রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৭

জমগাড়ী

জমগাড়ী
লেখা ঃ প্রে তা ত্তা


অর্নব সদ্য উচ্চমাধমিক পাস করে ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে । মহানগরের নামকরা একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হয়েছে । সুমাইয়া; অসম্ভব সুন্দরি একটি মেয়ে , বিধাতা তাকে যেনো অন্যদের চেয়ে আলাদা মনোযোগ দিয়েই বানিয়েছে । সুমাইয়া অর্নব এর সাথেই পাস করে ভর্তি হয়েছে একসাথে । অনেক আগে থেকে দুজন দুজন কে ভালোবাসে । আজ ওদের প্রথম ক্লাস । বুশরা , স্বদিপ ,রাসেল আর আলিফা চলে এসেছে , কিছুখন পর সুমাইয়া আর অর্নব ও চলে আসে । ভার্সিটি লাইফের প্রথম ক্লাস টা সবাই আনন্দের সাথেই শেষ করে । ক্লাস শেষে সবাই মিলে ছোট ১টা কফিশপে বসে আড্ডা দিচ্ছে । রাসেল ঃ মনটা খারাপ হয়ে গেলো রে দোস্ত ?
আলিফা ঃ কেনো রে ?
রাসেল ঃ পরিক্ষার পর ৪ মাস ঘরে বসে ছিলাম । ৪মাস পর আজ আবার পড়ালেখার জীবন মানে ব্যস্ত জিবনে ফিরে আসলাম । আসার পর পর ঈ ১৫ দিনের বন্ধ । বল এটা কি মেনে নেওয়া যায় ?
স্বদিপ ঃ হ্যা , কথা সত্ত্যি বলছে । যান্ত্রিক জীবন আর ভালো লাগছে না ।
আলিফা ঃ চল আমরা কক্সবাজার থেকে ঘুরে আসি ?
সুমাইয়া ঃ না কক্সবাজার না । অন্য কোথাও চল ।
স্বদিপ ঃ কোথায় যাবো আর , তুই বল ?
সুমাইয়া ঃ গ্রামের দিক যেতে পারলে ভালো হতো ।
অর্নব ঃ আমি কখনো আমার গ্রামের বাড়ী যাই নি । আব্বু আমাকে কিছুদিন হলো বলছে যে গ্রাম থেকে ঘুরে আসতে । চল আমরা সবাই মিলে ঘুরে আসি । যাবি ?
সুমাইয়া ঃ যাওয়া যায় । কিন্তু কতদুর ?
অর্নব ঃ বরিশালের আরাইবেরি তে । লঞ্চে যেতে হবে । যাবে তুমি সুমাইয়া ?
আলিফা ঃ ওয়াওওও । জোশ হবে দোস্ত । আমরা সবাই যাবো , কি বলিস তোরা ?
এরপর সবাই ঠিক করে তারা পরেরদিন রাত ১০টার লঞ্চে করে বরিশাল যাবে । সুমাইয়াকে প্রথমে বাসা থেকে ছারতে চাচ্ছিলো না । আলিফা আর বাকি বন্ধুরা মিলে ওর বাড়ির সবাইকে রাজি করাই ।
রাত ৯.৪০ বাজে , সবাই চলে এসেছে শুধু অর্নব ছাড়া । অর্নব সব কিছুতেই লেট । ওদের বাড়িতে সবাই যাচ্ছে যেখনে অর সবার চেয়ে আগে আসার কথা সেখানে ওর কোন খবর নাই । সবাই হতাস হয়ে বসে আছে । ১০টা বেজে গেছে লঞ্চ ছেরে দিবে এখন । ঠিক এমন সময় ব্যাগ কাধে হাজির হয় অর্নব ।
অর্নব ঃ কিরে লঞ্চ ছেরে দিচ্ছে তোরা এইখানে কেন ? চল
আলিফা ঃ তোর মত মাথা মোটা ফ্রেন্ড থাকলে এইভাবেই দারিয়ে থাকতেই হবে ।
সুমাইয়া ঃ এই তুই সব অর্নবকে মাথামোটা বলিস কেন আলিফা মুটী ।
স্বদিপ ঃ ভাই তোরা ঝগরা থামা আর লঞ্চে উঠ প্লিজ ।
এরপর ওরা লঞ্চে উঠে । অর্নবের বাবা আগেই লঞ্চের টিকিট কেটে রেখেছিল । বিশাল লঞ্চ । তিন তালার সামনের দিকের ২টা কেবিন ওদের জন্ন্য ।
ধিরে ধিরে লঞ্চ সদরঘাট ছেরে বিশাল নদীতে পৌছে । অর্নব সুমাইয়া স্বদিপ রাসেল আলিফা বুশরা লঞ্চের সামনে বসে আড্ডা দিচ্ছে । রাত এখন প্রায় ১টা বেজে গেছে । সুমাইয়া আর অর্নব ছাড়া বাকি সবাই এখন কেবিনে । এইফাকে ২জন একটু প্রেম করে নিচ্ছে আর কি । অর্নব সব সময় সুমাইয়ার চুলের ঘ্রান নেই , কাছে এর মধেই সে তার সব সুখ খুজে পায় । কিন্তু সুমাইয়া অর্নবের বুকে মাথা গুজতে ভালোবাসে । সুমাইয়া অর্নব কে জরিয়ে ধরে মাথাটা অর্নবের বুকে গুজে দেই । অর্নব সুমাইয়ার কপালে আলতো করে চুমু খায় ।
হটাৎ করে ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে ।নদী উত্তাল হয়ে উঠে । সবাই চিৎকার চেচামেচি শুরু করে দেয় । লঞ্চ টা কোনরকম ১টা পারে নিয়ে যায় । ১টা চরে । যেখানে শুধুই বালু আর বালু , তবে দূরে ঘর বাড়ী দেখা যাচ্ছে । লঞ্চ থেকে নেমে ওরা কিছুখন সেখানে বসে থাকে , এরকিছুখন পর আবার শুরু হয় ঝর । একটা সময় ঝর থেমে যায় । ঝর শেষে আবার লঞ্চে উঠে পরে সবাই । লঞ্চেউঠার সময় অর্নব খেয়াল করে যে একজন বৃ্দ্ধলোক ওদের ফলো করছে । অনেকটা পাগল টাইপের ।
১টা কেবিনে আলিফা , বুশরা আর সুমাইয়া আর ১টা কেবিনে অর্নব , রাসেল আর স্বদীপ ।
অর্নব খেয়াল করে যে সেই বৃ্দ্ধ লোকটা রাগান্নীত চোখে এক পলকে ওর দিকে তাকিয়ে আছে । অর্নব কিছুটা ভয় পেয়ে যায় । সে কেবিনের বাইরে এসে লোকটা জিজ্ঞাস করে যে আপনি কে । কিন্তু লোকটি কোন কথা না বলে হেটে চলে যায় । অর্নব কেবিনে ফিরে এসে ঘুমিয়ে পরে ।
রাসেলের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে অর্নবের ।
রাসেল ঃ এই অর্নব আমরা চলে এসেছি । উঠ বেটা ।
অর্নব ঃ চলে আসছি ।
সবাই লঞ্চ থেকে নেমে গাড়ীর জন্ন্য অপেক্ষা করছে । অর্নবের বাবা গাড়ীর ব্যাবস্থা করে রেখেছে , সে নিতে আসবে । অর্নব খেয়াল করলো এখনো সেই লোকটি তার দিকে তাকিয়ে আছে । অর্নবের মনে হচ্ছে লোক যেন তাকে তার বাড়িতে যেতে মানা করছে ।
আলিফা ঃ এই মাথা মোটা তোর বাপের ফেরারী গাড়ী আসে নাই ?
সুমাইয়া ঃ মুটি তুই আবার ওকে মাথা মোটা বললি কেন ?
বুশরা ঃ এই নে আবার শুরু ২জনের ঝগরা …। এখানে আমরা ঘুরতে আসছি , তোদের ঝগড়া দেখতে না ।
সুমাইয়া ঃ ও কেন অর্নব কে সব সময় মাথামোটা বলে ? আমার অসহ্য লাগে ।( আলিফা পাসে মুচকি মুচকি হাসে)
স্বদীপ ঃ পাগলি ও তোকে ক্ষ্যাপানোর জন্য বলে , তোদের মিষ্টি প্রেমের মজা লুটে আরকি ,
গাড়িওয়ালা ঃ ভাই আপনারা কি ঢাকা থেকে আসছেন ? আড়াইবাড়ী যাবেন ?
অর্নব ঃ হ্যা । আপনাকে কি আমার বাবা পাঠিয়েছে ? মানে আমি অর্নব ।
গাড়ীওয়ালা ঃ অর্নব ভাই ? কত্তো বড় হইয়া গেছেন , সেই ছোট্টকালে দেকচি । আহেন গাড়ী তে উডেন ।
ওরা সবাই গাড়িতে গিয়ে বসে । গাড়ী গিয়ে থামে পুরাতন ১টা জমীদার বাড়িতে ।
রাসেল ঃ কিরে অর্নব তোরা কি জমিদার ছিলি নাকি ?
অর্নব ঃ না , জমিদার রা ৪২এর পর দেশ ছারার সমহ তাদের সব বিক্রি করে গেছিলো । তখন আমার দাদা কিনে রাখছিলো ।
সুমাইয়া ঃ ( অর্নবের পাসে গিয়ে বাহু ধরে কাধে মাথা রেখে ) বাবু আমরা কি এই বাড়িতে থাকবো ? এই পুরাতন বাড়ী ?
অর্নব ঃ জি মহারানী
সুমাইয়া ঃ এই এইসব পুরাতন বাড়ীতে নাকি ভূতপেত থাকে ? যদি …।
অর্নব ঃ আরে না পাগলি , ভূত প্রেত বলতে কিছু নাই রে
( হটাৎ করে কর্কস ভয়ংকর চিৎকার করে কালো ১টা দার কাক ওদের সামনে পরে )
সবাই চিৎকার করে উঠে , সুমাইয়া অর্নবকে জরিয়ে ধরে । আলিফা আর বুশরা ও খুব ভয় পেয়ে যায় ।
সুমাইয়া ঃ আমার খুব ভয় লাগছে অর্নব , আমি এই বাড়িতে থাকবো না ।
স্বদীপ ঃ আরে গাধিরে এইটা দেখে ভয় পেলে হবে , গ্রামে কাক থাকবে বা তো কোথায় থাকবে ?
কিছুখন পর অর্নবের এক চাচা আসে , সে এসে ওদের সাথে কথা বলে । ওদের থাকার ব্যাবস্থা আর খাবার ব্যাবস্থা কিভাবে করেছে , কিভাবে ওরা থাকবে সব বুঝিয়ে দেয় । আর বল্টু নামের ১টা ছেলেকে রেখে যায় ওদের দেখাশোনা করার জন্ন্য ।
সকালের নাস্তা শেষ করে ওরা গ্রাম টা ঘুরে দেখতে বের হয় । গ্রাম ঘুরে দুপুরে চাচার বাসায় গিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে একটু রেষ্ট নিয়ে বের হয় বিক্ষ্যাত রায়েরবাড়ির দিঘি দেখতে । ওরা খুব মজা করে অনেক অনেক ছবি তুলে , সারাদিন ঘুরে বেড়ায় । সন্ধ্যায় পাসের গ্রামের পালাগানের আসরে যায় । ওরা এই প্রথম পালাগানের আসর দেখে । যাই হোক ওরা তবু দেখেছে আমার তো সেই কপালো হয় নাই । আচ্ছা ওদের গল্পে ফিরে আসি ।
পালাগান শেষে বাড়ী ফিরে আসে ।গ্রামের আসে পাসের সব খানে বিদ্যুৎ আসলেও এই বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই , হয়তো কেউ থাকে না বলে । তবে অর্নবের বাবা জেনারেটর এর ব্যাবস্থা করে রেখেছে । লাইট ফ্যান সবি চলছে । এক রুমে সুমাইয়া , আলিফা আর বুশরা এবং আরেক রুমে অর্নব , রাসেল আর স্বদীপ এর থাকার ব্যাবস্থা হলেও সুমাইয়ার অনুরোধে ওরা সবাই একরুমে থাকার সিদ্ধান্ত নেই । রাসেল ব্যগে প্লেইং কার্ড নিয়ে এসেছিল সেটা বের করে খেলছে বুশরা , অর্নব , রাসেল আর স্বদীপ । সুমাইয়া অর্নবের কাধে মাথা রেখে খেলা দেখছে । যদিও সে কিছুই বুঝে না। আলিফা কিছুটা বুঝে , সে আর বুশরা মিলেই খেলছে । খেলার মাঝখানে হটাৎ শেয়ালের ডাকে ভয় পেয়ে কেপে উঠে সুমাইয়া । সবাই মিলে হেসে উঠে । কিছুখন পর আলিফা ফ্রেস্র রুমে যেতে চায় । ফ্রেস রুম টা শোবার রুম থেকে একটু দূরে তাই বুশরা আর স্বদীপ ওর সাথে গিয়ে বাইরে দারিয়ে থাকে । স্বদীপ মাঝে মাঝে সিগারেট খায় , সে ১টা সিগারেট ধরিয়ে টানছে আর এমন সময় আলিফা ফ্রেশ রুম থেকে চিৎকার দিয়ে বের হয়ে যায়
স্বদীপ ঃ এই কি হয়েছে তোর ?
আলিফা ঃ ভিতরে রক্ত ,
বুশরা ঃ রক্ত মানে ?
আলিফা ঃ ফ্রেস রুমে রক্ত ।
বুশরা আর স্বদীপ ফ্রেসরুমে ঢুকে দেখে নিচে রক্ত পরে আছে, মনে হচ্ছে তাজা রক্ত । ওরা সাথে সাথে বের হয়ে রুমে ফিরে আসে । এসে দেখে রুমে কেউ নেই ।চিন্তায় পরে যায় স্বদীপ , আলিফা আর বুশরা ।
পাশের রুম থেকে আবার চিৎকারের শব্দ শুনতে পায় ওরা । দৌড়ে ছুটে যায় পাশের রুমে , সেখানে গিয়ে আলিফা , বুশরা আর স্বদীপ যা দেখলে সেটা দেখার জন্ন্য ওরা কখনোই প্রস্তুত ছিল না । ৩জন উলংগ মানুশ না মানুশ বলা ঠিক হবে না , মানুশের মত দেখতে ৩টা রাক্ষস । গায়ে বড় বড় লোম আছে , হাতের নখ গুলো বড় বড়, চোখ নাক দিয়ে রক্ত ঝরছে । রাক্ষস গুলো ১টা মৃত লাশ ছিরে ছিরে খাচ্ছে ।সে কি বিভৎস দৃশ্য ।রাসেল রুমের একপাশে বসে চিৎকার করে চেচাচ্ছিল ।স্বদীপ রাসেল কে ধরে উঠিয়ে নিয়ে আরেক রুমে আসে । সবাই খুব ভয় পাচ্ছে , তবে সাহশ হারিয়ে ফেলেনি কেউ । এতো সাহশ যে ওরা এই সময় কোথায় পেল সেটা আল্লাহই যানে । আচ্ছা সুমাইয়া আর অর্নব কোথায় ??
রাসেল ঃ তোরা যখন ফ্রেশরুমে গেলি তারপর হটাৎ বাইরে শব্দ সুনতে পেয়ে আমি দেখতে যাই , গিয়ে দেখি রাক্ষস গুলা ১টা মানুশের লাশ নিয়ে এসেছে , আমাদের দেখে তারা করে । আমি ঐরুমে ঢুকে যাই ।
স্বদীপ ঃ অর্নব আর সুমাইয়া কোথায় ?
রাসেল ঃ ওরা ছাদের দিকে গেছে ।
এর পর স্বদীপ রা সুমাইয়া আর অর্নবকে খুজতে ছাদে যায় ।
ছাদে ৪টা রাক্ষস সুমাইয়া আর অর্নব কে ঘিরে ফেলেছে । অর্নবের হাতে ১টা হারিকেন , বিদুৎ বাসায় না থাকায় ওর চাচা রেখে গিয়েছিল । সেটা হাতে অর্নব , আর সুমাইয়া অর্নবের বুকে মাথা গুজে জরিয়ে ধরে আছে ।
সুমাইয়া ঃ আজই মনে হয় আমাদের জিবনের শেষদিন তাই না অর্নব ?
অর্নব ঃ জানিনা বাবু , মরলে হয়তো একসাথে মরবো ।
সুমাইয়া ঃ ১টা সত্ত্যি কথা বলি , আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি মাথামোটা ।
রাক্ষস গুলো কিছুখন থেমে থাকলেও আবার অগ্রসর হতে থাকে ওদের দিকে ।
অর্নব ঃ বাবু হারিকেনটার তেলের মুখটা ১হাত দিয়ে খুলতে পারবে ?
সুমাইয়া মুখটা খুলে দেয় আর অর্নব তেলগুলো রাক্ষসের দিকে ছুরে দিয়ে ধাক্কা মেরে চলে পালাতে থাকে দুজন । ছাদের শিড়ি দিয়ে দৌড়দিয়ে নামার সময় সুমাইয়া পরে অজ্ঞান হয়ে যায় । অর্নব ওকে ধরে উঠাতে যাবে এমন সময় ১টা রাক্ষস এসে অর্নবের গলাটিপে ধরে । অর্নব শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে থাকে , চারিদিক তার নিকশ কালো হয়ে যায় ।
স্বদীপ প্যাকেট তজে ফায়ার বক্স বের করে পর পর কয়েকটি কাঠি জেলে রাক্ষসটার উপর ছুরে মারে । রাক্ষসটা পিছু হটে । কাসতে কাসতে নিজে কে স্বাভাবিক করে অর্নব । কিন্তু সুমাইয়ার জ্ঞ্যান ফিরে না ।
ওরা সিদ্ধ্যান্ত নেই ওরা এখান থেকে বের হয়ে ওর চাচার বাড়ী চলে যাবে । ওরা চাচার দেওয়া ছেলেটাকে খুজে , কিন্তু কোথাও সেই ছেলেটাকে পায় না । বের হওয়ার সময় দরজার পাসে ছেলেটাকে পরে থাকতে দেখে , ঘারে নকের আচর , সেখান দিয়ে রক্ত পরছে । ওরা সবাই চেষ্টা করে ছেলেটার জ্ঞ্যান ফিরিয়ে আনে ।তারপর ওরা বাড়ি থেকে বের হয় । বের হওয়ার পর দেখতে পায় সেই বৃ্দ্ধ লোকটিকে যাকে অর্নব সেই লঞ্চ থেকে বেশ কয়েকবার দেখতে পেয়েছিল । অর্নবরা লোকটির সামনে এসে
অর্নব ঃ আপনি কে ? এখানে কি করেন ?
বৃ্দ্ধলোক ঃ আমি এইবাড়ির মালিক । আমি তোদের মৃত্তু দেখতে এসেছি /
অর্নব ঃ মানে কি ? আমাদের মৃত্য ? কি বলছেন, এইসব মানে কি ?
বৃ্দ্ধলোক ঃ তোরা আমার বাড়ি দখল করতে এসেছিস আর আমি তোদের ছেরে দিব? তোদের তো নদীতেই মেরে ফেলতে চেয়েছি ।
রাসেল ঃ আমরা কেন বাড়ি দখল করতে আসবো ? আমরাতো বেরাতে এসেছি । আর এইবাড়িতে তো কেউ থাকে না ।
বৃ্দ্ধলোক ঃ এই বারিতে আমার অতৃপ্ত আত্তা থাকে আর সাথে আমার সাথীর । তোরা আমাদের এইবাড়ী আলো জালিয়ে অপবিত্র করেছিস । তোদের মরতেই হবে ।
আলিফা ঃ প্লিজ এইভাবে বলবেন না । আমরা এইসবের কিছু জানিনা । আমাদের মাফ করে দিন ।
অর্নব ঃ আমি ক্ষমা চাইছি আপনার কাছে , আমাদের ক্ষমা করে দিন ।আমাদের যেতে দিন প্লিজ । সুমাইয়া অসুস্থ , জ্ঞ্যান হারিয়ে আছে । প্লিজ আমাদের ছেরে দিন ।
বৃ্দ্ধলোক ঃ ১টা সুজোগ দিচ্ছি যা তোদের । আমি এখান থেকে চলে যাবার পর কিছু জানোয়ার (কুকুর-শিয়াল প্রজাতির প্রানী) ১টা ২চাক্কার জমগাড়ি টেনে নিয়ে আসবে । তোরা যদি ওদের বিভৎস রুপ দেখার পর ও ওদের গাড়ী তে চরে যেতে পারিস তাহলে বেচে যাবি ।
বৃদ্ধলোকটি চলে যায় ।চলে যাওয়ার পর শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া । দেখা যায় দূরে কয়েকটি জানয়ার ১টি গাড়ী টেনে নিয়ে আসছে ।ধিরে ধিরে গাড়িটা কাছে আসতে থাকে , যত কাছে আসে ততই ফুটে উঠে জমগাড়ির বিভৎসরুপ । হয়তো অবাক হচ্ছেন যে ১টা গাড়ি কিভাবে বিভৎসরুপের হতে পারে ।গাড়িট গরুরগাড়ির মত ।শুধু গরুর পরিবর্তে ৪টি কুৎসিত কুকুর । কুকুরগুলি বিকট ভয়ংকর চিৎকারে আকাস আর মাটি এক করে ফেলছে ।কংকালের হাড় আর মাথা দিয়ে জমগাড়ির ছাউনি বানাও হয়ছে ।
গাড়িটি কাছে চলে এসেছে , ঝড়ো বাতাসো বেড়ে গেছে । জম গাড়ি ওদের সামনে এসে দারিয়ে পরে । রাসেল , আলিফা , স্বদীপ , বুশরা উঠে পরে । কাজের লোকটা চিৎকার সহ্য করতে না পেরে জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে । সুমাইয়া অচেতন । অর্নব ওকে কাধে তুলে গাড়িতে উঠতে চেষ্টা করে , কিন্তু পরে যায় । আর গাড়িও চলা শুরু করে । স্বদীপ ওরা অর্নব কে বলে
স্বদীপ ঃ অর্নব তুই গাড়িতে উঠ , না উঠলে মারা পরবি ।
কিন্তু অর্নব একা উঠে না । সে সুমাইয়া কে কাধে তুলে অনেক কষ্টের পর গাড়ীতে উঠতে সক্ষম হয় । জমগাড়ী চলতে থাকে । কিছুদুর যাওয়ার পর জানোয়ারগুলোর চিৎকার আর সহ্য না করতে পেরে ওরা সবাই জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে ।

ওদের জ্ঞ্যান ফিরে দুপুর ২টার পর বরিশাল মেডিকেল কলেজে । রায়ের দিঘির পারে সকালে ওদের অজ্ঞ্যান অবস্থায় পরে থাকতে দেখে এলাকাবাশি মেডিকেল ভর্তি করে । আর কাজের লোকটার মৃত লাশ পরে থাকে ওই অভিশপ্ত বাড়ির সামনে । ওই বাড়িতে আগেও এরকম কিছু ঘটনা ঘটেছিল ।
বিকেলে ওদের বাবা মা রা আসে , আবার রাতেই রওনা দিয়ে ফিরে আসে ঢাকা

এই ঘটনার পর বেশকিছু দিন ওরা মানুষিক ভাবে অসুসস্থ ছিল । চলাফেরায় ও ওরা শান্তশিষ্ট হয়ে যায় । তারপর অবস্য ১টা ভালো খবর পাই আমরা । সুমাইয়া আর অর্নব সুস্থ অ স্বভাবিক হওয়ার পর ওদের দুই পরিবার মিলে ওদের বিয়ে দিয়ে দেয় । যদিও ২জন ২জনের বাবা মায়ের সাথে আছে । পরালেখা টা শেষ হলেই সুমাইয়া কে নিজের ঘরে তুলে নিবে অর্নব । অর্নব আর সুমাইয়ার হয়ে আমি আপনাদের সকলের কাছে দোয়া চাচ্ছি । আপনারা সবাই ওদের জন্ন্য দোয়া করবেন যাতে আল্লাহ ওদের সারা জীবন সকল বিপদ-আপদ থেকে হেফাজতে রেখে সারাজিবন সুখে রাখে ।
সমাপ্ত

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your participation .