শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৭

কয়লাখেকো ডাইনি

কয়লাখেকো ডাইনি
লেখা ঃ A R Shipon


রাব্বি আর দুপুরের প্রতিদিনের অভ্যাস রাত ১ টার পর পর ছাদে যাওয়া । প্রতিদিনের মত আজও ছাদে এসেছে , পকেট থেকে সিগারেট বের করে ২জন মিলে মনের সুখে সিগারেট টানছে। ওরা থাকে ঢাকার বসুন্ধুরা শপিংমলের পেছনের গলিতে । খুব সুন্দর একটা বাসা। সিগারেট টানতে টানতে রাব্বি বলে
রাব্বি ঃ ভাই খেয়াল করছেন ১টা বিষয় ?
দুপুর ঃ কি বিষয় রে ভাই ?
রাব্বি ঃ আমাদের সামনের বিল্ডিং এ কিন্তু কেউ থাকে না ?
দুপুর ঃ হ্যা , এত বড় একটি বাড়ি, কিন্তু কেউ থাকে না ।
রাব্বি ঃ মাঝে মাঝে রাতে খেয়াল করে দেখবেন, ছাদে মাঝে মাঝে ১টা মেয়ে কে দেখা যায় । ভূত টুত নাকি ভাই ?
দুপুর ঃ ধুর পাগলা , ভুত আসবো কই থেকে ?
রাব্বি ঃ ভাই হইতেও তো পারে ।
দুপুর ঃ হাহাহাহাহা । চলো রুমে যাই। ঘুম আসছে ।
রাব্বি ঃ চলেন যাই ।
দুপুর রা ব্যাচেলর ফ্লাটে থাকে । ছাদের উপর । ছাঁদ দুপুরের খুব ভালো লাগে , বিশেষ করে রাতে । ছ্যাঁকা খাওয়া প্রত্যেকটা প্রেমিকেরই একাকি অন্ধকার ছাঁদ ভালো লাগে বলে দুপুরের বিশ্বাস । যাই হোক গল্পে ফিরে আসি ।
রাত অনেক হয়েছে কিন্ত দুপুরের ঘুম আসছে না । আজ পেত্নিটার কথা খুব মনে পরছে । পেত্নী হলো দুপুরের রোদেলা । দুপুরের ভালোবাসার মানুষ , বছর খানেক এর বেশি হবে রোদেলা দুপুর কে ছেরে চলে গেছে ।
দুপুর পেত্নীর কথা ভাবতে ভাবতে ছাদে গিয়ে হাজির। পকেট থেকে ১টা সিগারেট বের করে আগুন ধরিয়ে ছাদের এককোনায় গিয়ে বসলো । দুপুরের ঠোট আর সিগারেট আলিঙ্গনের এক মুহুর্তে দুপুর খেয়াল করলো সামনের বাড়ির ছাদে এক তরুনি হেটে বেড়াচ্ছে । কালো ১টা জামা পরা , গায়ের রঙ ফর্সা , কোমর পর্যন্ত চুল ।
আচ্ছা মেয়েটা এতো রাতে ছাদে কেনো ? মেয়েটাও কি আমার মত ছ্যাঁকা খেয়েছে ? তার ও কি অন্ধকার নিরিঁবিলি ছাঁদ ভালোবাসে ? নিজেই নিজেকে এই সব অবান্তর প্রশ্ন করে উত্তর খুজে ফিরছে দুপুর । দুপুরের মনে পরলো রাব্বির কথা , রাব্বি বলেছিল ভূত হতে পারে । তাই দুপুর আবার ভালো করে মেয়েটির দিক তাকালো , মেয়েটি কি জেনো খাচ্ছে । কালো কালো কিছু একটা । একসময় মেয়েটি নিচে নেমে আসে । দুপুরও কিছুখন পায়চারি করে নিড়ে ফিরে যায়।
ঘুমাচ্ছে দুপুর , হটাৎ চিৎকারে দুপুরের ঘুম ভেঙ্গে যায় । উঠে দেখে পাসের ৩/৪টা বাসা পরে ১টা বাসায় আগুন লেগেছে । নিচে নেমে ওই বাসার সামনে যায় । গিয়ে দেখে ১টা ফ্লোর আগুনে পুরে সম্পুর্ন কয়লা হয়ে গেছে। বেশকিছুদিন যাবত খুব আগুন লাগছে আসেপাশে। প্রায় প্রতিদিনই আগুন লাগার খবর পাচ্ছে তারা। এইতো সেইদিন বসুন্ধরা শপিংমলের ৬তালায় আগুনে পুরে কয়লা হয়ে গেছে অনেক গুলো দোকান , তার কিছুদিন আগে কাওরান বাজারের হাসিনা মার্কেটে আগুন। কেউ কেউ বলছে আগুনের দেবতা কোন কারনে এই এলাকার উপর অসন্তুষ্ট তাই এমনটা হচ্ছে । কথা গুলো শুনে দুপুর খুব মজা পায় , আগুনের দেবতা রাগ করেছে। দুপুর বাসায় ফিরে আসে । সকালে ঘুম থেকে উঠতে লেট হয় তাই অফিসেও লেট ।
সারাদিন অফিস শেষ করে, বন্ধুদের সাথে আড্ডা শেষ করে রাতে বাসায় আসে দুপুর । অলি ভাই বসুন্ধরা গ্রুপে ভালো চাকরি হয়েছে তাই আজ বাসায় খাবারের বিশেষ আয়োজন । হাঁসের মাংস আর খিচুরি , শাকিলের খুব প্রিয় খাবার। খাবার খেতে খেতে অনেক রাত হয়ে যায় । খাবার খেয়ে সবাই ঘুমিয়ে পরে । রাব্বির শরীরটা ভালো না তাই দুপুরকে আজও ছাদে একাই যেতে হলো । প্রতিদিনের মত ছাদে গিয়ে বিড়ি বের করে টানাটানি শুরু করে দিয়েছে দুপুর। বাড়ির সামনের ছাদের দিকে চোখ পরে দুপুরের, সেই মেয়েটি ছাদের উপর হাটাহাটি করছে । দুপুর অপলক দৃষ্টিতে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে রয়েছে, মেয়েটি দেখতে সত্ত্যিই অনেক সুন্দর , অপ্বসরী। সুধু ঠোট ২টো কালো । এমন সময় শাকিল এসে হাজির হয়
শাকিল ঃ ভাই কি করছেন ?
দুপুর ঃ শাকিল । কিছু না রে ভাই । ভালো লাগছিল না তাই। আচ্ছা শাকিল দেখো তো মেয়ে টা সুন্দর না?
শাকিল ঃ কোন মেয়ে ভাই?
দুপুর ঃ ঐযে সামনের ছাদে হাঁটছে মেয়েটা ।
শাকিল ঃ ভাই আমি তো কাউকে দেখতে পাচ্ছি না । রাব্বিও বললো এই ছাদে নাকি ১টা মেয়ে ভূত আছে।
(হাহাহাহাহাহাহাহ দুজনেই হেসে উঠে )
দুপুর কনফিউশনে পরে যায় । রাব্বি দেখে, সে দেখে কিন্তু শাকিল দেকতে পায় না কেন? প্রশ্নের উত্তর পায় না সে।
পরেরদিন দুপুর সেই বাসার সামনে যায় । অনেক ডাকাডাকি আর খোজার পর ১জন বৃ্দ্ধ কেয়ারটেকার বের হয়ে আসে ।
কেয়ারটেকার ঃ এই মিয়া ক চান আফনে ?
দুপুর ঃ না মানে, এই বাসায় কি কেউ থাকে না?
কেয়ারটেকার ঃ কেউ থাহে না থাহে সেইডা দিয়া আফনে কি করবেন? ডাকাতি করার ধান্দা?
দুপুর ঃ আসলে আমি সামনের বাসাতে থাকি। এই বাসায় কখনো কাউকে দেখতে পাই না। তবে ইদানিং রাতে ১টা মেয়ে কে ছাদে দেখতে পাচ্ছি। তাই জানতে চাওয়া।
কেয়ারটেকার ঃ যান যান সরেন। কাম নাই কোনো। সব আজাইরা পেচাল পারে। যান এইহান থিক্কা এহনি।
দুপুরকে এক রকম বের করে দেয় কেয়ারটেকার, দুপুর কিছুই বুঝতে পারলো না যে কেনো কেয়ারটেকার তার সাথে এমন করলো।

রাত অনেক হয়ে গেছে । দুপুর মেয়েটাকে দেখার জন্য ছাদের দিকে তাকিয়ে বসে আছে । দুপুর মেয়েটির মাঁয়ায় পরে গেছে , ভয় ও লাগছে কিছুটা। মায়াটা যেন আবার ভালোবাসায় পরিনত না হয়।
আচ্ছা মেয়েটি কি আজ ছাদে আসবে না? খুব দেখতে ইচ্ছে করছে আমার …………… এসব বলে ছাদের উপর পায়চারি করছে দুপুর। এমন সময় তার চোখ যায় ছাদের এককোনায়, মেয়েটি গুটিশুটি মেরে বসে আছে। মনে হচ্ছে কাঁদছে সে। দুপুরের খুব খারাপ লাগছে, কেনো কাদছে মেয়েটা? জানতে হলে মেয়েটার কাছে যেতে হবে । কিন্তু কেয়ারটেকার বেটাতো বদের হাড্ডী , যেতে দিবে না। তবু দুপুর নিচে নেমে গেলো। রাস্তা খুজছে উপরে যাওয়ার। ঐবাড়ির পিছনের দিকে ১টা আন্ডার কনস্ট্রাকশন বিল্ডিং। সেটা দিয়ে অনেক কষ্ট করে দুপুর ছাদে উঠে
। ধিরে ধিরে মেয়েটির সামনে গিয়ে দাড়ায়। মেয়েটি আচমকা ছেলেটিকে দেখে ভয়ে পিছু চলে যেতে গিয়ে পরে যায়
দুপুর ঃ আহ আস্তে! পরে গেলেন তো।
মেয়ে ঃ আপনি কে? এখানে কিভাবে আসলেন? কেনো আসলেন?
দুপুর ঃ আমি দুপুর। সামনের বাসায় থাকি ( বলতে বলতে দুপুর মেয়েটার দিকে অপলক দৃষ্টি তে তাকিয়ে থাকে, মেয়েটা অপসরি। দুধে আলতা গায়ের রঙ, কিন্তু ঠোট জোড়া কয়লার মত কালো )
মেয়ে ঃ আপনি প্লিজ এখান থেকে চলে যান।
দুপুর ঃ হ্যা যাব। তবে তার আগে জানতে চাই আপনি কাদছিলেন কেনো? আর আপনার নাম?
মেয়ে ঃ আমার নাম জেনে আপনার কি হবে? আপনি চলে যান।
দুপুর ঃ কেন কাঁদছিলেন ?
মেয়ে ঃ আপনারা মানুষ জাতী খুবই বিরক্তিকর প্রানী। যান আপনি এখান থেকে।
দুপুর ঃ হাহাহাহাহাহাহাহা, মানুষ জাতী খুবই বিরক্তিকর প্রানী। আপনি কি ভুত জাতীর?
মেয়ে ঃ আমার নাম রুপকথা । আর আমি একজন ডাইনি? এখন আপনি এখান থেকে যান।
দুপুর ঃ ডাইনি দের এত সুন্দর নাম হয় জানতাম না, আর ডাইনি যে দেখতে পড়ির মত।
রুপকথা ঃ কি বিশ্বাস হচ্ছে না। ( কথাটি বলেই মেয়েটি ১টি শুকনো কাঠে তার হাত ছোয়ায়, আর সাথে সাথে কাঠটিতে আগুন ধরে যায়। কাঠটি আগুনে পুরে কয়লা হয়ে যায়। সেই কয়লা মেয়েটি কামড়িয়ে খেতে শুরু করে। তারপর ছেলেটির সামনে আসে। ছেলেটি হতবাক দৃষ্টিতে থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
রুপকথা ঃ দেখলেন তো আমি কে (কেঁদে কেঁদে)
দুপুর ঃ কাঁদছো কেনো আমি কি জানতে পারি? খুব জানতে ইচ্ছে করছে
রুপকথা ঃ কাঁদবো না তো কি করবো বলো? কার ভালো লাগে অন্যের ঘরে আগুন জ্বালিয়ে খাবার জোগার করে বেঁচে থাকতে? মরে যেতে পারলে ভালো হত।
দুপুর ঃ তারমানে আসে পাসে যে আগুন লাগছে প্রতিদিন, সেটা তুমিই করছো?
রুপকথা ঃ হ্যা। আমার মানুষদের দেখলে হিংসে হয়। তখন আমি আগুন জ্বালিয়ে খুদা মিটাই। আচ্ছা আমার বাবা মাও তো তোমাদের মত মানুষ ছিল, তাহলে কেনো আমি ডাইনি হলাম ?
দুপুর ঃ আমি কি স্ব্প্ন দেখিছি? আমাকে সব খুলে বলনা প্লিজ , আমি তোমার বন্ধু হতে চাই।
রুপকথা ঃ কোন এক অশুভ রাতে আমার বাবা আর মায়ের সহবাসের ফল আমি। আমার বাবা মা আমাকে রেখে দেশের বাইরে থাকে, মাঝে মাঝে আসে দেখতে আমাকে । আমার জন্মের পাচ বছর পর থেকে আমি এরকম হয়ে যাই । ধরলে আগুন লেগে যায়( মেয়েটা কাদতে শুরু করে)।
দুপুর রুপকথার মাথায় হাতবুলিয়ে দেয়। খুব শিতল মেয়েটির শরীর ।
দুপুর ঃ আচ্ছা আমার ২টা ফ্রেন্ড তোমাকে দেখতে পেলো না, কিন্তু আমি আর রাব্বি দেখতে পেলাম।
রুপকথা ঃ শুধু বৃশ্চিক রাশির মানুষ আমাকে দেখতে পায় । জানো দুপুর আমিও মানুষ হতে পারবো, যদি কোন বৃশ্চিক রাশির ছেলে সেই কয়লার মুর্তিটা ভেঙে সাগরে ডুবিয়ে দিতে পারে।
দুপুর ঃ সেই মুর্তিটা কোথায়?
রুপকথা ঃ কোন এক দ্বীপে কয়লা মন্দিরে আছে । অশুভ আত্তারা সেখানে পূজা করে ।
দুপুর ঃ চল তুমি আর আমি মিলে ভেঙ্গে দিয়ে আসি ।
রুপকথা ঃ হাহাহাহাহাহা আমি তো জানিনা সেটা কোথায়। আর সেখানে অনেক বিপদ , তুমি কেনো আমার জন্যে বিপদে পরতে যাবে
। আচ্ছা শুনো আলো চলে আসছে , তুমি আর আমাকে একটু পর দেখতে পাবে না। তুমি চলে যাও।
দুপুর চলে আসে। রুমে ফিরে ঘুম দেয়। ১১টার দিকে ঘুম থেকে উঠেই কম্পিউটারের সামন বসে। নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে সারা দিন কম্পিউটারের সামনে বসে থাকে আর কি জেন ঘাটাঘাটি করে। রাত ৮টার সময় উঠে ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে বের হয় দুপুর। রাত ১২টা বেজে যায় দুপুর বাসায় ফিরে না।
রুপকথা একা একা ছাদে পায়চারি করছে, এমন সময় দুপুর পেছন থেকে এসে
দুপুর ঃ কেমন আছো?(আচমকা)
রুপকথা ঃ আহ! ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম তো।
দুপুর ঃ ডাইনিরাও কি ভয় পায় নাকি?
রুপকথা ঃ মজা নাও আমাকে নিয়ে? আচ্ছা বল আজ আবার কেনো? সবই তো বললাম কাল।
দুপুর ঃ তোমাকে নিতে এসেছি আমি, আমার সাথে নিয়ে যাব আজ তোমাকে আমার শহরে।
রুপকথা ঃ কি বলছো এইসব ।
দুপুর ঃ চট্রগ্রামের সাঙ্গ দ্বীপে কয়লা মন্দির আছে । সেখানে গেলে হয়তো তুমি মুক্তি পেতে পারো। যাবে আমার সাথে?
রুপকথা ঃ সত্ত্যি বলছো তুমি, আমি মুক্তি পাব? তোমার মত মানুষ হতে পারবো ?
দুপুর ঃ হ্যা পারবে। আর তুমি এখনো মানুষ, অশুভ আত্তারা তোমাকে তাদের মায়াজালে আটকে রেখেছে।
রুপকথা দুপুরকে জড়িয়ে ধরে । রুপকথার শীতল শরীরের ছোয়ায় অন্যরকম এক শিহরন অনুভব করে দুপুর। হয়তো এটাই ভালোবাসা, আর এই ভালোবাসার জন্যই দুপুর জীবন-মরনের ঝুকি নিয়ে যাচ্ছে তার কয়লাখেকো ডাইনি কে মুক্তি দিতে রুপকথার গল্পের মত।
ভোর হওয়ার আগেই দুপুর রুপকথা কে নিয়ে রওনা দেই চিটাগাং এর উদ্যেশে। বিকেলের কিছু আগে গিয়ে পৌছে সেখানে । সেখান থেকে স্প্রীড বোটে করে রওনা দেয় স্বাঙ্গ দ্বীপে। দ্বীপে পৌছানোর সময় পরতে হয় ঝামেলা তে। সমুদ্র ভীষন উত্তাল তাই আগেই কেউ যেতে রাজি হচ্ছিল না। অনেক কষ্টে একজন কে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে। উথাল পাথাল ঢেউ পারি দিয়ে সন্ধ্যার সময় পারি জমায় সাঙ্গ দ্বীপে। একদম জনশুন্য ১টা দ্বীপ। বেশ কিছুখন ধরে খুজেও ওরা সেই মন্দির খুজে পাচ্ছে না। হাটছে এমন সময় পিছন থেকে ১টা কালো বিড়াল এসে আক্রমন করে দুপুরকে । ছোট্ট ১টা বিড়ালের সাথেও পেরে উঠছিল না দুপুর। কামরে আচরে ক্ষত-বিক্ষত করে দিচ্ছে বিড়ালটা দুপুরকে। এমন সময় রুপকথা পাসে পরে থাকা শুকনো কাঠ হাত দিয়ে ধরে সাথে সাথে সেটা তে আগুন ধরে যায়। বিড়ালটার দিকে ছুরে মারে। বিড়ালটা ভয়ে পালিয়ে যায়। এরপর সামনে হাঁটা শুরু করে তবে এখন ওদের হাতে আগুন আছে । ওরা বুঝতে পারে যে ওদের পেছনে অশরিরিরা আসছে। রুপকথা একটু থেমে পোড়া কাঠ থেকে কয়লা খায়, আর দুপুর ব্যাগ থেকে বিস্কিট বের করে। খাওয়া শেষ হলে আবার হাঁটা ধরে। এবার ওদের সামনে পরে সেই মন্দির। মন্দিরের গেটে পা রাখা মাত্রই ১টা বড় সাপ ফোঁস করে উঠে। দুপুর ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে কিছুখন সাপের সাথে যুদ্ধ করে সাপ টা কে পরাজিত করে। মন্দিরের ভিতরে ঢুকে ২জন, দেখতে পায় সেই কয়লার মুর্তি। দুপুর মুর্তিটা ধরতে যাবে আর এমন সময় তার হাতে লাঠি দিয়ে বাড়ি দেয় অসম্ভব কুৎসিত এক বুড়ি।তার বিশ্রি হাশিতে কেপে উঠে মন্দির আর আশপাশ। মাঝে মাঝে অদৃশ্য হয়ে লাঠি দিয়ে একের পর এক আঘাত হানে দুপুরের উপর। আর চারপাশেরর অশরীরি আত্তার ভয়ংকর আর্তনাদের চিৎকার কান ঝালাপালা করে দিচ্ছে। রুপকথা সুযোগ বুঝে বুড়ির হাত থেকে লাঠিটা কেড়ে নেয় আর সঙ্গে সঙ্গে লাঠিতে আগুন ধরে যায়। দুপুর রুপকথার হাত থেকে লাঠিটা নিয়ে বুড়ির দিকে ছুরে মারে। লাঠির আগুন বুড়ির দেহে লেগে। লুটিয়ে পরে বুড়ি।
রুপকথা ঃ দুপুর বুড়ি মারা পরেছে। আমাদের হাতে সময় খুব কম। তুমি প্লিজ তারাতারি মুর্তিটা নিয়ে চল ।
দুপুর ঃ হ্যা তাই চলো ।
দুপুর কয়লার মুর্তিটা নিয়ে চলে। বাইরে এসে পাথর দিয়ে ভেঙ্গে ফেলে মুর্তিটা, আর রুপকথা ধিরে ধিরে নিস্তেজ হয়ে যায়, রুপকথা শরীরে আগুন ধরে যায় । দুপুর দেরি না করে ভাঙ্গা মুর্তিটাকে সাগরে ভাসিয়ে দেয়। রুপকথার শরীর থেকে আগুন নিভে যায় ধিরে ধিরে। দুপুর অনেক চেষ্টা করে রুপকথার জ্ঞ্যান ফিরিয়ে আনে। এক কয়লাখেকো ডাইনি রুপান্তরিত হয়ে মানুষে ।
রুপকথা এখন একজন সুস্থ মানুষ । সাঙ্গ দ্বীপ থেকে দুপুর রুপকথা কে তার আগের বাসায় নিয়ে যায় না। সে রুপকথাকে তার গ্রামের বাড়ী নিয়ে যায়, বিয়ে করে । দুপুর এক সুন্দর ছোট্ট একটি সংসার গড়ে তুলে কালো ঠোটের সেই অপুর্ব সুন্দর মেয়েটিকে নিয়ে ।
( পুরো গল্পটাই আমার কল্পনা । এর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই )

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .