রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৭

মুরং ভিলেজের গুপ্ত গুহা

মুরং ভিলেজের গুপ্ত গুহা ।
লেখা ঃ প্রে তা ত্তা

কিরে কোথায় তুই ? আর কতখন তোর জন্ন্য অপেক্ষা করবো আমরা ? সবাই চলে আসছে …।। তারাতারি আয় , তা না হলে তোকে রেখে চলে যাবো ।

হিমেল ঃ সবাই চলে আসছে ?

দুপুর ঃ হ্যা তুই ছারা সবাই আসছে ।

(দুপুর হিমেল কে ফোনে কথা গুলো বলছিল । হিমেল সব সময় লেট করে । আজ শাওন ও লেট করছে  । শাওন লেট মানে সজল ও লেট । জুনায়েদ , দুপুর , সবুজ , রাজিব , জামান , বসে আছে পালামগঞ্জ ব্রিজে ।বিকেল ৪টা বাজে , ৪টার সময় ওদের রওনা দেওয়ার কথা ছিল । কিন্তু এখনো হিমেল ,শাওন আর সজল আসে না । শাওন এই গ্রুপটার লিডার বলা চলে । সে ওদের অন্ন্য সবার চেয়ে বড়)

ও বলাই তো হলো না যে ওরা কোথায় যাচ্ছে । ওরা যাচ্ছে বান্দরবন । প্রতিবছরই ওরা এই রকম ভ্রমনের আয়োজন করে ।

৪ঃ ৩৪ মিনিটে শাওন , সজল আর হিমেল আসলো ।

দুপুর ঃ ভাই তুমি ???? তুমি লেট করলা ?

শাওন ঃ আরে বলিস না ভাই , সজল আর হিমেলের মেকয়াপ করতে লেট হইলো তাই আমারো লেট হইলো । ওগো বাপ মা তো আবার আমার হাতে না দিয়ে ওদের ছারবে না ।

দুপুর ঃ হ্যা দেখতেছি তো , আটা ময়দা মেখে মেয়ে সেজে বসে আছে । চলো এখন বাসে উঠি ।

( কথা শেষ করে বাসে উঠে ঢাকা আসল । ঢাকা থেকে আবার বান্দরবন )

ভোরে চলে এলো ওরা । ১টা ছোট রিসোরটে উঠলো । রেস্ট নিয়ে বের হবে । জামান খুব ক্লান্ত হয়ে গেছে । বাসে বেশ বমি করেছে ছেলেটা । জুনায়েদও করছে বাট ও ঠিক আছে ।

দুপুরে ফ্রেস হয়ে ওরা বের হলো । প্রথমে যাবে ওরা স্ব্রন মন্দির । ১টা রেস্টুরেন্ট থেকে ভুরিভোজ দিয়ে ওরা রওনা দিলো স্ব্রন মন্দির । সেখানে গিয়ে সেলফি আর হৈ হুল্লোরে মেতে উঠলো । সেখান থেকে শৈ্ল প্রপাত এ । শৈ্ল প্রপাতের সৌন্দয দেখে ওর মুগ্ধ । দুপুর তো যেন হতভম্ব হয়ে কথা বলতে পারছে না । সবাই যেখানে সেলফি তোলা নিয়ে ব্যাস্ত সেখানে দুপুর অপলক দৃষ্টিতে প্রকৃ্তি দেখছে ।

শৈ্ল প্রপাত দেখা শেষ । এখন ওরা যাবে মুরং ভিলেজ । এখানেই যাওয়ার জন্ন্য এসেছে । ১তা গোপন তথ্য মুরং ভিলেজে ১টা গুপ্ত গুহা আছে । যে গুহাতে এই প্রযন্ত যারা ভিতরে গেছে তাদের কেউ আর ফিরে আসে নাই । আজ ওড়া ওই গুহাতেই ঢুকবে । আর গুহার গোপন রহস্য খুজে আনবে । কি নাকি এক রাক্ষস ওই গুহায় থকে সে কিনা ওই গুহার কাছে গেলে খেয়ে ফেলে । তাই ওইখানে মানুষ জনের আনাগোনা খুব কম ।দিনে বেলায় ওই গুহার কাছে যেতে দেই না আসে পাসের মানুষ জন । তাই দুপুররা রাতে ঢোকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । ওদের গ্রুপ লিডার শাওন হলেও আজকের অপারেশনের লিডার দুপুর । কারন দুপুরের এই ধরনের অভিজ্ঞতা আছে । সে ভুত পেত নিয়ে গবেষনা আর টুকটাক লেখালেখি করে ।





রাত ৮টা বেজে গেছে । ওরা ভেতরে ঢোকার জন্ন্য প্রুস্তুতি নিচ্ছে ।

সবুজ ঃ দুপুর তুই এতো বিশাল ব্যাগ নিয়ে এসেছিস এখন এটা নিয়ে কি ভিতরে ঢুকবি নাকি ?

দুপুর ঃ হ্যা । আমি এই ব্যাগে কিছু জিনিস পত্র এনেছি

সবুজ ঃ কি এনেছিস ?

দুপুর ঃ এটা এডভ্যঞ্চার ব্যাগপ্যাড । এখানে ৪টা ছুরী , ২টা গান , ৪টা লাইট , ম্যাচ , কিছু বিস্কিট ,ফাস্ট এইড বক্স আছে । শুনেছি এখানে যারা ঢুকে তারা নাকি কেঊ ফিরে আসতে পারে না । যদি সত্যি ওই রকম কিছু হয় তাহলে এগুলো কাজে লাগতে পারে ।

হিমেল ঃ মানে ? এইসব কি সত্যি নাকি ?

দুপুর ঃ যতদুর শুনলাম এই প্রজন্ত ৪জন এর ভিতরে ঢুকেছে । তারা কেউ এখন প্রজন্ত ফিরে আসে নি ।

হিমেল ঃ তার মানে কি আমরা মরতে যাচ্ছি ? আমি যাবো না ভাই (কাদো কন্ঠে)

রাজিব ঃ সালা তুই যাবি না তোর ঘারে যাবে ।

শাওন ঃ দুপুর তুই ওদের ভয় দেখায়তেছিস কেন গাধা ?

দুপুর ঃ নানা মানে , বলে রাখছি আরকি । যদি এমন কিছু হয় ।

জামান ঃ ওই তুই থামবি ? নাকি তোর মুখ সেলাই করে দিব ?

দুপুর ঃ ঠিক আছে । আমাদের কাছে ৪টা লাইট আছে । হিমেল , সজল , জুনায়েদ আর রাজিবের কাছে লাইট গুলো থাক । সাওন ভাই আর আমার কাছে গান , জামান আর সবুজ এ বড় ছুড়ি ।আমি সামনে থাকবো । আর সবাই ১টা করে লাইটার রাখো ।

শাওন ঃ চল এখন ভিতরে যাই ।

সজল ঃ হ্যা । চলো ।

এরপর ওরা একজন একজন করে ভিতরে ঢুকে ।বাইরে এতখন জোসনার আলো ছিল , কিন্তু এখন ভিতরে কোন আলো নেই । হিমেল প্রথম লাইট জালায় । তারপর সবাই । আকাবাকা পথ , অনেক রকম পাথর ছরিয়ে ছিটিয়ে আছে । হটাৎ দুপুর ওদের থামতে বলে । সে ব্যাগ থেকে লাল রঙের ১টা চক পেন্সিল বের করে দেয়ালে দাগ কেটে দেই যাতে বেরুবার সময় তেমন কোন প্রোবলেম এ না পরতে হয় । এইভাবে প্রায় ২ ঘন্টা কেটে যায় হাটতে হাটতে ।পথ যেন শেষ হচ্ছে না । সবাই খুব বিরক্ত হয়ে যায় ।

সবুজ ঃ শাওন ভাই এই পথ শেষ হবে না । চলেন ফেরত যাই ।

হিমেল ঃ হ্যা হ্যা চলো সবাই ।

রাজিব ঃ তোরা কি পাগল হয়ে গেছিস ?

সজল ঃ হ্যা পাগল হয়ে গেছি । কাল রাতে আমার ঘুম হয় নাই । রাত ১০টার বেশি বেজে গেছে । আমি হোটেলে গিয়ে ঘুমাবো ।

শাওন ঃ ঘুমের বাহানা দিস কেন ? বল তোর ভয় লাগছে ।

দুপুর ঃ শাওন ভাই এইদিকে আসো তো । (দুপুর এতোখন গুহার ১টা দেয়ালের পাথর খুটে খুটে দেখছিল)

শাওন ঃ কি হয়েছে ?

দুপুর ঃ আমরা দেয়ালের পাথরটা সরাতে পারলেই গুহার বাইরে যেতে পারবো ।

জামান ঃ (চিৎকার করে)শাওন ভাই , দুপুর , সজল এই দিকে আয় তোরা । তারাতারি আয় ।

দুপুর ঃ এই কি হয়ছে ? চিল্লায়তেছিস কেন ?

জামান ঃ এই দেখ ?

(নিচে ৩টা মানুষের কঙ্কাল পরে আছে )

শাওন ঃ ওহ আল্লাহ ।

জুনায়েদ ঃ আমার মনে হয় আমাদের চলে যাওয়া উচিৎ ।

দুপুর ঃ এই হিমেল কোথায় ?

(ঠিক সেই সময় হিমেলের চিৎকার । সবাই দৌড় দিয়ে ছুটে গিয়ে দেখে হিমেল ১টা বিড়ালের সাথে যুদ্ধ করছে । দুপুর তার ব্যাগ থেকে ১টা লাইট বের করে বিরালের সামনের দিকে গিয়ে জালিয়ে দেই । লাইট থেকে আলো না বের হয়ে আগুন বের হয় । আর আগুন দেখে বিরাল পালিয়ে যায় ।দুপুর গত বছর কক্সবাজারে এক কানাডিয়ান ভুত বিশেষজ্ঞের সাথে দেখা করেছিল । সে এটা দুপুর কে গিফট করেছে )

দুপুর ঃ তুই এখানে একা আসছিস কেন গাধা ?

হিমেল ঃ আমি কংকাল দেখে ভয় পেয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলাম । কিন্তু এখানে এসে দেখি সব রাস্তা বন্ধ । তারপর ১টা বড় ছায়া আমার সামনে এসে কি সব ভাষায় বলতেছিল । আমি পিছন দিকে ঘুরে দৌড় দিতেই ছায়া টা বিরালে রুপ নিয়ে আমার উপর ঝাপিয়ে পরে ।

শাওন ঃ দুপুর এখন ওই পাথর সরিয়ে আমাদের এই গুহা থেকে বের হতে হবে । আর কোন রাস্তা এখন খোলা নেই । তোর ব্যাগে কি কি আছে ?

দুপুরঃ আমার ব্যাগে ১টা তাবু , কিছু খাবার , ফাস্ট এইড বক্স আর কিছু টুকটাক টুলস আছে ।

রাজিব ঃ চলো ভাই আগে আমরা দেয়ালের পাথর সরিয়ে বাইরে যাই আগে ।

দুপুর ঃ হ্যা আসো সবাই সেই চেষ্টা করি ।

( অনেক খন চেষ্টা করার পর তারা পাথর সরিয়ে বাইরে আসে । সবাই খুব ক্লান্ত বাইরে এসে হাফ ছারছে । তখন দুপুর একটু এগিয়ে গিয়ে উৎফুল্ল হয়ে বলে

দুপুর ঃ এই তোরা দেখে যা , না দেখলে মিস করবি । তারাতারি আয় সবাই ।

সবাই কাছে গিয়ে হতবাগ । তারা ১টা উচু যায়গায় আছে আর নিচে যেন ১টা শহর । এক অপুরুপ শহর । এখানে যেন নীল রঙের রোদ খেলা করছে । ছোট ছোট নদ । আহ কি এক প্রকৃতি । এখানে যেন মরেও শান্তি ।

শাওন ঃ তোরা কি কি দেখতেছিস রে ?

জামান ঃ আমি আমার দেখা এই প্রযন্ত যত জায়গা দেখিছি তার ভিতর এটা শ্রেষ্ঠ । এর তুলনা হয় না

শাওন ঃ আর কিছু ?

দুপুর ঃ আমি জানি তুমি আর কি জানতে চাচ্ছো । ওই প্রানি গুলো তো ? যেগুলো নড়ে চড়ে বেড়াচ্ছে ?

শাওন ঃ হ্যা। আচ্ছা এখন আমরা কি  করবো ?

দুপুর ঃ আমার কাছে তাবু আছে । ১টা জায়গা খুজে বের কর আর কিছু শুকনো কাঠ । তারপর ওইখানে তাবু গেরে আগুন জালিয়ে রাত পার করে দেই । সকালে এখান থেকে ফিরে যাওয়ার পথ খোজা যাবে ।

সবুজ ঃ তবে সবাই ঘুমালে হবে না । ৪জন ঘুমাবে আর ৪জন পাহারা দিবে ।

শাওন ঃ দারুন বুদ্ধি ।

এরপর ১টা জায়গা খুজে তাবু গেরে আগুন ধরিয়ে রেস্ট নেয় । আজ রাতে দুপুর , সবুজ , জুনায়েদ আর জামান পাহারা দিবে । কিছুখন পর বাকিরা ঘুমিয়ে পরে ।

সকালে রাজিবের ঘুম ভাংগে পাখির ডাকে ।বাইরে এসে দেখে যে সবাই যে যার মতো ছুটোছুটি করে খেলছে । এত সুন্দর সকাল এর আগে ওরা কেউ দেখে নাই ।

হিমেল এসে দুপুরের কাছে বলে দোস্ত খিদা লাগছে । তোর কাছে না বিস্কিট আছে ?  আমাকে দে ।

শাওন ঃ এই সকাল দেখার পর ও তোর খুদা লাগে ? আমার তো এই প্রকৃতি দেখে পেট ভরে গেছে । দুপুর বলে আসো আমরা সবাই মিলে কিছু খেয়ে নেই । রাতে কারো কিছু খাওয়া হয় নাই ।

খাওয়া শেষে

দুপুর ঃ শাওন ভাই আমাদের খাবার খুব সিমিত । আমাদের খাবারে খোজ করতে হবে ।

সজল ঃ কেন ? তোর কি এখানে আরো থাকার ইচ্ছে নাকি ? আমরা আর একটু পরই যাবো ।

দুপুর ঃ আমি ওই উচু গাছের উপরে ঊঠেছিলাম সকালে । যতদুর দেখলাম , এটা ১টা বৃত্তের মত । আমার মনে হয় কোন সুরঙ্গ পথ ছারা আমাদের বের হওয়া মুশকিল । আর পথ খুজে বের করতে কতদিন সময় লাগে কে জানে ।

সবুজ ঃ দুপুর ঠিক বলেছে শাওন ভাই ।

শাওন ঃ আমরা এখন পথ আর খাবার খুজবো । ২টা টীম হয়ে ।

দুপুর ঃ ভাইয়া আমার মনে হয় আমরা একসাথেই থাকি । তাহলে মনোবল কমবে না ।ভয় ও লাগবে না

এরপর তারা খুজতে বের হয় । তাবু আগের জায়গায় ই থাকে । সারাদিন খুজেও ওরা কিছু পায় না । তবে খুব আনন্দ করে ওরা । নিল পানির ঝরনায় ওরা গোসল করে । গাছ থেকে পেরে কলা খায় । আরো বিভিন্ন রকমের ফলমুলের অভাব নাই । হরেক রকমের পাখি । ওরা সব চেয়ে বেশি অবাক হল যে তারা ডায়নাসোর দেখেছে । ওরা প্রথমে বিস্সাশ করতে পারছিল না যে এটা ডায়নাসোর । একজন আরেকজন কে চিমটি কেটে সিঊর হয়েছে যে তার সত্যি দেখছে ।তার মানে ওরা এখন এমন ১টা জায়গায় আছে যেখানে এর আগে কোন মানুষ আসে নাই । আচ্ছা ওরা বের হয়ে যখন সবাই কে এই জায়গার কথা বলবে , সবাই আসবে । তখন ওরা বিশ্বে ফেমাস হয়ে যাবে । কিন্তু ওড়া কি পারবে বাইরে যেতে ?

হাটতে হাটতে তাবুর কাছে এসে গেছে । একি অবাস্থা ? তাবু টা ভেংগে চুরমার । মাটিতে পায়ের চিন্হ দেখে বোঝা গেল কোন বড় ধরনের প্রানি এখানে আক্রমন করেছে । এমন সময় হটাত পিছন থেকে গোঙ্গানির শব্দ । পিছনে ফিরতেই ওদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে ২টা বিশালাকার বিড়াল । জুনায়েদ আর শাওনের ঊপর পরে ওদের আচরাতে থাকে । জামান আর রাজিব তাদের পিঠের পিছন থেকে গান বের করে ২টা কে গুলি মারতেই লূটিয়ে পরে মাটিতে । দুপুর ব্যাগ থেকে এইড বক্স বের করে সবাই কে ওয়াস করে দেই । তারপর তারা সিদ্ধান্ত নেই এখান থেকে সরে সেফ কোন জায়গায় গিয়ে তাবু গারবে আবার । তাবু কে যদিও মেরামতের বেপার আছে । সন্ধার আগে ছোট ১টা পাহারে তাবু গারে ওরা । তারপর নিজেদের ভিতর গল্প সুরু করে । অনেক খন পার হয়ে যায় । খুব বিপদের ভিতর আছে জেনেও কেনো জানি আলাদা ১টা আনন্দও কাজ কপছে ভিতরে । গান নাচ সবই করছে ওরা । হটাৎ হিমেল বলল দেখ ওইখানে কি জেন হচ্ছে । অনেক মানুষের মত দেখা যাচ্ছে । সবাই এগিয়ে এসে দেখলো । আরে এখানে তো মনে হচ্ছে কোন অনুষ্টান হচ্ছে । চল কাছে গিয়ে দেখি , বলল হিমেল ।

দুপুর ঃ হিমেল তুই বলছিস কাছে গিয়ে দেখতে ? তোর এত সাহশ আছে ?

হিমেল ঃ থাকবে না কেন ? না থাকলে কি আর এখানে এসেছি ?

শাওন ঃ চল একদম কাছে গিয়ে দেখব ।

এরপর ওরা ণীল নদির পানির ধার দিয়ে হেটে এগিয়ে গেল । কি আজিব মনে হচ্ছে যেন পানির ভিতর থেকে নীল আলো বের হচ্ছে । চারিদিক টা নীল ণীল । দুপুর খুব খুশি , কারন ওর নীল খুব পছন্দের । ওরা একদম কাছে চলে এলো । এই মানুষ গুলো খুব ছোট । শুধু ১টা নেংটি পরে আছে । শরিরে আর কিছুই নাই । তাদের আজ কোণ অনুষ্ঠান চলছে । নাচ আর গান বাজনা চলছে । বোঝা যাচ্ছে তারা এখনো আদিম জুগে বাস করছে । দুপুররা খুব মোনযোগ দিয়ে দেখছিল । হটাৎ পেছন থেকে ১৫/২০ জন বেটে মাণুষ ওদের চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলে ।দুপুরড়া ধরা না দিয়ে ওদের সাথে মারামারি তে লেগে পরে কারন ওদের অস্ত্র গুলো খুব নিন্ম মানের মনে হয়েছিল । কিন্তু ভুল । অস্ত্র যেমনি হোক ওরা খুব বুদ্ধিমান আর শক্তিশালি । খুব সহজেই দুপুরদের বেধে ফেলে । বাশে ঝুলিয়ে নিয়ে যায় ওদের গোত্রে । দুপুররা বেটেদের কথা বুঝতে পারে না । কিন্তু এইটুকু বুঝতে পারে যে ওরা দুপুরদের মেরে ফেলতে চাইছে ।

দুপুর ঃ শাওন ভাই কে জেনো আসছে । ঢোল বাজিয়ে । মনে হয় ওদের রাজা আসতেছে ।

শাওন ঃ তুই কথা কম বল । একটু পরে আমরা মারা যাবো সেই চিন্তা কর । আল্লাহের কাছে মাফ চা ।

রাজিব ঃ ঐ দেখো রাজা আসছে । রাজা তো আমাদের মত মানুষ । সে কি কথা বলতে পারে ?

দুপুর ঃ এই এই লোকটা কে আমার চেনা চেনা লাগছে ।

সজল ঃ তোর তো সবই চেনা চেনা লাগে ।

রাজা কাছে এসে একবার ওদের দেখলো । তারপর ওদের কাছে গিয়ে কি সব ভাষায় বলল সেটা ওরা কেউ বুজলো না ।কথা শেষ করে রাজা ওদের কাছে আসে ।

সজল ঃ আপনি কি কোন কথা বলতে পারেন ?

(রাজা কোন উত্তর দেই না , ওদের সবার দিকে তাকিয়ে দুপুরের কাছে এগিয়ে যায় )

দুপুর ঃ আপনাকে আমার চেনা চেনা লাগছে ?

রাজা ঃ আমি এলচিন ক্লাফ । তোমার সাথে আমার কক্সবাজার দেখা হয়েছিল দুপুর ।

দুপুর ঃ হ্যা হ্যা মনে পরেছে । তাহলে প্লিজ দিন না আমার বাধন খুলে । আমার খুব চুলকাচ্ছে ।

( রাজা বেটেদের কাছে গিয়ে কি জেন বলল , তারপর বেটেরা এসে ওদের বাধন খুলে দিল )

দুপুর ঃ আপনি এখানে কিভাবে ?

রাজা ঃ আমরা ৪জন এখানে আসার জন্ন্য গুহায় ঢুকেছিলাম , কিন্তু এই বেটেদের প্রেত পাহারাদার আমার আর ৩ বন্ধু কে মেরে ফেলে । আমি প্রেত সাধনা দিয়ে কোন রকম বেচে আসি ।

শাওন ঃ তার মানে গুহায় যে ৩টা কঙ্কাল দেখলাম ওইগুলা আপনার বন্ধুদের ।

রাজা ঃ হ্যা ।

দুপুর ঃ তারপর আপনি ওদের রাজা হলেন কিভাবে ?

রাজা ঃ এখানে ঢোকার পর ওদের রানি কে ডায়নাসোরের হাত থেকে আমি বাচিইয়ে দেই তারপর সে আমাকে বিয়ে করে । আর তারপর আমি এখানকার রাজা ।

জুনায়েদ ঃ স্যার আমরা এখান থেকে চলে যেতে চাই ।

রাজা ঃ তোমরা যদি চলে যেতে চাও তাহলে আমি সে ব্যাবস্থা করে দিব । তবে আজ রাতে না । এখন এখানে অনুষ্ঠান চলছে । আজ তোমরা অনুষ্ঠান দেখো । রাত থাকো । সকালে যাওয়ার ব্যাবস্থা হবে ।

তারপর সারারাত ওরা নানা ধরনের আনন্দে মেতে থাকে ।মেয়েগুলোর সাথে নাচে । নানা ধরনের পানিয় খায় । দুপুর খেয়াল করে দেখল রাজা কেন যেনো চিন্তিত । সে রাজা কে জিজ্ঞাস করলে রাজা কথা পালটে ফেলে । সকালে ঘুম থেকে ঊঠে দেখে তাদের জন্ন্য ১টা প্যারাশুট রেডি করা । রাজা ওদের নাস্তা করিয়ে প্যারাশুটে ঊঠিয়ে বিদায় দেয় । এই প্যারাসুট তাদের এই বৃত্তের বাইরে ,মানে সভ্য দুনিয়ায় নিইয়ে যাবে । প্যারাসুট এখন অনেক উওরে ঊঠে চলছে । নিচে সমুদ্র দেখা যাচ্ছে । চারপাশ টা খুব সুন্দর লাগছে । ওরা সবাই এই ২টা দিন খুব মিস করছে । তখন জামান বলে উঠলো এই প্যারাশুটের পাওয়ার কমে  যাচ্ছে , এটা তো সমুদ্রের দিকে নেমে যাচ্ছে । হিমেল বলল দুপুর

হিমেল ঃ দুপুর রাজা তোকে এই চিঠিটা দিয়েছে , দেখতো এখানে কিছু আছে নাকি বাচার উপায় ।

দুপুর ঃ চিঠি ?? দে তো দেখি

     প্রিয় দুপুর , আমার বন্ধুদের কে ও আমিই মেরে ওইখানে প্রেত পাহারা রাখছি । তুমি সেই পাহারা ভেঙ্গে এখানে এসোছো । আমি জানি তোমরা খুব ভালো ছেলে । তবুও তোমাদের কে আমার মেরে ফেলতে হলো । কারন তোমরা যদি এখানে থাকতে তাহলে এখানে আমার অধিপত্ত কমে যেতো আর তোমাদের সভ্য সমাজে ছেরে দিলে সব ফাস করে দিতে । আর আমার এই সাম্রাজ্য ধংস হয়ে যেত । তোমাদের আমি সমুদ্রের মাঝে ফেলে দিলাম ।দোয়া করি তোমাদের মৃত্যটা যেন খুব কষ্টদায়ক না হয় ,

এর পর প্যারাশুট পরে যায় সমুদ্রে । ডুবতে থাকি আমরা । আর কিছু খন পরই হয়তো আমি থাকবো ………

এই দুপুর , এই দুপুর ঘুম থেকে উঠ । কে সপ্নে দেখে চিল্লাইতেছিস । উঠ শাওন আর জামান আসছে ।

দুপুর ঃ মা আমি কি এতোখন ঘুমে ছিলাম ?

মা ঃ হ্যা ।

দুপুর ঃ তার মানে আমি মরে যাই নি ? সব সপ্ন ছিল ?

মা ঃ কি সব আবল তাবল  বকতেছিস ? যা ওরা বসে আছে ।

ড্রয়িং রুমে শাওন আর জামান এসেছে ।তারপর দুপুর মুখধুয়ে ওদের কাছে আসে । শাওন আর জামান দুপুর কে বলতে আসে যে তারা সবাই কাল বান্দরবন যাবে দুপুর জেনো রেডি থাকে ।

দুপুর ওদের কথা গুলো শুনে মুচকি হাসে তবে ভিতরে কিন্তু ভয় টা ঠিকই থেকে যায় । তবুও ১টা এডভ্যাঞ্চারের লোভে যেতে রাজী হয় । যদি সত্যি মুরং ভিলেজে এমন কিছু থাকে তাহলে মিস করা যাবে না কিন্তু ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .