শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৭

মায়াবতি

মায়াবতি
লেখা : প্রে তা ত্তা


ধানমন্ডি লেকের ৩ নং জল ছাওনি সাজানো হচ্ছে। অনেক রকম বেলুন দিয়ে সাজাতে ব্যস্ত দুপুর, নিরব, জুয়েল,সাকিল, ইউসুফ, নিলিমা,হামিদুল,লেমন,­­ জনি। আজ মাহাদির জন্মদিন। আর ওর জন্মদিনভিন্নভাবে সেলিব্রেট করার প্লান করেছে ওরা। মাহাদি এখনও জানে না, ও জানে ওরা মাহাদির কাছে খেতে চেয়েছে তাই ওকে এখানে আসতে হবে।
মাহাদি ফোন দিয়েছে সে আসতেছে আর সাথে তার মায়াবতি। মায়াবতি মাহাদির প্রেমিকা, খুব ভালোবাসে ২ জন২জন কে। সন্ধা হয়ে গেছে, মোমবাতি দিয়ে পুরো ছাওনি কে আলোকিত করে ফেলেছে।
কিছুখন পর ওরা এসে হাজির, সাথে আরো ২ জন। মায়াবতির খালাতোবোন হয়। মাহাদি আসার সাথে সাথেই ওরা সবাই মিলে চিতকার করে ওকে ওইস করে। গান ধরে জুয়েল,ছেলেটা খুব ভালো গান গায়। এরপর যথারিতি কেককাটা হয়। সবার প্রথম মাহাদি মায়াবতিকে কেক খাওয়ায় তারপর সবাইকে। নিরব এক পিস কেক নিয়ে মাহাদির মুখে মেখে দেয় , তারপর সবাই মেতে উঠে কেক মাখানোর আনন্দে। সেকি মজাই না করে পাগল গুলি। তারপর ওরা ডিংগি রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে ডিনার করে। ডিনার শেষে মায়াবতি মাহাদিকে ১টা গিফট প্যাকেট দেয়। তারপর ১টা cng নিয়ে চলে যায়। মাহাবিতির চলে যাবার পর প্যাকেট টা খুলে, ওটার ভিতর ১টা ইদুর এর বাচ্চা। তাও আবার মরা। but মাহাদি খুব খুসি। দুপুর বলে হায়রে মায়া মানুষ টাকা বাচাইতে গিয়ে বয়ফ্রেণ্ড কে ইদুর উপহার দেয়। আর আমরা অবলা পুরুষ সেই ইদুর কে হরিনের বাচ্চা মনে করে কতই না খুশি হই। কথা বলা শেষ হওয়ার আগে মাহাদি দুপুরে ১টা থাপ্পর দেয়।
এভাবেই চলে মাহাদি আর মায়াবতির প্রেম। মাসে একবার দেখা করে। মাহাদি মায়াবতির জন্ন্য ক্যাডবেরি আর মায়াবতি মাহাদির জন্ন্য তার মায়ের সস্তা আচারের বোতল থেকে বেচে পচা আচার নিয়েআসে। এগুলো পেয়ে ২ জনই খুশি হয়। মাহাদি অনার্স ফাইনাল ইয়ারের পরিক্ষা দিল মাত্র। সে এখন মায়াবতি কে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু মায়া বতি নিজে অনার্স শেষ না করে বিয়ে করবে না বলে যেদ ধরে। এই নিয়ে ২ জনের ভিতর ঝগড়া হয়।
পরের দিন দুপুরের দিকে দুপুরের অফিসে এসে হাজির মাহাদি। মুখ টা আকাশের মেঘের মত কালো করে রেখেছে। দুপুর চা খেতে খেতে জানতে চাইলো কি হয়েছে। মাহাদি সব কথা খুলে বললো আর বলল ১টা উপায় বের করতে। অনেক ভেবে চিন্তে তারপর দুপুর মায়াবতির সাথে ফোনে কথা বলল। কথা শেষে মাহাদিকে বলল যে আজ রাত ১২ টার পর যেন ও অবস্যই ফেসবুকে থাকে। আর রাতেই সব বুঝিয়ে বলবে ফোনে। এরপর চলে যায় মাহাদি।
আগেই মায়াবতি সহ সব বন্ধুদের সাথে কথা বলে রাখে দুপুর। রাতে ১টা গ্রুপ চ্যাট ওপেন করে এবং সেখানে মাহাদির ২ টা ফ্রেন্ড আর মাহাবতির ২খালাতোবোন কে সাক্ষি রেখে গ্রুপ চ্যাটে ওদের বিয়ে করানো হয়।
পরের সপ্তাহে মাহাদির জন্মদিন, সাথে বিয়ের খাওয়াটা। আবার পুরোনো সেই জল ছাওনি তে আয়োজন। খুবমজ মাস্তি করলো। মায়াবতি এবার মাহাদিকে নীল একটা পাঞ্জাবি গিফট করলো। এভাবে আরো ৮ মাস কেটেগেল। মাহাদির ১টা ব্যাংকে চাকরির ইন্টার্ন চলছে।জুয়েল মাহাদিকে ফোন দিয়ে বলছে যে সে আর সাকিব আর সাকিল নাকি আজ মায়াবতি কে ১টা ছেলের সাথে tsc তে দেখেছে। কথা টা শোনার পর থেকেই মাহাদির মন খারাপ। মায়াবতি ইদানিং অনেক চেঞ্জ হয়েগেছে। আগের মত ওকে সময় দেয় না। ঠিক মত কথা বলে না।
রাত প্রায় ১ টা বাজে। তখন মায়াবতি মাহাদিকে ফোন দিল। বলল কাল সকালে যেন সে একটু রবিন্দ্র সরবরে আসে। সকালে চলে গেল সরবরে মাহাদি। মুখ কালো করে আছে মায়াবতি। কিছুখন পর মায়াবতি নিচের দিকে তাকিয়েমায়াবতি : মা আমার বিয়ে ঠিক করেছে। আগামি সাপ্তাহে আমার বিয়ে। আমার ওই ছেলেকেই বিয়ে করতে হবে। আমি তোমার সাথে থাকতে পারবো না।এই বলে মায়াবতি চলে যায়। আর মাহাদি মাটিতে হাটু গেরে বসে কাদতে থাকে। তারপর থেকে মায়াবতির ফোন অফ। মাহাদিকে সারা রাত আর খুজে পাওয়া যায় নি। পরেরদিন ধানমন্ডি বারে থেকে ফোন আসে যে মাহাদি ওইখানে।
এভাবে দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ছেলেটা। অনেক চেষ্টা করেও দুপুররা ওকে সাভাবিক করতে পারছে না। একদিন বিকেলে নাঈম আর মাহাদি জয়পারা কলেজ মার্কেট বসে আছে ইউসুফ এর দোকানে। তখন দেখে মায়াবতি ১টা ছেলের হোন্ডার পিছে বসে কোথাও যাচ্ছে। ইউসুফ বলে হয়ত এটাই ওর জামাই। তারপর মাহাদি নাঈম এর কাছ থেকে বাইক নিয়ে ওদের পিছনে যায়। বেশ কিছুখন পর লেমন ফোন দিয়ে বলে মাহাদি এক্সসিডেন্ট করেছে।
তারপর মাহাদিকে ঢাকা আনা হয়। পায়ে অপারেশন করতে হয়েছে। ২ মাস হাটতে পারবে না। মাহাদি এখন মায়াবতি কে ঘ্রিনা করা শুরু করেছে।
মাহাদি এখন সুস্থ। আজ মাহাদির আবার জন্মদিন। আজ পানসি তে মাহাদি দুপুরে পার্টি আয়োজন করেছে। কারন ওর ব্যাংকে জব হয়েছে। দুপুরের সবাই মিলে অনেক আনন্দ করছে। সেখানে মায়াবতির আগোমন। মায়াবতি কাছে এসে মাহাদিকে জন্মদিনের শুভেছা জানায় আর বলে তুমি কি আমাকে ক্ষ্মমা করে তোমার আপন করে নিবে আবার?কথা শেষ হবার পর মাহাদি অকথ্য ভাষায় তাকে অপমান করে এবং এখান থেকে চলে যেতে বলে। মাহাদির কথা শুনে মায়াবতি কাদতে কাদতে চলে যায়।
দুপুর মাহাদিকে ১টা থাপ্পর দিয়ে বলে, আরে গাধা এই মেয়েটাকে তুই তারিয়ে দিল তুই কি জানিশ ও তোকে কত ভালোবাসে। ওর মা যেই বিয়ে ঠিক করেছিল ও সেই বিয়ে করে নি। আর যে ছেলের সাথে ওকে দেখিছিলি মায়াবতিকে তোরা সে ওর মামা।যা দোস্ত প্লিজ ওকে নিয়ে আয়। দুপুরের কথা শুনে দোর দেয়মাহাদি। কাছে গিয়ে জরিয়ে ধরে তার মায়াবতিকে।
তারপর বাংলা ছবির মত কাদতে থাকে। আর দুপুর আর নিরব ফোনে দুই পরিবারকে বলে যে তারা এখন মাহাদি আর মায়াবতির বিয়ে দিবে। অত:পর অনুমতি নেয়। মায়াবতির সেই অল্পবয়সি মামাকে বিয়ের উকিলবাবা রাখা হয়। বিয়ে শেষে ২জনকে বন্ধুদের পক্ষথেকে ঢাকা কক্সবাজার ঢাকা টিকেট দিয়ে কক্সবাজার হানিমুনে পাঠানো হয়।।।।
এভাবেই পরিসম্পাতি ঘটে মাহাদি আর মায়াবতির প্রনয় কাহিনি।
( গল্পের ভুলত্রুটি গুলো সবাইকে ক্ষ্মা সুন্দর মনে দেখার জন্ন্য অনুরোধ করছি। আর আজ আমার বন্ধু মাহাদির জন্মদিন ওর জন্য সবাই দোয়া করবেন। এই বোরিং গল্পটা ওর জন্ন্যই লেখা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .