রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৭

কালোজাদুর ছলনা

কালোজাদুর ছলনা
লেখা : প্রে তা ত্তা



রাত প্রায় ১টা বাজে । ছাদে বসে কথা বলছে দুপুর ঈশিকার সাথে ।প্রতিদিনই এভাবে কথা বলে ওরা ।আজ কথার মাঝে হটাত ঈশিকা বলে
ঈশিকা ঃ জান তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে
দুপুর ঃ কিভাবে আসবো বাবু ?
ঈশিকা ঃ আজ একটা মুভি দেখলাম সেখানে মেয়েটার বয়ফ্রেন্ড কালো যাদু জানে । সে তার কালোজাদু দিয়ে যখন খুশি তখন মেয়েটার কাছে চলে আসে । ইচ্ছে হলে অদ্রিস্য হয়ে যায় । বাবু তুমিও যদি পারতা ।
দুপুর ঃ হাহাহাহাহাহাহাহা ওইটা মুভিতেই সম্ভব ।
এভাবে রাত ২ টা প্রযন্ত কথা হওয়ার পর তাদের প্রেমালাপ শেষ হয় । কিন্তু দুপুরের ঘুম হয় না । সে কম্পিউটারে ফেবুতে বসে । হটাত তার মনে পরে কালোযাদুর কথা । ইউটিউবে গিয়ে ঘাটাঘাটী করে কিছু ভিডিও ডাউনলোড করে আর কিছু কালো জাদূর বই । তারপর ঘুমাতে যায় । লুটিয়ে পরে গভির ঘুমে ।
পরের দিন সন্ধ্যায়্ বাসায় এসে দুপুর ভিডিও গুলো দেখে । ঐ দিন সারা রাত বই আর ভিডিও দেখে পার করে । এমনকি সারা রাতে ঈশিকার ফোন প্রযন্ত ধরে না ।
সকাল সকাল বেরিয়ে পরে দুপুর । মা পিছন থেকে ডাক দিলেও সে কোন কথা না বলে চলে যায় । সারাদিন পার করে ঘরে ফিরে , হাতে ১ট ব্যাগ । বাসায় ফিরে খাওয়া দাওয়া করে আবার সেই ভিডিও নিয়ে বসে পরে । আজ ফোন বন্ধ করে রেখেছে । রাত ২ টার দিকে বাড়ী থেকে বের হয়ে যায় দুপুর । ফিরে পরেরদিন রাত ১১টায় । বাসায় এসেই ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয় । আজ ওর মা বাবা গ্রামের বাড়ি বেরাতে গিয়েছে । ১২টার সময় রুমের দরজা খুলে বের হয়ে ছাদে যায় । দুপুর কালো জামা পরেছে , ব্যাগ থেকে সিদুরের বক্স বের করে সিদুর দিয়ে গোল দাগ দেয় । দাগের চারপাশে মোমবাতি জালায় । লাল ১টা কাপর বের করে ওটা বিছিয়ে বসে । ব্যাগ থেকে ছোট ১টা চুলার মত বের করে আগুন ধরায় । ব্যাগ থেকে ১টা হাড্ডি সহ আরো অনেক কিছু বের করে সামনে রাখে । তারপর বই বের করে কি জেনো পড়াশুরু করে । এভাবে টানা ৩ ঘন্টা পরার পর হটাত তার বাড়িঘর কাপতে থাকে , ঝোরো বাতাস আসে , কিন্তু সে পরা থামায় না । এক্ সময় সে দেখতে পায় তার সামনে একজন বসে আছে । চুল গুলো অনেক বড় বড় , ফ্যকাসে মুখ , মুখের ভিতর কাটা দাগ , ছেরা কালো ১টা জামা পরা । আর সে সুন্যের উপর বসে আছে প্রেতাত্তা টা ।
প্রেতাত্তা ঃ এই হতভাগা বল তুই কেন আমাকে এই নষ্ট দুনিয়ায় ডেকেছিস ? তুই জানিস না এই দুনিয়ায় আমার সব শত্রু ?
দুপুর ঃ ক্ষমা করবেন আমাকে অশরিরি আত্তার মহারাজা । আমি আপনার জন্য এই পাঠা রেখেছি ।
প্রেতাত্তা ঃ মর হতভাগা । কেনো ডেকেছিস সেটা বল ?
দুপুর ঃ আমি অশরিরি ক্ষমতা চাই । আমি এই দুনিয়ায় আমার অসরিরি ক্ষমতা দিয়ে রাজা হয়ে বাচতে চাই । যা খুশি তাই করার ক্ষমতা দাও মহারাজা ।
প্রেতাত্তা ঃ হাহাহাহা …।। এটা পাওয়া এত সহজ নয় । এর জন্য তোকে অনেক কঠিন কাজ করতে হবে । তোর মরন ও হতে পারে ছোরা ।
দুপুর ঃ আমি সব মেনে নিতে রাজি আছি । তুমি সুধু আমাকে তোমার করে নাও ।
প্রেতাত্তা ঃ তাহলে শোন হতভাগা । তোকে তোর জীবন আমাকে দান করতে হবে । তারপর ৩ টি কুমাড়ী নাড়ীর তাজা রক্ত দিয়ে তোকে গোসল করতে হবে আর তাদের তাজা কলিজা খেতে হবে । তারপর আমাকে ডেকে পাঠা বলি দিলে তুই এই ক্ষমতা পাবি । আর এই কাজ করার সময় তোর অনেক বিপদ আসবে ।অন্য অশরিরিরা তোকে মেরে ফেলতে চাইবে । আর অনেক ভয়ংকর ঘটনা ঘটবে তোর সাথে ।
দুপুর ঃ আমি পারবো মহারাজা আমি সব পারবো । আমি আমার জীবন আপনাকে দান করে দিলাম ।
প্রেতাত্তা ঃ আমি এখন যাই । অনেক কাজ আছে আমার ।
এইবলে প্রেতাত্তা চলে যায় আর দুপুর জ্ঞ্যান হারিয়ে মাটিতে পরে থাকে ।
পরেরদিন বিকেলে ঈশিকা বাসায় আসে , বাসায় এসে দুপুরের রুমে ঢুকে দুপুরকে কিল ঘুশি মারা শুরু করে । দুপুর ঈশিকাকে জরিয়ে ধরে চুমু খায় । ঈশিকা দুপুরকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দেয় । সন্ধ্যায় ২ জন বের হয় ঈশিকার বান্ধবি রত্নার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে । সেখানে গিয়ে অনেক মেয়ে দেখে মনে পরে রাতের কথা । ঐ খান থেকে লিড়া নামের ১টা মেয়ের নাম্বার নেয় । বাসায় এসে শুরু করে লিরার সাথে কথা । দুপুর দেখতে অনেক সুন্দর তাই যে কোন মেয়েই প্রোপোস পেলে রাজি হয়ে যায় ।
লিরাও রাজি হয়ে গেল । একদিন লিরা কে নিয়ে দুপুর তার গ্রামের বাড়ি গেল । গ্রাম টা পুরো জনশুন্য । লিড়াকে এইখানেই খুন করবে সে । ঘরের ভিতর ঢুকিয়ে পিছন থেকে আঘাত করে । অনেক রক্ত ঝরতে থাকে । রক্ত গুলো রাখার জন্ন্য একটা বালতি আনতে যায় । বালতি নিয়ে এসে দেখে ২টা অশরিরি আত্তা লিরার পেট কেটে তার কলিজা বের করছে । দেখে দুপুর ওই আত্তাদের উপর ১টা হারিকেন ছুরে দেয় । অশরিরি গুলো একটু পিছ পা হয় । দুপুর সাথে সাথে ১টা সিগারেট ধরায় যাতে ওসরিরি গুলো কাছে ঘেসতে না পারে । তারপর সে লিরার কলিজা টা মুখে পুরে নেয় । ধিরে ধিরে খেয়ে ফেলে । আর রক্ত দিয়ে গোসল করে ।লিরার লাশটা মাটিতে পুতে রাখা শেষ হলে পাসের নদির তে যায় যাওয়ার সময় দেখে তার পিছে অনেক গুলো আত্তা আসছে , কিন্তু লিরার কলিজা টা খাওয়ার পর তার আর আগের মত ভয় করছে না । সে নদিতে নেমে ডুব দেয় । ডুব দিয়ে ঊঠে আসার সময় কে জেন তার পিছন থেকে পা টেনে ধরে । অনেক কষ্টে ছুটিয়ে চলে আসে ।
পরের দিন ক্যাম্পাসে যায় দুপুর । দুপুরের খুব কাছের বান্ধবি সাথি কে দুপুর প্রোপোস করে । প্রথমে না করলেও বাসায় গিয়ে ফোন দিয়ে তার সম্মতির কথা জানায় সে । ২ দিন পর তাকেও নিয়ে যায় সেই বাড়ীতে । এবার ওকে নিয়ে ছাদে উঠে । ছাদে নিয়ে হাত পা বেধে ফেলে সে তখন ৭/৮ টা সাদা বেরাল এসে ঝাপিয়ে পরে দুপুরের উপর । বিরাল গুলো মনে হচ্ছে সাথিকে বাচাতে চাচ্ছে । কিন্তু পারলো না । ইট দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেললো মেয়েটাকে আর বিরালগুলোও ভ্যানিশ হয়ে গেল । তারপর ছুরি দিয়ে কেটে কলিজা বের করে খেল , গোসল করলো রক্ত দিয়ে । মাটিতে পুতে রাখলো লাশটা । আগের দিনের মত নদির দিকে যাওয়ার সময় আত্তা গুলো আসলো , তবে আজ আরো ভয়ংকর রুপে । দুপুর ভয় না পেয়ে উলটো অদের দাবোর দিল । তারপর নদিতে ডুব দিয়ে ফিরে এলো ।
২দিন পর
দুপুরের মুখ থেকে আগের সেই সুন্দর ভাব টা নষ্ট হয়ে গেছে , দেখতে অনেকটা কুতসিত হয়ে গেছে । আজ সে ঈশিকা কে নিয়ে যাবে গ্রামের বারিতে । যেই ঈশিকার কাছ থেকে শুনে কালোযাদু নিয়ে ঘাটতে গিয়েছিল দুপুর । আর আজ সেই ঈশিকাকে মরতে হবে দুপুরের হাতে ।
রাত ৮টার দিক বাড়িতে আসলো ওরা । ঈশিকাকেও ছাদে নিয়ে গেল । ওইখানে গিয়ে সব বললো ঈশিকাকে ।যে সে লিরা আর সাথিকে খুন করছে আর এখন ঈশিকাকে করবে । ঈশিকার হাত বাধতে যাবে আর এই সময় ৪ টা আত্তা এসে হাজির । আত্তাগুলো বললো আজ আর আমরা তোমাকে সফল হতে দিবো না । এর পর প্রায় ঘন্টাখানেক ধস্তাধস্তি হয় । এর ফাকে ১টা আত্তা ইশিকার কানে এসে বলে ও তোমার কাছে এলে এই বালিটা ওর চোখে ছুরে দিবে তাহলে ও নিস্তেজ হয়ে পরবে , তারপর ওকে ফু দিবে ।
এক সময় সব আত্তা গুলোকে মেরে ফেলে দুপুর । তারপর সে ঈশিকার কাচ্ছে আসেতে থাকে । ঈশিকা পা পিছাতে পিছাতে ছাদের এক কোনায় চলে আসে । দুপুর ঈশিকার খুব কাছাকাছি আসলে ঈশিকা বালি ছুরে দেয় দুপুরের চোখে । আর তার পিছনে গিয়ে ফু দায় । তারপর দুপুর চিতকার করে ছাঁদ থেকে পরে যায়
দুপুরের রুম থেকে চিতকারের শব্দ শুনে ওর বাবা মা ছুটে আসে । এসে দেখে ও কাদছে । জিজ্ঞাস করা হলে বলে সে ভয়ানক সপ্ন দেখেছে ।
এর পর থেকে দুপুরের মানুশিক সমস্যা শুরু হয় , অসুস্থ ও হয়ে পরে দুপুর । হাসপাতালে নেয়া হয় । ঈশিকা দেখা করতে আসে । দুপুর কারো সাথে কথা বলতে পারছে না । কিন্তু সে ঈশিকাকে কি জেন বলতে চাচ্ছে । দুপুরে হাসপাতালের রুমে কেউ নেই , হটাত দুপুরের ঘুম ভেঙ্গে যাইয় । চেয়ে দেখে সেই অশরিরি প্রেতাত্তার মহারাজা ।
প্রেতাত্তা ঃ তুই পারিস নি হতভাগা , তুই পারিস নি । তুই তোর জীবন সপ্নে আমাকে দান করেছিলি আর তুই তোর সফল হতে পারিস নি তাই আমি তোর জীবন নিতে এসেছি।
দুপুর চিতকার করে বলে আমাকে বাচাও । ওই দেখ প্রেত্তাতা আমাকে নিতে এসেছে । ওর কাছ থেকে আমাকে বাচাও ।
কিন্তু কেউ দেখে না প্রেতাত্তাকে । প্রেতাত্তা দুপুরের কাছে এসে ওর বুকের উপর হাত রাখে । কিছুখন পর দুপুর ধিরে ধিরে নিস্তেজ হয়ে পরে ।
ডাক্তার এসে বলে সে মারা গেছে ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .