রবিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

রাজকুমারী লাইলা (৩য় পর্ব)



#রাজকুমারী_লাইলা
(ভৌতিক কল্পকাহিনী)
পর্বঃ ৩য় (সিলেটযাত্রা)
লেখা ঃ MD Asadur Rahman - Shipon
ড্রাইভারকে তুলে বাসের ভিতরে এনে সুয়িয়ে পানি ঢেলে জ্ঞ্যান ফেরানো হয়। জ্ঞ্যান ফেরা পরপরই
ড্রাইভারঃ লাশ লাশ।
তাহমিদঃ কিশের লাশ?
ড্রাইভারঃ চাকার নিচে লাশ, মাথা থেতলে গেছে। আমি কিন্তু ইচ্ছে করে করি নাই।
শ্রেয়াসঃ কি বলছেন এই সব? এখানে কোন লাশ নেই।
দুপুরঃ ড্রাইভার ভাই আসেন তো নিচে গিয়ে দেখি। এই তোরাও আয়।
ভূত গোয়েন্দার সব সদস্য আর কিছু অন্যান্য যাত্রী এবং ড্রাইভার সহ নিচে নামে। গাড়ির চারপাশ দেখে কিন্তু লাশ তো দূরে থাক রক্তও নেই।
ড্রাইভারঃ বিশ্বাস করে সামনের দিকের বা পাশের চাকার নিচে লাশটি ছিলো।
শিফাঃ আপনি হয়তো ভূল দেখেছেন। মনের ভূল।
ড্রাইভারঃ আমি ভূল দেখি নাই। তাহলে কি ভুত!
দুপুরঃ আপনি কি গাড়ি চালাতে পারবেন? আপনি তো কাপাকাপি করছেন।
ড্রাইভারঃ আমার হাত পা ভার হয়ে আসছে। আমি গাড়ি চালাতে পারবো না।
হিয়াঃ হ্যা আপনি গাড়ি চালালে গাড়ি এক্সিডেন্ট করবে।
ঝুমঃ তাহলে কি করা যায়?
বাসের অন্যান্য যাত্রীরা রাগান্বীত হলো বাসের ড্রাইভারের উপর। তারা ড্রাইভারের এই অবস্থায়ই গাড়ী চালাতে বললো। কিন্তু দুপুরদের সকলের বিরোধিতার জোরে সবাই অপেক্ষা করতে থাকলো। বাসের সুপারভাইজার তার অফিসে ফোন দিয়ে জানালে তারা একজন ড্রাইভার পাঠানো ব্যাবস্থা করলেন। আর এই ড্রাইভারকে বাসের পিছনের সিটে সুয়িয়ে রাখা হয়। আর এই সময়টুকু সবাই বাসে, রাস্তায় সহ বিভিন্ন জায়গায় বসে কাটাচ্ছে। কেউ কেউ ঘুমাচ্ছে। যেমন আদ্রিতা, যারা, অধরা আর অনুপ ধুমছে ঘুমাচ্ছে। দুপুর আর হিয়া বাসের পাশে রাস্তার এককোনে বসে গল্প করছিলো। সেই সময় রনি আসে।
রনিঃ আমি কি তোমাদের সাথে বসতে পারি?
দুপুরঃ অবশ্যই।
রনিঃ আচ্ছে এই ঘটনাটা তোমাদের কাছে কি মনে হচ্ছে?
দুপুরঃ কোন ঘটনা?
রনিরঃ প্রথমে যারার ভয়ে চিৎকার, তারপর ড্রাইভারের কাউকে দেখে গাড়ি ব্রেক করা, কয়েকজন নিচে নেমে দেখলো কেউ নেই আবার ড্রাইভার নেমে লাশ দেখে চিৎকার করে অজ্ঞ্যান। কিছু অন্য রকম মনে হচ্ছে না?
হিয়াঃ এটা একটা হ্যালুসিনেশন। আর কিছু না।
রনিঃ আমার কিন্তু অন্য কিছু মনে হচ্ছে।
দুপুরঃ ভূত গোয়েন্দা মানুষ তুমি, ভৌতিক কিছু সন্দেহ করাটাই স্বাভাবিক।
রনিঃ তোমরা ভাবছো আমি মজা করছি তাই না?
হিয়াঃ আমি অন্তত সেটাই ভাবছি।
রনিঃ ধুর তোমরা মজা করছো।
দুপুরঃ আরে নাহ। বসো
রনিঃ আচ্ছা এমন কি হতে পারে যে আমরা যাচ্ছি সেটা সজল বা লিলিথ আগেই জেনে গেছে।
দুপুরঃ হতেও পারে। তাই হয়তো আমাদের ভয় দেখাচ্ছে।
হিয়াঃ আচ্ছা তোমাদের কথা যদি সত্যি হয় তাহলে তো ওরা আমাদের ক্ষতিও করতে পারে।
দুপুরঃ মেরেও ফেলতে পারে।
হিয়াঃ আমি তো বিয়ে করিনি। বিয়ে না করেই মরে যাবো? নাহ আমি যাবো না তোমাদের সাথে।
দুপুরঃ হাহাহাহা। তাহলে বিয়ে করেই মরো। পাত্রতো আমার পাশেই আছে।
হিয়াঃ ধুর। (লজ্জা পেয়ে উঠে যায়)
রনিঃ এই রকম বললেন কেনো?
দুপুরঃ ভাইরে আমি ভালো করে জানি তোমরা দুজন দুজনকে পছন্দ করো কিন্তু কেউ কাউকে বলতে পারছো না।
অর্নব আসে সেখানে।
অর্নবঃ ভাইয়া শুনছো নাকি?
দুপুরঃ কি শুনবো?
অর্নবঃ ড্রাইভার তো মারা গেছে।
দুপুরঃ মানে কি?
অর্নবঃ হটাত রক্ত বমি শুরু করে। তারপর মরে যায়।
দুপুরঃ ড্রাইভার না বাসে সুয়ে ছিলো।
রনিঃ চলো ভিতরে গিয়ে দেখি।
ভিতরে গিয়ে দেখে ড্রাইভার মারা যায়নি তবে রক্তবমি করছে। প্রায় মরা মরা অবস্থা। শিফা ড্রাইভারকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছিলো, কিন্তু কোনভাবেই বমি কমছিলো না।
শিফাঃ এই মুহুর্তে একে হসপিটালে এডমিট করতে হবে। তানাহলে বাচানো যাবে না।
রনিঃ হয়েছেটা কি?
শিফাঃ বুঝতে পারছি নাতবে এইভাবে রক্তবমি কন্টিনিউ হতে থাকলে বেশিখন বাচবে না এটা শিউর।
অনুপঃ কি ডাক্তারী শিখলি তুই যে রোগকি সেটাই বুঝিস না? নিশ্চিত প্রশ্নপত্র ফাসে পাশ করছিস তুই।
শিফাঃ চুপ। সিরিয়াস মোমেন্টে ফাইজলামি।
অদ্রিতাঃ এখন কি করবো আমরা?
হৃদয়ঃ হসপিটালে নিবো।
মামুনঃ কিভাবে নিবো।
দুপুরঃ রাস্তায় চলো। যে গাড়ি পাশ দিয়ে যাবে সেটিই থামিয়ে তাকে হসপিটালে পাঠাবো।
যারাঃ সেটাই করতে হবে।
দুপুর, রনি, মামুন, শ্রেয়াস আর হৃদয় রাস্তায় যায় গাড়ি থামাতে। কিছুখন পর একটা মাইক্রোগাড়ী আসে। রাস্তার মাঝেখানে ৫জন স্ট্রেট দাঁড়িয়ে গাড়ি থামায়। অনেক কিছু বুঝিয়ে রাজি করায়। তারপর ড্রাইভারকে নিচে নামিয়ে এনে সুপারভাইজার কে দিয়ে হসপিটালে পাঠানো হয়।
এরপর বেশ কিছুখন পর আরেকজন ড্রাইভার আসে তাদের নিয়ে যেতে। ততখনে ভোর হয়ে গেছে। ড্রাইভার তাদের নিয়ে সিলেটে পোছায়। কাউন্টারে ফ্রেশ হতে গিয়ে শুনে ড্রাইভারটি হসপিটালে নিইয়ে যাওয়ার পথেই মারা যায়।
দুপুরঃ শুনেছিস?
তাহমিদঃ কি ভাইয়া?
দুপুরঃ ড্রাইভার মারা গেছে।
অধরাঃ সে মারা যাবে তাকে দেখেই বুঝেছিলাম।
ঝুমঃ খুব কষ্ট হচ্ছে তার জন্য।
হিয়াঃ কি এমন হয়েছিলো ড্রাইভারের সাথে যে সে এভাবে
রনিঃ আমাদের সবাইকে একটু সাবধানে থাকতে হবে। মনে সাহস রাখতে হবে। কোন কিছু দেখেই হটাত ভয় পেলে চলবে না। ভয় জিনিসটা খুব খারাপ। মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে।,
হিয়াঃ মৃত্যু মৃত্যু মৃত্যু। এই শব্দটা শুনতে ভালো লাগে না।
রনিঃ হিয়া তোমার ভয় লাগলে তোমার ফিরে যাওয়া উচিত।
হিয়াঃ এতোটা ভয় পাই না।
দুপুরঃ ধুর কিশের ভয় হিয়ার রনি থাকতে।
হিয়াঃ(দুপুর এর পিঠে চিমটি কেটে) চুপ, একদম চুপ।
দুপুরঃ দজ্জাল মহিলা।
অদ্রিতাঃ থামবে তোমরা? এখন কি করবো? কোথায় উঠবো এসব কিছু না মেরে হিয়ার সাথে এই দুইটা ফ্ল্যাটিং করছে।
দুপুরঃ আমি কি করলাম?
অধরাঃ আমরা জানি তুমি নিজেও হিয়াকে পছন্দ করো।
দুপুরঃ আজিব। আরে আমি তো অধরার জন্য পাগল।
অধরাঃ চুপ শয়তান ছেরা। একদম ফাইজলামি করবি না।
দুপুরঃ আচ্ছা ফাইজলামি বাদ। আমরা এক দাদা আছে, উত্তম কুমার সিনহা। দাদার একটা রিসোর্ট আছে আপাতত আমরা সেখানেই উঠবো। আর শিপনের আত্তার দেওয়া ঠিকানা মত বাগানে রাতে যাবো ওর বডি সনাক্ত করতেএর আগে আমি আর মামুন আগে একবার গিয়ে ঘুরে দেখে আসবো। নাজমুলকেও সাথে নিবো। তোমরা রিসোর্টে রেস্ট নাও।
যারাঃ আচ্ছা ঠিক আছে, এখন চলো কোথায় নিয়ে যাবে সেখানে। ফ্রেস হতে হবে।
৪টা অটো ভাড়া করে রিসোর্টে যায় ওরা। ওদের নামিয়ে দিয়ে সেখান থেকে দুপুর, মামুন আর নাজমুল বের হয়ে বাগানটা ঘুরে দেখতে।
বিকেল হয়ে গেলেও ফিরে আসে না ওরা। ফোনও বন্ধ। কোন কিছুতেই কিছু বুঝছে না কি করবে বাকিরা। যারা, অদ্রিতা, আর হৃদয় বের ওদের খুজতে। ওরা শহরটা তেমন একটা চেনে না। আশেপাশে খুজে কোথাও পায় না। সন্ধ্যায় ফিরে আসে রুমে। মিটিং এ বসে বাকিরা।
ঝুমঃ এখন কি করা যায়?
হিয়াঃ ওদের জন্য টেনশন হচ্ছে খুব। কোন বিপদে পরলো না তো?
রনিঃ পরতেও পারে।
হিয়াঃ তাহলে কি করবো এখন?
ঝুমঃ থানায় গিয়ে জিডি করে আসি?
এজাজঃ এখনি না। আজ রাতে খুজে না পেলে সকালে করবো।
রনিঃ আজ রাতের প্ল্যান ছিলো ভিন্ন রকম।
এজাজঃ কেমন?
রনিঃ শিপনের ডেট বডি সনাক্ত করতে হবে।
এজাজঃ আমাদের মধ্যে তিনজন নেই, উধাও আর তুমি এখন সেখানে যাবে ডেট বডী সনাক্ত করতে?
হিয়াঃ আমার মনে হয় দুপুরুকে ছাড়া যাওয়া ঠিক হবে না।
অধরাঃ হিয়া দুপুর তোমার বড়। আর আমার ও মনে হয় যাওয়া ঠিক হবে না।
এজাজঃ নাহ। আমার মনে হয় ঐখানেই যাওয়া ঠিক হবে। হয়তো ঐখানেই আটকে গেছে।
রনিঃ আমি সেটাই বলছিলাম।
এজাজঃ কিন্তু ঐখানের ঠিকানা তো আমার কাছে নেই।
যারাঃ হৃদু আছে না। আবার প্ল্যানচ্যাট করি। শিপনের আত্তাকে ডেকে ঠিকানা নিয়ে নেই।
হৃদয়ঃ পাগল? এখনো আমার হাত পা ব্যাথা করছে। ঘাড় নারাতে কষ্ট হচ্ছে।
অর্নবঃ ভাই থামো তোমরা। আমার কাছে ঠিকানা আছে। দুপুর ভাই আমাকে যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিলো ঠিকানা।
তাহমিদঃ আমাকেও বলে গিয়েছে।
এজাজঃ তারমানে তোমরা জানতে যে ওরা আসবে না?
তাহমিদঃ না এমন কিছু না। বলেছিলো দুপুরের আগেই চলে আসবে। এর মধ্যে কোন কারনে ডাকলে জেনো এই ঠিকানায় যাই।
ঝুমঃ আচ্ছা আর দেরি না করে এখনি রওনা দেই।
শ্রেয়াসঃ ঠিকানাটা কি?
অর্নবঃ গংগাবাবুর চাবাগান। চা বাগানের পিছে হানাবাড়ি মন্দির। এই মন্দির নাকি এক ভিন্ন ধর্মের লোকেদের উপসানালয়। তবে সবাই মন্দির বলে। ঐ মন্দিরের পিছনে জামরুল গাছের সাথে একটা তুলশি গাছ আছে। ঐ তুলশি গাছের নিচেই শিপনের দেহ পুতে রাখাছিল।
হিয়াঃ ভয় ভয় লাগছে।
রনিঃ তাহলে তুমি রুমেই থাকো। আমরা যাই।
হিয়াঃ নাহ। একা থাকলে বেশি ভয় লাগবে।
সবাই মিলে বের হয়। চা বাগানের অনেক আগেই গাড়ী থেকে নেমে যায়। ধিরে ধিরে হাটা ধরে। চা বাগানের মধ্যে ঢুকে যায়। একজন পাহাড়াদার আছে সেখানে।
অর্নবঃ রনি সামনে তো পাহাড়াদার, কি করবো?
হৃদয়ঃ তাহমিদ আয় দুইজন মিলে ব্যাটাকে ধইরা শুয়ায় দেই?
এজাজঃ নাহ পাগলামো করা যাবে না।
রনিঃ মাথা নিচু করে শব্দ না করে আস্তে আস্তে হেটে যাই বাগানের মধ্যে দিয়ে।
এজাজঃ হ্যা। সবাই সবার হাত ধরো।
এভাবে হেটে হেটে মন্দিরটির পেছনে যায়। জামুরুল গাছ খুজে বের করে। রাত আরো গভির হোক এর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। সব নিশ্চুপ হলে খোড়াখুড়ি শুরু করে। ৩/৪ হাত খোড়ার পর কংকাল বের হয়ে আসে। ছোট করে একটা জানাজা দিয়ে আবার সেখানে পুতে রাখে।
হিয়াঃ সব তো হলো। নিশ্চই এতোখনে শিপনের অতৃপ্ত আত্বাও মুক্তি পেয়ে ভূত হয়ে গেছে। কিন্তু দুপুর, নাজমুল, মামুন ভাই এরা কোথায়?
ঝুমঃ মামুনকে ছাড়া আমি কোথাও যাবো না। ওকে খুজে বের করতে হবে।
শ্রেয়াসঃ আচ্ছা একটা জিনিষ দেখো।
অদ্রিতাঃ কি?
শ্রেয়াসঃ মন্দির এর ভিতর এতোখন কোন আলো জ্বলছিলো না। এখন কিন্তু আলো জ্বলছে।
এজাজঃ আমি একা একা সামনে গিয়ে দেখি। তোমরা এখানে থাকো। কোন বিপদে পরলে এগিয়ে এসো।
হৃদয় ঃ আমিও তোমার সাথে চলি?
এজাজঃ চলো।
মন্দিরের কাছে যায়। জানালার ছোট একটা ছিদ্র দিয়ে দেখে ভিতরে একটা মেয়েকে লাল কাপর পরিয়ে বসিয়ে রেখেছে। আর তার চারপাশে বেশ কয়েকজন ত্রান্তিক।
হৃদয়ঃ এটা না মন্দির? মন্দিরে ঠাকুর কই?
এজাজঃ আমার মনে হয় এরা মন্দিরের নাম করে ভিতরে অন্য কোন ত্রন্ত সাধনা বা অন্ধকার বা অপদেবতার পুজা করে।
হৃদয়ঃ হতে পারে। এখন কি মেয়েটাকে বলি দিবে? দেখো মাঝখানের ঐ ছেলেটা একটা বড় চাপাতি নিয়ে বসে আছে।
এজাজঃ মেয়েটাকে মরতে দেওয়া যাবে না। দেখছো কত সুন্দর মেয়েটা?
হৃদয়ঃ একদম হুরপুড়ি।
দুটো মেয়ে ত্রান্তিক এসে লাল কাপর পড়া মেয়েটার হাত ধরে। মাঝখানে একটা মানুষের মাথার কংকাল। সেটির উপর মেয়েটির হাত এনে হাতে ঐ চাপাতি দিয়ে কেটে দেয় আর রক্ত ঝরতে থাকে। মাথার খুলিটা রক্তে ভিজে যায়। খুলি থেকে ধোয়া উড়তে থাকে আর মেয়েটা চিৎকার করতে থাকে আর হাসতে থাকে অল্প বয়সী ত্রান্তিকটা।
কিছুক্ষন পর মেয়েটা জ্ঞ্যান হারিয়ে পরে যায় মাটিতে। অল্প বয়সী ত্রান্তিক মন্ত্র পরা শুরু করে। তারপর খুলি থেকে একটা ধোয়া উঠে আসে। সেই ধোয়া গিয়ে মেয়েটার ভিতরে ঢুকে যায়। মেয়েটা ধিরে ধিরে উঠে বসে। তারপর এক ভয়ংকর হাসী দেয়।
হৃদয়ঃ ভাই আমি আর পারছি না ভয় লাগছে। এমন ভয়ানক হাসি আমি আগে কোনদিন শুনি নাই।
এজাজঃ চুপ করো। দেখো কি করে। মনে হচ্ছে কোন প্রেতাত্তা এখন মেয়েটার উপর ভর করেছে।
অল্প বয়সী ত্রান্তিকটা মেয়েটার পায়ের কাছে মাথা নুয়িয়ে দেয়। মেয়েটা তার মাথায় হাত দিয়ে।
হৃদয়ঃ আসো আমরা মেয়েটাকে ফলো করি। কোথায় রাখে সেটা খুজে বের করি। মেয়েটাকে উদ্ধার করা যায় কিনা
মেয়েটাঃ অপদেবীর সেবাকারী সজল তোমায় অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সজল(অল্প বয়সী ত্রান্তিক)ঃ প্রিয় পিশাচরানী নওমী আমার ভক্তি নিবেন।
নওমি(পিশাচরানী)ঃ কলংকপুরকে পিশাচদের স্থায়ী রাজ্য হিসেবে, অপদেবতাদের, অপশক্তি দের, অন্ধকার রাজ্যের স্থায়ী ঠিকানা করতে হলে তোমার সাহায্য খুব প্রয়োজন।
সজলঃ পিশাচরানী এখন পর্যন্ত প্রায় ৯৯ জন কুমারী তোমার তরে বলি দিয়েছি। আর একটা দিলেই সব হয়ে যাবে, বিনিময়ে তুমি শুধু আমায় এই দুনিয়ায় অমর করে দাও।
নওমীঃ কলংকপুর পিশাচদের স্থায়ী হলেই তোর অমরত্ব। তুমি এই সানিন্তাকে বলি দিচ্ছো না কেনো? একে বলি দিলেই তো ১০০ কুমারী লিলিথের তরে বলি আর আমরা আমাদের সব পেতে পারি।
সজলঃ আমি এই মেয়েকে ভালোবাসি। আমি এই পূর্নিমাতেই আর একজন কুমারীর বলি দিচ্ছি। আপনি চিন্তা করবেন না
নওমিঃ ঠিক আছে। আমি অপেক্ষায় থাকবো। এখন যাই।
সজল আবার সেই মেয়েটির পায়ের কাছে মাথা গুজে দেয়। মেয়েটি বসা থেকে জ্ঞ্যান হারিয়ে পরে যায়। তারপর দুজন মেয়ে ত্রান্তিক এসে মেয়েটিকে তুলে নিয়ে যায়।
হৃদয়ঃ ভাই তার মানে এই মেয়েই শিপনের সানিন্তা। সানিন্তাকে উদ্ধার করতে হবে। চলো দেখি কোথায় নিয়ে যায়।
এজাজঃ মেয়েটাকে উদ্ধার করতেই হবে। আর সজলের ও একটা ব্যাবস্থা করতে হবে। আগে দেখি কোথায় নিয়ে যায়।
এজাজ আর হৃদয় ফলো করে করে যায়। মন্দিরের বা পাশে ছোট একটা ঘর আছে সেখানে নিয়ে যায় সানিন্তাকে। ওরা দুজনেও লুকিয়ে লুকিয়ে সেখানে যায়। সেই রুমের ভিতরে একটা সুরংগ পথ আছে সেখানে নিয়ে যায় সানিন্তাকে। কিন্তু সেখানে তো এজাজ আর হৃদয়ের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয় এখনি। তাই ওরা ফিরে আসে বাকি বন্ধুদের কাছে।
হিয়াঃ কিরে এতোখন কি করলি তোরা দুজন?
এজাজঃ অনেক কিছু দেখলাম সব বলবো।
অদ্রিতাঃ দুপুর, মামুন, নাজমুলের কোন খোজ আছে?
হৃদয়ঃ নাহ। তবে।
এজাজঃ ঐ দেখ জয় আসছে এখানে। ওকে কে খবর দিলো?
অনুপ জয়ের কাছে এগিয়ে যায়, পিঠে হাত চাপরে বলে
অনুপঃ কিরে ব্যাটা তুই এখানের খবর কার কাছ থেকে শুনলি? দুপুর ভাইকি তোকে খবর দিয়ে এনেছে?
জয়ঃ কে তুমি? তোমাকে তো আগে দেখিনি।
অধরাঃ জয় তোর কি মাথা খারাপ হয়েছে?
জয়ঃ সরি, আমি তোমাদের বন্ধু জয় না।
ঝুমঃ তুই এখন আমাদের বন্ধুও না। বাহ বাহ
জয়ঃ আমি শিপন। শিপনের আত্তা। আসলে আমি ওর বেশ ধরে এসেছি। আমি মুক্তি পেয়েছি অতৃপ্ত আত্তা থেকে। তাই এভাবে আসতে পারলাম। তোমাদের ভুত গোয়েন্দার অফিসেই ছিলাম। তখন এই ছেলেটি আসে আর আমিও তখন মুক্তি পাই। ভাবলাম ওর বেশ ধরেই যাই, সেটাই ভালো হবে। তোমাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য।
হৃদয়ঃ তোমার জন্য একটা সুখবর আছে?
জয়(শিপনের আত্তা)ঃ আমার জন্য এর চেয়ে বেশি আর কি সুখবর থাকতে পারে?
এজাজঃ শুনলে তুমি খুশিতে লাফাবে।
হৃদয়ঃ সানিন্তা বেচে আছে। তবে ভালো নেই, বিপদে আছে।
চলবে .......................................
আগামীকাল অথবা পরশু রাতে চতুর্থ পর্ব পোষ্ট করা হবে। ইনস্ট্যান্ট লিখা হচ্ছে তাই পরবর্তি পর্ব পেতে ধৈর্য ধরতে হবে। আর গল্পের ভূল ত্রুটি, ভালো লাগা খারাপ লাগা অবশ্যই কমেন্টস করে জানাবেন যদি পরবর্তি পেতে চান। ধন্যবাদ।
যারা আগের পর্বগুলো পাননি তাদের জন্য নিচে লিংক দেওয়া হলোঃ
১ম পর্ব ঃ https://www.facebook.com/…/a.923688374487…/923688387820451/…
২য় পর্ব ঃ https://www.facebook.com/arshipon15/posts/924105397778750:0?__tn__=K-R

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .