রবিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

রাজকুমারী লাইলা ( ৬ষ্ঠ পর্ব)



#রাজকুমারী_লাইলা

(ভৌতিক কল্পকাহিনী)

পর্বঃ ৬ষ্ঠ (#মোমিনা_মুস্তেহাসিন)

লেখা ঃ MD Asadur Rahman - Shipon

শের শাহ্‌ ছিলেন ভারতবর্ষের সম্রাট ও শুর বংশের প্রতিষ্ঠাতা। ১৫৩৭ সালে মুঘল সম্রাট হুমায়ূনের সেনানায়ক হিসেবে শের শাহ্‌ বাংলা জয় করেন। ১৫৪০ সালে এ অঞ্চলে তিনি শুরি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। মৌর্য সাম্রাজ্যের শাসনামলে তৈরি হয়েছিল একটি সড়ক, যা গঙ্গার মুখ থেকে সাম্রাজ্যের উত্তর পশ্চিম সীমান্ত পযর্ন্ত বিস্তৃত ছিল। ১৫৪১ থেকে ১৫৪৫ সালের শাসনামলে শের শাহ্‌’র তত্ত্বাবধানে এই প্রাচীন সড়কটি সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে “ সড়ক এ আজম ” নামকরণ করেন। তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশের চট্রগ্রাম থেকে সোনারগাঁও হয়ে যশোর জেলার উপর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া, দিল্লী ও পাকিস্তানের পেশোয়ারের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের কাবুল পযর্ন্ত বিস্তৃত ছিল। শের শাহ্‌’র তত্ত্বাবধানে আধুনিকায়নকৃত মোট ২৫শ’ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কটি উপমহাদেশের পূর্ব ও পশ্চিম অংশকে সংযুক্ত করেছে। শের শাহ্‌’র আমল থেকে এ সড়কটি মূল সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ দীর্ঘ সড়ক পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রশাসনিক কাজে গতি সৃষ্টি করা। প্রতিরক্ষার কৌশলগত দিক সামনে রেখে সমগ্র সাম্রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি বিধানও এর লক্ষ্য ছিল। এ সড়কের মাধ্যমে রাজধানী আগ্রার সঙ্গে সাম্রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলকে যুক্ত করা হয়েছিল। মূল পরিকল্পনায় রাজধানী আগ্রাকে পূর্বে সোনারগাঁও, পশ্চিমে দিল্লি ও লাহোর হয়ে মূলতান, দক্ষিণে বোরহানপুর এবং দক্ষিণপশ্চিমে যোধপুরের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছিল। সামরিক সুবিধার পাশাপাশি বাণিজ্যিক উন্নতি, ডাক-যোগাযোগে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সে সঙ্গে কঠোর গুপ্তচর প্রথার মাধ্যমে সাম্রাজ্যের তথ্যাদি সংগ্রহ করাও সুলতানের উদ্দেশ্য ছিল। আরোও কিছু কর্মতৎপরতা যেমন- সরকারি কর্মকর্তাদের যাতায়াত সুবিধা প্রদান, জনসাধারণের বিশ্রামের জন্য রাস্তার উভয়পাশে দু’ক্রোশ অন্তর অন্তর বিশ্রামাগার ও সরাইখানা নির্মাণ এবং রাস্তার পাশে ছায়াদানকারী বৃক্ষরোপণ করা।

বৃটিশ শাসনামলে সৈন্য চলাচলের সুবিধা এবং ডাক বিভাগের উন্নতির উদ্দেশ্যে সড়কটির সংস্কার করে কলকাতা থেকে পেশোয়ার পযর্ন্ত সম্প্রসারিত করা হয়। এ সময়ই সড়কটির নাম দেওয়া হয় “ গ্র্যান্ড ট্র্যাঙ্ক রোড”। বৃটিশ শাসনামলের আগে তৎকালীন শাসকেরা এ সড়কটির বিভিন্ন নাম যেমন- শাহ রাহে আজম, সড়কে আজম, বাদশাহি সড়ক ও উত্তর পথ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।

বর্তমানে যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলা হয়ে মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার শরুশুনা, শতপাড়া, দেশমুখপাড়া ও বুনাগাতী গ্রামের মধ্য দিয়ে মহম্মদপুর উপজেলার নহাটা ইউনিয়ন হয়ে ফরিদপুরের মধ্য দিয়ে ঢাকার সোনারগাঁও পযর্ন্ত বিস্তৃত। এই সড়কটি এখন আঞ্চলিক সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়াও ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে শের শাহ্‌’র নির্মিত সড়কটি এশিয়ান হাইওয়ে হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ওয়ালির কাছ থেকে এই নিউজ পায় শিপন। একবার শিপন তার ফেসবুক আইডীতে পোষ্ট দিয়েছিলো যে সে মোমিনা মুস্তেহাসিনের জন্য পাকিস্তান যেতে চায় শর্টকাট রাস্তাটা জানা দরকার। সেখানে ওয়ালি কমেন্টস করে এই গুপ্ত রাস্তার কথা জানায়। সেই সময়ে পোষ্টটি যাস্ট একটা ফান ছিলো। কিন্তু ওয়ালি শিপনের পিছু ছাড়ে না। অবশেষে শিপনকে রাজি করিয়ে দুজনে একদিন উধাও।

ওয়ালিঃ ভাইয়া অবশেষে আমরা এখন পাকিস্তান।

শিপনঃ হুম।

ওয়ালিঃ আমাদের কাছে তো পাসপোর্ট নেই। যদি পুলিশ ধরে?

শিপনঃ তিনমাস যে দুজনে উর্দু শিখলাম, সেটা ঠিক মত প্রয়োগ করতে পারলেই হবে।

ওয়ালিঃ আমরা তো দেখতে ইণ্ডিয়ান দের মত। চেহারা দেখেই বুঝে যাবে। আর উর্দু? আই হেট দিস ল্যাংগুয়েজ।

শিপন ঃ আমিও। কিন্তু কিছু করার নেই।

ওয়ালিঃ আচ্ছা ভাইয়া তুমি বলেছিলে এখান থেকে কোথায় জেনো যাবে?

শিপনঃ কলংকপূরে।

ওয়ালিঃ ঐটা তো তোমার স্বপ্ন রাজ্য, আমাকে কি তোমার স্বপ্ন রাজ্যে নিয়ে যাবে?

শিপনঃ তোমাকে একটা কথা বলা হয়নি। কলংকপূর স্বপ্ন রাজ্য হলেও আসলে এটার অস্বিত্ব আছে। আর এখানে যাওয়াটা রিস্ক। মোমিনার সাথে যদি দেখা হয় তাহলে তো ভালোই, ভালোবাসা নিবেদন করে ফিরে আসবো। আর তোমাকে পাঠিয়ে দিবো দেশে। তোমার পাসপোর্ট করা আছে আমার কাছে এই নাও।

ওয়ালিঃ (পাসপোর্ট হাতে নিয়ে) আমাকে নিবে না তোমার সাথে?

শিপনঃ ঐখানে যাওয়াটা এতো সহজ নয়। মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

ওয়ালিঃ আমি এতো কিছু জানিনা, আমি তোমার সাথে যাবো।

শিপনঃ আচ্ছা দেখা যাবে।

মোমিনা মুস্তেহাসিন এর বাসার সামনে চলে আসে। নিচে দারোয়ান এর সাথে কথা বলে। অনেক কষ্টে মোমিনার সাথে দেখা করার সুজোগ পায়। তাকে সব বলে যে কিভাবে কিভাবে এসেছে। মোমিনা খুশি হয় জেনে যে বাংলাদেশে তার এত বড় একজন ভক্ত আছে। যদিও শিপন এটা বলে না যে সে তার ক্রাশ। ওয়ালি বার বার চিমটি কেটে বলে যে

ওয়ালিঃ ভাই বলা না কেন?

শিপনঃ আর ইউ ক্রেজি?

ওয়ালিঃ আমরা এত কষ্ট করে আসছিই তো তাকে তোমার ভালোবাসার কথা বলে তাকে নিয়ে যেতে।

শিপনঃ সেটা যাস্ট ফান ছিলো।

মোমিনা তাদের সেখানে দুপুরের খাবারের অনুরোধ জানালে তারা আর সেই অনুরোধ না করতে পারে না। পাকিস্তানের অনেক রকম সুস্বাদু খাবার দিয়ে দুপুরের ভোজন শেষ করে।

ওয়ালিঃ ভাই আজ কি এখানে থাকবে?

শিপনঃ ঢুকতে দিলে বসতে দাও, বসতে দিলে খেতে দাও, খেতে দিলে সুতে দাও।

ওয়ালিঃ না মানে গত ১৪ দিন রাস্তাঘাটে শুয়ে ছিলাম। একরাত এই রকম আলিষান বাড়িতে থাকতে পারলে মন্দ হতো না।

মোমিনা আবার আসে।

শিপন ঃ আমরা এখন তাহলে আসি? (اب ہم آ گئے ہیں)

মোমিনাঃ آج یہاں سے جاؤ (আজ থেকে যান আমাদের এখানে? )

শিপনঃ নাহ, আরেকদিন। আর আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপনার আতিথিয়েতার জন্য। (نہیں، ایک اور دن. اور آپ کے مہمانیت کے لئے بہت بہت شکریہ.)

মোমিনাঃ شکریہ (শুকরিয়া)

শিপন ঃ আপনার কাছে একটা জিনিষ চাইবো, দিতে পারবেন ?( کیا آپ چاہیں گے، کیا کر سکتے ہیں؟)

মোমিনাঃ میرے لئے ٹھیک ہے، اگر ممکن ہو تو اسے دو (আমার কাছে? আচ্ছা বলেন, সম্ভব হলে দিবো)

শিপনঃ আপনার একটু হাসি দেখতে চাই, প্রান খোলা পাগল করা হাসি। আর আপনার কাছে ওস্তাদ শাহ আলমের ভূতরাজ্য কলংকপুর নামে একটা ছোট বই আছে সেটি আমার লাগবে।(تم تھوڑا مسکراہٹ دیکھنا چاہتے ہو، زور سے ہنسنا ہنسنا. اور آپ کی ایک چھوٹی سی کتاب ہے جس میں استاد شاہ عالم بخارتا کلنگپور، جو مجھے ضرورت ہے.)

মোমিনাঃ اہہہہہ ہنسی دیکھو اور کتاب کو تلاش کرو. (হাহাহাহাহাহা। হাসলাম আর বইটা খুজে দেখতে হবে।)

শিপনঃ আমি আপনার এই হাসি স্বচক্ষে দেখার জন্য পায়ে হেটে এতো কষ্ট করে এতো দূর আসতে পারলাম, আর আপনি আমার জন্য একটা বই খুজে সেটা দিতে পারবেন না?( میں آپ کے پیروں پر اپنی مسکراہٹ کو دیکھنے کے لئے اتنا مشکل چل سکتا تھا، اور آپ میرے لئے کوئی کتاب ڈھونڈنے کے لئے اتنا مشکل نہیں پا سکا؟)

মোমিনাঃ (আবার সেই পাগলকরা মুচকি হাসি) হাহাহাহাহহাহাহা। আমি খুজে দেখছি।(اہہہہہہ میں تلاش کر رہا ہوں)

মোমিনা ভিতরে গিয়ে খুজছে। আর ওরা দুইজন ড্রয়িং রুমে বসে আছে।

ওয়ালিঃ ভাই এই বই তার কাছে আছে তুমি জানলে কিভাবে?

শিপনঃ কলংকপুর এ যাওয়ার ঠিকানা বা উপায় যেটাই বলা না কেন সেটা আমি যে ডাইরিতে পেয়েছি সেই ডাইরিতেই লিখা ছিলো যে ওস্তাদ শাহ আলমের কাছে ভূতরাজ্য কলংকপুর নামে বই আছে সেই বইয়ে কলংকপুর যাওয়ার ম্যাপ দেওয়া আছে। আর কি ভাবে কি করতে হবে সেটি নিয়েই বইটি।

ওয়ালিঃ বইটা কে লিখেছিলো?

শিপনঃ আসাদুর রহমান নামে এক ভৌতিক বিশেষজ্ঞ ।

ওয়ালিঃ নাম শুনেছি। অনেক ভূতের গল্প আছে তার।

মোমিনা চলে আসে। হাতে একটি চিকন বই। ধুলো জমা ছিলো। দেখে বোঝা যাচ্ছে আনার আগে কোন কাপর দিয়ে ঝেড়ে পরিস্কার করে এনেছে।

মোমিনাঃ (آپ کی کتاب ملی یہاں آپ کی کتاب ہے. ایک سچ بتاؤ) পেয়েছি আপনার বই। এই নিন আপনার বই। আচ্ছা একটা সত্যি কথা বলবেন?

শিপনঃ অনেক অনেক ধন্যবাদ। জ্বি অবশ্যই সত্যি কথা বলবো। বলুন কি জানতে চান? (بہت بہت شکریہ جی ہاں، بالکل، میں سچ بتا سکتا ہوں. کہہ دو کہ تم کیا جاننا چاہتے ہو؟)

মোমিনাঃ (کیا تم یہاں یہاں یا اس کتاب کے لۓ بہت مشکل ہو گئے ہو؟) আপনি কি এতোদূর থেকে এতো কষ্ট করে আমার জন্য এখানে এসেছেন নাকি এই বই এর জন্য?

শিপনঃ আপনি আমার ক্রাশ। আমার ফেসবুক ওয়ালে আমার চেয়ে বেশি আপনার ছবি আছে। আপনি বিবাহিত না হলে আমি আপনাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতাম। যদিও আমি। আচ্ছা বাদ দিন্ম আমি আপনার এই হাসির জন্যেই এসেছি। এখন চলে যাই?( تم میری کرشنگ ہو میرے فیس بک دیوار پر آپ کے مقابلے میں زیادہ تصاویر ہیں. اگر آپ شادی شدہ نہیں تھے تو میں آپ کو ایک شادی پیش کرتا ہوں. اگرچہ میں ٹھیک ہے، میں آپ کو اس ہنسی کے لئے یاد آیا. اب جاؤ)

মোমিনাঃ (اہہہہہہ ٹھیک ہے آپ کو. میں صحت مند رہتا ہوں. اللہ آپ کی مدد کر سکتا ہے. اللہ حافظ ) হাহাহাহাহহাহা। আচ্ছা আবার দেখা হবে। সুস্থ মত পৌছাবেন দোয়া করি। আল্লাহ আপনাদের সহায় হউক। আল্লাহ হাফেজ।

বইটা নিয়ে চলে আসে। বাইরে এসে হাটতে থাকে। কিছুদুর হেটে ছোট একটা পার্কের ভিতর গিয়ে বসে বইটা বের করে। তারপর শিপন বইটা বের করে। আর ওয়ালি তার পাসপোর্ট নিয়ে পার্কের বাইরে যায়। একটা সিম কিনে মোবাইলে ভরে। ইন্টারনেটের ডাটা কিনে। ফেসবুক অন করে। ঘাটাঘাটি করে একটি অতি বাজে সংবাদ পায়। দৌড়ে আসে শিপনের কাছে।

ওয়ালিঃ ভাই একটা দুঃসংবাদ আছে?

শিপনঃ( বইটা পড়ায় ব্যাস্ত। ইংরেজিতে লেখা বইটা পরতে কষ্টই হচ্ছে তাই মনো্যোগটা একটূ বেশি) কি?

ওয়ালিঃ দুপুর ভাই আর নেই।

শিপনঃ কোথায় গেছে?

ওয়ালিঃ মারা গেছে।

শিপন কথাটি শুনে চমকে উঠে। ওয়ালির হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে দেখে এজাজ ফেসবুকে পোষ্ট দিয়েছে। লাশের ছবি ও দিয়েছে। শিপন কিছুখন বসে নিশ্চুপে কাদে।

ওয়ালিঃ ভাই এজাজ ভাইকে কি একটা কল দিবো? অনলাইনে আছে।

শিপনঃ নাহ। ওরা জানতে চাইবে কোথায় আছি কেন আছি। আর এই কথা শুনলে আসতেও চাইবে। আমি চাই না ওরা আসুক।

ওয়ালিঃ এখন তাহলে আমরা কি করবো?

শিপনঃ কামরুপ কামাখ্যা যাবো।

ওয়ালিঃ ঐটা কোথায়?

শিপনঃ কামরূপ কামাখ্যা এক ভয়ংকর জায়গা ৷ ওখানে পৌঁছালে আর ফিরে আসা যায় না। লোকে বলে।

কামরূপ কামাখ্যাকে বলা হয় জাদুটোনা, জাদু তন্ত্র-মন্ত্রের দেশ৷ রহস্যঘেরা এক জায়গা এটি৷ কামরূপ কামাখ্যাই শুধু নয়, ওখানের আশেপাশে অরণ্যে আর নির্জন পথে দেখা যায় ভূত-পেত্নী আর ডাকিনী-যোগিনীর।। কামরূপ-কামাখ্যা নারী শাসিত পাহাড়ী ভূ-খন্ড। সেখানকার নারীরা ছলাকলা কামকলায় ভীষণ পারদর্শী। কামরূপ-কামাখ্যার ডাকিনী নারীরা পুরুষদের মন্ত্রবলে ভেড়া বানিয়ে রাখে । আর বছরে এক কিছু সিংহ আসে। বিকট শব্দে চিৎকার করে, আর সেই চিৎকারের শব্দ যে পুরুষগন এর কানে যায় তারা মারা যায়।

ওয়ালিঃ কি ভয়ংকর ব্যাপার। তাহলে আমরা ঐখানে যাচ্ছি কেন?

শিপনঃ কামরুপ কামাখ্যায় এক ত্রান্তিক আছে, সে ত্রান্তিক এর ত্রন্ত্র সাধনার ঘরে একটা সিন্দুক আছে সেখানে লুকিয়ে রাখা আছে একটি মাথার খুলির আকৃতির একটি পান্না সেই পান্নাটিই হলো কলংকপুরের ঢোকার চাবি। আর ঐখানের যেই যৌনাজ্ঞ মন্দিরের ভিতরের পিছনের দিকে একটা সুরংগ পথ আছে। সেটা দিয়ে লাফ দিলে কলংকপুরে পৌছে যবো। তারপর এই পান্না ব্যাবহার করে আমরা কলংকপুরে যাবো।

ওয়ালিঃ কামরুপ কামাখ্যাতে গেলেই কি দিয়ে দিবে?

শিপনঃ নাহ। ওরা কলংকপুর কে ধংশ করতে চাইছে । ঐ চাবিটা ওরা স্বযত্নে রেখেছে যে কোনদিন কলংকপুরে হামলা করে আমার রাজকুমারী লাইলাকে বিপদে ফেলবে।

ওয়ালিঃ রাজকুমারী লাইলা? তুমি যে মেয়েটাকে পছন্দ করো?

শিপনঃ হুম। আমার ভূতুনী।

ওয়ালীঃ যাক ভাবি পাবো।

শিপন ঃ হাহাহা। আচ্ছা তাহলে এখন আমরা কামরুপ কামাক্ষার পথে রওনা দেই?

ওয়ালিঃ কোন দিকে ?

শিপনঃ ভারতের আসাম রাজ্য। এই বইয়ে ম্যাপ দেওয়া আছে। লাহোর থেকে যেতে হবে।

ওয়ালিঃ তুমি এতো কিছু জানলে কিভাবে?

শিপনঃ আমার মোমিনা কাছ থেকে নেওয়া এই বই থেকে।

ওয়ালীঃ দুপুর ভাইয়ার জন্য খুব খারাপ লাগছে।

শিপন ঃ ও আমার কলিজার টুকরা ফ্রেন্ড, আমার নিশ্চই তোমার চেয়ে কম খারাপ লাগছে না।

ওয়ালীঃ আচ্ছা ভাইয়া চলো।

শিপন আর ওয়ালী কামরুপ কামাখ্যার উদ্যেশ্যে রওনা দেয়।

অন্যদিকে আজ রাতে ভূত গোয়েন্দার অফিসে মিটিং ডেকেছে এজাজ। সবাই ঠিক ৯টার মধ্যে উপস্তিত। সুধু তাহমিদ ছাড়া।

জয়ঃ তাহমিদ এর বউ মনে হয় তাহমিদকে আসতে দিবে না।

অদ্রিতাঃ আমার ও তাই মনে হয়।

শ্রেয়াসঃ আমার মনে হয় আমাদের মিটিং শুরু করা উচিত।

রনিঃ প্ল্যান চ্যাট করে আমরা শিপনের আত্তাকে ডাকবো।

শ্রেয়াসঃ সানিন্তা আসে নাই?

ঝুম ঃ নাহ । সুধু সুধু ওকে র বিপদে ফেলতে চাই না। ওকে কিছু জানাইনি।

দরজায় টোকা পরে। হৃদয় গিয়ে দরজা খুলে দেয়। তাহমিদ এসেছে, সাথে শিলা।

শ্রেয়াসঃ এসেছিস তাহলে তুই ?

তাহমিদঃ আসবো না ? এখন আমি একা না, আমার বউ ও আছে আমাদের সাথে ?

অধরাঃ সত্যি?

শিলাঃ হুম। এখন আমার কোন টিউশনি নেই। তাই আছি।

রনিঃ এসেছো ভালো। কিন্তু এখানে কিন্তু অনেক ঝুকি আছে, মরতেও হতে পারে।

এজাজঃ আচ্ছা স্ময় নষ্ট না করে প্ল্যানচ্যাট করি।

শিলাঃ প্ল্যানচ্যাট? ওয়াও।

তাহমিদঃ শিলা, ন্যাকামো করবা না। এখানে আমরা সবাই সিরিয়াস।

অর্নবঃ সবাই বসো।

এজাজ, জয়, হৃদয়, মামুন, রনি, অর্নব প্ল্যানচ্যাটে বসে। বাকিরা পিছনে গোল করে।

মাঝখান থেকে অর্নব আজ মন্ত্র পড়া শুরু করে। এর পর শিপনের আত্তাকে ডাক দেয়। কিছুক্ষন ডাকার পর শিপনের আত্তা জয়ের শরীরে ভর করে। শিলা ভয় পেয়ে চিৎকার করে। কিন্তু শিপনের আত্তা এবার আর রাগ করে না। কারন সে এখন তাদের বন্ধুর মত হয়ে গেছে।

জয়(শিপনের আত্তা)ঃ কেমন আছো?

এজাজঃ তুমি জানোনা কেমন আছি?

জয়(শিপনের আত্তা)ঃ জানি ভালো নেই। তোমরা তোমাদের খুব কাছের বন্ধুকে হারিয়ে ফেলেছো।

অর্নবঃ শিপন ভাই বন্ধুর চেয়েও বেশি কিছু।

রনিঃ তুমি সেদিন আমাদের রেখে পালিয়ে গেলে কেনো?

হৃদয়ঃ আমরা তোমার ভালোবাসার মানুষটাকে বাচালাম আর তুমি আমাদের বিপদে রেখে পালিয়ে গেলে?

জয়(শিপনের আত্তা)ঃ তোমরা আমাকে ভূল বুঝছো। প্রেতাত্তারা সেই জায়গাটাকে মন্ত্রবলে নিজেদের দখলে নিয়ে নিয়েছিলো। সেখানে আমার মত ভূতের পক্ষে যাওয়া সম্ভব ছিলো না। মৃত্যু দিয়েও না। আমি তো আর তোমাদের মত এখন আর মানুষ নেই।

এজাজঃ শিপন কাকা কোথায় আছে?

জয়(শিপনের আত্তা)ঃ ওহ হ্যা।। তোমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন ম্যাসেজ আছে। পুরো প্রেতাত্তা পিশাচ জগত এখন তোমাদের পিছু লেগেছে। তোমরা সবাই একটু সাবধানে থাকবে। আর কলংকপুর কে পিশাচদের স্থায়ী ঠিকানা করার জন্য যে আর একটি কুমারী প্রয়োজন সেটি ওরা পৃথিবী থেকে তুলে কামরুপ কামাখ্যা তে নিয়ে গেছে । সামনের সপ্তাহে ওকে বলি দিবে । তখন পিশাচ দের দখলে চলে যাবে কলংকপুর। আর তাই হলে পিশাচরা কিন্তু এই পৃথিবীর মানুষদের ও শান্তিতে থাকতে দিবে না।

হৃদয়ঃ মামা কোথায়? শিপন মামা।

জয়(শিপনের আত্তা)ঃ সে পাকিস্তানের দিকে গেছে।

এজাজঃ যেটা বলেছিলাম। সেই মোমিনা মোস্তেহাসিনের খোজে নিশ্চই।

জয়(শিপনের আত্তা)ঃ তবে তার গন্তব্য এখন পাকিস্থান থেকে কামরুপ কামাখ্যার দিকে।

হিয়াঃ সেখানে যাচ্ছে কেনো?

রনিঃ কলংকপুর ভাইয়ার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। স্বপ্নের রাজ্য। ভাইয়া নিশ্চই সেটি উদ্ধারে যাচ্ছে।

অনুপঃ তাহলে তো আমাদের ও যাওয়া উচিত। এটা কোথায়? যেতে কতদিন লাগবে?

জয়(শিপনের আত্তা)ঃ এটা ভারতের আসাম। জায়গাটা আমি চিনি। গ্রান্ড ট্যাংক রোড ধরে গেলে ৫/৬ দিনে চলে যাবো। অন্য পথে যাওয়া যাবে না কারন তোমাদের তো এখন পাসপোর্ট নাই।

মামুনঃ হুম। হাতে সময় কম। আমরা কালই রওনা দিবো।

অনুপঃ সবাই যাবে তো?

তাহমিদ ঃ হ্যা সবাই যাবে। সুধু শিলা বাদ।

শিলাঃ আমিও যাবো। আমাকে কি তোমার ভিতু মনে হয়? যদিও আমি ভূত বিশ্বাস করি না।

জয়(শিপনের আত্তা)ঃ আমি কি শিলা?

শিলাঃ জয়। হাহাহাহাহাআহহা। আচ্ছা আমি চলে যাবো। তোমরা সাবধানে থাইকো।

হৃদয় ঃ তুমি কাল ভোরে চলে আইসো ধানমন্ডী ভোড় ৬টায়। এখান থেকে রওনা দিবো। আমার বাবার বাস আছে সেটা নিয়েই রওনা দিবো ।আমি চালাতে পারি।

জয়(শিপনের আত্তা)ঃ ঠিক আছে।

মতামত কমেন্টস করে জানান।

চলবে .......................................

আগামীকাল অথবা পরশু রাতে সপ্তম পর্ব পোষ্ট করা হবে। ইনস্ট্যান্ট লিখা হচ্ছে তাই পরবর্তি পর্ব পেতে ধৈর্য ধরতে হবে। আর গল্পের ভূল ত্রুটি, ভালো লাগা খারাপ লাগা অবশ্যই কমেন্টস করে জানাবেন যদি পরবর্তি পেতে চান। ধন্যবাদ।

যারা আগের পর্বগুলো পাননি তাদের জন্য নিচে লিংক দেওয়া হলোঃ

১ম পর্ব ঃ https://www.facebook.com/…/a.923688374487…/923688387820451/…

২য় পর্ব ঃ https://www.facebook.com/…/a.923688374487…/924105397778750/…

৩য় পর্বঃ https://www.facebook.com/…/a.923688374487…/924622764393680/…

৪র্থ পর্বঃ https://www.facebook.com/…/a.923688374487…/925607740961849/…

৫ম পর্বঃ https://www.facebook.com/…/a.923688374487…/926690850853538/…

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .