রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৭

রহস্যময়ি বুড়ি

রহস্যময়ি বুড়ি
লেখা : প্রে তা ত্তা

জামান, দুপুর, রাজিব বাজারের মোরে দারিয়ে আড্ডা দিচ্ছে । কিছুখন পরে ওদের সাথে যোগ দেই ঈমন আর সাজল এসে হাজির হয় । রাজিবের ফোন টা বেজে উঠে ।
রাজিব ঃ ওই সালারা আমাকে যেতে হবে , নানা ফোন দিছে ,
জামান ঃ নানা বাড়ি যাও তুমি । মামাতো এর সাথে তাই না ?
রাজিব ঃ আরে না । কেউ নাই । এমনি নানা জেতে বলছে ।
জামান ঃ তাহলে আমরাও জাবো । চল ।
রাজিব ঃ নানানানানা । আমি চাই না আমার নানা আর মামারা ফকির হয়ে যাক ।
দুপুর ঃ মানে কি ? আমরা কি বেশি খাই ?
রাজিব ঃ কম খাও না ।
ঈমন ঃ জামান দোস্ত রাজিব কিন্তু অপমান করলো ।
জামান ঃ চল আমরা সবাই ওর নানা বাড়ী যাবো ।
সাজ ঃ দারা মুইতা আসি । পেটটা একটু খালি করে আসি
দুপুর ঃ এই দেখ খাবারের ঘ্রান পেয়ে হিমেলও ছুটে আসছে ।
রাজিব ঃ আমি তোদের নিয়া জামু কিন্তু নানারে বলে দিতাছি যে ওরা কিছু খাবে না ।
দুপুর ঃ আরে খাবার লাগবে না । তোর নানিরে দেখতে পারলেই হবে ।চল এখন
এরপর ওরা সবাই মিলে রাজিবের নানা বারি থেকে খাওয়া দাওয়া করে বেরিয়ে আসে , জামান পকেটে করে পিঠা নিয়ে আসে ।বাইরে এসে খাওয়া শুরু করে । যায়গাটা একটু নিরজন । জামান খাচ্ছে এমন সময় কোথা থেকে এক বুড়ি এসে জামানের কাছে পিঠা চায় ।
বুড়ি ঃ ওই কি খাস্ আমাকে দে
জামান ঃ দাদি পিঠা খাই , কিন্তু পিঠা তো শেষ । নাও এইটুকুই খাও ।
বুড়ী ঃ আমাই আইটা পিঠা খাই না , মনে রাখিস তুই আমাকে পিঠা দিলি না ।
জামান ঃ ওকে দাদি মনে রাখুম ।এরপর ওরা পালামগঞ্জ ব্রিজে এসে বসে ।সাওন ভাই এসে হাজির ইতিমধে ।সব শুনে শাওন ভাই বলে তোরা আমাকে ছেরে যেতে পারলি ?
আচ্ছা চল আমরা দুপুরের নানী বাড়ী থেকে ঘুরে আসি । দুপুর প্রথমে যেতে নারাজ না হলেও পরে রাজ়ী হলো ।
আগামিকাল ভোরে তারা দুপুরের নানা বাড়ি ফরিদপুর যাবে ।ঈমন ছারা বাকি সবাই যাবে ।
ভোরে তারা এক হয়ে বাহ্া ঘাট এসেছে । এখান থেকে তারা বোটে উঠে । ওরা সবাই খুব মজা করতে থাকে । বিশেষ করে হিমেলকে নিয়ে । হিমেল ছাড়া বাকি সবাই বোটের ছাদের উপর উঠেছে । হিমেল খুব ভয় পায় ।সবাই সেলফি নিয়ে ব্যাস্ত । কিছুখন পর হটাৎ দুপুরের চোখে পরে এক বৃ্দধ মহিলাকে । যে কিনা ছাদের উপর । কিন্তু সে কিভাবে এখানে এলো । যাই হোক হিমেল কে এটা দেখিয়ে একটু লজ্জা দেই ।
দুপুর হিমেলকে টেনে বোটের মাথার সামনে এনে হাত উচু করে দেখিয়ে বলে
দুপুর ঃ গাধা ওই দেখ এক বুড়ি ছাদে উঠে বসে আসে আর তুই পারিস না সালা , ওই শাওন ভাই দেখো ওই বুড়ি যদি উঠতে পারে তাহলে ও পারবে না কেন ?
হিমেল ঃ তোরে চোখের ডাক্তার দেহাইতে হইবো ।উই ছাদে বূড়ী দেখে । যা ভাগ ।
শাওন ঃ ওই দুপুর হিমেলের জন্ন্য বুড়ি খুজে নিয়ে আসছে । হিমেলকে বিয়ে দিবে ।
ওরা সবাই এসে বলে কই কই হিমেলের বউ কই ? ছাদে তো কোন মহিলা দেখি না ।
শাওন ঃ আরে দুপুর হিমেল জিগারের দোস্ত না । তাই দুপুর একাই দেখে ।
বলে হাসতে হাসতে চলে গেল সবাই সেলফি তুলতে । কিন্তু …… কিন্তু দুপুর এখনো ঐ বুড়িটাকে দেখছে । ও আরেকটা বিষয় নিটিশ করলো যে বূড়িটা জামানের দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে । কেমন যেন চেনা চেনাও লাগছে বুড়িটাকে ।
কিছুখন পর দুপুর সাজলের কাছে গিয়ে ব্যাপারটা খুলে বলল । সাজল হাসতে হাসতে যেন গড়াগড়ি ।সজল সবাই কে ডেকে বলল । দুপুরের মাথা গেছে , ভুতের আর পেত্নীর গল্প লিখতে ও গেছে । কথাগুলো শুনে দুপুর লজ্জা পেলো । শুধু বলল আমি তোদের সাথে মিথ্যে বলছি না । শুধু রাজিব দুপুরের কথার গুরুত্ত দিলো কিন্তু এ ব্যাপারে আর আগ বাড়ালো না ।
১২টার দিক ওরা দুপুরের মামা বাড়ী চলে এলো । ফ্রেশ হয়ে গ্রামটা ঘুরে দেখলো তারপর দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে রওনা দিলো পল্লি কবি জসিম উদ্দিনের বাড়ি । সেখানে অনেক ঘোড়া ঘুড়ি অসংখ ছবি তুলছে । হটাৎ জামানের চিৎকারের শব্দ শুনে সবাই দোর দেই । গিয়ে দেখি জামান সেন্সলেস । মাথায় পানি ঢেলে জ্ঞান ফিরলে অ বলে । ও যখন কবির ভাইএর কুড়ে ঘরে দেখতেছিল তখন পিছন থেকে ১টা বুড়ি এসে গলা চেপে ধরে ।
সাজল ঃ বুরি তো খাটো , তোর গলা ধরলো কিভাবে ?
জামান ঃ এটা দেখেই আমি বেশি ভয় পাইছি । বুড়ি শুন্যের উপর দারিয়ে ছিল । আর গলাটা আমার ব্যথা করছে এখনো ।
দুপুর ঃ আমার এখন মনে পরছে । আমি বোটে যে বুড়িটাকে দেখেছি সে ওই মহিলা যে জামানের কাছে পিঠা চেয়েছিল আর না পেয়ে সে বলেছিল যে সে দেখে রাখবে । তারমানে ওই বুড়ি প্রেতাত্তা ।
শাওন ঃ ওই চুপ । আমাদের পাগল পাইছিস । তর ভুত গবেষনা তুই বিভোর আর লিমনকে নিয়ে করা । আমাদের জরাবি না ।
দুপুর ঃ ভাই জামানের গলায় এখনো দাগ আছে দেখেন । (দুপুর হাত দিয়ে দেখাতে গেলে শাওন হাত শরিয়ে দেয়)
তারপর শাওন ওদের নিয়ে ওইখান থেকে চলে আসে । বোটঘাটে এসে দেখে যে শেষ বোটটা একটু আগে ছেরে গেছে । তারমানে আজ আর ওদের বাড়ি যাওয়া হচ্ছে না । দুপুর লক্ষ করে দূরে সেই বুড়িটা , এবার সে দুপুরের দিকে তাকিয়ে আছে । মুচকি মুচকি হাসছে । দুপুর বুঝতে পারছে না বুড়ীটা কি চায় তাদের কাছে ।তারপর ওরা দুপুরের মামার কাছে এসে বলে মামা বোট পাই নি , তাই এখন আমরা মইনুটঘাট দিয়ে যাব । কিন্তু মামা যেতে দেয় না । তারপর ওরা ফরিদপুরের ওয়ান্ডারল্যান্ড এ যায় । সেখানে গিয়ে ওরা যেন ওদের শিশুবেলায় ফিরে যায় । বিভিন্ন রাইড ঘুরে , খাওয়া দাওয়া করে , ছবি তুলে । ওরা বাকি সব ভুলে যায় ।রাত প্রায় অনেক হয়ে যায় । বাইরে বের হয়ে অটো ভাড়া করছে এমন সময় রাজিব রাস্তায় পরে যায় , আর একটু হলে ও বাইকের নিচে পরতো ।
দুপুর ঃ কিরে তুই কিভাবে সুকনা রাস্তায় আছার খাস গাধা ?
রাজিব ঃ না দোস্ত , মানে মানে (আমতা আমতা করে) আমার পাসে ১টা বাচ্চা ছিল ঐ বাচ্চাটা আমাকে বাইকের সামনে ধাক্কা দেয় । আল্লাহর রহমতে ভাগ্যভালো বাইক চালক দক্ষতার সাথে পাস কাটিয়ে গেছে ।
শাওন ঃ দুপুর তুই সত্ত্যিই বলেছিস । আমাদের সাথে কিছু ১টা ঘটছে । আমি যখন দোলনা তে আমার পাসের দোলনায় কী ছিল না । কিন্তু শুরু হওয়ার পর সেখানে ১টা বাচ্চা মেয়ে দেখতে পাই , এবং শেষের দিকে হটাৎ ওই দিকে আবার তাকিয়ে দেখি ওইখানে কালো শাড়ী পরা এক বুড়ী ।
জুনায়েদ ঃ আমার মনে হয় আমাদের এখনি বাসায় যাওয়া দরকার , তারপর সকালে বাড়ী ।
ওইখান থেকে বাসায় চলে আসে । রাতে খাওয়া দাওয়া করে দুপুরের বড় মামার বিল্ডিয়ে যায় ঘুমাতে । ওইখানে কেউ থাকে না । বড়মামা ঢাকা থাকে । তানিমকে নিয়ে ওরা চলে আসে বিল্ডিং্যে ।কিছুখন টিভি দেখে যার যার মত রুমে শুতে যায় । জুনায়েদ , শাওন ভাই , সজল এক রুমে । জামান , সজল আর রাজিব এক রুমে আর দুপুর আর ওর ছোট ভাই তানিম এক রুমে ।
কে যেন চিৎকার করছে । চিৎকারে ঘুম ভেংগে যায় দুপুরের । দরজায় টোকা দিচ্ছে শাওন ভাই , দরজা খুলে দেখে শাওণ ভাই বলছে বাইরে দেখ । মেইন দরজার কাছে গিয়ে দেখে কয়েকটা বুড়ি(এক রকম দেখতে) জামান কে ঘিরে আছে সাথে কয়েটা বাচ্চা । বুড়ি গূলো কে খুবি ভয়ংকর লাগছে । প্রতত্যেক এর গলায় ফাসির দড়ি ঝুলছে । আর ১টা বুরির হাতে ফাসির দরি , ধিরে ধিরে জামানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে । হটাত দুপুর দোরে রুমে গিয়ে সিগারেটের প্যাকেট নিয়ে এসে সিগারেট ধরায় তার পর জ়ামানের দিকে আগায় । শাওন ও তাই করে । দুপুর জামানের কাছাকাছি পোছে গেলে বুড়ি গুলো গড়গড় করতে করতে ভ্যানিশ হয়ে যায় । সবাই বাইরে এসে জামান কে ধরে । জামান সেন্সলেস হয়ে যায় । আবার বূড়ি সেই কুৎসিত হাসি শুরু করে । তারপর শুরু হয় প্রচন্ড বাতাস , বাতাস যেন সবাই কে ঊরিয়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছে । হাত থেকে সিগারেত গুলো পরে উড়ে যায় । বাতাস থেমে যায় কিন্তু পরক্ষনেই তাদের চারপাশ দিয়ে তৈরি হয় আগুনের চক্র । প্রচন্ড তাপে যেন তাদের গা পুরে যাচ্ছে । আজ বুঝি তার আর বাচবে না । মৃত্য তাদের নিকটে । এই আগুনেই তাদের মৃত্য হচ্ছে । মৃত্যর পর তারও হয়তো ওই বুড়ির মত কোন প্রেতাত্তা হবে । তারাও আবার কাউকে হয়তো এভাবেই আবার মারবে । তারাও আবার প্রেতাত্তা হবে । আসলেই এভাবেই তাদের বংশবিস্তার হয় । তাদের তো আর প্রজনন ক্ষমতা নাই ……… এক সময় সব অন্ধকার হয়ে যায় ।

জ্ঞ্যান ফিরে দুপুরের প্রায় দুপুরের দিকে , তার আগে অন্ন্যদের জ্ঞ্যান ফিরে তবে ওদের সবার জর । সকালে বাড়ির সামনে ওদের অজ্ঞ্যান অবস্থায় পরে থাকতে দেখে । ওরা এখন প্রায় সুস্থ , জর আছে ,কিন্তু সবাই খুব ভয়ে আছে । দুপু্রের আর জামানের বাবা এসেছে ওদের নিয়ে যেতে । সবার একই প্রশ্ন , কি হয়েছে আর কেন হয়েছে ? দুপুররা কোন সংগা খুজে পাচ্ছে না এই ঘটনার ।
দুপুর আর রাজিব শুয়ে আছে আর ভাবছে । এমন সময় অরথি এসে বলে
অরথি ঃ ভাইয়া একটা পিচ্চি মেয়ে , আমার চেয়ে পিচ্চি বাচ্চামেয়ে তোমাকে এই চিঠিটা দিয়ে গেছে ।
দুপুর ঃ মেয়েটা কে ? আমাকে চিঠি দিবে কেন ?
অরথি ঃ আমি চিনি না । আর কেনো দিছে সেটা আমি কিভাবে জানবো । আমি গেলাম ।
দুপুর চিঠিটা পরে , শোয়া থেকে উঠে বসে আবার পরে । তারপর মুচকি হাসে , অর মুখ থেকে সব ভয় আর চিন্তা উধাও হয়ে যায় । দুপুরের হাত থেকে চিঠিটা নিয়ে রাজিবও পরে । রাজিব পরে হাসতে হাসতে বলে , আজকাল প্রেতাত্তারাও sorry বলে , আবার পিঠাও খেতে চায় ।
বিকেলেই ওরা দোহার চলে আসে । পরেরদিন দুপুর , শাওন ভাই আর রাজিব রাতে সেই খানে , যেখানে বুড়ি জামানের কাছে পিঠা চেয়েছিল সেখানে এসে ওরা ১তা বক্সে কিছু পিঠা রেখে যায় । রাজিব বলে হ্যা চিঠিতে এখানেই পিঠা রেখে যেতে বলেছে । দুপুর পিঠার বক্সের নিচে ১টা চিঠি রেখে আসে , যেখানে লিখা ছিল it’s ok dears . তারপর ওরা চলে আসে । চিঠির বিষিয়ে ওরা ৩জন ছারা আর কেউ জানে না । বাকি গুলাতে এখনো এই ঘটনার সংগা খুজে ফিরছে হয়তো আজও

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .