুকার্য। আচ্ছা এটা বানাইলো কে?

শিপনঃ ইতিহাস থেকে জানা যায়, বর্তমানের এ মন্দির ভবনটি অহোম রাজাদের রাজত্বকালে নির্মিত। এর মধ্যে প্রাচীন কোচ স্থাপত্যটি সযত্নে রক্ষিত আছে। খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় সহস্রাব্দের মাঝামাঝি সময় মন্দিরটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে ১৫৬৫ সাল নাগাদ কোচ রাজা চিলরায় মধ্যযুগীয় মন্দিরের স্থাপত্যশৈলী অনুসারে মন্দিরটি পুনরায় সংস্কার ও নির্মাণ করে দেন। এখন যে মৌচাক-আকারের চূড়া দেখা যায় তা নিম্ন আসামের মন্দির স্থাপত্যের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। মন্দিরের বাইরেও গণেশ ও অন্যান্য হিন্দু দেবদেবীর খোদিত মূর্তিও আছে কিন্তু।

ওয়ালিঃ ভাই তুমি এগুলা জানলা কেমনে?

শিপনঃ ঐ যে মোমিনা মুস্তেহাসিন আর সেই বউ।

ওয়ালিঃ বউ মানে? মোমিনা কি তোমার বউ?

শিপনঃ ধুর পাগলা। বউ না বই হবে।

ওয়ালিঃ সেইটা কও।

ওরা চারপাশ ঘুরে দেখে মন্দিরের। ওয়ালি একটা ছেলেকে দেখে ডাক দেয় পিছন থেকে। কিন্তু ছেলেটি ওর ডাক শুনতে পায় না।

ওয়ালিঃ ভাই ঐছেলেটা কে চিনছো?

শিপনঃ কোন ছেলে?

ওয়ালীঃ ঐযে পিছনে লম্বা চুল, কালো ত্রান্তিকদের পোষাক পরা।

শিপনঃ নাহ চিনি নাই।

ওয়ালিঃ আরে ঐ ছেলে আমাদের ভূত গোয়েন্দা গ্রুপের। নাম সজল। আমার সাথে পরিচয় আছে। গ্রুপে একবার গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড নিয়ে লেখার পর আমাকে নক দেয়। এরপর কথা, পরিচয়।

শিপনঃ এই ছেলে এইখানে কেন? সে কি ত্রান্তিক?

ওয়ালিঃ ওর ফেসবুক পেজেতো ঐরকম কিছু দেখি নাই। দাড়াও ওর কাছে গিয়ে ওরে ডাক দিয়ে কথা বলি।

শিপনঃ নাহ। আগে দেখি ও কি করে।

ওয়ালিঃ ও কিন্তু আমাদের হেল্প করতে পারতো। দেখছো ওর পিছু লাল কাপর পরা ত্রান্তিক গুলো ঘুরতেছে। ও মনে হয়ে এদের বস ত্রান্তিক।

শিপনঃ বস না, গুরু বলে। আর এখানেই সন্দেহ। ও বাংলাদেশের, ও এখানে কেন? আর অন্য ত্রান্তিকরাই বা কেনো ওকে গুরু মানছে? চলো ওরে ফলো করি।

ওয়ালীঃ ঠিক আছে।

শিপন আর ওয়ালি সজল ত্রান্তিক এর পিছু পিছু যায়। সজল মন্দিরে ঢুকে। আর সজলের পিছু পিছু ওরাও ঢুকে। দুইটা রুম পেরিয়ে তৃতীয় রুম যেখানে সেই গর্ত আছে সেই রুমে ঢুকে পরে সজল। শিপন আর ওয়ালী ঢুকতে চাইলে তখন ওদের ঢুকতে দেওয়া হয় না।

শিপনঃ আমরা ভিতরে যাবো।(हम अंदर जायेंगे)

ত্রান্তিক পাহারাদারঃ अब गुरुजी अंदर गया है और अब नहीं जा सकता है। (এখন গুরুজী ভিতরে গিয়েছে এখন যাওয়া যাবে না।)

শিপন আর ওয়ালী ফিরে আসে। শিপনের মনে প্রশ্ন জাগে কিভাবে এই অল্পবয়সী ছেলেটা এখানে এসে ত্রান্তিক গুরু হয়ে গেলো।

ওয়ালীঃ ভাই সন্ধ্যা হয়ে গেছে। সবাই চলে গেছে প্রায়। আমাদের ও চলে যেতে হবে মনে হয়। কি করবে?

শিপনঃ আমরাও চলে যাবো।

ওয়ালীঃ কলংকপূর যাবে না? তাহলে এতোদূর আসলাম কেনো? সুধু কি ঘুরতে?

শিপনঃ আপাতত এই মন্দিরের কাছ থেকে চলে যাবো। তবে মধ্য রাতে আবার আসবো।

ওয়ালীঃ ভালো বুদ্ধি। রাতে তো মন্দিরে কেউ থাকেনা।

শিপনঃ রাত হলে এর আশে পাশেই কোন মানুষ থাকার কথা না। এখন চলো, লোকালয় গিয়ে কিছু খেয়ে আসি।

ওয়ালীঃ অনেক খন পর একটা মনের কথা বলছো ভাইয়া।

শিপন আর ওয়ালী মন্দির থেকে চলে যায়।



সরু আকাবাকা রাস্তা ধরে গাড়ি এগিয়ে এসেছে। আসাম এসে সেখান থেকে এখন গুয়াহাটিও। এখন আর গাড়িতে যাওয়া যাবে না তাই হৃদয়ের আনা মশাল জ্বালিয়ে জঙ্গল দিয়ে হাটা শুরু করেছে।

শিলাঃ আচ্ছা এর আগের বার না জংগলে তোমাদের উপর আক্রমন করেছিলো পিশাচরা?

তাহমিদঃ হুম, দুপুর ভাইয়াকে হারাইছিলাম।

শিলাঃ এখন যদি আবার এমন হয়?

ঝুমঃ ভয় পাচ্ছো বৌদি?

শিলাঃ বৌদি? ঐ বৌদি বলো কেন? তুমি কি হিন্দু?

ঝুমঃ নাহ। তাহমিদকে মাঝে মাঝে দাদা বলি তো তাই মসকরা করে বললাম।

শিলাঃ হ্যা ভয় লাগছে কিছুটা আমার।

তাহমিদঃ আমি আছো তো, ভয় পাও কেনো?

শিলাঃ ইশ উনি আইছে। নিজে একটা ভিতুর ডিম। পিশাচ আসলে দেখা যাবে যে উনিই আমাকে রেখে সবার আগে পালায় গেছে।

হিয়াঃ রনি তুমি কিছু করো প্লিজ।

অর্নবঃ রনি এক কাজ করো, মন্ত্র দিয়ে রক্ত পরে আবার সবার কপালে পরিয়ে দাও।

রনিঃ গ্রেট আইডিয়া।

রনি, এজাজ, শ্রেয়াস, হিয়া, মামুন, ঝুম হাত কেটে রক্ত জমা করে। রনি মন্ত্র পরে সবার কপালে পরিয়ে দেয়।

জয়ঃ আমি এসেছি।

অদ্রীতাঃ কেন তুমি কি এতোখন আমাদের বাইরে ছিলে নাকি জয়?

জয়ঃ আরে আমি শিপন।

হিয়াঃ শিপন মানে?

জয়ঃ আরে তোমাদের শিপন না, আমি আত্তা শিপন।

হিয়াঃ এই নামটা শুনলেই মেজাজ খারপ হয় যায়।

রনিঃ বাদ দাও তো তুমি হিয়া। শিপন কেমন আছো? খবর কি?

জয়(শিপনের আত্তা)ঃ খবর খুব একটা ভালো না। একটা কুমারী মেয়েকে আহ রাতে বলি দিবে সজল আর নওমী পিশাচিনি। আর বলি হয়ে গেলে কলংকপুর দখলে চলে যাবে পিশাচ প্রেতাত্তাদের।

এজাজঃ কি করা যায় এখন ?

জয়(শিপনের আত্তা)ঃ তোমরা দ্রুত কামরুপ কামাখ্যায় যাও। মধ্য রাতে বলি দেবে, এই ধরো ২টার দিকে।

এজাজঃ আমরা কি এর আগে পৌছতে পারবো?

জয়(শিপনের আত্তা)ঃ দ্রুত খুব দ্রুতে হেটে দৌড়ে যেতে হবে। আর ঐখানে তোমাদের শিপন আছে। তাকে আবার সন্ধ্যার পর দেখলাম না। প্লিজ তোমরা তারাতারি গিয়ে রক্ষা করো।

মামুনঃ সবাই দ্রুত হাটা দাও।

সবাই মিলে জংগলের দিক দিয়ে দ্রুত হাটা দেয়। আবার দৌড় দেয়। অনেক দূর এগিয়ে আসে। রাত ১২টা পার হয়ে যায়।

ঝুমঃ আমি আর পারছি না। জয় আর কতদূর?

জয়(শিপনের আত্তা)ঃ এইতো সামনে একটা পাহাড়ের মত আছে সেটার উপরে।

ঝুমঃ ভাই আমি আর পারছি না। আমাকে রেখেই তোমরা যাও প্লিজ।

মামুনঃ আমি তোমাকে কোলে করে নিয়ে যাই।

ঝুমঃ ফাজিল পোলা, সব সময় খালি সুজোগ খুজে। আমি নিজেই পারবো।

ঝুম আবার হাটা শুরু করে। দুজনই কিন্তু দুজনকে খুব ভালোবাসে কিন্তু মান অভিমানের পালা চলছে।

হৃদয়ঃ এভাবে হাটলে সঠিক সময়ে যেতে পারবো না। সবাই দৌড় দাও, দৌড়।

সবাই দৌড় দেয়। দৌড়াতে গিয়ে হোচট খেয়ে পরে যায় হিয়া। পা কেটে রক্ত ঝরছে। রনি সহ বাকিরা এগিয়ে আসে। ঝুম পাশ থেকে কিছু লতাপাতা এনে কাটা স্থানে লাগিয়ে দেয়। রক্তঝড়া থেমে যায়।

এজাজঃ এখন কিভাবে যাবে তুমি?

হিয়াঃ যেতে পারবো আমি।

মামুনঃ এভাবে যেতে পারবে না। আরো সমস্যা হবে।

হিয়াঃ যেতে তো হবে।

রনিঃ আমি তোমাকে ধরে নিয়ে যাই?

শ্রেয়াসঃ হুম। নাও নাও কোলে করে নিয়ে যাও রনি ভাইয়া।

হিয়াঃ না থাক, সবাই অন্যরকম ভাববে।

রনি ঃ কেমন ভাববে?

হিয়াঃ আমরা প্রেম করি সবাই মনে করবে।

রনিঃ সবাই শুনো। আমি হিয়াকে পছন্দ করি। জানিসে সে আমাকে করে কিনা। আমি ওকে প্রপোজ করবো। হিয়া আই লাভ ইউ।

হিয়া রনিকে জরিয়ে ধরে বলে লাপ ইউ টু দুষ্টূ।

হাহাহাহাহা করে সবাই হেসে উঠে, সবাই খুব খুশিও হয়।

শ্রেয়াসঃ যাক এতোদিন পর দুজনে দুজনকে সাহস করে ভালোবাসার কথা বলতে পারলো।

অর্নবঃ আমরা সবাই খুব খুশি তোমাদের এই মিলন মেলায়, কিন্তু আমাদের তো তারা আছে ভাই এখন প্লিজ চলো দৌড়াই। আর রনি তুমি তোমার ললিপপকে কোলে তুলে নাও। মনে হয়না সে হেটে যেতে পারবে।

হিয়াঃ আমি পারবো।

হাটা দেয় সবাই। হিয়া রনির হাত ধরে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটছে।



শিপন আর ওয়ালী রাত ১টার দিকে মন্দিরে আসে। কেউ নেই আসেপাশে। সাচ্ছন্দেই ভিতরে ঢুকে মন্দিরের। দুটো রুম পেরিইয়ে সেই তৃতীয় রুমে ঢুকে সেখানে কলংকপুরে যাওয়ার গর্তটি আছে।

ওয়ালীঃ ভাই এই গর্ত দিয়ে কি লাফ দিলেই হবে?

শিপনঃ হুম। সাথে সাথে গড়িয়ে যেতে যেতে কলংকপূরে পরে যাবে।

ওয়ালীঃ তাহলে চলো লাফ দেই।

শিপনঃ এখানে একটা মূর্তি থাকার কথা। কিন্তু সেটি কোথায়? হিন্দু ধর্মের একটা পবিত্র মূর্তি। সেটি গেলো কোথায়? সেই মূর্তির বলে যেতে হবে।

ওয়ালীঃ না বলে গেলে যাওয়া যাবে না।

শিপনঃ আচ্ছা একটা মন্ত্র পরার আওয়াজ শুনতে পাওয়া যাচ্ছে না?

ওয়ালীঃ হ্যা পাচ্ছি তো। মনে হচ্ছে পাশের রুমে।

শিপনঃ চলোতো দেখি।

শিপন আর ওয়ালী পাশের রুমে যায়। কিন্তু সেখানে কেউ নেই। সব গুলো রুম খুজে দেখে, কোথাও কেউ নেই কিন্তু মন্ত্র পড়ার শব্দ শোনা যাচ্ছে।

ওয়ালীঃ ভাই ভূত পরছে না তো?

শিপনঃ শব্দটি সম্ভবত ছাদ থেকে আসছে।

শিপন আর ওয়ালী চিকন একটা সিঁড়ি বেয়ে ছাদে উঠে নিঃশব্দে। পুরোনো ছাদ, ছোট ছোট গাছ আর ঝোপ বা পরগাছাও আছে কিছুটা। দুজনে মিলে একটা ছোট ঝোপের পিছে লুকিয়ে পরে।

ওয়ালীঃ ভাই এখানে কি হচ্ছে?(ফিসফিসিয়ে)

শিপনঃ সম্ভবত এরা অপদেবতার পুজো করে।

ওয়ালীঃ মাঝখানের মেয়েটা কে?

শিপনঃ চেনা চেনা লাগছে।

ওয়ালীঃ আর ঐ সাদাকাপর পড়া, চুল গুলো খোলা, মুখের কাটাছেরা রক্তের দাগ ঐ মেয়েটা কে?

শিপনঃ ঐ মেয়েটাকে আমি চিনি। ওর নাম নওমী। আমদের গ্রুপেই ছিলো। একছেলের সাথে অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে ধরা খায়। গ্রাম বাসি ইচ্ছে মত মারে। সেই মার খেয়ে ওর অপমৃত্যু হয়। গ্রামবাসী ওর জানাজাও দিতে দেয় না।

ওয়ালীঃ তাহলে ও এখানে আসলো কিভাবে?

শিপনঃ এখানেই তো খটকা লাগছে। ও

ওয়ালীঃ ও তো আবার ভূত হয়ে যায় নাই?

শিপনঃ মন্দ বলো নাই। দাঁড়াও আমি একটু ওদের মন্ত্রটা শুনি মনোযোগ দিয়ে।

শিপন কিছুক্ষন মনোযোগ দিয়ে মন্ত্রটা শুনে। তারপর

শিপনঃ ওয়ালী এতো মারাত্বক অবস্থা।

ওয়ালীঃ কি হইছে?

শিপনঃ ওরা লুসিফার এর পুজো করছে।

ওয়ালীঃ লুসিফার কে?

শিপনঃ লুসিফার অপদেবতাদের মহাদেবতা, মানে শয়তানের বস। আর নওমী এখন পিশাচিনি হয়ে গেছে। সে লুসিফার এর কাছে ভূত প্রেতদের এক রাজ্যের জন্য আবদার করেছে আর সেই আবদার এর বিপরিতে লুসিফার নওমীর কাছে ১০০ কুমারির রক্ত চেয়েছে। আজ সেই বলি। মানে এর আগে ৯৯জন কুমারীর প্রান নিয়েছে এই শয়তান গুলো।

ওয়ালীঃ মাঝখানের মেয়েটাকে আজ বলি দিবে তাই না?

শিপনঃ হুম।

ওয়ালীঃ মেয়েটা নিশ্চই সুন্দরী তাই না ভাইয়া?

শিপনঃ হুম।  সুন্দরী আর কুমারী মেয়েদেরই বলি দেয়।

ওয়ালীঃ মেয়েটা বেচে থাকলে ভালো হইতো।

শিপনঃ ভাই সিংগেল আছিস সিংগেল থাক। হুদাই প্যারা নিতে চাস কেন। আর এই মেয়ে বেচে গেলেও যে তোমার সাথে প্রেম করবে তার গ্যারান্টি কি? তার তো আগের বয়ফ্রেন্ডও থাকতে পারে তাই না?

ওয়ালীঃ যাই হোক মেয়েটাকে বাচাতে হবে।

শিপনঃ সেটাতো অবশ্যই।

নওমী বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে মন্ত্র পরা শুরু করে। মন্ত্র পরছে তবে সে আগুন থেকে দূরে। আগুনের পাশে বসে আছে সজল। কালো কাপর পড়া। কিছুখন পর সেও উঠে যায়। বড় একটা ছুড়ি হাতে নিয়ে সেও নওমির পিছন পিছন মন্ত্র পরতে পরতে মেয়েটিকে ঘিরে ঘুরতে থাকে। হাত পা বাধা মেয়েটি জ্ঞ্যান ছিলো না। জ্ঞ্যান ফিরিয়ে আনে দুটো মহিলা ত্রান্তিক। তারপর সজল মেয়েটির গলা্র উপরে ছুড়ি বসায়। চিতাকার করে মন্ত্র পড়া শুরু করে। এখনি বিশাল ছুড়িটি মেয়েটির গলা নামিয়ে দিবে।

শিপন চিতাকার করে মাঝখানে চলে আসে।

শিপনঃ মেয়েটিকে মারবেনা। তাহলে কি খারাপ হবে বলে দিচ্ছি।

নওমিঃ শিপন তুমি এখানে?

শিপনঃ নওমী কি করছো তুমি এগুলা?

নওমীঃ আমি খুন করছি। আর কেনো করছি জানো? তোমার কলংকপূর এখন আমার দখলে, সেটা আমার চিরস্থায়ী করার জন্য। তোমার ভালোর জন্য বলছি তুমি এখান থেকে চলে যাও।

সবাই শিপন আর নওমীর দিকে তাকিয়ে আছে। এই ফাকে ওয়ালী গিয়ে মেয়েটির হা পায়ের বাধন খুলে দেয়। আলোতে মেয়েটিকে দেখা যাচ্ছে।

ওয়ালীঃ আরে আলো আপু। তুমি এখানে?

আলোঃ আমি বেচে আছি?

ওয়ালীঃ শিপন ভাই তোমাকে বাচিয়েছে। উঠো।

আলোঃ আমাকে বাচাও তোমরা প্লিজ।

ওয়ালীঃ শিপন ভাই এটা তো আমাদের আলো আপু।

নওমীঃ শিপন তুমি আমার সব প্ল্যান ভন্ডূল করে দিচ্ছো। ভালো চাওতো চলে যাও, তোমার রাজকুমারী লাইলা কিন্তু এখন আমার হাতে বন্দি।

শিপনঃ চলে না গেলে কি করবে? আমি কলংকপূরে যাবো আর সেখানেই থাকবো এখন থেকে।

নওমীঃ আমি পিশাচরানী, আমার পিশাচ প্রজাদের জন্যেও তো আমার কিছু করনিও আছে তাই না? ওরা খব খুদার্থ। পিশাচ প্রেতাত্তারা এই নাও তোমাদের খাবার, এই দুটোকে চিবিয়ে খাও।

নওমীর কথা শেষ হতে না হতেই হুরমুর করে কিছু জম্বি টাইপের কোথা থেকে জেনো হাজির হয়। শিপন আর ওয়ালীর উপর ঝাপিয়ে পরে। রক্তাক্ত করে ফেলে।

শিপনের প্রান যায় যায় অবস্থা। তার পেটটা মনে হচ্ছে কেউ ছিদ্র করে ফেললো। চোখ বন্ধ করে ফেলেছে। হটাত মনে হলো তার উপর থেকে সব সরে গেছে। চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে বেশ কয়েকজন মশাল হাতে দাঁড়িয়ে আছে। তার পাশে দুটো মশাল জ্বলছে। ওয়ালী ঠিক আছে তবে পায়ে খুব রক্তাক্ত।





চলবে .......................................
আগামীকাল অথবা পরশু রাতে দশম পর্ব পোষ্ট করা হবে। ইনস্ট্যান্ট লিখা হচ্ছে তাই পরবর্তি পর্ব পেতে ধৈর্য ধরতে হবে। আর গল্পের ভূল ত্রুটি, ভালো লাগা খারাপ লাগা অবশ্যই কমেন্টস করে জানাবেন যদি পরবর্তি পেতে চান। ধন্যবাদ।
যারা আগের পর্বগুলো পাননি তাদের জন্য নিচে লিংক দেওয়া হলোঃ


১ম পর্ব ঃ https://www.facebook.com/arshipon15/photos/a.923688374487119/923688387820451/?type=3&theater

২য় পর্ব ঃ  https://www.facebook.com/arshipon15/photos/a.923688374487119/924105397778750/?type=3&theater

৩য় পর্বঃ  https://www.facebook.com/arshipon15/photos/a.923688374487119/924622764393680/?type=3&theater
৪র্থ পর্বঃ  https://www.facebook.com/arshipon15/photos/a.923688374487119/925607740961849/?type=3&theater

৫ম পর্বঃ  https://www.facebook.com/arshipon15/photos/a.923688374487119/926690850853538/?type=3&theater

৬ষ্ঠ পর্বঃ https://www.facebook.com/arshipon15/photos/a.923688374487119/927244740798149/?type=3&theater

৭ম পর্বঃ  https://www.facebook.com/arshipon15/photos/a.923688374487119/928334544022502/?type=3&theater

৮ম পর্বঃ https://www.facebook.com/arshipon15/photos/a.923688374487119/929079630614660/?type=3&theater

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .