রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৭

প্রেতাত্তা রহস্য

প্রেতাত্তা রহস্য
লেখা : প্রে তা ত্তা

সকালে ঘুম থেকে উঠে চা খেতে খেতে পত্রিকা পড়া শিপনের প্রতিদিনের অভ্যাস । আজও চা খেতে খেতে পত্রিকা পরছে ও । হটাত শিপনের মুখ কালো হয়ে উঠলো । খবরের কাগজে বড় করে ছাপা হয়েছে , বরিশালের সরুপকাঠি গ্রামের জমিদার বাড়ীতে পর পর ৬ দিনে ৬ টী লাশ পাওয়া গেছে । জ়মিদার বাড়ীটি ভোউতিক বাড়ী নামে পরিচিত ।লাশের শরিরে নখের আচর এর দাগ ছারা আর কোন চিণহ নেই । এবং লাশগুলো পুরো রক্তশুন্য । গ্রামের লোক জন বলছে , জমিদার বাড়ীর প্রেতাত্তারা কোন কারনে রেগে এই অঘটন ঘটাচ্ছে । এর কিছুদিন আগেও এখানে এই রকম ঘটনা ঘটেছে । অনেকে এখানে রাতে প্রেতাত্তাদের দেখেছে ।
পরেরদিন সকালে পত্রিকা আসতে দেরি হয়েছে । তাই চা খেতে খেতে ট্যাব টা হাতে নিয়ে ফেসবুকে ঢুকে শিপন । নটিফিকেশন চেক করার সময় শিপনের চোখে পড়ল সাদিয়া তাকে ১টা ছবি ট্যাগ করেছে । ১টা লাশের ছবি , সাথে হ্যাস ট্যাগে লেখা সরুপকাঠির জমিদারবারির প্রেতাত্তাদের হাতে পর পর ৭ দিনে ৭ লাশ । আতঙ্কে কাটছে গ্রাম বাসির দিন কাল । আমারও খুব ভয় লাগছে ।
তার পর ই ফোন দেই সাদিয়াকে । সাদিয়ার কাছে সব কথা শুনে মিরাজ , নজরুল , জুয়েল এর সাথে কথা বলে । ওরা আজ রাতে বরিশাল যাবে । ও বলাই তো হয় নি শিপন , মিরাজ , সাকিল , জুয়েল , নজরুল, ইউসুফ ১টা ভোউতিক প্রাইভেট ডিটেক্টিভ ফারম চালায় । তবে এখন প্রজন্ত কোন সফল অপারেশন তারা চালাতে পারেনি । আর জীবনে ভূতও দেখি নি ।
ফোনে সাদিয়াকে সব বলা ছিল । সাদিয়া শিপনের বন্ধু , সে বরিশাল মেডিকেল কলেজে পরে । শিপনরা সাদিয়াদের বাসায় উঠবে ।
সকাল ৮টার দিক ওরা সাদিয়াদের বাসায় এসে পোছে । সাদিয়ার মা ওদের জন্ন্য অনেক খাবারের আয়োজন করেছে । মহিলাটি সত্যি দারুন রান্না করছে , দুপুরের খাওয়া শেষে বলল মিরাজ । রেষ্ট নিয়ে ওরা বিকেলে সাদিয়াকে নিয়ে বের হলো জমিদার বাড়ি দেখতে ।
বাড়িটা দেখতে সত্যি ই খুব ভয়ংকর । অনেক পুরোনো দালান । প্রসাশন বারির ভিতরটা দেখতে দিল না । দূর থেকে দেখে শিপনের দেখে মনে হলো সত্যি খুব ভয়ানক কিছু আছে এই বাড়িতে । আজ রাতে শিপনরা এখানে আসবে এবং সারা রাত এখানে থাকবে । রাতের খাবার শেষ করে ১০টার দিক আসলো । বাড়ির চারপাশ ঘুরে দেখলো ওরা । তেমন কিছুই দেখতে পেল না । রাত ৩ টার দিকে সামান্ন্য একটু শব্দ পেয়েছিল । ঘরের টিন এ কিছু ফেলে দিলে যে রকম শব্দ হয় সেই শব্দ । তাছারা আর কিছুই মনে হলো না । এভাবে ভোর ৫ টা প্রযন্ত ছিল ওরা ওই খানে । তারপর আযানের পর ফিরে এলো । বাসায় এসে ঘুম । ১১টার পর একেক জনের ঘুম ভাংলো ওদের । সাদিয়া চা দেই আর বলে কাল কি পেলে তোমরা ?
শিপন ঃ কিছুই পাইনি , শুধু একটু লোহা বারি দিলে যে শব্দ হয় সেই শব্দ ।
সাদিয়া ঃ দেখলাতো প্রেতাত্তারা তোমাদের ধোকা দিয়ে ঠিকই আরো একজন মানুষ মেরে রেখে গেল । আবার চিঠিও দিয়ে গেছে ।
শিপন ঃ চিঠি ? কি লেখা চিঠিতে ?
সাদিয়া ঃ চিঠিতে লেখা আগামি একসপ্তাহ প্রেতাত্তাদের রাজা মানুষের রক্ত শুধু খাবেই না সাথে সাথে সে রক্ত দিয়ে গোসল ও করবে । তাই সে গ্রামের মাদবর কে উদ্দেশ্যে বলেছে তাকে প্রতিদিন ২টা মানুশ দিতে হবে ।
( শিপন , মাহাদি , নজরুল ওরা একসাথে হেসে ঊঠে )
সাদিয়া ঃ আজকে যার লাশ পাওয়া গেছে সে একজন আফ্রিকান , তার শরিরেও কোন রক্ত ছিল না । আর প্রেতাত্তাদের চিঠি পরে সবাই গ্রাম ছেরে পালাচ্ছে ।
শিপন ঃ আফ্রিকান এখানে আসলো কিভাবে ? তাহলে তো লাশটা দেখে আসতে হয় ।
নাস্তা করার সময় সাকিল পেপার পরে বলছে কি নতুন এক মাদকদ্রব্য আসছে যেটা নাকি ভয়ঙ্কর খতিকারক । অল্পদিনেই ধংস করে দিতে পারে যুব সমাজ কে । এই নিয়ে কথা চলছে ওদের মাঝে ।
নাস্তা সেরে ওরা মরগে গেল লাশ দেখতে , লাশ দেখে যেন শিপন আকাশ থেকে পরলো । হা শিপন এই লোকটাকে চিনে , সে একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ । সে বিভিন্ন ধরনের মাদক দ্রব্য আবিস্কার করে যুব সমাজ কে ধংস করছে । কিন্তু সে কিভাবে এখানে আসল । সে কাউকে কিছু বলল না । তারপর তারা চলে গেল সবাই ।
বিকেলে নাস্তা করে শিপন আর সাদিয়া নদীর পাসে হাটতে গেছে । ২জন হাটছে আর কথা বলছে ।শিপন সাদিয়াকে বলল আমি আজ একা জমিদার বাড়ীতে যাবো , তুমি কাউকে বলবা না । হাটতে হাটতে নদির পাসে একটা নোকার কাছে গিয়ে আসে তখন নোউকা থেকে একপাগল এসে কামর দেই সাদিয়াকে । তারপর তারা দোর দিয়ে চলে আসে । সাদিয়া ব্যাথায় কেদেই দেই । তারপর বলে ওই পাগলটা ওইখানেই থাকে । ওর জন্ন্য ওই পাসে কেউ যেতে পারে না , গেলে কামর দেই আর দোড় দেই ।
রাতে শিপন একা একা যায় ওই খনে । এখন প্রায় রাত ১২ টা । ঘুরতে ঘুরতে হটাত জোরে করে শব্দ শুরু হয় । প্রচন্ড ঝোড়ো হাওয়ার শব্দ । কিন্তু কোথা থেকে আসছে । মাঝে মঝে প্রেতাত্তার হাসি । শিপন এবার জমিদার বারীর আরো কাছে গেল । শব্দ টা বাড়ির নিচ থেকে আসছে । বাড়ির চারপাস ঘুরেও কোন শব্দের উতস পেল না । হাটতে হাটতে হটাত শিপন দেখে ২টা প্রেতাত্তা নদির পার থেকে আসতেছে , কি যেন টেনে নিয়ে আসতেছে ওরা । শিপন পাসে ১টা ঝোরে পালিয়ে যায় ।
প্রেতাত্তারা এসে ১টা লাশ রেখে আবার নদির দিকে যেতে থাকে । শিপনো ওদের পিছু পিছু যায় । প্রেতাত্তা গুলো নোউকাতে গিয়ে বসে । রাত প্রায় ৩ টা বাজে তখন ১টা ছোট লঞ্চ আসে নদীর পারে ওই পাগলের নোকার কাছে । পাগল দোর দিয়ে লঞ্চ থেকে নামা মানুষটার কাছে গিয়ে কথা বলা শুরু করে । আর ওই ২টা প্রেতাত্তা পাগলের নোকাটা সরিয়ে দেই ।
শিপন হটাত মুচকি হাসলো , কারন সে এখন বেপারটা বুঝে গেছে । সে বিস্তারিত সব সাদিয়াকে এস,এম,এস করলো এবং বলল যে নজরুলদের নিয়ে যেন ওরা তারাতারি এখানে চলে আসে আর পুলিসকে নিয়ে আসে ।
শিপন ধিরে ধিরে নোউকার কাছে এগুতে থাকে , হটাত শিপন ভয় পেয়ে যায় কে যেন ওর পিছনে হাত রেখেছে । পিছনে চেয়ে দেখে সাকিল ।
শাকিল ঃ আমি তোমার পিছে পিছে অনেক আগেই এসেছি । চলো আমরাও ভিতরে গিয়ে দেখি ।
শিপন ঃ চলো পাগল্ টার বেবস্থা করি ।
তারপর সাকিল পিছন থেকে গিয়ে পাগল্টার মুখ ধরে ফেলে । শিপন এসে পাগলএর সরিরের গামছা আর দরি দিয়ে পাগল কে বেধে ফেলে ।
এরপর তারা নিচে নামে । একটা অন্ধকার সুরংগ পথ । পা টিপে টিপে ১০ মিনিট হাটার পর আলো দেখতে পায় । এক কোনাতে গিয়ে চুপ করে বসে দেখে … জমিদার বারির নিচের পাতাল ঘর পুরোটা ১টা ল্যাব এর মত বানিয়ে রেখেছে ।
১টা লাশ থেকে মেশিন দিয়ে রক্ত বের করে নিচ্ছে ……। ওদের কথা বাত্রায় যতটুকু বুঝা গেল ওরা মরা মানুষের রক্ত দিয়ে কোন ওষুধ বানায় ।
না ওরা ড্রাগস বানাচ্ছে বলে সাকিল …। ওই দেখ ওই আফ্রিকান , যে কিনা গত বছর ভারতে ধরা পরেছিল ……।
শিপন ঃ সাকিল তুমি এখনই বাইরে যাও , গিয়ে ওদের ফোন দাও । তারাতারি পুলিস নিয়ে আসতে বল ।
সাকিল তারপর চলে যায় ।
কিছুখন পর পিছন থেকে ২টা প্রেতাত্তা শিপনকে ধরে ফেলে । শিপনকে ল্যাব এর ভিতর নিয়ে আসে । এনে এক লোকের সামনে ফেলে দেই …
লোকটা হাসতে হাসতে বলে …
লোক ঃ সাগতম আপনাকে আমাদের এই প্রেতাত্তার রাজ্যে । আপনাকে ধন্যবাদ আপনি যুব সমাজের আমোদের গবেষনার জন্য সেচ্ছায় রক্তদান করতে আসার জন্ন্য । যাই হোক এই মেশিন টা তে ধুকানোর পরই আপনি মারা যাবেন তারপর আপনার রক্ত নিয়ে ফেলে দিয়ে আসা হবে , আর সবাই বুঝবে যে আপনাকে প্রেতাত্তারা………।। হা হাহাহাহাহাহাহ
আর হ্যা মারা যাওয়ার আগে একবার প্রেতাত্তাদের দেখে নিন
তারপর প্রেতাত্তারা তাদের মুখোস খুলে ফেল , এরা আফ্রিকা থেকে এসেছে , অনেক লাম্মা আর কালো । আফ্রিকান শিপন কে জোর করে ধরে মেশিনে ঢুকাবে আর এই সময় শিপন ঝাটকা দিয়ে ১টা লোহা দিয়ে মেশিনটার কাচ ভেঙ্গে ফেলে আর এক আফ্রিকানের মাথায় আঘাত করে ……
তারপরই একজন পিছন থেকে এসে শিপনের পিঠে ছুরি ঢুকিয়ে দেয় । শিপনের চোখ আফছা হয়ে আসে , লুটিয়ে পরে সে ।
……………………………………।..।।।…………।..।।।..।।।……।…।..।।……..।।..।।..।।..।।..।।।।…।..।।..।..।।.।।।।………
২ দিন পর জ্ঞ্যান ফিরে শিপনের ঢাকার হস্পিটালে … ওর পাসে মাহাদি , নজরুল , ইউসুফ , সাকিল আর সাদিয়াকে দেখতে পায় । সাদিয়া ওদের সাথে ঢাকায় এসেছে ।
শিপন জ্ঞ্যান হারানোর পর পর ই সাকিল মাহাদিদের সাথে পুলিস নিয়ে আসে এবং ওদের ধরিয়ে দেই । আর শিপনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে ।
পরে পত্রিকায় আসে ওই লোকগুলো মানুষের রক্ত দিয়ে ড্রাগস বানিয়ে দেশে বিদেশে ছড়িয়ে দিত তরুনদের মাঝে । আর যে আফ্রিকান টার লাশ পাওয়া গেছিল সে ই এই ড্রাগসের আবিস্কারক । সে যেন আর নতুন কিছু আবিস্কার করে এই ব্যবসা নষ্ট করতে না পারে তাই তাকেও মেরে ফেলে …।। ওরা
পত্রিকা পড়ে শিপন হাসে । তখন সাদিয়া শিপনে বলে হাসছো কেন ?
শিপন বলে প্রেতাত্তার রহস্য শুনে হাসলাম …।। এই প্রেতাত্তা গুলো আমাকে মেরেই ফেলেছিল প্রায় …।।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .