রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৭

#ভুতেরবাড়ীর রহস্য উদঘাটন


#ভুতেরবাড়ীর রহস্য উদঘাটন
লেখা : প্রেতাত্তা ।

আগের খন্ডে অভিশপ্ত গ্রাম এর কথা বলা হয়েছে । হাঁ পালামগঞ্জ গ্রাম । আর আজকের গল্পটি পালামগঞ্জ গ্রামের ভূতের বাড়ি নামে পরিচিত বাড়ি । বাড়ীটি নিয়ে দুপুর, বিভোর, লিমন, সুরুজের রোমহর্ষক অভিযান । আজ তাদের সাথে আরও যোগ হয়েছে অলি, তিশা, মিতু, আর সুদূর যশোর থেকে ছুটে আসা সানজিদা (ডাকনাম সান) । ভুতের বাড়ির একটু বিবরন দেই , বাড়িটা পালামগঞ্জ থেকে কাচারিঘাট যাওয়ার সময় গ্রীন লিডস ইসলামিক ইন্সটিউট এর পিছনে একটু ২ মিনিট হেটে গেলেই । বাড়ীট অনেক অনেক আগের জমিদার বাড়ি ছিল । বাড়ির সামনে বিশাল এক দিঘি আছে । আর পুরো বাড়ির আসেপাসে  জঙ্গল এর মত, এইখানে অনেক ধরনের বিশাল বিশাল গাছ আছে । বাড়ির পিছনের বা পাশে ছোট একটা পুকুর আছে । পুরো পরিবেশ টা এক ভুতুরে গল্পের ভুতেরবাড়ীর মত ।দিনের বেলাতেই যেনো গা শিউরিয়ে উঠে ।
দিনটা নভেম্বর এর ৭ তারিখ , দুপুর এর জন্মদিন । দুপুর গ্রামে এসেছে ,সে  ঠিক করেছে ৭ তারিখ রাতেই ভূতের বাড়ির রহস্য উদঘাটনে   যাবে । সন্ধায় ওদের প্রুস্তুতি শুরু হয় । মশাল , মোমবাতি, ছুড়ি , ফাইরবক্স, টর্চলাইট, কিছু বিস্কুট , ২ প্যাকেট সিগারেট সাথে নিয়ে নেয় ওরা । রাত বারোটার দিকে অলির ঘর থেকে বের হয়ে রউনা দেই ভুতের বাড়ির দিকে । রাস্তা দিয়ে হাঁটছে দুপুর , লিমন , বিভোর আর অলি সিগারেট টানছে । কিছু দূর হাটার পর ওদের সামনে ৩টা বিড়াল দেখতে পায় , ৩ টাই সাদা বিড়াল । ওরা বিড়ালগুলো উপেক্ষা কর হাঁটতে থাকে । বিড়াল গুলো ও ওদের পিছু পিছু হাঁটতে থাকে । ওরা ভুতের বাড়ির সামনে প্রায় চলে এসেছে , এমন সময় বিড়াল গুলো খুব ডাকাডাকি শুরু করে । বিড়ালগুলো যেনো ওদের সামনে এগুতে মানা করছে । ওরা বাড়ির শিরির সামনে গিয়ে একটু দারিয়ে মশাল গুলো জ্বালিয়ে ভিতরে ঢুকে । ভিতর ঢুকেই ওদের গা জানো কেমন শিতল হয়ে যায় । দুপুর ওদের সবাইকে একটু রেস্ট নিতে বলে । ওরা ১টা রুম এর ভিতর বসে গল্প করছে রাত তখন প্রায় ১.৩০ মিঃ বাজে । সান দুপুরকে বললো

সান ঃ কাকা চল বারিটা একটু ঘুরে দেখে আসি? ( তিশা আর মিতু অ বলল চলো জাই )

 লিমন ঃ সবাই উঠ ।

লিমন দুপুর এর হাত ধরে টেনে উঠালো । ওরা পাশের রুম এ গেলো সবার হাতে ১টা করে মসাল । ওরা ঘুরে দেখছে এমন সময় হটাৎ মিতুর চিৎকার এ ওরা পিছে দৌড় দিয়ে দেখে মিতু বসে তার পা ধরে কাঁদছে । বিভোর গিয়ে ওর পায়ে হাত দিয়ে দেখে ওর পায়ে রক্ত । দুপুর ঃ পা কাটল কিভাবে ?

মিতু জানো কথা বলতে পাড়ছে না ! শুধু হাত দিয়ে দেখিয়ে দিল , ওরা জা দেখল তা দেখে ওদের চোখ জেনো কপালে উঠল । মিতুর থেকে ৫ হাত দূরে ১টা ছোট বাচ্চার কাটা হাত পরে আছে আর সেইখান থেকে রক্ত ঝড়ছে । ওরা মিতু ক নিয়ে আবার সামনের দিক এগুলো । এখন ওরা মাঝখানের রুম এর ভিতর ঢুকবে আর এই সময় কে জানো ঘরের ভিতর থেকে দোর দিল , পায়ে নুপুর এর শব্দ । দুপুর পিছনে পিছনে দৌড় দিল কিন্তু কিছুই দেখতে পেল না । আগের জায়গাই ফেরে এসে দেখে ওরা কেউ নেই। রুমের ভিতর ঢুকবে আর এই সময় হাসির শব্দ পেল , কিন্তু এবার আর নড়ল না । রুম এর ভিতর ধুকে দুপুর অবাক হল , কারন রুম টা খুব ই গোছানো ও পরিষ্কার কিন্তু এমনটা এই বাড়ীতে থাকার কথা না  । ১টা ১টা জিনিষ দুপুর হাত দিয়ে নেরে চেরে দেখছে , কিছুক্ষণ পর হাতের দিক খেয়াল করে দেখে যে হাত এ রক্ত লেগে আছে । দুপুর কিছু ভেবে উঠার আগে ই সুরজ এর চিৎকার এর শব্দ পেয়ে দুপুর দোর দিয়ে বাইরে এসে দেখে সুরুজ এর হাত দিয়ে রক্ত ঝরছে । বড় বড় নখের আচরে কেটে নিয়েছে পেত্নীটা । ওরা সবাই খুব ভিত হয়ে হয়ে পরেছে , আগের মত সাহষ আর নেই  কারন কারা জানো ওদের চারপাশে ঘুরাঘুরি করছে আর ওদের নাখের আচরে আঘাত করছে । দুপুর আর লিমন তারাতারি করে সিগারেট ধরাল । এখন ওরা ছাদ এ যাবে । হাটা শুরু করল , একটু এগুতে না এগুতে তিশা ধপাস করে পরে গেল । পরার পর অলি ওকে উঠাতে যাবে এমন সময় তিশা চিৎকার করে বলে ওকে তারাও , ওরা তিশার সামনে তাকিয়ে দেখে ১টা উলঙ্গ বাচ্চা যার মাথা নাই , সে দোর দিয়ে শিরি দিয়ে ছাদ এ উঠছে । এটা দেখার পর ওরা কেউ ছাদে যেতে রাজি না শুধু দুপুর আর বিভোর ছাড়া। শেষের দিকে লিমন ও ওদের সাথে যেতে রাজি হল । বাকি গুলা ওরা নিচে ১টা রুম এর ভিতর রেখে গেল । দুপুররা ছাদে উঠল । বাইরের দিকটা অনেক আলো । ছাদটা ওদের ভালোই লাগলো । হেটে হেটে সামনে আসল । সামনের দিক দেখে ওরা হতবম্ব । এ জানো এক নতুন জগৎ , এখানে ঘোড়া , হাতি , প্রজা বাজিকর যেনো ১টা বাজার মিলেছে সেই অনেক আগের  জমিদার আমলের । দিঘিটাতে কারুকাজ করা নৌকা ও চলছে , সুন্দরি রমনিরা এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করছে । । ওরা দেখছে আর  এমন সময় কে যেনো বিভোরকে পিছন থেকে ধাক্কা দিল । বিভোর আর একটুর জন্য নিচে পরে গেল না । দুপুর পিছন এর দিকে তাকিয়ে দেখল ১টা ণীলশাড়ি পরা সুন্দরী মেয়ে নিচে নামছে কিন্তু সেই মেয়ের কোন পা নেই । লিমন এটা দেখে অজ্ঞান হয়ে পরে গেল । এখন উপায় কি ? বিভোর আর দুপুর অনেক চেস্টা করে ওর জ্ঞান ফিরিয়ে আনে । তারপর ওরা নিচে নেমে আসে । রুম এর ভিতর ধুকে দেখে মশাল নিভে গেছে । ওদের দেখে তিশারা দোর দিয়ে এগিয়ে এসে হাওমাও করে কেদে ফেলে ।

দুপুর ঃ কি হইছে ?

তিশা ঃ খোরা , মাথায় চুল নাই , চোখ দিয়ে রক্ত ঝরছে এমন বুড়ী এসে আমাদের তার নখ দিয়ে আচরে গেছে আর বলে গেছে যে আমাদের নাকি আজ প্রেতাত্মারা পুরিয়ে খাবে ।

কথা বলা শেষ হতে না হতে চারিদিক থেকে বিশ্রী আর ভয়ংকর হাসির শব্দ আসে । ওরা কিন্তু এবার মাত্রাতিরিক্ত ভয় পেয়ে যায় । দুপুর বলে এখানে আর না , এখন আমরা বের হয়ে পাশে ইমন দের বাসায় যাব । বিভোর বলে উঠে বাইরে যাওয়ার সময় যতকিছু ই ঘটুক কেউ জানো ভয় না পায় । ওরা বাইরে বের হয় । দুপুর আর বিভোর মুচকি হাসছে , কারন একটু আগেই ছাদ থেকে ওরা নিচের এই পরিবেশটা ভিন্ন রকম দেখেছে । ওরা সামনের দিক এগুচ্ছে আর এই সময় ভয়ানক শব্দ করে কিছু ভয়ঙ্কর মানুষ ওদের দিক আসছে , কি বীভৎস দৃষ্য সেটা বলার বাইরে । ওদের হাতের মসাল গুলো নিভে যায় , টর্চ ও জ্বলছে না । অন্ধকার এর ভিতর শুধু এখন ওরা  ঐ মানুষ গুলোর লাল চোখ দেখতে পাচ্ছে , ঐ চোখ গুলো ধীরেধীরে ওদের দিক আসছে । একদম সামনে চলে আসছে । আঘাত করবে আর ঠিক এই সময় ফযর এর আজান দেয় । তারপর ……………………………………………………………………………………………………।

তারপর ওদের জ্ঞান ফিরলে দেখে যে ওরা সবাই দুপুরদের বাড়ীতে । গ্রামের সব মানুষ ওদের দেখতে  এসেছে । ওদের নাকি ইমন এর বাবা ইউসুফ ভাই ভূতের বাড়ির সামনে অজ্ঞান অবস্থায় পেয়ে নিয়ে আসে । ..................... সব চেয়ে অবাক করা ঘটনা হল ওদের শরিরে নখের  আচরের দাগগুলো না থাকলেও সবার গলার নিচে এক জায়গায় সবার এক রকম ১টা নখের আচরের দাগ আছে , জেটা এখন ও আছে ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .