রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৭

প্রেতাত্মার লেখা গল্প

প্রেতাত্মার লেখা গল্প

A R Shipon  

তুই আমার রুম থেকে বের হ বিভোড়, তা না হলে তোর খবর আছে। যত্তসব আবুল তাবুল প্যাচাল  নিয়ে তোর আমার কাছেই আসতে হয় ছাগল । যা ভাগ।

বিভোর মাঝে মাঝেই এইভাবে রাইসা কে ডিস্টার্ব করে, রাইসা এইধরনের মজা একদমই পছন্দ করে না। কোথা থেকে হটাৎ এসে ভয় দেখানো। আচ্ছা এটা কি ঠিক? তাই তো এইভাবে বকাবকি করে রাইসা বিভোরকে।

বিভোর মুচকি হাসে, আর কিছু বলে না। সে চুপ করে লাইট বন্ধ করে দিয়ে বারান্দায় চলে যায়। বারান্দার দেয়াল ঘেসে বসে থাকে সে। বাইরে আকাশে চাঁদ নেই, ঘুটঘুটে অন্ধকার। কিন্তু রাস্তায় হলুদ বাতি জ্বলছে। এখন আর নিয়ন বাতি নেই। এখন ঢাকার রাস্তাগুলো আরও আলোকিত দেখায় কিন্তু বিভোরের মনে হয় এই ফ্লুরোসেন্টের বাতির আলোয় কি যেন নেই। নিয়নের মাঝে এক অদ্ভুত সৌন্দর্য ছিল যা ফ্লুরোসেন্টে পাওয়া যায় না। “আচ্ছা রাইসা কি ফ্লুরোসেন্ট হয়ে গেছে আর আমি নিয়ন হয়েই পরে আছি, সেই পুরাতন?” নাহ এখন এসব ভাবার সময় নেই। বিভোর দেয়ালে পিঠ রেখে বসে থাকে। একটা দুইটা রিক্সা যাচ্ছে। মাঝে মাঝে পাহারাদারের বাশীর শব্দ বেজে উঠে, দূরে কোথাও দুই একটা কুকুর জোরে ডেকে উঠছে। হয়তো কোন এক অনাকাঙ্ক্ষিত আগন্তুককে দেখে চিৎকার করছে কুকুরগুলো।

লিমন প্রায় দিনের মত  আজ আবারও বাইরে বের হয়েছে। ঘুটঘুটে অন্ধকার বাইরে। এই অন্ধকার রাত তার খুব পছন্দ। সবাই যখন ঘুমিয়ে পরে সে তখন সিগারেটের প্যাকেট আর ক্যামেরাটা  নিয়ে বের হয়। লিমন নিজের কোন ফটোশটের জন্য নয়,  হয়তো কোন নিঃস্ব বৃদ্ধের পাশে অথবা অসহায় এক ছোট্ট শিশুর পাশে গিয়ে ছবি তুলে আর আসার সময় হাতে কিছু টাকা  দিয়ে চলে আসে। কিন্তু কোন এক অদ্ভুত কারণে সে শুধুমাত্র রাতেরাধারে ঘোরাঘুরি করে আর কোন এক বিশেষ একজনকে খুজে ফিরে, যার সে ছবি তুলবে। অচেনা অজানা কাউকে। যাকে না পেয়ে আজও এই অন্ধকার রাস্তায় একা একা হেঁটে বেড়ায়।

দিনগুলো পালটে গেছে মানুশ আর আগের মত নেই, সবাই কেমন যেন হিংস্র হয়ে গেছে। যে যাকে পারছে তেমন করে মারছে। সরকারি দল নির্বিচারে বিরোধিমত মারছে। কি হবে দেশটার?  নিজের সাথে নিজেই কথা বলতে থাকে লিমন। হাঁটতে হাঁটতে অনেকটা রাস্তা পার হয়ে সরু একটা গলি দিয়ে বের হতেই একটা বড় রাস্তায় এসে পরল লিমন।

“দুই পয়সা আয় করনের মুরদ নাই, ঘরে বইসা খালি বাপ-মায়ের মাথা গিলস। কুত্তার বাচ্চারে কইলাম একটা গ্যারেজে যা, কাম কর। না, নবাবের ব্যাটা হইছে। ঠ্যাং এর উপর ঠ্যাং তুইল্যা খাইব। তোর বাপের নবাবী পাইছস। বাপ- দাদায় তো খানদানি সম্পত্তি রাইখ্যা গেছে। সবাই মরে আমি মরি না ক্যা। এই আজাতরে কোন পাপে যে জন্ম দিছিলাম কে জানে? তোর বাপের মত লম্পটই তো হবি আর কি হবি। বান্দী পাইছিল আমারে। বিয়া কইরা রাইখ্যা পালায় গেছে গা, আর রাইখ্যা গেছে তোর মত কুলাঙ্গাররে। এত কষ্ট কইরা ভাবলাম তোরে কিছু কাম শিখামু, টাকাও জমাইলাম কিন্তু তুই সব টাকা দিয়া জুয়া খেললি, মদ খাইলি। আরেহ কুত্তার বাচ্চা টাকা দেখছস জীবনে। এক টাকা কামাই করার মুরোদ আছে!…..

“ ঐ কত ট্যাকা লাগবো তোর?”, কামরুল ঠান্ডা মাথায় কথা বলে।
“এ্যাহ নবাবে ব্যাটার ঢং দেখো ……”
“আমি জিগাইছি, কত লাগবো তোর?”
“তুই ট্যাকা কই থেইক্কা পাবি?”
“তোর হেডি দিয়া কি কাম? কত লাগব?”
“৫০০ ট্যাকা আইনা দে। বাসায় বাজার নাই।”
“আইচ্ছা চুপ কইরা বইয়া থাক। নড়বি না। আর মুখ দিয়া একডা কথা বাইর যাতে না হয়।”

কামরুলের মা চুপ করে বসে থাকে। চোখ দিয়ে পানি পরতেছে তার। ছেলেটা তার খারাপ না। মদ জুয়া সে ছুঁয়েও দেখে না। কিন্তু ছেলেটা বেকার। অনেক চেষ্টা করেও কাজ খুঁজে পায় নি। ছোট বেলা থেকে মানুষের সাথে মিশতে পারে না। “মনু হারামি”র ছেলে শোনার ভয়ে বাইরে বের হত না। হালিমা মানুষের গালি, মাইর খেয়ে যা আয় করার করে টুকটাক নিয়ে আসত। কিন্তু কামরুল খুপরি থেকে বের হত না। কখনও ভুল করে বেড়িয়ে পরলে লিটন, ওপুরা তাকে ক্ষেপাত, আর সে প্রতিবাদ করলে সবাই মিলে তাকে পেটাত। কামরুল তাই আর কোনদিন দিনের বেলা খুপরির বাইরে বের হয় নি। আর তাই চাকরি কিংবা কাজ করার যোগ্যতাও তার হয় নি। আর সবচেয়ে অবাক করা বিষয় কামরুল কিভাবে যেন সকালে দেখতে পায় না ভালো করে, ঝাপসা দেখে কিন্তু রাতে ঠিকই সব কিছু তার কাছে পরিষ্কার। যত বেশি অন্ধকার তত তীক্ষ্ণ তার দৃষ্টি। আর তাই এখন যা করার সে রাতের বেলাই করে….

লিমন রাস্তা ধরে হাটছে । একা একা , রাস্তাটা একটু ফাকাই বটে । কিছুদুর হাটার পর হটাৎ মনে হলো কে জেনো তার পিছু পিছু হাটছে । পিছে ফিরে দেখে কেউ নেই, তবে কেউ আছে সেটা লিমন অনুভব করতে পারছে। আবার হাটা দেয়। কাঁধে হাত রাখে আগত্বক, লিমন পিছু না ফিরে সে তার নিজের হাত দিয়ে কাঁধে রাখা হাতটা স্পর্স করে। হাত টা খুব শিতল, লোম গুলো খুব বড় বড়। এবার সে পিছে তাকায়, এবারো কিছু দেখা গেলো না । একটু ভয়ই পেয়ে গেলো বোধহয় ছেলেটা । আবার এগুলো, পকেট থেকে ১টা সিগারেট বের করে ধরালো। এবার সেই আগের অনুভব টা নাই, পিছনে আর কেউ নেই।

বিভোর বসে আছে বারান্দায়। আর ভাবছে, রাইসা কি কখনো আমাকে বুঝবে না? কখনই কি আমাকে ভালোবাসবে না?

রাইসা বিভোরের ফ্রেন্ড । ফেসবুক থেকে পরিচয় । রাইসা বিভোরের চেয়ে কিছুদিনের বড় । ৮মাস হয় ও ওর বয়ফ্রেন্ড কে খুজে পাচ্ছে না। বিভোর জানে না কি হয়েছিল, রাইসা এই ব্যাপারে ওকে আর কিছুই বলে নাই। আর একটা বিষয় জানে, সেটা হলো রাইসার সাথে প্যারানরমাল কিছু ১টা হয়েছিল। তারপর থেকে রাইসা বিভোরদের বাসায় থাকে মাঝে মাঝে।

লিমনের হাতের সিগারেট শেষ। তার কিছুখন পর আবার মনে হলো পিছু কেউ হাটছে। এবার সুধু হাটাই না। পিছন থেকে ঢিল ছুরছে। এমা লাং দিয়ে ফেলে দিলো, পরে গেলো লিমন । মনে হচ্ছে কয়েকজন ওরা। লিমন কে এলোপাথারি মারছে কিন্তু সে কাউকে দেখতে পাচ্ছে না। মার খেয়ে অজ্ঞান হওয়ার অবস্থা প্রায়, এমন সময় দূর থেকে ১টা সাদা থ্রিপিস পরা ১টা মেয়ে ছুটে আসে লিমনের দিকে, এসে জরিয়ে ধরে লিমনকে। লিমন অবাক হয়ে যায় , এখন আর সে আঘাত পাচ্ছে না। মেয়ে টা লিমন কে ছেড়ে দেয়। তারপর সামনের দিকে হেটে যেতে থাকে।

লিমন কিছুখন চুপ করে দাড়িয়ে থেকে মেয়েটার দিকে দৌড় দেয়

লিমন ঃ শুনুন আপনি ।

আগুত্তক মেয়ে ঃ জি ।

লিমন ঃ আপনি কে ?

আগুত্তক মেয়ে ঃ আপনি এতো রাতে বাইরে কি করেন? এতো রাতে বাইরে থাকা ভালো না।

লিমন ঃ আমি প্রায় রাতেই বের হই। এখান দিয়ে প্রায় হাটাহাটি করি।

আগুত্তক মেয়ে ঃ হ্যা আমি আপনাকে আগেও দেখিছি। তবে আজ রাত টা ভালো না।

লিমন ঃ আজ রাতে কি ? আর আপনি কে ?

আগুত্তক মেয়ে ঃ আজ পূর্ন পূর্নিমার রাত। এই রাতে ভূত প্রেতের উৎপাত বেশি থাকে।

লিমন ঃ ধুর কি যে বলেন । ভুত প্রেত বলতে কিছু আছে নাকি?

আগুত্তক মেয়ে ঃ তাহলে যারা আপনাকে মারছিলো তারা কারা? আর আমিই বা কে?

লিমন ঃ হ্যা তাই তো, ওরা কারা ছিলো আর কেনোই বা আমাকে মারছিলো?

আগুত্তক মেয়ে ঃ ওদের পাস দিয়ে হাটার সময় ধাক্কা দিয়েছিলা । তাই খেপে গিয়েছিল।

লিমন ঃ তুমি কে?

আগুত্তক মেয়ে ঃ আমি মুমু। আমিও ভুত, মানে আত্তা, অতৃপ্ত আত্তা। কিছুদিন আগে আমাকে মেরে ফেলেছে।

লিমন ঃ কি? কেন তোমাকে মেরেছে? কে মেরেছে?

আগুত্তক মেয়ে ঃ ফ্রেন্ড এর বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করে রাতে বাসায় ফিরছিলাম। হটাৎ কোথা থেকে এক ছেলে এসে আমার গলায় গয়নায় হাত দিয়ে টান দেয়। আমি বাধা দিলে আমার গলায় ছুরি দিয়ে রগ কেটে ফেলে। আর আমি মারা যাই। তারপর থেকে আমি এখানে …………

লিমন ঃ ছিনতাই কারি ছিল মনে হয়। আচ্ছা মরলে কি সব মানুশ ভুত হয়?

আগুত্তক মেয়ে ঃ আরে না। যাদের ধর্মীয়ভাবে শেষকৃত্য হয় না, অপমৃত্য এই সব আত্তাই ভুত হয়।

লিমন ঃ আচ্ছা তুমি খুব সুন্দরী ছিলে তাই না?

আগুত্তক মেয়ে ঃ কেন, এখন কি আমি সুন্দরী নেই?

লিমন ঃ এখন ও সুন্দরী। তবে জামা কাপর গুলো নোংরা। একটু পরিস্কার জামার আর চুল গুলো বাধলেই তোমাকে পরীর মত লাগবে।

আগুত্তক মেয়ে ঃ সারাদিন রাস্তায় রাস্তায় থাকি, সুতরাং জামাকাপর ময়লা হবেই। আর হা আমি দেখতে পরীর মত, রাজপুত্রের মত ১টা ছেলে ভুত পেলেই পরীর দেশে গিয়ে হাজির হবো।

লিমন ঃ হা হা হা। মজা করো?

আগুত্তক মেয়ে ঃ মোটেও না। আমি সত্যি বলছি। সারাজিবন কি আর সবাই ভুত থাকে। যারা ভালো ভুত তারা জ্বীন-পরীদের দেশ কলংকপুরে যেতে পারে।

কথা বলার এই পর্যায়ে মসজিদ থেকে আজান ভেষে আসে, আর উধাও হয়ে যায় মুমু । লিমন কিছুখন খোজাখুজির পর বাসায় ফিরে আসে । ফ্রেস হয়ে ঘুম দেয় ।

বিভোর নিজের অজান্তেই ঘুমিয়ে পরে বারান্দায়। রাইসা বারান্দায় এসে দেখে বিভোর ঘুমে। রাইসা নিজেকে নিজে প্রশ্ন করে, কেন এই ছেলেটা আমাকে এত ভালোবাসে? কেন আমাকে সব সময় হাসিখুশি রাখতে চায়? ও তো জানে ওভিকে আমি ভালোবাসি, তারপরোও কেনো? রাইসা বিভোরে কপালে আলতো করে ১টা চুপু দেয়। তারপর ওকে জাগিয়ে তুলে ওর রুমে পাঠিয়ে দেয়।

সকালে ঘুম থেকে উঠে বিভোরদের বাসা থেকে বের হয়ে যায় রাইসা কাউকে কিছু না বলে। রাইসা আগেও এমন করেছে কয়েকবার। তাই বিভোর আর তেমন কিছু না ভেবে নাস্তা সেরে কলেজে চলে যায়।

ঘুম থেকে উঠে লিমনের কেমন জেনো লাগছে। মুমু মেয়েটার কথা মনে পরছে , তার জন্য খারাপ ও লাগছে। ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে এতো সুন্দর ১টা মেয়ে ভুত জয়ে গেল। যদি সে বেচে থাকতো তাহলে হয়তো খুব সুন্দর ১টা সংসার থাকতো তার। কোন অভাগা যে এই সুন্দর মেয়েটা কে মেরেছে সে আল্লাহই ভালো জানে।

নাস্তা করে বেরিয়ে পরে লিমন, সারাটা দিন খুবই বাজে কেটেছে লিমনের। সুধু মুমুর কথা মনে পরছে। কেন জানি তার মনে হচ্ছে মুমুর সাথে কথা বলতে পারলে ভালো লাগতো তার।

আজ রাতেও লিমন বের হলো, সাথে ক্যামেরা নিয়ে। আচ্ছা মুমু কি আমাকে ছবি তুলতে দিবে? তার সাথে বসে কি আজও মুমু কিছুক্ষন গল্প করবে ?

রাস্তা দিয়ে হাটছে লিমন। তবে আজ আর কারো ছবি তুলছে না। তার ২চোখ আজও কাকে জেঁনো খুজছে, তবে আগের খোজা টা ছিল অন্য রকম আর আজকের খোজা টা কোন একজন নিদ্রিষ্ট ব্যক্তি কে সেটা বুঝা যাচ্ছে।

বিভোর রাইসার বাসায় গিয়ে দেখে রাইসা বাসায় ফেরেনি । রাইসার ২/৩টা ফ্রেণ্ডের বাসায় গিয়েও রাইসা কে পাওয়া গেলো না। কোথাও না পেয়ে গভীর রাতে বাড়ি ফিরে এলো বিভোর। বাসাইয় ঢুকে দেখে রাইসা চলে এসেছে। বিভোর রাইসার কাছে গিয়ে জোরে থাপ্পর দিয়ে কিছুক্ষন পর বারান্দায় চলে যায়। রাইসা কাঁদছে, বিভরের চোখেও পানি।

লিমন সারা রাত খোজাখুজি করেও মুমুর দেখা না পেয়ে ফিরে যায় বাসায় । মন টা খুব খারাপ হয়ে আছে। খুব করে কাদতে ইচ্ছে করছে তার।

সকালে ঘুম থেকে উঠে বিভোর রাইসার ঘুম ভাঙ্গাতে গিয়ে দেখে সম্পুর্ণ বিছানা রক্তে ভেজা। রাইসা হাত কেঁটেছে আর সেই রক্ত। বিভোর চিৎকার করে, বাসার সবাই এসে রাইসা কি হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে রাইসা তার আগেই সকলের মায়া ত্যাগ করে চলে গেছে।

বিভোর ব্যাপাটা মেনে নিতে পারে না। ও যদি থাপ্পরটা না দিত তাহলে হয়তো রাইসা আজ বেঁচে থাকত। বিভোর এরপর নিজেকে শেষ করার প্রায় সব অপচেষ্টা করে। সে এখন একজন এডিকটেড।

কামরুল সারাদিন বাসায় থাকে আর রাতে বের হয়। সে রাতে কাজ করে, ভালো টাকাই ইনকাম করে। কি করে সেটা কেউ জানে না। শান্তশিষ্ট ছেলেটার পিছে দিনের বেলায় সবাই লেগে থাকে।

বিভোরের সাথে লিমনের কথা হয় । ও বলা হয় নাই । লিমন আর বিভোর জানের জিগার দোস্ত । রাইসা মারা যাবার পর লিমন বিভোরের কাছে আসে তার সঙ্গ দেওয়ার জন্য। লিমন বিভোরকে মুমুর কথা বলে। বলে মুমুর পরীর দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা । লিমন বিভোরের সাথে কথা বলে চলে আসে। বাসায় ফেরার একটু পরেই শুনে বিভোর সুইসাইড করছে। ঠিক যেভাবে রাইসা নিজেকে শেষ করেছিল বিভোরও সেই একইভাবে নিজেকে শেষ করে চলে গেলো রাইসার কাছে ।

বিভোরের মৃত্যর কথা শুনে লিমন খুব ভেঙ্গে পরেছে। দাফন কাফন শেষ করে লিমন বাসায় না গিয়ে মুমুকে দেখার উদ্দেশ্যে রাস্তায় হাটতে থাকে । একসময় মুমু পিছন থেকে এসে লিমন কে ডাক দেই।

মুমু ঃ তোমার মন খুব খারাপ তাই না?

লিমন ঃ হ্যা। আমার সবচেয়ে কাছের মানুষ টি আজ চলে গেলো আমাকে ছেড়ে।

মুমু ঃ বিভোর ভালো আছে। ও এখন ওর রাইসার কাছে আছে। ওড়া পরীর দেশ কলংকপুর চলে যাবে। আর দেখো,আমার পোড়া কপাল!

লিমন ঃ সত্যি বলছো তুমি?

কথা বলার একপর্যায় পিছন থেকে ১টা ছেলে লিমনের গলায় ছুড়ি ধরে বলে

ছিনতাইকারি ঃ যা আছে দিয়ে দেন। নাইলে মাইরালাম।

লিমন ঃ অই কে তুমি? ছারো আমাকে, কেটে যাবে গলা, ছারো।

ছিনতাইকারি ঃ যা আছে দিয়া দে, ছাইরা দিমু।

মুমু ঃ (মুমু কে ছিনতাইকারি দেখতে পাচ্ছে না) লিমন ওকে ছেরো না, ও আমাকে মেরে ফেলছে। ওর জন্য আমি আজ এইখানে, ওকে ছাইরো না।

লিমন ঃ কি বলছো তুমি এইসব ?ও তোমাকে....

ছিনতাইকারি ঃ ঐ বেটা তুই কার সাথে কথা কস? মজা লস আমার সাথে?

এরপর লিমন কৌশলে ছিনতাইকারি কে নিজের কবলে নিয়ে এসে কাবু করে ফেলে

লিমন ঃ তোর নাম কি? কেন তুই রাইসা কে মারছিস?

ছিনতাইকারি ঃ ভাই ছাইরা দেন আমারে, আমি গরিব মানুষ । আমি কামরুল, বস্তিতে থাকি। ছাইরা দেন ভাই
মুমু ঃ লিমন তুমি ওকে ছাইরো না প্লিজ, ওকে মারো।

লিমন ঃ কামরুল তোকে আমি ১টা শর্তে ছারতে পারি । যদি তুই আমার কথা শুনিস।

ছিনতাইকারি ঃ আমি সব শুনুম ভাই । কন আমারে।

লিমন ঃ ১টা মেয়ের গলার চেন নেওয়ার সময় ঐ মেয়েটাকে যেভাবে মারছিলি আমাকেও সেভাবে মার। আর আমার কাছে দামি মোবাইল, টাকা আছে এগুলো সব তোর।

মুমু ঃ এই কি বলছো তুমি ? পাগল হয়ে গেছো নাকি? পাগলামি করে না প্লিজ ? (কেদে কেদে বলে মুমু)

লিমন ঃ আমি তোমার পাগল হয়ে গেছি, আমি তোমার কাছে আসতেছি । তোমাকে নিয়ে যাবো তোমার পড়ির দেশ কলংকপুর ।

কামরুল লিমনকে মেরে সব নিয়ে পালিয়ে যায়। কিছুখন পর লিমনের আত্তা তার লাশ থেকে বের হয়। রাইসা এসে জরিয়ে ধরে কেঁদে দেয়। চলে যায় ওরা কলংকপুরে । সেখানে গিয়ে দেখা হয় বিভোর আর রাইসার সাথে । আরো বেশি অবাক হয় একজন কে দেখে কে সে জানেন কলুংকপুরের রাজা আর রানি কে দেখে । রাজা কে সবাই প্রেতাত্তা আর রানি কে পেত্নি বলে ডাকে । আরা এই ২জন লিমন আর বিভোরের অনেক কাছের মানুশ । পেত্নী হলো রোদেলা , আর প্রেতাত্তা কে সেটা আপনারা সবাই জানেন।  আমিই রাজা এতখন আপনারা আমার সাথেই ছিলেন, আমিই সেই  দুপুর। আপনাদের সবাই কে আমন্ত্রন আমার কলঙ্কপুরে। ভালো থাকবেন।

(গল্পটি পুরোটাই আমার কল্পনা, বাস্তবের সাথে এর কোন মিল নেই।)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .