রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৭

পিশাচ দম্পত্তি (সব পর্ব একসাথে)

পিশাচ দম্পত্তি
লেখা ঃ প্রে তা ত্তা

ধুর বেটা ভাললাগে না , তুই কি তোর বাসা থেকে নামবি কিনা বলতো ?
দোস্ত এতো রাতে বের হলে বাবা আর বাসায় ঢুকতে দিবে না ।
- ¬তারমানে তুই বের হবি না । আচ্ছা আমি আজ একাই চাদ দেখবো ।
ঐ সালা আমি কি তোর গার্লফ্রেন্ড যে তুই আমাকে নিয়ে বের হবি , আমার বাসার নিচে আয় ।
এই হলো সোহার্থ আর অনিকের কথোপকথন ।সোহার্থ প্রায় রাতেই বের হয় রতের ঢাকা দেখতে । আর সংগী হয় অনিক , যদিও বেশিরভাগ সময়ই অনিচ্ছাকৃত । আজও বের হয়েছে । অনিকের বাসার সামনে ।
অনিক ঃ আসতে এতো সময় লাগে ?
সোহার্থ ঃ তুই তোর বাসা থেকে নামছিস আর আমি ১৭টা বাড়ি পার করে এসেছি ।চল সামনে যাই ।
অনিক ঃ আচ্ছা আজ হটাৎ আবার বের হলি কেন ? মন খারাপ নিশ্চয় ?
সোহার্থ ঃ হুম । বিড়ি আনছিস ?
অনিক ঃ হ্যা । আব্বুর একবন্ধু আব্বুওকে ১ কার্টুন সিগারেট গিফট করছে । ঐখান থেকে ১প্যাকেট নিয়ে আসছি ।
সোহার্থ ঃ এইতো আমার গুড গার্ল ।
অনিক ঃ ঐ হারামী আমি গুড গার্ল ? ……… আচ্ছা মন খারাপ কেন আগে সেটা বল ?
সোহার্থ ঃ সাবরিনের সাথে ঝগরা হয়েছে । ব্রেকাপ ।
অনিক ঃ আবার । এবার দিয়ে ৬৪বার হলো । এইবার আর আমি মিটমাট করতে পারবো না ।
সোহার্থ ঃ তোর মিটমাট করতে হবে না । চল আজ সাবরিন দের বাসায় ঢেল মেরে জানলার কাচ ভাংগবো ।
অনিক ঃ সত্ত্যি দোস্ত । এইধরনের বিটলামি করতে আমার সেই লাগে । তাইলে চল ।
এরপর ২ বিটল সাবরিন দের বাসার সামনে গিয়ে হাজির হয় । ইটের ঢিল মেরে ভেঙ্গে ফেলে ২তালার সাবরিনের বাবার রুমের জানালা । টের পেয়ে দারোয়ান বেশ খানিক দৌ্রের উপর রাখে সোহার্থ আর অনিককে । সাবরিনের বাবা আজ সাবরিনকে বলে দিয়েছে যে সে জেনো আর সোহার্থের সাথে কোন সম্পর্ক না রাখে । সোহার্থ বলতে গেলে এতিম , বাবা মা অনেক আগেই মারা গিয়েছে আর চাচা সব সম্পত্তি নিজের নামে করে নিয়ে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে সোহার্থকে । তাই সাবরিনের বাবা কোন এতিম ছেলের হাতে তার মেয়েকে দিবে না । আর সাবরিনও বাধ্য সন্তানের মত ব্রেকয়াপ করে । তবে মনে হয় না সে সোহার্থের সাথে কথা না বলে থাকতে পারবে । ২জনই তো ২জনকে অনেক ভালোবাশে ।
অনিক ঃ দোস্ত আর দৌড়াতে পারবো না রে । একটু থাম প্লিজ ।
সোহার্থ ঃ আমিও ।
অনিক ঃ তোর ফোন বাজে ।
সোহার্থ ঃ দারা সাবরিন ফোন দিছে ।
হ্যালো ব্রেকাপ গার্ল
সাবরিন ঃ তুমি এইকাজ টা কেন করলা ?
সোহার্থ ঃ আমি আবার কি করলাম ?
সাবরিন ঃ কি করলাম মানে ? আমি বারান্দায় বসে সব দেখেছি । এইটা ঠিক করো নাই ।
সোহার্থ ঃ যা করছি ভালো করছি ।
সাবরিন ঃ আন্ডা ভালো করছেন আপনি ? অনেক রাত হয়েছে , বাসায় যাও । কাল লেকে যাবো , দেখা হবে ।
সোহার্থ ঃ জি মহারানী ।
ফোন টা কেটে পকেটে রাখে সোহার্থ ।
অনিক ঃ কি মহারাজ , অভিমান পর্ব শেষ ?
সোহার্থ ঃ হুম । চল বাসায় গিয়ে ঘুমাবো ।
অনিক ঃ হুম । আজ তোর মেসে থাকবো । বাসায় গেলে বাপে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবে ।
হেটে যাচ্ছে ২জন । এমন সময় পিছনে চিৎকারের শব্দ শুনতে পায় ওরা । চিৎকারের উৎস খুজতে পিছনে দৌড় দেয় ওরা ২জন । বুঝতে পারে পাশের গলি থেকে আসছে আর্তনাদ । ঢুকে পরে গলিতে । গলির শেষ মাথায় দেখতে পায় , যা দেখে সেটা দেখে নিজের চোখকে বিশ্বআস করতে পারছে না । হাত পা কাপছে । ওদের দেখে সামনে ২জন পালিয়ে যায় । এগিয়ে যায় সোহার্থ আর অনিক । দুজনেরই হাত পা কাপছে । চিৎকার বন্ধ হয়ে গেছে । সামনে পরে আছে ক্ষত বিক্ষত একটি নথর দেহ । একটু আগে ২জন লোক এই লাশ থেকে মাংশ ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছিল ।
অনিক ঃ দোশ্ত এখানে আর একমুহুর্ত ও থাকা ঠিক হবে না । চল ।
সোহার্থ ঃ কি বলিশ তুই এইসব > একটা লাশ এভাবে রেখে চলে যাবো ?
অনিক ঃ হ্যা । কারন সে মৃত । বেচে থাকলে কিছু চেষ্টা করতাম । চল এখন । এখানে থেকে নতুন করে কোন বিপদে পরতে চাই না ।
এর পর চলে আসে তারা । বাসায় এসে বমি করতে থাকে অনিক । পরের দিন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । ।
বিকেলে সাবরিন আর সোহার্থ দেখা করে লেকে ।
সাবরিন ঃ তোমার মন খুব খারাপ তাই না ? আমি তোমাকে ছেরে যাবো না বাবু , আমি তোমাকে ছেরে বাচতে পারবো না ।
সোহার্থ ঃ সাবরিন আমার মনে হয় তোমার বাবাই ঠিক । আমি তোমার যোগ্য না । আমার উচিত তোমার থেকে দূরে সরে যাওয়া ।
সাবরিন ঃ জান প্লিজ এভাবে বলে না । আমার খুব কষ্ট হয় ।
সোহার্থ ঃ কষ্ট হলেও এটাই সত্ত্যি । প্রথম প্রথম এমন লাগবে । পরে ঠীক হয়ে যাবে ।
কথাগুলো বলেই সোহার্থ উঠে চলে যায় । সাবরিন কিছু খন একা একা কেদে ফিরে যায় বাসায় ।
রাতে সুস্থ হয়ে উঠে অনিক ।বাসায় নিয়ে আসে ।
পরেরদিন
দুপুর ২টা বাজে । অনিক ফোন দেয় সোহার্থকে ।
অনিক ঃ দোস্ত পত্রিকা পরেছিস ?
সোহার্থ ঃ না। কেনো ?
অনিক ঃ পত্রিকায় দেখ , শিরোনামে এসেছে * নগরীতে আরো ৪টি সহ মোট ৯টি বিভৎস লাশ *
সোহার্থ ঃ তাই কি বলিশ এই সব ?
অনিক ঃ ময়না তদন্ত করে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না যে কিভাবে মানুষ গুলির এই হাল হলো । কিন্তু আমরা তো জানি ।
সোহার্থ ঃ তুই আমার বাসায় আয় ।
অনিক ঃ আচ্ছা আসতেছি ।
রাস্তায় আসার সময় একটা মেয়ের সাথে পরিচয় হয় অনিকের । অনিক সচরাচর মেহেদের সাথে কথা বলে না । কিন্তু কেনো জানি আজ হটাৎ করে এই মেয়েটার সাথে যেচে অনেক কথা বললো । বন্ধুত্ব হয়ে গেলো ২জনের ।
সোহার্থের মেসে চলে এসেছে অনিক
অনিক ঃ দোস্ত জানিশ আজ তো আকাশের পরি মাটিতে নেমে এসেছে ।
সোহার্থ ঃ কেন তোম পরিমনি কি ছিনেমা করা ফেলে রেখে কোমর দুলিয়ে তোর সাথে নাচতে এসেছে ?
অনিক ঃ আরে না । মেয়েটির নাম আরাত্রিকা ।
সোহার্থ ঃ আরাত্রিকা ? এটা কোন মানুষের নাম ?
অনিক ঃ নাহ , এটা তো পরির নাম ।
সোহার্থ ঃ তুই কি মেয়েটার প্রেমে ট্রেমে পরিছিস ?
অনিক ঃ হ্যা দোস্ত ।
সোহার্থ ঃ শালা তুই ও শেষ । আচ্ছা যেটা বলতে চাই ছিলি ।
অনিক ঃ ওহ হা আ। মানুষ গুলোকে কোন জানোয়ার মেরে খাচ্ছে । দোস্ত আমি খুব রোমান্টিক মুডে আছি সো আজ আর এইসব বলে মন খারাপ করতে চাচ্ছি না । আমি চলে যাই কাল কথা হবে ।
সাবরিন বেশ কয়েকবার ফোন দেই সোহার্থের ফোনে কিন্তু ফোন পিক করে না । রাতে ১টা এসএমএস পাঠায় সাবরিন * তুমি এমন করতে থাকলে হয়তো আমি মারায় যাবো , প্লিজ আমাকে বাচাও শোনা *
এসএমএস পরে বেশ কিছুখন কাদে সোহার্থ , আর ভাবে নিজের অযোগ্যতার কথা । একসময় ঘুমিয়ে পরে । খুব ভোড়ে অনিক সোহার্থের মেসে আসে । ঘুম থেকে উঠায় সোহার্থকে ।
সোহার্থ ঃ কি রে এতো সকালে তুই ?কি হয়েছে ?
অনিক ঃ দোস্ত , সাবরিন ।
সোহার্থ ঃ কি হয়েছে সাবরিনের ? (বলেই ফোন হাতে নেয় সাবরিনকে ফোন দেওয়ার জন্য)
অনিক ঃ সাবরিন মারা গেছে ,
সোহার্থ ঃ হোয়াট ? ও সুইসাইড করেছে ।
অনিক ঃ না । বাসার ছাদে ওর ক্ষত বিক্ষত লাশ পরে ছিল । আমাকে কথা ফোন দিয়ে রাতে জানায় , তারপর আমি ওদের বাসায় গিয়ে শিওর হই ।
সোহার্থ দৌড় দেয় , অনিক ও পিছু পিছু ।অনিক ঃ না । বাসার ছাদে ওর ক্ষত বিক্ষত লাশ পরে ছিল । আমাকে কথা ফোন দিয়ে রাতে জানায় , তারপর আমি ওদের বাসায় গিয়ে শিওর হই ।
সোহার্থ দৌড় দেয় , অনিক ও পিছু পিছু ।
সাবরিন দের বাসায় এসে ওর লাশ দেখে কান্নায় ভেংগে পরে সোহার্থ । টেনে হিচরে রক্ত মাংশ খেয়েছে জানোয়ারটা । জানাজা দাফন শেষ করে সোহার্থ রুমে ফিরে । বার বার কান্না করছে সে , সারাদিন না খেয়ে আছে । সন্ধ্যার পর কথা আসে । অনেক রিকোয়েষ্ট করে কিছু খাবার খাওয়ায় সোহার্থকে । কথা সোহার্থকে মনে মনে ভালোবাসে , যদিও সোহার্থ সেটা জানে না । রাত হলে চলে যায় কথা । তারপর বারান্দায় বসে সারারাত সিগারেট খায় সোহার্থ ।
সকাল সকাল চলে আসে অনিক সোহার্থের কাছে সাথে আসে আরাত্রিকা ।
অনিক ঃ দোস্ত নাস্তা করেছিস ?
সোহার্থ ঃ না । ফ্রিজে ব্রেড এর পুডিং রাখা আছে খেয়ে নে ।
অনিক ঃ দোস্ত ও আরাত্রিকা ।
সোহার্থ ঃ নাইস টু মিট ইউ আরাত্রিকা।
আরাত্রিকা ঃ আমি সব জানি , গতকাল আপনার .........।।
সোহার্থ ঃ জি । আচ্ছা বসুন । অনিক উনাকে নাস্তা দে ।
বলে সোহার্থ বারান্দায় চলে যায় , সিগারেট ধরিয়ে টানোট থাকে ।অনিক আর আরাত্রিকা চলে যায় । তার কিছুখন পরেই কথা আসে । গত রাতের মতই অনেক চেষ্টার পর সোহার্থকে নাস্তা করায় । তারপর কথা চলে যায় । দুপুর ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পরে । সেই ঘুম ভাংগে বিকেলে । ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে রবিন্দ্র সরবরে আসে সোহার্থ ।
জায়গাটা তার অনেক পছন্দের । সাবরিনের ও তাই ছিল । এক কোনায় বসে সিগারেট খাচ্ছে সোহার্থ । হটাৎ পিছন থেকে
আরাত্রিকা ঃ কেমন আছেন আপনি ?
সোহার্থ পিছনে তাকিয়ে
সোহার্থ ঃ জি ভাল । আপনি এখানে ?
আরাত্রিকা ঃ এইতো এক বন্ধুর সাথে আসছিলাম । তারপর ও ওর বিএফের সাথে সামনে গেলো আর আমি একা একা হাটছিলাম ।
সোহার্থ ঃ ওহ । আপনার বিএফকে নিয়ে আসতেন ।
আরাত্রিকা ঃ আমার বিএফ নাই । আচ্ছা আমি কি আপনার পাশে বসতে পারি ?
সোহার্থ ঃ বসেন ।
আরাত্রিকা ঃ আপনার মন খুব খারাপ তাই না ?
সোহার্থ ঃ হুম ঃ
আরাত্রিকা ঃ আচ্ছা এমন যদি হয় যে ওই পিশাচ আপনাকে আর আমাকেউ সাবরিনের মত মেরে ফেলে , দুনিয়ার সব মানুষকেই মেরে ফেলে । এমনটা কি হতে পারে ?
সোহার্থ ঃ কখনই না । তার আগেই আমি ওদের খুন করে ফেলবো ।
আরাত্রিকা ঃ হাহাহাহা তাই । আপনি পারবেন ওদের সাথে ।
এভাবেই কিছুখন কথা বলে ওরা তারপর চলে যায় একসময় । রাতে রুমে ফিরে দেখে কথা এসে বসে আছে ।
কথা ঃ দুপুরে খেয়েছিলে ?
সোহার্থ ঃ নাহ ।
কথা ঃ কেনো খাওনি ?
সোহার্থ ঃ ভালো লাগছিল না ।
কথা ঃ আচ্ছা আমি খাবার নিয়ে এসেছি । খেয়ে নাও ।
সোহার্থ ঃ এখন খাবো না , খেতে ইচ্ছে করছে না ।
কথা ঃ আমি খাইয়ে দেই ?
সোহার্থ ঃ না থাক ।
কথা ঃ না তোমাকে আমি এখন খায়িয়ে দিব আর তোমাকে খেতে হবে ।
কথা সোহার্থকে খায়িয়ে দেয় । তারপর চলে যায় । যাওয়ার আগে ১টা চকলেট বক্স দিয় যায় আর বলে চকলেট গুলো খেয়ে নিতে ।
রাত অনেক হয়েছে । বারান্দায় বসে আছে সোহার্থ । নির্জন চারিপাশ । মাঝে মাঝে দু একটি গাড়ি আর হটাৎ হটাৎ মানুষ যাচ্ছে । কিছুখন পর সোহার্থের মনে হয় কেউ একজন চিৎকার করছে । কে করছে চিৎকার দারিয়ে সেটা খোজার চেষ্টা । বাসা থেকে নিচে নামে সোহার্থ । রাস্তায় গিয়ে দেখে ৩জন পুলিশ কি জেন কথা বলছে আর খুব চিন্তিত ।
সোহার্থ ঃ ভাই একটু আগে এখানে চিৎকারের শব্দ পেলাম । কি হয়েছে ?
একজন পুলিশ ঃ ভাই পত্রিকায় তো নিশ্চয় পরেছে যে কয়েকদিন যাবত নগরী তে লাশ পাওয়া যাচ্ছে ।
সোহার্থ ঃ হ্যা ।
পুলিশ ঃ আসলে এক আজব দানব এসেছে শহরে । ওরা মানুষ খাচ্ছে । আমারা নিজের চোখে দেখছি । ঐ দেখেন
সোহার্থ তাকিয়ে দেখে ২জন মানুশ আকৃতির জানোয়ার যাদের চোখ আর মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে , হাতের নখ বড় , এলো মেলো চুল একজন মানুশের গলায় কামর দিয়ে রক্ত খাচ্ছে ।
সোহার্থ ঃ আরে লোকটা দাপাচ্ছে , বেচে আছে এখনো । চলেন লোকটাকে বাচাই ।
পুলিশ ঃ আরে না । আমাদের পরে আক্রমন করবে ।
সোহার্থ ঃ কিচ্ছু হবে না । আপনারা আমার সাথে আসুন তো ।
তারপর সোহার্থ হাতের সিগারেট জালিয়ে চিৎকরে ওইদিকে ছুটে যায় । পিশাচ ২টো সোহার্থের দিকে তাকিয়ে থাকে , পুলিশ ৩টাও শিপনের পিছনে ছুটে আসে । পিশাচ ২টো আস্তে আস্তে হেটে গিয়ে অন্ধকারে মিশে যায় ।
সোহার্থ লোকটিকে নিয়ে হসপিটালে ভর্তি করে । অবস্থা আসংকা জনক ।
পিশাচ ২টো কোথায় আছে জানতে ইচ্ছে করে না আপনাদের ? কি বা করে তারা ? আচ্ছা আমিই বলছি ।
ট্যানারীপট্টির একটা ডোবার পাশে থাকে রাতে । দিনে মিশে যায় মানুষের সাথে সাধারন মানুষের সাথে । তবে রাত হলে সেই ছদ্দরুপ আর ধরে রাখতে পারে না । ফুটে উঠে পিশাচের রুপ । নাতাশা আর নেহাল পিশাচ দম্পতি । পৃথিবীতে তাদেরকে পাঠানো হয়েছে তাদের রাজ্য থেকে । রাজ্যের নাম কলংকপুর । সেখানকার রাজার পুত্র নেহাল , আর নাতাশা নেহালে স্ত্রী ।
নেহাল ঃ আজ আর পেট পুরে খেতে পেলাম না ।
নাতাশা ঃ হ্যা । লোকটা এসে সব নষ্ট করে দিল ।
নেহাল ঃ একটু পরেই ভোড় হবে । ধুর আজ সারাদিন খিদে পেটে থাকতে হবে । ব্যাটার খোজ খবর নিতে হবে আজ । ঘাড় মটকে খাবো বদের হাড্ডীটার ।
নাতাশা ঃ পরের টা পরে দেখা যাবে । এখন বলো কিভাবে আমরা এই দেশটাকে আমাদের আস্তানা বানাতে পারবো ?
নেহাল ঃ বাবার সাথে দেখা করতে হবে । আচ্ছা শুনো , আমি কাল কলংকপুরে যাই । রাত হওয়ার আগেই চলে আসবো ।
নাতাশা ঃ আচ্ছা ঠিক আছে ।
রাতে আর ঘুম হয়নি সোহার্থের । সারারাত ভেবেছে পিশাচ রা কত কষ্ট দিয়েই না মেরেছে সাবরিন কে । এই ব্যাটাদের একটা ব্যাবস্থা তাকেই করতে হবে , এই সপথ নেই সে । অনিক কে ফোন দিয়ে আসতে বলে । অনিক আসে , সাথে আসে আরাত্রিকা ।
অনিক ঃ দোস্ত কি রে এতো জরুরী তলব ?
সোহার্থ ঃ তুই আজ পত্রিকা পরিস নি ?
অনিক ঃ না আজ এখনো পরা হয় নাই ।
সোহার্থ ঃ এই প্রযন্ত ১০৭ জনের জীবন গেছে এই পিচাশের থাবায় । আমাদের কিছু ১টা করতে হবে ।
অনিক ঃ কি করবো আমরা ?
আরাত্রিকা ঃ কি বলো এই সব । প্লিজ তোমরা এই সবে যাবে না । তোমরা তো পারবে না ওদের সাথে ।
সোহার্থ ঃ অবশ্যই পারবো , চেষ্টা করলে বৃথা যাবে না ।
অনিক ঃ আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোর সাথে আছি । ঐ এটা কি ?
সোহার্থ ঃ চকলেট বক্স । কাল রাতে কথা দিয়ে গেছিল ।
অনিক চকলেট বক্সটা খুলে চকলেট বের করে । চকলেটের সাথে ১টা চিঠিও বের হয় , যেটায় কথা তার ভালোবাসার কথা লিখে রাখে । চিঠিটা পরে অনিক সোহার্থ কে জানায় । চিঠি পরার পর থেকেই আরাত্রিকার মন খারাপ ।
চলে যায় অনিক আর আরাত্রিকা । সোহার্থ ভাবতে থাকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায় এই পিশাচদের কাছে থেকে ।
পরেরদিন রাতের কথা । সোহার্থ ১টা বই নিয়ে এসেছে নিলক্ষেত থেকে । পিশাচ সম্পর্ক্কে কালোজাদুর ১টা বই । বারান্দায় লাইট জালিয়ে বইটা পরছিল । এমন সময় আবার সেই চিৎকার । তবে এবার বেশ কয়েকজনের আর চিৎকার টা এই বিল্ডিং থেকেই আসছে । দৌড় দিয় নিচে নামে সোহার্থ । একদম নিচতালার বারান্দায় ছটফট করতে করতে মারা গেলো ১টা ছেলে । পাশে বসে কাদছে তার অন্য রুমমেট রা একটু পরে পাসের বাসা থেকে আবার সেই চিৎকার । এর পর সোহার্থ অন্যদের সংগে নিয়ে ছুটে যায় পাসের বাড়িতে । ওদের দেখে পিচাশ রা পালিয়ে যেতে থাকে , সোহার্থও পিছনে দৌড় দেয় । কিছুদুর যাওয়ার পর হারিয়ে যায় পিচাশরা । সোহার্থ খুজতে থাকে কিন্তু আসে পাশে সুধুই অন্ধকার । হটাৎ পিছন থেকে ১টা পিচাশ এসে কিছু ১টা দিয়ে আঘাত করে সোহার্থের মাথা । অজ্ঞ্যান হয়ে যায় সে । কুৎসিত হাসিতে হেসে উঠে ১টা পিচাশ । এখনি সে সোহার্থের রক্ত দিয়ে রক্ত স্নানে মেতে উঠবে , শরীরের কাচা মাংশ ছিরে খাবে । কাচা গিলবে সোহার্থের কলিজা ।
হটাৎ পিছন থেকে ১টা পিচাশ এসে কিছু ১টা দিয়ে আঘাত করে সোহার্থের মাথা । অজ্ঞ্যান হয়ে যায় সে । কুৎসিত হাসিতে হেসে উঠে ১টা পিচাশ । এখনি সে সোহার্থের রক্ত দিয়ে রক্ত স্নানে মেতে উঠবে , শরীরের কাচা মাংশ ছিরে খাবে । কাচা গিলবে সোহার্থের কলিজা । নেহাল ধির পায়ে এগিয়ে যায় সোহার্থের দিকে । এখনি রাক্ষসী থাবা দিবে নেহাল , আর সেই মুহূর্তে নাতাশা এসে নাহালকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ।
নাতাশা ঃ তুমি ওর কোন ক্ষতি করতে পারবে না ।
নেহাল ঃ কেনো পারবো না ।
নাতাশা ঃ পারবে না বলছি তাই পারবে না ।
নেহাল ঃ এর জন্ন্য আমি আজ দিয়ে ২দিন শিকার মিস করছি । আজ ওকে খাবোই আমি । (বলে নেহাল ওকে খেতে যায় )
নাতাশা ঃ (নেহালকে আবার ধাক্কা দিয়ে ফেলে) তুমি ওর কিচ্ছু করতে পারবে না ।
নেহাল ঃ শাকচুন্নির কি মাইনষের জন্য প্রেম জাগছেনি ?
নাতাশা ঃ প্রেম কিনা জানিনা । ওর কোন ক্ষতি হতে দিবনা আমি ।
নেহাল ঃ নাতাশা সাবধান । ওল্টা পালটা কিছু কুরলে তোকে মেরেই ফেলবো আমি ।
নেহাল আর নাতাশার কথা কাটাকাটির সময় পুলিশ চলে আসে । দেখে পালিয়ে অন্ধকারে মিশে যায় পিশাচ দম্পত্তি । পুলিশ সোহার্থকে তুলে নিয়ে হসপিটালে নিয়ে যায় । সকালে সবাই দেখতে আসে । কথাও আসে । কিছুক্ষন আগেই জ্ঞ্যান ফিরেছে ।
কথা ঃ তুমি কেনো এভাবে একা বিপদে পরতে যাও বলতো ?
সোহার্থ কোন উত্তর দেয় না । শুধু মনে মনে বলে * আমার সাবরিনের খুনি কে আমি নিজ হাতে মারবো , যদি মরতে হয় তবুও *
অনিক হাসপাতালের সব বিল মিটিয়ে এসেছে । এখন সোহার্থকে নিয়ে যাবে বাসায় । গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় আরাত্রিকার সাথে দেখা হয় । সেও সোহার্থকে দেখতে এসেছে । আরাত্রিকাকে কথা সহ্য করতে পারে না। মেয়েটা সোহার্থের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে ।
আরাত্রিকা ঃ এখন কি অবস্থা তোমার ?
সোহার্থ ঃ জি ভাল ।
আরাত্রিকা ঃ আপনি শুধু শুধু ওদের সাথে লাগতে যচ্ছেন , আমাদের পক্ষে কি ওদের সাথে পেরে উঠা সম্ভব ?
কথা ঃ মিস আরাত্রিকা , আমার মনে হয় এখন এইসব কথা বলার সময় না । ওর রেষ্ট দরকার ।
আরাত্রিকা ঃ ওহ হ্যা ঠিক । সরি । চলুন ।
এরপর সোহার্থকে বাসায় নিয়ে যায় । বাসায় গিয়ে ঘুম দিয়ে বিকেলের দিকে উঠে । উঠে দুপুরের খাবার খেয়ে সেই বই টা নিয়ে বসে । #পিশাচ । বিকেল থেকে রাত প্রযন্ত বই টা পরে । মনে হয় সারারাতই পরবে ।
ওই দিকে নেহাল আর নাতাশার মধ্যে শুরু হয় ঝামেলা
নেহাল ঃ তোমার সমস্যা টা কি ?
নাতাশা ঃ আমার কোন সমস্যা নেই ।
নেহাল ঃ তাহলে ঐ মানুষটাকে খেতে দিলে না কেন ?
নাতাশা ঃ এমনি । মায়া হচ্ছিল ।
নেহাল ঃ কি !!!!! মানুষের জন্য মায়া ? তোমার লক্ষন আমার ভালো লাগছে না । কালই বাবাকে জানাতে হবে ।
নাতাশা ঃ যা ইচ্ছে জানাও । তবে এখন চলো খাবারের সন্ধ্যানে । আজ তোমাকে আমি এক জায়গায় নিয়ে যাবো । চলো ।
এরপর নাতাশা নেহালকে নিয়ে যায় কথা দের বাসায় । কথা নিজের রুমে টেবিলে বসে পরছিল ।
নাতাশা ঃ নেহাল , আজ ঐ মেয়ে মানুষটা কে খাবো । তুমি থাকো এখানে , আমি ব্যাবস্থা করে তোমাকে ডাকছি

নাতাশা এর পর কথার বাসার দরজা নক করে । কথা নিজেই দরজা খুলে ।
কথা ঃ তুমি এতো রাতে ? আমার বাসা চিনলে কিভাবে ?
আরাত্রিকা ঃ কথা খুব বড় ১টা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে । সোহার্থ ............।।
কথা ঃ কি হয়ছে সোহার্থের ? বলো
আরাত্রিকা ঃ ওকে পিশাচ রা ............ তুমি আমার সাথে চলো ।
কথা ঃ কি । এক্ষনি চলো ।
এরপর কথা আরাত্রিকার পিছনে পিছনে ছুটে চলে । আরাত্রিকা কথাকে ১টা পার্কের ভিতর নিয়ে যায় ।
কথা ঃ এখানে নিয়ে এলে কেনো ? সোহার্থ কোথায় ?
আরাত্রিকা ঃ দারাও , এখানেই ছিল । তুমি এইপাশটা খুজো , আমি এই পাশে খুজি ।
এই বলে ২জন ২দিকে চলে যায় সোহার্থকে খুজতে । একটু পরেই একজন আরেক জনকে দেখতে পায় না ।
কে জেনো কথা পিছনে আসছে । একজন না , ২জন আসছে পায়ের শব্দ তাই বলছে । ধিরে ধিরে তারা সামনে আসে । খুব কুৎসিত চেহারার ২জন । ২জনের চোখ দিয়ে রক্ত ঝরছে । গায়ের পশম গুলো কালো আর বড় বড় ।
কথা ঃ আপনারা কে ? সোহার্থথথথথথথ............ আরাত্রিকাাাাাাাাাাাা বলে চিৎকার করে ডাকে ।
নেহাল ঃ এই মেয়ে চুপ । একদম চিৎকার করবি না । নাতাশা ওর মুখটা বন্ধ করার ব্যাবস্থা করো তো ।
নাতাশা ঃ হ্যা শোনা ।
নাতাশা কথার কাছে আসতে থাকে । কথা দৌড় দেয় । বেশি খন সে দৌড়ে পারে না । নেহাল তার চুল টেনে ধরে । নাতাশা কাছে এসে কথা কে ইচ্ছে মত গালে চর মারে ।
নেহাল ঃ কি করছো তুমি নাতাশা । মানুশদের মত ধিরে ধিরে মারছো কেন ?
নাতাশা ঃ আমার সাধ মিটাতে দাও । ডিস্টার্ব করবে না ।
নাতাশা কথা চল ধরে টেনে ফেলে দেয় । মাথা ইট দিয়ে আঘাত করে । আবার চুল টানলে মাথার চামরা সহ চুল উঠে আসে । চিৎকার করে উঠে কথা ।
নেহাল ঃ তুমি পাগল হয়ে গেছো নাতাশা । চিৎকার শুনে আরো মানুষ জন আসবে । তারপর কাল ও না খেয়ে থাকতে হবে ।
নাতাশা ঃ আচ্ছা আমি ওর কথা বন্ধ করে দিচ্ছি ।
নাতাশা কথা কে মাটিতে শিয়ে ফেলে ওর উপর বসে আবার গালে জোরে জোরে চর মারে , তারপর ওর গলার কাছে মুখ নিউএ প্রথমে ছোট ১টা কাপর দেয় । কথা তখন বুঝতে পারে তার জীবন শেষের দিকে । সে সুধু ১টা কথাই বলে খুব নিচু স্বরে
কথা ঃ আমার সোহার্থের প্লিজ কোন ক্ষতি করো না ।
কথার কথা শুনে নাতাশা যেন আরো ক্ষ্রিপ্ত হয়ে যায় । জোরে করে আরেকটা চর মেরে কথা গলায় কামর দিয়ে তার গলার রগ ছিরে ফেলে । তারপর শুরু করে রক্ত খাওয়া । নাতাশার পর নেহাল খায় কথার রক্ত । রক্ত পর্ব শেষে টেনে ছিরে ছিরে খায় কথার মাংশ এই পিশাচ দম্পত্তি । খাওয়া শেষ হয় আর ভোরের পাখিও ডাকা শুরু করে ।
সকাল সকাল অনিক সোহার্থের মেসে এসে হাজির
সোহার্থ ঃ কি রে আজ আবার কার মৃত্যুর খবর নিয়ে আসলি ?
অনিক ঃ মানে কি ঃ
সোহার্থ ঃ প্রতিদিন ই তো কেউ না কেউ মরছে ।
অনিক ঃ মরছে না, মারছে ।আজ কথা কে শেষ করে দিল ।
সোহার্থ ঃ কিহ ! কি বলিস তুই এইসব ।
অনিক ঃ হ্যা সত্ত্যি । পার্কে ওর ক্ষত বিক্ষত লাশ পরে ছিল । পুলিশ এখন লাশ ওদের বাড়িতে নিয়ে গেছে । চল ।
সোহার্থের চোখে পানি চলে আসে । টিশার্ট টা পরে চলে কথার বাসায় । এইতো গতকাল রাতেই কথার দেওয়া চকলেট বক্সটা খুলে জানতে পারে কথার ভালোবাসার কথা , আর আজ কথা নেই ।
বিকেলে জানাজা শেষ করে রুমে আসে সোহার্থ আর অনিক । ফ্রেশ হয়ে টিভি ওপেন করে অনিক । টিভিতে ব্রেকিং নিউজ ।
** ঢাকায় পিচাশের আক্রমনে একদিনে ৩০জন নিহিত **
সোহার্থ সোহার্থ দেখ টিভিতে ব্রেকিং নিউজ । পিচাশ তো ঢাকা দখল করে ফেলতেছে ।দেখ কি হচ্ছে । পিচাশ গুলো গলায় কামর দিয়ে রক্ত খেয়ে মেরে ফেলছে মানুষ গুলো । আর যারা বেছে যাচ্ছে কোন মতে তারাও নাকি কিছুখন পর পিচাশ হয়ে যাচ্ছে । পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে ।এখন কি হবে ।
সোহার্থ ঃ আচ্ছা আমার বইটা কোথায় ?
অনিক ঃ কোন বই ? আর এখন বই দিয়ে কি করবি ?
সোহার্থ ঃ আরে পিচাশ কাহিনি বই টা । ঐখানে এর থেকে উদ্ধারের সমাধান দেওয়া আছে ।
এর পর অনিক আর সোহার্থ খোজাখুজি করে । টেবিলের উপরেই ছিল বইটা ।
অনিক ঃ এই বইটা ?
সোহার্থ ঃ হ্যা ।
বই টা সোহার্থ হাতে নেয় । পাতা উল্টাতে থাকে । শেষের দিকে ১টা পৃষ্টা তে মনোযোগ দেয় ।
সোহার্থ ঃ এই দেখ অনিক । এখানে সমাধান দেওয়া আছে ।কোন পুরোনো শ্বষান থেকে হাড় যোগার করতে হবে । আর সিদূর লাগবে । আর কাচা লোহার গরা কোন দা দিয়ে পিচাশের মাথার মাঝখানে আঘাত করে মারতে হবে । ও মরে গেলে বাকি গুলা একাই মরে যাবে । হাড় আমাদের পিচাশেড় আক্রমন থেকে বাচাবে , সিদুর দিয়ে চক্র করে পিচাশকে আটকাতে হবে । সিদুরের চক্র থেকে বের হতে পারবে না ।
অনিক ঃ এতে কাজ হবে বন্ধু ?
সোহার্থ ঃ আশা রাখি । আর আসল পিচাশ টার এক কান থাকবে না । আমি ঐ পিচাশ টা দেখেছি । আমাকে ঐ পিচাশটাই মারতে চেয়েছিল ।
অনিক ঃ তাহলে প্রথমে আমাদের এগুলা যোগার করতে হবে । চল এখনি বের হয়ে পরি । যত আগে কাজ টা করতে পারবো তত বেশি মানুষকে বাচাতে পারবো ।
সোহার্থ ঃ পুরান ঢাকায় শ্বষান আছে । আর ঐখানে পুজার শিদুর ও পাওয়া যাবে ।
অনিক ঃ চল তো ।
এরপর বের হয় । তখন সন্ধ্যা পেরিয়ে প্রায় রাত । রাস্তা ঘাট একদম ফাকা ।
অনিক ঃ আমি জিবনে ঢাকার রাস্তা এমন ফাকা দেখি নাই ।
সোহার্থ ঃ এর আগে কখনো পিচাশ দেখেছিস ?
অনিক ঃ না ।
সোহার্থ ঃ এখন তো দেখতেছিস । দেখ সামনে ১টা লোক । চল দেখি তো কি করে ।
অনিক ঃ আগে চল তো পুরান ঢাকায় ।
সোহার্থ ঃ হয়তো কোন বিপদে পরেছে ।
দুজনে এগিয়ে যায় । কাছে যেতে হতবাক হয়ে যায় । লোকটার গলার দিকে কাটা , রক্ত বের হচ্ছে । এদিক ওদিক তাকিয়ে কিছু খুজছে । ১টা কুকুর দেখে তারা করে , কিছু দূর গিয়ে ধিরে ফেলে কুকুরটা কে । তারপর আর কি । কুকুরের রক্ত খায় , মাংশ খায় । অনিক দেখে বমি করে দেয় । কি ভয়াবহ অবস্থা । ওরা ওইখান থেকে সরে যায় । রওনা হয় পুরান ঢাকার দিকে । রাস্তা দিয়ে হেটে হেটে যাচ্ছে । মাঝে মাঝে আরো ২টা পিচাশ দেখতে পায় যারা কিনা মানুষ ছিল । কয়েকবার তারা করে সোহার্থ আর অনিককে ।
শ্বষান এ পোছে যায় । খুব ভুতুরে পরিবেশ ।
সোহার্থ ঃ শোন । হাড় উঠানোর সময় আমাদের আসে পাশে অনেক কিছু আসতে পারে । আক্রমন ও করবে কিন্তু কিচ্ছু হবে না । ভয় পাবি না । ভয় পেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে ।
অনিক ঃ ঠিক আছে ।
সোহার্থ শ্বষান এর যেখানে সৎকার করা হয় সেখানে গিয়ে খুজতে থাকে । অনিক ও এসে খুজে । সোহার্থ ১টা অর্ধ পোড়া হাড় পেয়ে যায় । তুলে নেয় হাতে ।
অনিক ঃ দোশ্ত দেখ চারপাশ থেকে কত কুকুর আমাদের দিকে তেরে আসছে ?
সোহার্থ ঃ ওইগুলা কুকুর না । অতৃপ্ত আত্তা । এই শ্বষানে থাকে ।
অনিক ঃ কি বলিশ তুই এইসব ? এখন কি আমাদের মেরে ফেলবে নাকি ?
সোহার্থ ঃ না , তবে ভয় পাওয়া যাবে না ।
অনিক ঃ আমার তো ভয় করছে
সোহার্থ ঃ আমি তোর সাথেই আছি ভয় পাস না ।
সোহার্থ অনিকের হাত ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে । অতৃপ্ত আত্তা গুলো একটু পর পর বিভিন্ন রুপ ধারন করছে , একবার কুকুর , একবার বাঘ , সাপ , ঘোড়া । হটাৎ বেশ জোরে ঝোরো হাওয়া শুরু হয় । যেন উরিয়ে নিয়ে যাবে ওদের ।
সোহার্থ ঃ দোস্ত আমার হাত শক্ত করে ধরে আগা । ভয় পাইস না , আমাদের কিছুই হবে না ।
অনিক ঃ দোস্ত আমি আর ভয় পাচ্ছি না । চল আগাই , সবাই কে তো বাচাতে হবে ।
দুজনে দুজনের হাত শক্ত করে ধরে । আগাতে থাকে । অনেক বাতাসে এগুতে হয় । বার বার পরে যায় কিন্তু হাত ছারে না । এক সময় শ্বষান থেকে বের হয়ে যায় । বাতাশ কমে যায় । আত্তা গুলো বিরাল হয়ে ওদের পিছু পিছু কিছুদুর আসে ।
অনিক ঃ এবার শিদুর ।
সোহার্থ ঃ আমি ওইটা শ্বষান এর মন্দির থেকে নিয়ে এসেছি । রাখ এটা তোর কাছে ।
অনিক ঃ দ্যাটস মাই গুড বয় । আচ্ছা চল শাখারী পট্টিতে ১টা কামারের দোকান আছে । ওইখান থেকে দা নিয়ে আসি ?
সোহার্থ ঃ চল ।
আবার হাটা শুরু করে । পৌছেও যায় দোকানে । কিন্তু এখন তো রাত দোকান বন্ধ । পাশেই কামারের বাসা সেখানে গিয়ে অনেক কিছু বলে তার বাসা থেকেই ১টা কাচা লোহার কাচি নিয়ে রওনা দেয় ।
বাইরে বের হয়ে দেখে ২টা মানুশী পিচাশ ১টা মানুষকে মেরে তার মাংশ খাচ্ছে । সোহার্থ দের দেখে তাদের দিকে তেরে আসে ।
অনিক ঃ দোস্ত পালা
সোহার্থ ঃ নাহ । দেখি হাড় টা কাজ করে কি না ।
পিচাশ টা প্রায় কাছে চলে আসলে সোহার্থ পকেট থেকে হাড় বের করে । হাড় বের করার সাথে সাথে পিচাশ ২টো পরে যায় । তখনি আবার উঠে পিছন দিকে চলে যায় ।
অনিক ঃ কাজ হয়ছে ।
সোহার্থ ঃ এখন আমরা প্রস্তুত । এখন ওই ২জন আমাদের সামনে আসলে হয় ।
অনিক ঃ হাটতে থাকি । চলে আসবে ।
হাটতে হাটতে চলে আসে সাবরিন দের বাসার পাশে । সেখান থেকে
সোহার্থ ঃ চল দোস্ত সাবরিনের কবরের ঐখানে যাই । ওকে খুব মিস করছি রে ।
অনিক ঃ চল পাগলা ।
সাবরিনের কবরের সামনে আসে । দারিয়ে কিছুখন কাদে তারপর কবর যেয়ারত করে গোরস্থান থেকে বের হয়ে আসে ।
হাটতে থাকে এমন সময় পিছন থেকে একজন সোহার্থের কাধে হাত রাখে
সোহার্থ ঃ কে ? (পিছনে তাকিয়ে দেখে সেই পিচাশ টা যে কিনা এর আগে সোহার্থ কে আগাত করেছিল , ওর মাথায় ১টা লাল দাগ । তার মানে এটাই মেইন পাপি )
নেহাল ঃ আমি নেহাল । পিচাশ রাজ্য কলংকপুরের রাজপুত্র ।
সোহার্থ ঃ ও তুমিই সে , যে কিনা আমাদের শেষ করে দিচ্ছ ?
নেহাল ঃ হ্যা , বলতে পারো । এইতো এখন তোমাদের খাবো ।আরো আগেই তোমাকে খেতাম , কিন্তু আমার বউটা কেনো জানি সেদিন তোমাকে বাচিয়ে দিল ।
সোহার্থ ঃ দেখো আমাদের দিকে আসবে না , তাহলে তোমার খবর আছে ।
নেহাল ধিরে ধিরে এগিয়ে যায় সোহার্থের দিকে , কাছে গিয়ে ফেলে দেয় সোহার্থকে । জাপটা জাপটি শুরু হয় । কামর দিতে যায় সোহার্থের গলায় আর এই সময় নাতাশা এসে নেহালকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ।
নেহাল ঃ আজও তুমি এসেছো ?
নাতাশা ঃ আমি তোমাকে বলেছিলাম যে তুমি ওর কিছু করবে না ।
নাহাল ঃ আমি ওকে খাবো । দেখি তুমি কি করো । ( নেহাল আবার সোহার্থের দিকে এগিয়ে যায়)
নাতাশা এবার নাহালকে পিছন থেকে আঘাত করে । তারপর ২জনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয় । নাতাশা নেহাল কে কাবু করে ফেলে , মাটিতে শুয়িয়ে ফেলে । হটাৎ নেহাল মাটি থেকে ছোট ১টা কাঠের টূকরা নাতাশার পেটে ধুকিয়ে দেয় , ধিরে ধিরে নিস্তেজ হয়ে পরে নাতাশা ।
সোহার্থ পকেট থেকে হাড় টা বের করে নেহালের সামন ধরলে নেহাল ভয়ে পিছনে চলে যায়। সোহার্থ নাতাশার কাছে আসে আর অনিক বুদ্ধু করে শিদুর দিয়ে নেহালের চারপাশে সার্কেল একে বন্দি করে ফেলে ।
সোহার্থ ঃ তুমি পিচাশ হয়েও আমার জীবন বাচানোর জন্ন্য জীবন দিলে । কেনো ?
নাতাশা ঃ ভালোবাসার জন্ন্য অনেক কিছুই করা যায় ।
সোহার্থ ঃ কে তুমি ?
নাতাশা তার রুপ বদল করে । আরাত্রিকার রুপে ফিরে আসে ।
সোহার্থ ঃ আরাত্রিকা তুমি ?
আরাত্রিকা ঃ হ্যা আমি আরিত্রিকা আমিই নাতাশা । আমি সাবরিন আর কথাকে মেরে ফেলছি । আমি তোমাকে ভালোবেশে ফেলেছি । যেদিন তোমাকে প্রথম দেখি সেদিনি তোমার প্রেমে পরে যাই । কিন্তু আমি তো পিচাশ আর তুমি মানুষ । সাবরিন আর কথা তোমাকে চাইতো তাই আমি ওদের মেরে ফেলি । আমাকে ক্ষমা করে দিও ।
কথা গুলো বলেই আরাত্রিকা সোহার্থের হাত ধরে , পুরো নিস্তেজ হয়ে যায় ।
অনিক ঃ সোহার্থ সময় বেশি নেই । পিচাশ টা কে আমি বন্দি করেছি ।
সোহার্থ কাচি টা এক হাতে আর এক হাতে হাড় টা নিয়ে সার্কেলে ঢুকে । কিছুখন নেহাল এর সাথে জাপরাজাপরি করে । নেহাল হাড়টার কাছে অসহায় হয়ে পরে , সুজোগ বুঝে সোহার্থ নেহালের মাথা কাচি দিয়ে ২খন্ড করে ফেলে । মরে যায় নেহাল , ধংশ হয় পিচাশ ষরযন্ত্র , মুক্তি পায় মানুষ জাতী পিচাশ দম্পতির মরন থাবা থেকে ।
সমাপ্ত
পুরো গল্পটাই আমার কল্পনা । এর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই । আমার লেখা গল্প যদি ভালো লাগে তাহলে প্লিজ গল্পটি অবশ্যই শের করবেন । আমার পেজটিও লাইক দিবেন আশা করি ।
আমার লেখা আরো গল্প পরতে চাইলে আমার পেইজ টি লাইক দিতে পারেন ।
https://www.facebook.com/arshipon15/

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .